1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাজারে আগুন

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা২৮ অক্টোবর ২০১৩

বর্ষাকাল এখন আর দিন-তারিখ মেনে শুরু বা শেষ হয় না৷ ফলে হয় অনাবৃষ্টিতে, অথবা অকালবর্ষণে ফসল যেমন নষ্ট হচ্ছে, দাম বাড়ছে তেমনই৷

Vegetable market, Kishangarh, Rajasthan, India +++CC/rachel in wonderland+++ 19.März 2011, geladen am 07.Mai 2013, http://www.flickr.com/photos/rdale/5633650066/sizes/l/in/photostream/ Lizens: http://creativecommons.org/licenses/by-sa/2.0/deed.deMountain Farmer Nepal
ছবি: CC/rachel in wonderland

আবহাওয়া অফিসের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ২১শে অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে বর্ষাকাল বিদায় নেওয়ার কথা গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ থেকে৷ কোনো বছর তার এক সপ্তাহ আগেই হয়েছে বর্ষাবিদায়, কিন্তু পরে হয়নি৷ অর্থাৎ, এই শেষ তারিখের পর সচরাচর আর থাকেনি বৃষ্টির মেঘ৷ কারণ ঋতুচক্র অনুযায়ী, বর্ষা তো বটেই, শরৎ পার করে এটা হেমন্তকাল৷ শীতের আবাহনের সময়৷ সেখানে অন্ধ্র প্রদেশে নিম্নচাপের কারণে টানা তিনদিনের অঝোর বর্ষণে ভেসে গেল পশ্চিমবঙ্গ৷ জেলায় জেলায় দেখা দিল বন্যা পরিস্থিতি৷ স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত হলো কলকাতা-সহ সমস্ত জেলাশহরে৷ ২১ অক্টোবর বর্ষার আনুষ্ঠানিক বিদায়ের সময়সূচির উপর ভরসা রেখে শহরের নিকাশি পাম্পগুলিকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছিল কলকাতা পুরসভা৷ ফলে প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে জলমগ্ন রইল কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকা৷

পরিসংখ্যান বলছে, গত ১০ বছরে অক্টোবর মাসে এরকম ভারি বৃষ্টি হয়নি৷ অবশ্য বৃষ্টির পরিমাপ বলছে, এই হেমন্তকালে যে পরিমাণ বর্ষণ হলো, তা এবার বর্ষাকালেও হয়নি৷ কিন্তু এই তথ্য পরিসংখ্যানের বাইরে যেটা ঘটে গেল, প্রাক-শীতের অনেক সবজির ফলন ক্ষতিগ্রস্থ হল এই অকালবর্ষণে৷ ফলত, সাধারণভাবে শীতকালে সবজির দাম যে কিছুটা কম থাকে, এবার তার সম্ভাবনা কম৷ বরং এই শরতে বাজারে শাক-সবজি থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সমস্তকিছুর যে অগ্নিমূল্য নাভিশ্বাস তুলেছিল গেরস্থের, সেই চড়া দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷

নবান্নের মরশুমে গেরস্থের মুখে কতটা হাসি থাকবে, সেই সন্দেহ থেকেই যাচ্ছেছবি: CC/Rishwanth Jayaraj

সাম্প্রতিক অতীতে এমন কখনও হয়নি যে বাজারদরের রাশ টানার জন্য এমন ঘন ঘন পাইকারি বাজারে হানা দিতে হয়েছে সরকারের এনফোর্সমেন্ট দপ্তরের অফিসারদের৷ কারণ প্রায় সমস্ত সবজির দাম গত এক বছরে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে৷ যেমন ধরা যাক চারটি সবজির কথা, যেগুলো গড়পড়তা বাঙালির পাতে ‘থোড়-বড়ি-খাড়ার' থেকেও বেশি নিত্যনৈমিত্তিক৷ বেগুন, পটল, ভিন্ডি বা ঢ্যাঁড়স এবং কুমড়ো৷ এক বছর আগেও বেগুনের বাজারদর ছিল ৪০ টাকা কিলো৷ এখন সেটা ৭০ টাকা! পটল ছিল ২০টাকা কিলো, এখন সেটা ৫০ টাকা! মানে দাম বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি৷ ভিন্ডি বা ঢ্যাঁড়সের দামও দ্বিগুণ হয়েছে – ৩০ টাকা থেকে বেড়ে এখন ৬০ টাকা কেজি৷ আর নেহাতই সাধারণ যে কুমড়ো, গরিব মানুষের খাবার, তা-ই এখন ১৫ টাকা কেজি থেকে দ্বিগুণ বেড়ে হয়েছে ৩০ টাকা কিলো৷ ফলে রোজকার বাজারের হিসেব করতে গিয়ে রোজগেরে মধ্যবিত্তেরই নাভিশ্বাস উঠছে, গরিব মানুষের দুরবস্থা সেখানে আর বলার নয়৷

লক্ষ্যণীয়, এই মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় পেঁয়াজ নামক মহার্ঘ্য বিলাসদ্রব্যটির নাম নেই৷ কারণ, পেঁয়াজের ক্রমশ বাড়তে থাকা দাম যে কোনো যুক্তি-বুদ্ধিকে অস্বীকার করছে৷ এক বছর আগেও ২০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে৷ এখন বাজারে সর্বনিম্ন দাম ৭০ টাকা৷ এর পর যে যা পারে দাম নিচ্ছে পেঁয়াজের, যা বাজারে বারবার সরকারি হানাদারিতেও বন্ধ করা যায়নি৷ বস্তুত সরকারি অনুরোধ, অনুশাসন, এমনকি চোখরাঙানিকেও মানতে চাইছে না বাজার দর৷ এর পাশাপাশি ভিনরাজ্য থেকে যা যা চালানি আসে পশ্চিমবঙ্গে, মাছ বা ডিম থেকে শুরু করে সব কিছুর দাম বেড়েছে৷ দাম বেড়েছে দুধের, পাঁউরুটির, চালের, ডালের৷

এর উপর এই অকালবৃষ্টি আরও আতঙ্কিত করছে মানুষকে, যেহেতু তা আরও মূল্যবৃদ্ধি প্রায় সুনিশ্চিত করছে৷ যেমন এবারই এই নিম্নচাপের জেরে টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে মেদিনীপুর জেলায় ঢ্যাঁড়সের ফলন পুরো নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে খবর এসেছে৷ শীতের সবজি ফুলকপির ক্ষেতেও তাণ্ডব চালিয়েছে অকালবর্ষণ৷ এর পাশাপাশি প্রায় নিয়মিত ঘটছে ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, যার দরুণ পরিবহন-খরচ বাড়ছে, সমস্ত জিনিসের দাম আরও বাড়ছে৷ ফলে নবান্নের মরশুমে গেরস্থের মুখে কতটা হাসি আদৌ থাকবে, সেই সন্দেহ কিন্তু থেকেই যাচ্ছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ