1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অগ্ন্যুৎপাতের পূর্বাভাস পেতে অভিনব প্রকল্প

২৬ জুলাই ২০১৮

২০১০ সালে আইসল্যান্ডে অগ্ন্যুৎপাতের ফলে গোটা ইউরোপে বিমান চলাচল প্রায় ১ মাসের জন্য বন্ধ ছিল৷ ভবিষ্যতে এমন বিপর্যয়ের জন্য আরও প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা৷ আগ্নেয়গিরি সম্পর্কে আরও জানতে নানা সাজসরঞ্জাম কাজে লাগানো হচ্ছে৷

ছবি: Getty Images/M. Tama

অগ্ন্যুৎপাতের পরিণতি

আইসল্যান্ড ও তার আশেপাশে ৩৫টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে৷ ২০১০ সালে একটি গর্জে ওঠায় প্রায় ১ মাস ধরে ইউরোপে বিমান চলাচল বিপর্যস্ত হয়েছিল৷ বিমান সংস্থাগুলি বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখ দেখেছিল৷ আইসল্যান্ডের আগ্নেয়গিরিগুলিতে যে কোনো সময়ে অগ্ন্যুৎপাত হতে পারে৷ তাই ইউরোপের বিজ্ঞানীরা সেগুলির উপর কড়া নজর রাখছেন৷ অগ্ন্যুৎপাতের আগে, অগ্ন্যুৎপাত  চলাকালীন ও পরে ঠিক কী ঘটে, সেটা তাঁরা জানতে চান৷

ভূবিজ্ঞানী ফ্রেইস্টাইন সিগমুন্ডসন এ বিষয়ে বলেন, ‘‘আগ্নেয়গিরির কাছে কীভাবে আরও ভালো করে থাকা উচিত, আমরা তা বুঝতে চাই৷ আইসল্যান্ডে এটা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ৷ ২০১০ সালের মতো মাঝেমধ্যে পৃথিবীর আরও অনেক মানুষের উপর তার গুরুতর প্রভাব পড়ে৷ বিশেষ করে অগ্ন্যুৎপাতের প্রভাব এবং দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে ছাই ও গ্যাসের হুমকি কীভাবে প্রশমিত করা যায়, আমরা তা শিখতে চাই৷''

অগ্ন্যুৎপাতের তথ্য আগেই জানতে চান বিজ্ঞানীরা

04:03

This browser does not support the video element.

পূর্বাভাষের প্রচেষ্টা

সেই লক্ষ্যে অনেক রকম প্রক্রিয়া সৃষ্টি করা হয়েছে৷ ফ্লোরেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা আইসল্যান্ডের এক জঙ্গলে এক ইনফ্রাসাউন্ড ডিভাইস লাগিয়েছেন৷ গোটা দেশে মোট পাঁচটি এমন ডিভাইস চালু থাকবে৷ ভূবিজ্ঞানী মাউরিৎসিও রিপেপে বলেন, ‘‘এটা হলো কেন্দ্রীয় স্টেশন, যেখানে সব তথ্য সংগ্রহ করা হয় ও ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়৷ এই মুহূর্তে ইটালির ফ্লোরেন্সে সেই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে৷ সেটি রেইকইয়াভিকে আইসল্যান্ডের আবহাওয়া দফতরেও পাঠানো হচ্ছে৷ আজ আমাদের একটি ইনফ্রাসাউন্ড সেন্সর পরীক্ষা করতে হবে৷''

অগ্ন্যুৎপাত ঘটলে বিস্ফোরণের চাপে সৃষ্ট তরঙ্গ বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে৷ ইনফ্রাসাউন্ড ডিভাইসেও তা ধরা পড়বে৷ রিপেপে বলেন, ‘‘এই সব ইনফ্রাসাউন্ড সেন্সর ও সেগুলির সমন্বয়ে এক ধরনের অ্যান্টেনার মাধ্যমে আমরা অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সৃষ্ট চাপের মধ্যে পার্থক্য শনাক্ত করতে পারছি৷ চাপ শক্তিশালী হলে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূর থেকেও তা টের পাওয়া যায়৷''

একাধিক জটিল প্রযুক্তির সমন্বয়

কিন্তু ইউরোপীয় সুপারসাইট রিসার্চ প্রজেক্টে শুধু ইনফ্রাসাউন্ড ডিভাইস নয়, আরও সরঞ্জাম কাজে লাগানো হচ্ছে৷ জিপিএস, স্ট্রেন নেটওয়ার্ক, গ্যাস সেন্সর, ইলেকট্রিক ক্ষেত্র পরিমাপের সেন্সর, আবহাওয়ার রাডার ও ছাই পড়া পরিমাপের যন্ত্রও রয়েছে৷ ফ্রেইস্টাইন সিগমুন্ডসন বলেন, ‘‘আইসল্যান্ডে ফিউচারভল্ক প্রকল্পে অনেক গবেষক জড়িত রয়েছেন৷ এবার তাঁদের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান সমন্বয় করে আগ্নেয়গিরির অবস্থা সম্পর্কে আরও উন্নত তথ্য সংগ্রহের সময় এসে গেছে৷ আর অগ্ন্যুৎপাত ঘটলে তার অগ্রগতি, নির্গত ছাইয়ের পরিমাণও জানতে পারবো৷ নিরাপদ বিমান চলাচলের জন্য সেটা জানা অত্যন্ত জরুরি৷ বিভিন্ন মনিটরিং নেটওয়ার্কের সব তথ্য আইসল্যান্ডের আবহাওয়া দপ্তরে বিশ্লেষণ করা হয়৷ আসলে এই প্রতিষ্ঠান প্রাকৃতিক বিপর্যয় পর্যবেক্ষণ করে৷ ২৪ ঘণ্টা ধরে নজর রেখে নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ও এয়ার ট্রাফিক কনট্রোলকে তথ্য দেওয়ার কাজ করে তারা৷''

সিসমোলজিস্ট ক্রিস্টিন ভিয়োগর্ড বিষয়টির আরও ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘ম্যাগমা চলাচলের উপর নজর রাখতে আমরা ভূমিকম্পের সিসমিক লোকেশন ব্যবহার করি৷ জিপিএস নেটওয়ার্ক আগ্নেয়গিরির আকার পরিবর্তন দেখিয়ে দেয়৷ সম্প্রসারণ, সংকোচন, নড়াচড়া হচ্ছে কিনা, এভাবে তা বোঝা যায়৷ আমরা ‘ফিউচারভল্ক' নামের এক তথ্যভাণ্ডার ও তথ্য পরিষেবা সৃষ্টি করছি৷ মানুষ সব নেটওয়ার্কের সব তথ্যের নাগাল পাবে, এমনকি স্যাটেলাইট থেকেও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করবে৷''

আইসল্যান্ডের সবচেয়ে বড় আগ্নেয়গিরি কাটলা জেগে উঠলে বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে আরও বড় আকারের বিঘ্ন ঘটবে৷ ইউরোপের অর্থনীতি আরও লোকসানের মুখ দেখবে৷ কিন্তু এই সব নতুন প্রক্রিয়া ও এই সংকট সম্পর্কে আরও বেশি জ্ঞানের মাধ্যমে স্বল্পমেয়াদি হলেও সতর্কতা জারি করা সম্ভব হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ