স্কটল্যান্ডের নর্থ সি উপকূলে ষোড়শ শতাব্দীর জেলেদের মাছ ধরার জাল রাখার একটি কুটির কি যাবতীয় আধুনিক কমফর্ট যুক্ত একটি ভিলা হয়ে উঠতে পারে?
বিজ্ঞাপন
সেলারডাইক একেবারে নর্থ সি-র লাগোয়া৷ ষোড়শ শতাব্দীতে জেলেরা এখানে ছোট ছোট কুটির বেঁধে সেখানে তাদের মাছ ধরার জাল রাখতেন৷ পরে সেই সব কুটিরের জায়গায় বাড়ি তৈরি হয়৷ আয়ান হার্ডিং-এর বাড়িটা সেরকম একটি পুরনো স্কটিশ জেলের বাড়ি৷ চারশ বছরের পুরনো৷ ২০১০ সালে ঐতিহাসিক বাড়িটির সঙ্গে একটি আধুনিক বর্ধিত অংশ যুক্ত হয়৷ বাড়ির প্রবেশপথ একটি ছোট রাস্তায়৷
আয়ান হার্ডিং বললেন, ‘‘স্বাগতম৷ ঘুরে দেখুন, বাড়ির দরজা থেকেই সমুদ্র দেখতে পাবেন – অ্যানেক্স তৈরি করার সময় আমরা যা চেয়েছিলাম৷ সেই সঙ্গে দেখতে পাবেন যে, সামনের দরজা থেকে সোজা তীর পর্যন্ত যাওয়ার পথ আছে, যেটা আমাদের কাছে জরুরি ছিল৷ বাড়ির পুরনো অংশ, নতুন অংশ আর উপকূলের মধ্যে একটা সংযোগ রাখতে চেয়েছিলাম আমরা৷''
মাটি পর্যন্ত বড় বড় জানালা দিয়ে ঘেরা একতলা৷ বর্ধিত অংশ তৈরির ফলে বাড়ির আবাসিক এলাকা হয়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৫ বর্গমিটার৷ এখানে ডাইনিং টেবল আর একটা বড় মাপের কিচেনের জায়গা আছে৷ কিচেনের কাপবোর্ডটা রিসাইকল করা ফরাসি ওক কাঠের৷ গ্রিপগুলো পুরনো তামার পাইপ থেকে তৈরি করা হয়েছে৷ কিচেন ছাড়া বাড়ির অধিকাংশ অংশের ডিজাইন গৃহকর্তার৷ হার্ডিং বললেন, ‘‘এটা হতো বাড়ির বাইরের দেয়াল, সাগরের দিকে মুখ করে৷ অথচ আপনি দেখছেন, আমরা এটাকে খোলা রেখেছি, কেননা আমরা এই পুরনো পাথরগুলোকে দেখাতে চেয়েছিলাম৷'' হার্ডিং জানালেন, ‘‘এখান থেকে আমরা রিল্যাক্স করার এরিয়ায় ঢুকছি৷ এটা সম্ভবত বাড়ির সবচেয়ে পুরনো অংশ৷ সুন্দর গরম; আরাম করার মতো জায়গা৷''
স্কটল্যান্ডকে জানুন...
02:15
লিভিং রুম থেকে এই দু'শ বছরের পুরনো সিঁড়িতে পৌঁছানো যায়, যা আগে বাড়ির বাইরে ছিল৷ এখন সেটা একতলা থেকে ওপরতলায় চলে গেছে৷ এখান থেকে ছাদে যাওয়া যায়৷ ছাদটা অ্যানেক্স তৈরির সময় সৃষ্টি হয়েছে৷ এটা হার্ডিং দম্পতির প্রিয় জায়গা, ‘‘এখান থেকে দেখতে পাবেন, আমরা সাগর পেরিয়ে আইল অফ মে অবধি দেখতে পাই৷''
স্কটল্যান্ডের নর্থ সি উপকূলে যাবতীয় আধুনিক আরাম যুক্ত একটি ফিশারম্যান্স হাউস৷
বাংলার গর্ব পোড়ামাটির সম্পদ
পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার ছোট শহর বিষ্ণুপুর বিখ্যাত তার অসাধারণ টেরাকোটা বা পোড়া মাটির ভাস্কর্যের জন্য, যা দেখা যায় মূলত নানা ধরনের পট আর পুতুলে এবং মন্দিরের গায়ের কারুকার্যে৷
ছবি: DW/S.Bandopadhyay
লাল মাটির সরানে
পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া – এই জেলাগুলো পরিচিত তার লাল মাটির জন্য৷ ল্যাটেরাইট গোত্রের এই লাল মাটি পুড়িয়েই হয় বিষ্ণুপুরের বিশ্ববিখ্যাত টেরাকোটার কাজ৷
ছবি: DW/S.Bandopadhyay
নিজস্ব স্থাপত্যরীতি
বিষ্ণুপুরের টেরাকোটা মন্দিরের কিছু নিজস্বতা আছে৷ যেমন মূল মন্দিরের সামনে, মন্দিরের আদলেই একটি ছোট আকারের তুলসীমঞ্চ৷ বাংলার স্থাপত্যশেলীর নিদর্শন এগুলিও৷
ছবি: DW/S.Bandopadhyay
সময়ের আঁচড়
সব মন্দিরের গায়ের রিলিফের কাজই যে যথাযথভাবে সংরক্ষিত করা গেছে, তা নয়৷ কোনো কোনো মন্দির জীর্ণ হয়েছে সময়ের আঁচড়েও৷
ছবি: DW/S.Bandopadhyay
তবু অনন্য
তবু বাংলার নিজস্ব স্থাপত্যরীতির অনন্য নিদর্শন হয়ে আছে এইসব টেরাকোটা মন্দির৷ যেমন এই বাংলা চালা, যে নকশা উঠে এসেছে গ্রামবাংলার খড়ের চাল থেকেই৷
ছবি: DW/S.Bandopadhyay
ইসলামি প্রভাব
সুলতানি আমলে ইঁটের খিলান আর গম্বুজ তৈরির যে স্থাপত্যরীতি, তার প্রভাবও স্পষ্ট বিষ্ণুপুরের মন্দিরের খিলানের কাজে৷
ছবি: DW/S.Bandopadhyay
স্থাপত্য দক্ষতা
১৭ এবং ১৮ শতকে এইসব পোড়ামাটির মন্দির যাঁরা তৈরি করেছিলেন, সেই স্থপতিরা যে কী অসামান্য দক্ষতার অধিকারী ছিলেন, তা বোঝা যায় ক্ষয় ধরা ইটের পাঁজার দিকে তাকালেও৷
ছবি: DW/S.Bandopadhyay
পোড়ামাটির শিল্প
শুধু স্থাপত্যরীতিই নয়, বিষ্ণুপুরের মন্দির প্রসিদ্ধ তার গায়ের পোড়ামাটির টালির কারুকাজের জন্যেও৷ পুরাণের কাহিনি থেকে যুদ্ধবিগ্রহের ইতিহাস, শিকারের গল্প – সবই বলা হয়েছে তাতে৷
ছবি: DW/S.Bandopadhyay
জাতীয় সম্পদ
এমনই চমৎকারিত্ব পোড়ামাটির টালির এই রিলিফের কাজের, ভারতীয় পুরাতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ বিভাগ সবকটি মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছে নিজেদের হাতে৷
ছবি: DW/S.Bandopadhyay
কৃষ্ণের জীবন
বিষ্ণুপুরের এসব মন্দির তৈরি করিয়েছিলেন মল্ল রাজারা৷ তাঁরা ছিলেন বৈষ্ণব৷ তাই মন্দিরের কারুকাজে কৃষ্ণজীবনের প্রাধান্য৷
ছবি: DW/S.Bandopadhyay
আন্তর্জাতিক পরিচিতি
টেরাকোটার মন্দির আন্তর্জাতিক পরিচিতি এনে দিয়েছে বিষ্ণুপুরকে, বাংলার শিল্পকে৷ বিশ্বের দরবারে বাংলার কৃষ্টি-সংস্কৃতির অন্যতম প্রতীক হয়ে উঠেছে এই টেরাকোটা শিল্প৷