কোভিড ১৯-এর থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার পরবর্তী অতিমারি মোকাবিলার জন্য আগে থেকে চুক্তি চান বিশ্বনেতারা। যাতে সব দেশ আগে থেকে প্রস্তুত থাকতে পারে।
বিজ্ঞাপন
করোনা অতিমারির জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিল না বিশ্ব। তাই করোনা যখন দ্রুত ছড়াতে শুরু করল, তখন সব দেশকেই দিশেহারা লেগেছে। সরকারের যেমন প্রস্তুতি ছিল না, তেমনই মানুষের দূরতম ভাবনাতেও ছিল না, এমন পরিস্থিতি আসতে পারে। তার ফলে প্রায় প্রতিটি দেশ করোনা সামলাতে গিয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
এরকম পরিস্থিতি ভবিষ্যতে যাতে আর না হয়, তার জন্য প্রস্তুত থাকতে চাইছেন অনেক দেশের প্রধান। ২৩টি দেশের নেতা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ইইউ চাইছে, এই প্রস্তুতির জন্য একটা নতুন আন্তর্জাতিক চুক্তি হোক। বিশ্বের প্রধান সংবাদপত্রগুলিতে এদিন একটি উত্তর সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়েছে। তাতে জার্মানির চ্যান্সেলার ম্যার্কেল, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ, দক্ষিণ কোরিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপ্রধানরা সই করেছেন। তাতেই এই চুক্তির কথা বলা হয়েছে।
উত্তর সম্পাদকীয় নিবন্ধে বলা হয়েছে, ''আমরা মনে করি, অতিমারি নিয়ে প্রস্তুত থাকতে এবং তার মোকাবিলা করতে একটা নতুন আন্তর্জাতিক চুক্তির জন্য দেশগুলির কাজ করা উচিত। সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পর্যায়ে যদি অতিমারি নিয়ে প্রস্তুতি থাকে, তাহলে তা অনেক ভালোভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।''
করোনা সংকট: বন্ধ হলো বিখ্যাত কাওয়াই মনস্টার ক্যাফে
জাপানের টোকিওতে কাওয়াই পপ সংস্কৃতির ধারক হিসেবে বিখ্যাত হয়ে উঠেছিল মনস্টার ক্যাফে৷ কিন্তু করোনার কারণে অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পাঁচ বছরের যাত্রা শেষ হলো ক্যাফেটির৷
ছবি: Issei Kato/REUTERS
শেষ হলো পাঁচ বছরের যাত্রা
করোনা সংক্রমণ ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়ায় লোকসানের মুখে পড়েছিল ক্যাফেটি৷ ফলে পাঁচ বছর পর বন্ধ করে দিতে হলো এটি৷
ছবি: Issei Kato/REUTERS
পপ সংস্কৃতি
জাপানের বিখ্যাত পপ সংস্কৃতি ‘কাওয়াই’ এর ধারক হয়ে উঠেছিল ক্যাফেটি৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল মনস্টার ক্যাফে৷
ছবি: Issei Kato/REUTERS
মনস্টার গার্লদের সঙ্গে ছবি
শেষ দিনে মনস্টার গার্লদের সঙ্গে ছবি তোলার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি অতিথিরা৷
ছবি: Issei Kato/REUTERS
লোকসান
ক্যাফের ম্যানেজার রয়টার্সকে জানান, এই মহামারি কবে নাগাদ শেষ হবে তার কোনো ঠিক নেই৷ রেস্তোরাঁয় অতিথি সমাগম খুবই কম৷ ফলে দীর্ঘ সময় ধরে লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের৷ এ কারণে পাঁচ বছর পর আর লিজ বাড়াননি তারা৷
ছবি: Issei Kato/REUTERS
বর্ণিল ক্যাফে
ক্যাফের বর্ণিল সজ্জা আর সংগীতের কারণে তরুণদের সমবেত হওয়ার হটস্পটে পরিণত হয়েছিল এটি৷ এমনকি কিম কার্দেশিয়ানের মতো বিখ্যাত তারকারাও এখানে এসেছিলেন৷
ছবি: Issei Kato/REUTERS
মজার খাবার
কেবল নাচ-গানের জন্য নয়, সুস্বাদু খাবারের জন্যও সুনাম আছে এই ক্যাফের৷
ছবি: Issei Kato/REUTERS
হারাজুকু নারী
মনস্টার ক্যাফের মনস্টার গার্লদের ভিন্ন ভিন্ন নাম আছে৷ এই নারী হারাজুকু গার্ল হিসেবে পরিচিত৷
ছবি: Issei Kato/REUTERS
করোনা বিধি নিষেধ
করোনার সময় সব বিধি নিষেধ মেনেই খোলা রাখা হয়েছিল ক্যাফেটি৷ পত্যেক অতিথি চলে যাওয়ার পর জীবানুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা হত আসন ও ব্যবহৃত সব জিনিস৷
ছবি: Issei Kato/REUTERS
ব্যথিত ডিজাইনার
হারাজুকুর অর্থ হলো যুগে যুগে বদলে যাওয়া সংস্কৃতি৷ অর্থাৎ সময়ের সাথে সাথে নতুন নতুন উদ্ভাবন হলো এই সংস্কৃতির মোটো৷ এই ক্যাথে বন্ধ হওয়ায় বেশ দুঃখ পেয়েছেন এই ক্যাফের ডিজাইনার সেবাস্টিয়ান মাসুদা৷
ছবি: Issei Kato/REUTERS
শেষ আয়োজন
৩১ তারিখে মনস্টার গার্লদের শেষ সংগীত আয়োজন দেখতে উপস্থিত হয়েছিলেন অনেক অতিথি৷
ছবি: Issei Kato/REUTERS
কান্না
পারফর্মেন্স শেষে এভাবেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এক ‘মনস্টার গার্ল৷’
ছবি: Issei Kato/REUTERS
বিদায়
বন্ধ করা হচ্ছে ক্যাফের সাটার৷ একপাশে অতিথি, অন্যপাশে মনস্টার গার্ল সহ ক্যাফের কর্মীরা৷ তারা হাসিমুখেই হাত নেড়ে বিদায় জানান অতিথিদের৷
ছবি: Issei Kato/REUTERS
12 ছবি1 | 12
এই আইডিয়াটা প্রথমে দেন ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট। তিনি গত নভেম্বরে জি২০ বৈঠকে এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
করোনা একটা জিনিস বুঝিয়ে দিয়েছে, অতিমারির মোকাবিলা করতে গেলে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা খুবই জরুরি। করোনার ফলে বিশ্বের অর্থনীতি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। করোনার মোকাবিলায় নানা ধরনের প্রশ্ন উঠছে। তাই আন্তর্জাতিক চুক্তি দরকার বলে মনে করছেন অনেক বিশ্বনেতাই। চুক্তি হলে ভ্যাকসিন, ওষুধ, রোগ চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে বিশ্ব জুড়ে দেশগুলি সহযোগিতা করবে। সকলে সমান সুযোগ পাবে।
নিবন্ধে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে অতিমারি বা চিকিৎসা ক্ষেত্রে জরুরি পরিস্থিতি আসবে, সেই বিপদকে কোনো একটি সরকার বা কিছু এজেন্সি মিলে মোকাবিলা করতে পারবে না।
ইউরোপের দেশে দেশে ভ্রমণে কড়াকড়ি
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো ভ্রমণের ক্ষেত্রে সীমান্তে কড়াকড়ি, করোনা পরীক্ষা, কোয়ারান্টাইনসহ বেশ কিছু কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে৷
ছবি: Alexander Farnsworth/picture alliance
ফিনল্যান্ড
যারা এই দেশে ভ্রমণ করবেন তাদের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি নিয়ম চালু করেছে ফিনিশ সরকার, যা ২৭ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে৷ সীমান্তে করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক৷ শেনজেন অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে অবাধ চলাচলের ব্যাপারে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে৷ এসব দেশ থেকে জরুরি কাজ বা প্রয়োজনের কাগজ দেখিয়ে তবে ফিনল্যান্ডে প্রবেশ করা যাবে৷
ছবি: Vesa Moilanen/Lehtikuva/AFP/Getty Images
সুইডেন
ইইউ-র বাইরের ইউরোপের দেশগুলো থেকে যারা আসবেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে করা করোনা পরীক্ষার ‘নেগেটিভ’ ফলাফল দেখাতে হবে, অন্যথায় ফেরত যেতে হবে৷ ফেব্রুয়ারির ৬ তারিখ থেকে এটা কার্যকর হয়েছে৷ যুক্তরাজ্য, নরওয়ে ও ডেনমার্কের নাগরিকদের সুইডেন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে৷ সুইডিশরা অবশ্য এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে৷
ছবি: Alexander Farnsworth/picture alliance
ডেনমার্ক
ডেনমার্কে ভয়াবহ মাত্রায় সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় প্রয়োজন ছাড়া ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে৷ নেগেটিভ করোনা সার্টিফিকেট, যা ২৪ ঘণ্টার বেশি পুরোনো নয় এবং ভ্রমণের প্রয়োজন সংক্রান্ত কাগজ দেখাতে পারলেই কেবল এদেশে প্রবেশ করা যাবে৷
ছবি: picture-alliance/Zuma/Bildbyran/P. Arvidson
সুইজারল্যান্ড
দেশটি ইউরোপের দেশগুলোর সাথে ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করেনি৷ তবে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো থেকে আসা ব্যক্তিদের কমপক্ষে ১০ দিন কোয়ারান্টিনে থাকতে হবে৷ যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে৷
ছবি: Imago Images/Geisser
লুক্সেমবার্গ
শেনজেন ও ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের করোনা ‘নেগেটিভ’ সার্টিফিকেট দেখাতে হবে৷ জানুয়ারির ২৯ তারিখ থেকে বোর্ডিঙের সময় সার্টিফিকেট দেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে৷
ছবি: imago/alimdi
চেক প্রজাতন্ত্র
করোনা সংক্রমণ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় দেশটি তিনটি সীমান্তই বন্ধ করে দিয়েছে৷ বসানো হয়েছে সীমান্তরক্ষী৷ তারা পর্যবেক্ষণ করছেন সীমান্ত দিয়ে কেউ যাতে অন্য দেশে প্রবেশ করতে না পারে এবং অন্য দেশ থেকে কেউ চেক প্রজাতন্ত্রে ঢুকতে না পারে৷
ছবি: picture alliance/dpa
নরওয়ে
দেশটি সব সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে৷ কেবল যাদের খুব প্রয়োজন তারাই প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছেন৷ ২৯ জানুয়ারি থেকে এই কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/robertharding/J. Nix
পোল্যান্ড
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলো থেকে প্রয়োজন ছাড়া কেউ পোল্যান্ডে প্রবেশ করতে পারবে না৷ পহেলা জানুয়ারি থেকে এই কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে৷ ইইউ দেশগুলো থেকে আসা ব্যক্তিদের অবশ্যই ১০দিন আইসোলেশনে থাকতে হবে৷ তবে ভ্যাকসিন নেয়ার সার্টিফিকেট থাকলে কোয়ারান্টিনের প্রয়োজন নেই৷
ছবি: Beata Zawrzel/NurPhoto/picture alliance
তুরস্ক
তুরস্কে প্রবেশ করতে হলে ৬ বছরের বেশি বয়সিদের করোনা ‘নেগেটিভ’ সার্টিফিকেট দেখাতে হবে৷ পাশাপাশি হেল্থ স্ক্রিনিং বাধ্যতামূলক৷ যুক্তরাজ্য থেকে সব ফ্লাইট বাতিল করেছে দেশটি৷
ছবি: picture-alliance/R. Hackenberg
ক্রোয়েশিয়া
এই দেশে প্রবেশ করতে হলে আপনাকে ‘ট্রাফিক লাইট সিস্টেমের’ মধ্যে দিয়ে যেতে হবে৷ অর্থাৎ, আপনার করোনার লক্ষণ আছে কিনা অথবা গত ১৪ দিনের মধ্যে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখা হবে৷ পরীক্ষায় সবুজ সংকেত পেলে তবেই প্রবেশ করতে পারবেন ক্রোয়েশিয়ায়৷
ছবি: picture-alliance/Zoonar/B. Hoyen
জার্মানি
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমাতে চেক প্রজাতন্ত্র এবং অস্ট্রিয়ার সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে জার্মানি৷ ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে৷ তবে জার্মান নাগরিকদের দেশে ঢুকতে কোনো বাধা নেই৷ তাদের ৪৮ ঘণ্টার কম পুরোনো করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেখাতে হবে৷ এছাড়া চিকিৎসক ও জরুরি কাজের সঙ্গে যুক্তদের ছাড় দেয়া হচ্ছে৷
ছবি: Odd Andersen/AFP
11 ছবি1 | 11
তবে অ্যামেরিকা, রাশিয়া, চীন ও জাপানের রাষ্ট্রনেতাদের সই এই নিবন্ধে নেই। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কোনো চুক্তি তখনই সফল হতে পারে, যখন তার পথে কোনো রাজনৈতিক বিরোধ না আসে।
করোনার সময় দেখা গেছে, বিভিন্ন দেশের সরকারের প্রধান ও নেতারা একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। ধনী দেশগুলি বিপুল পরিমাণ ভ্যাকসিন কিনে নিয়েছে। ফলে গরিব দেশগুলি ভ্যাকসিন পাচ্ছে না। অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নিয়ে ইইউ এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যে বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে।
তবে এই নিবন্ধে ইইউ এবং যুক্তরাজ্যের সরকার প্রধানরা সই করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, ''কোভিড ১৯ আমাদের দুর্বলতা ও বিভাজনের সুবিধা পেয়েছে। আমরা এই অতিমারি রুখতে এক হয়ে শান্তিপূর্ণ সহযোগিতা করতে পারিনি।''