আপাতদৃষ্টিতে অনেক জটিল বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার কোনো প্রাসঙ্গিকতা বোঝা না গেলেও মানুষের অনেক সমস্যার সমাধানে এমন উদ্যোগ কাজে লাগে৷ জার্মানির এক ল্যাবে চলছে এমনই কিছু পরীক্ষা৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানির সবচেয়ে বড় মিনিস্কিউল পার্টিকেল ল্যাবের নাম ডিইএসওয়াই৷ সেখানে বেশ কয়েকটি বিশালাকার আলোর উৎস রয়েছে৷ নতুন ক্ষুদ্র ন্যানো জগত অভিযানের ক্ষেত্রে এগুলি সাহায্য করে৷ মাটির নীচে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ অ্যাক্সিলারেটর সুড়ঙ্গের মধ্যে সুপরিকল্পিতভাবে কনসেনট্রেটেড এক্স-রে সৃষ্টি করা হয়৷
৪০টি দেশের ৩,০০০ বিজ্ঞানী ৩০০ মিটার দীর্ঘ ভবনে তথাকথিত ‘এক্সপেরিমেন্ট হাট' ব্যবহার করেন৷ গবেষণার জন্য খুব কম সময় পাওয়া যায় এবং চাহিদাও বিশাল৷ যে কেউ আবেদন করতে পারেন৷ তবে সেরা আবেদনপত্রগুলিই অনুমোদন পায়৷
বর্তমানে পেট্রা নামের আলোর উৎসে যে এক্সপেরিমেন্ট চলছে, তার আওতায় বিজ্ঞানীরা জানার চেষ্টা করছেন যে, কোষের প্রাচীরের মধ্যে দিয়ে যেতে যেতে এবং কোষে বাসা বাঁধলে ভাইরাস কতটা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে৷ পদার্থবিজ্ঞানী অলিভার এইচ সেক বলেন, ‘‘ডিটেক্টর সবার আগে শুধু সর্বোচ্চ ইন্টেনসিটি, ম্যাক্সিমাম রিং অথবা বিভাজন দেখায়৷ আমি রংয়ের মাধ্যমে তা ফুটিয়ে তুলতে পারি৷ সাধারণ মানুষের চোখে সেটা শুধু রঙিন দেখাবে৷''
অন্যরকম কিছু গবেষণার খবর
আচ্ছা, ধনীরা কি খুব কিপটে হয়, ছোটখাটো চুরি করে? কিংবা হাই তোলা কি ছোঁয়াছে? একসাথে গান গাইলে কি বন্ধুত্ব হয়? এমনই কিছু প্রশ্নের উত্তর জানিয়েছেন গবেষকরা৷
ছবি: Fotolia/Andreas Haertle
একই সাথে হাই তোলা কি ভালোবাসার লক্ষণ?
বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে একজনের ছোঁয়াচে অসুখ হলে আরেকজনও হয়৷ কিন্তু তাই বলে একসাথে হাই তোলা! হ্যাঁ, একজন হাই তুললে অপরজনও এক বা দুই মিনিটের মধ্যেই হাই তোলেন - এই তথ্যই জানিয়েছেন ইটালির রোম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা৷ গবেষণাটি করা হয়েছে ৪টি মহাদেশের মানুষের মধ্যে৷ সমীক্ষায় জানা গেছে দু’জন মানুষের মধ্যে সম্পর্ক যত গভীর, ঠিক তত তাড়াতাড়ি অন্যজন হাই তোলেন৷
ছবি: Imago/E. Umdorf
বড়লোকরা এমন কেন?
সমাজের বিত্তবান লোকেরাই নাকি সাধারণ নিয়ম-কাননু মেনে চলতে চাননা৷ তাঁরা ট্রাফিক সিগনাল কম মানেন, বাড়তি খুচরো পয়সা ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখেন বা হাতছাড়া করতে চাননা৷ কেউবা আবার অফিসের ফটোকপি মেশিনের কাগজ বাড়িতে নিয়ে যান৷ অ্যামেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ের করা গবেষণার এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে মার্কিন সাময়িকী ‘পিএনএএস’ এ৷ জানা গেছে, সাধারণ জনগণের চেয়ে নাকি ধনীদের মধ্যেই কৃপণতার মনোভাব বেশি৷
ছবি: Colourbox/M. Shmeljov
জার্মানরা ঘণ্টায় ৩২ হাজার কফির কাপ ফেলে দেয়
তাড়াহুড়ো বা সময়ের অভাবে অনেকেই সাধারণ কফিশপগুলো থেকে কাগজের কাপে (কফি টু গো) কফি নিয়ে যায় এবং পান করার পর ফেলে দেয়৷ জার্মান পরিবেশ সাহায্য সংগঠনের দেওয়া এক তথ্য থেকে জানা গেছে, জার্মানিতে ফেলে দেওয়া কাগজের কফির কাপের সংখ্যা ঘণ্টায় ৩২ হাজার৷
ছবি: Fotolia/George Dolgikh
সপ্তাহের শুরুটা ভালো হলেও...
আজকের যান্ত্রিক জীবনের চাকরিজীবিরা সপ্তাহান্তে অনেকেই ভাবেন যে, আগামী সপ্তাহ থেকে শরীরের যত্ন নেবেন, স্বাস্থ্যকর খাবার খাবেন, খানিকটা ব্যায়াম করবেন কিংবা ধূমপান ছেড়ে দেবেন৷ সপ্তাহের শুরুতে সেই অনুযায়ী কাজ করলেও শেষ রক্ষা আর হয়না৷ অর্থাৎ প্রথম, দুই, তিনদিন করেই সপ্তাহান্তে আবার সেই একই অবস্থা৷ অ্যামেরিকার সানডিয়েগো-স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষা থেকে এই তথ্য জানা গেছে৷
ছবি: Fotolia/Dan Race
গান গেয়ে বন্ধুত্ব
যাঁরা একসাথে গান গায়, তাদের মধ্যে তাড়াতাড়ি বন্ধুত্ব হয় - এই তথ্য জানা গেছে ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের করা এক গবেষণা থেকে৷ যাঁরা আঁকেন, লেখেন বা গান গান অর্থাৎ এরকম সৃজনশীল কাজ করেন তাঁদের নিয়ে গবেষণাটি করা হয়েছিল৷ দেখা গেছে যাঁরা একসাথে গান গেয়েছেন তাঁরা বেশি তাড়াতাড়ি একে অপরের কাছাকাছি এসেছেন৷
ছবি: Colourbox
ভালো পরিবেশে ভালো কাজ
অফিস ঘরের আবহাওয়া, বাতাস বা পরিবেশ ভালো হলে সে অফিসের কর্মীদের কাজে মনোযোগ বেশি থাকে৷ অ্যামেরিকার ‘হাভার্ড টিএইচ চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেল্থ’ এর করা এক গবেষণা থেকে জানা গেছে এই তথ্য৷ অফিসের কর্মীদের সপ্তাহের ছয়দিন ছয় রকম ঘরে কাজ করিয়ে এই তথ্য জানা গেছে৷ যাঁরা সবুজ সুন্দর পরিবেশে বসে কাজ করেছেন তাদের মনোযোগ ছিলো কাজে শতকরা ৬০ ভাগ বেশি, অন্যদের তুলনায়৷
ছবি: Fotolia/Andreas Haertle
6 ছবি1 | 6
প্রশিক্ষণ ছাড়া অ্যাটমের জগতের ছবির মধ্যে কিছু চোখে পড়বে না৷ বিজ্ঞানীরা এর মাধ্যমে গোপন জীবজগতে উঁকি মারার সুযোগ পান, এখানে যা হলো ভাইরাস৷ বায়োলজিকাল পরীক্ষার জন্য পেট্রা অত্যন্ত উপযুক্ত৷ এক্ষেত্রে প্রোটিন সহজেই ক্রিস্টালাইজ ও ঠান্ডা করা যায়৷ বরফের তাপমাত্রায় তারা তাদের বৈশিষ্ট্য বজায় রাখে৷ ‘হার্ড' শর্ট ওয়েভ এক্স-রে দিয়ে প্রোটিন কম্পাউন্ডের অতি ক্ষুদ্র খুঁটিনাটি বিষয়গুলিরও ছবি তোলা সম্ভব৷ তারা এমন সব তথ্য দেয়, যার সাহায্যে বোঝা যায় যে, কোন পরমাণু কাঠামো বন্ধ করলে কোষের মধ্যে ব্যাকটিরিয়া ও ভাইরাস সংযোজন বন্ধ করা যাবে৷ সংক্রামক রোগের মোকাবিলার লক্ষ্যে ওষুধ তৈরি করতে হলে এটা জানা জরুরি৷ পদার্থবিজ্ঞানী আলকে মেয়েন্ট বলেন, ‘‘আমাদের যেহেতু অত্যন্ত শক্তিশালী এক্স-রে রশ্মি রয়েছে, তা দিয়ে শুধু স্থিরচিত্র, অর্থাৎ সাময়িক অবস্থা দেখতে পাই না৷ আমরা প্রতিক্রিয়াও ঘটাতে পারি৷ পরমাণুর স্তরে প্রোটিন মলিকিউল কীভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে, সে বিষয়ে একটি ফিল্ম তৈরি করা যাবে৷''
প্রস্রাব দিয়ে জ্বলবে বাতি!
হ্যাঁ, জ্বালানি তৈরির এরকম আরো অনেক বিকল্প এবং টেকসই উৎস নিয়ে গবেষণা চলছে দীর্ঘদিন ধরে৷ চলুন জেনে নিই, সাত বিকল্প উৎসের কথা যা ভবিষ্যতে আমাদের জন্য জ্বালানি হতে পারে৷
ছবি: Wattway/COLAS/Joachim Bertrand
মলমূত্র
আমরা প্রতিদিন যা বিসর্জন করছি তা থেকে বিকল্প জ্বালানি তৈরির পথে বিজ্ঞানীরা বেশ খানিকটা এগিয়েছেন৷ তাদের চেষ্টা সফল হলে শীঘ্রই হয়ত শরণার্থী শিবিরগুলোতে মলমূত্র দিয়ে তৈরি বিদ্যুৎ দিয়ে জ্বালানো হবে বিজলি বাতি৷ আর এভাবে একসময় আমাদের দৈহিক বর্জ্য আমাদের সবচেয়ে প্রিয় মিত্রে পরিণত হতে পারে৷
ছবি: Imago
শ্যাওলা খামার
শ্যাওলা দিয়ে জ্বালানি উৎপাদনের ধারণাটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে৷ বিজ্ঞানীদের চেষ্টা হচ্ছে ভবিষ্যতে এ সব জলীয় উদ্ভিদ দিয়ে বায়োফুয়েল তৈরি৷ তবে এখন পর্যন্ত গবেষণা থেকে যা জানা যাচ্ছে, তাতে এভাবে খুব বেশি জ্বালানি উৎপাদন সম্ভব হবে না৷
ছবি: picture-alliance/dpa/MAXPPP
মৃদু বাতাস থেকে জ্বালানি উৎপাদন
দক্ষিণ আফ্রিকার এক উদ্ভাবক তৈরি করেছেন এই পন্থা৷ ট্রেন স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের মতো জায়গায়, যেখানে ট্রেন এসে থামে কিংবা পাশ থেকে দ্রুত চলে যায়, সেখানে পাতলা এক ধরনের পাত বসিয়ে দিলেই হলো৷ এরপর ট্রেনের চলাচল থেকে পাওয়া মৃদু বাতাসকে কাজে লাগিয়ে সেগুলো তৈরি করবে জ্বালানি৷
ছবি: Charlotte Slingsby
কয়লার বদলে নারিকেল
বিশ্বের একটা বড় অংশে এখনো জ্বালানির মূল উৎস হিসেবে কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে৷ আর এর ফলে বন উজাড় অব্যাহত রয়েছে৷ নারিকেলের খোলস এবং শাঁস এক্ষেত্রে বিকল্প হতে পারে৷ সাধারণ কাঠকয়লার চেয়ে নারিকেলের খোলস বেশিক্ষণ জ্বলে৷ বিশেষ করে কেনিয়া এবং কম্বোডিয়ায় জ্বালানি হিসেবে নারিকেলের ভবিষ্যত উৎস৷
ছবি: Imago/fotoimedia
মাছের আঁশ এবং কাঁটা
মাছ ফ্যাক্টরির ফেলে দেয়া মাছের আঁশ এবং কাঁটা হতে পারে বিকল্প জ্বালানির উৎস৷ এটা পরিবেশের জন্যও সহায়ক, কেননা আবর্জনা হিসেবে এগুলো ফেলে দেয়া হয়৷ হন্ডুরাস, ব্রাজিল এবং ভিয়েতনামে আঁশ এবং কাঁটা দিয়ে জ্বালানি তৈরির গবেষণা কিছুটা আগালেও পর্যাপ্ত অর্থাভাবে তা গতি পাচ্ছে না৷
ছবি: AP
ডেস্কো থেকে জ্বালানি
ডান্স ফ্লোরের নীচে একটা বিশেষ সারফেস বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব৷ ইতোমধ্যে এই নিয়ে গবেষণা বেশ খানিকটা এগিয়েছে৷ শুধু ডান্স ফ্লোর নয়, ফুটবল স্টেডিয়াম, মেট্রো স্টেশনের মতো যেসব স্থানে মানুষের চলাচল অনেক বেশি, সেসব স্থানে এই সারফেস বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেতে পারে, যা দিয়ে কম-ভোল্টেজের বাতি জ্বালানো যাবে৷
ছবি: Daan Roosegaarde
রাস্তায় সোলার প্যানেল
হ্যাঁ, শুধু বাড়ির ছাদেই নয়, রাস্তার উপরও এভাবে ফটোভোল্টেইক সোলার প্যানেল বসানো সম্ভব৷ নেদারল্যান্ডসে ইতোমধ্যে সত্তর মিটার সোলার বাইক পথ তৈরি করা হয়েছে৷ আর ফ্রান্স এক হাজার কিলোমিটার রাস্তায় আগামী কয়েকবছরে সোলার প্যানেল বসানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে৷
ছবি: Wattway/COLAS/Joachim Bertrand
7 ছবি1 | 7
এখানে অসংখ্য এক্সপেরিমেন্ট হয়৷ অনেক বছর পর্যন্ত প্রবল চাপের মধ্যে সরাসরি ক্রিস্টাল পরীক্ষার কোনো উপায় ছিল না৷ এই পরীক্ষার মাধ্যমে চরম পরিস্থিতিতে অণুর আচরণ সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যায়৷ এই বিজ্ঞানীরা পার্টিকেল অ্যাক্সিলারেটর ফ্ল্যাশ ব্যবহার করছেন৷ সেটি ‘সফট' বা লং ওয়েভ এক্স-রে থেকে অত্যন্ত ঘন লেজার পাল্স বার করে৷