ভ্যাটিকান সিটিতে সেইন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় বড়দিনের আয়োজনে জড়ো হন ১০ হাজার মানুষ৷ ‘ভোগবাদে' না ঝুঁকে ভালোবাসা ও দানশীল হতে সবাইকে পরামর্শ দেন পোপ ফ্রান্সিস৷
বিজ্ঞাপন
বাইবেলের নিউ টেস্টামেন্ট অনুসারে বেথেলহেমের এক আস্তাবলে জন্ম নিয়েছিলেন যীশু৷ জন্মের পর তাঁকে একটি গামলায় রাখা হয়৷
পোপ মনে করিয়ে দেন, ‘‘সে গামলার কথা মনে করে আমাদের ভাবতে হবে, জীবনের দান পার্থিব ধনসম্পদ নয় ভালোবাসা, ভোজনবিলাস নয় দানশীলতা, জাঁকজমক নয় সরলতা৷''
তিনি বলেন, ‘‘মানবজাতির ইতিহাস, অতি লোভের ইতিহাস৷ এমনকি এখনো কেউ কেউ খাবারের বিলাসিতা করলেও বেশিরভাগ মানুষ বেঁচে থাকার জন্য প্রতিদিনের রুটি জোগাড় করতেই হিমশিম খায়৷''
৮২ বছর বয়সি ক্যাথলিক ধর্মগুরু ২০১৩ সালে পোপ হওয়ার পর থেকে দারিদ্র্য ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছেন৷
শনিবার রোমের গৃহহীনদের চিকিৎসায় সেইন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় একটি নতুন ক্লিনিক চালুর ঘোষণা দেয় ভ্যাটিকান৷ ২০১৫ সালে একই চত্বরে গৃহহীনদের জন্য একটি চুল কাটার দোকান ও একটি স্নানের জায়গা তৈরি করে দেয় ভ্যাটিকান৷
সোমবার পোপ ফ্রান্সিস ক্যাথলিকদের নিজেকে জিজ্ঞেস করতে বলেন, ‘‘যাদের খাবার নেই, তাঁদের সাথে কি আমরা আমাদের রুটি ভাগ করছি?''
গির্জায় শিশুদের ওপর যাজকদের যৌন নিপীড়ন নিয়ে জার্মান ক্যাথলিক চার্চের নতুন গবেষণায় কয়েক দশকের অপকর্ম বেরিয়ে এসেছে৷ অনেক চলচ্চিত্রেই কলঙ্কের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে৷ সে রকম চলচ্চিত্রগুলো নিয়ে সাজানো হয়েছে এই ছবিঘর৷
ছবি: Camino-Filmverleih
‘স্পটলাইট’ (২০১৬)
যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনের ক্যাথলিক চার্চগুলোতে শিশুদের যৌন নিপীড়নের ঘটনাগুলো তুলে আনছিলেন ‘বোস্টন গ্লোব’-এর প্রতিবেদকরা৷ তাদের বের করা সেই সত্য কাহিনি অবলম্বনেই এই জীবনীভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন টম ম্যাককারথি৷ অস্কারের ছয়টি বিভাগে মনোনীত হয় ‘স্পটলাইট’ এবং সেরা পিকচার ও চিত্রনাট্যের পুরস্কার লাভ করে৷ অপরদিকে ওই অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ২০০৩ সালে পুলিৎজার পুরস্কায় পায়৷
বিভীষিকাময় চিত্র তুলে ধরা চলচ্চিত্র৷ চিলির পরিচালক পাবলো লারাইন নির্মিত এই চলচ্চিত্রে একটি নির্জন বাড়িতে বসবাসরত প্রাক্তন চার যাজকের শিশুদের যৌন নিপীড়নসহ ভয়ানক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করতে দেখা৷ উচ্চ পর্যায়ের যাজক, যারা বিচার ও শাস্তি এড়াতে লুকিয়ে থাকতেন তাদের থেকে এই চলচ্চিত্র নির্মাণের রসদ পেয়েছিলেন পরিচালক৷
ছবি: Fabula
‘ফেরফেহলুং’ (২০১৫)
গ্যার্ড শ্নাইডার নির্মিত জার্মান চলচ্চিত্র ফেরফেহলুংয়ে (অসদাচরণ) একটি যৌন হয়রানির কেলেঙ্কারি নিয়ে তিন যাজক বন্ধুর মধ্যকার সম্পর্কের টানাপড়েন তুলে ধরা হয়েছে৷ তাদের একজনের বিরুদ্ধে কিশোরদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে এবং অপর দুজন তাদের পরিস্থিতিতে বিভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়৷ তারা যেভাবে এই সত্যের মোকাবেলা করে তাতে শুধু তাদের সম্পর্কই নয়, চার্চে তাদের ক্যারিয়ারের উপরও প্রভাব পড়ে৷
ছবি: Camino-Filmverleih
‘ফিলোমেনা’ (২০১৩)
স্টিফেন ফ্রেয়ার্স এই চলচ্চিত্রে চার্চের আরেক প্রাতিষ্ঠানিক হয়রানির চিত্র উন্মুক্ত করেন৷ যেসব নারীর কাছ থেকে বিবাহ বহির্ভূতভাবে জন্ম নেওয়া সন্তান কেড়ে নেওয়া হয় তাদের বেদনা তুলে ধরা হয়েছে এখানে৷ ফিলোমেনা লি নামের এমন দুর্ভাগা এক নারীর কাহিনি নিয়ে তৈরি করা হয় এই চলচ্চিত্র৷ ফিলোমিনার ছেলেকে তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় এবং এক সম্পদশালী অ্যামেরিকানের কাছে বিক্রি করা হয়৷
ছবি: Imago/Zuma Press
‘ব্যাড এডুকেশন’ (২০০৪)
হত্যা রহস্য ঘিরে এই চলচ্চিত্র তৈরি হলেও এখানে বোর্ডিং স্কুলে এক কিশোরের একজন ক্যাথলিক যাজকের দ্বারা যৌন নিপীড়নের বিষয়টি উঠে আসে৷ নিপীড়িত ওই শিশুকে পরে দেখা যায় হিজড়ার ভূমিকায়, যিনি নিপীড়ক ফাদারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন এবং তাকে ব্ল্যাকমেইল করেন৷
ছবি: Imago/United Archives
‘দ্য ম্যাগডালেনে সিস্টারস’ (২০০২)
ক্যাথলিক চার্চ পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান ম্যাগডানেলে আশ্রয় কেন্দ্র, ম্যাগডালেনে লন্ড্রিজ নামে পরিচিত, সেটি ‘পতিত’ নারীদের সংশোধনাগার হিসেবে ব্যবহৃত হত৷ পিটার মুলানের ২০০২ সালের এই চলচ্চিত্র ওই রকম একটি আশ্রয় কেন্দ্র ঘিরে, পরিবার থেকে পাঠানো চার তরুণীর প্রতি সিস্টারদের নিষ্ঠুরতা ও হয়রানির ঘটনা এখানে তুলে ধরা হয়েছে৷ এই ধরনের সর্বশেষ প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯৬ সালে বন্ধ করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/United Archives/Impress
‘প্রাইমাল ফিয়ার’ (১৯৯৬)
একজন প্রভাবশালী আর্চবিশপকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যার জন্য অভিযুক্ত হন ১৯ বছরের এক বালক৷ এর বিচার প্রক্রিয়ায় বেরিয়ে আসে, সবার সম্মানের চোখে থাকা ওই আর্চবিশপের নিপীড়নের স্বভাব ছিল এবং তিনি ছেলেদের যৌন সম্পর্কে বাধ্য করতেন৷