মধ্যযুগে ইউরোপীয়রা প্রকৃতির রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা ও ভেষজ হিসেবে জড়িবুটির উপযোগিতার কথা জানতেন৷ অতীতের হারানো জ্ঞানভাণ্ডার উদ্ধার করার চেষ্টা করছেন আধুনিক গবেষকরা৷
বিজ্ঞাপন
ইংরেজি নাম মেরিগোল্ড, এক গাঁদা জাতীয় ফুল৷ এই ফুলের পাঁপড়িতে এমন সব পদার্থ আছে, যা কাটাছেঁড়া বা প্রদাহ কমাতে পারে৷ জার্মানিতে এ ধরনের ফুল, ঘাসপাতা বা জড়িবুটিকে বলে ‘হাইলক্রয়টার' – রোগ সারানোর জড়িবুটি৷ যুগ যুগ ধরে মানুষেরা তাদের অভিজ্ঞতা থেকে এই সব জড়িবুটির কার্যকারিতা সম্পর্কে জ্ঞান সংগ্রহ করেছেন৷ কিন্তু সেই জ্ঞানভাণ্ডারের অনেকটাই আজ বিস্মৃতির অতলে৷
ভেষজশাস্ত্রের ইতিহাসবিদ ইওহান্নেস মায়ার বলেন, ‘‘সেটা একটা নতুন মহাদেশ আবিষ্কার করার মতো অনুভূতি৷ আমি যখন এক হাজার বছরের পুরনো একটা বই হাতে নেই, তখন মনে হয়, আমি যেন সরাসরি ইতিহাসে ডুব দিচ্ছি৷ হয়তো গত ৪০০ বছর ধরে কেউ এই বইটার পাতা খোলেনি, এটা ভাবলে গায়ে কাঁটা দেয়৷''
জড়িবুটি
চিকিৎসায় ঔষধি গাছের সাহায্য নিন
হাজারো বছর আগে থেকেই নানা অসুখ-বিসুখে ঔষধি গাছ ব্যবহৃত হয়ে আসছে৷ বর্তমান যুগেও এসব গাছের ব্যবহার আছে, তবে কিছুটা অন্যভাবে৷ সেরকম কিছু ঔষধি গাছের গুণাগুণ নিয়েই এই ছবিঘর৷
ছবি: Fotolia/Theißen
ঔষধি গাছ
হাজার বছর আগে থেকেই মানুষ অসুখ-বিসুখে ঔষধি গাছের পাতা, শেকড় ও রস ব্যবহার করে আসছে৷ সে সময় প্রায় সবাই বাড়ির আঙিনায় স্বাস্থ্যকর ফুল, গাছ আর লতা-পাতা লাগাতো৷ মাথা থেকে পা পর্যন্ত সব অসুখের জন্যই কোনো না কোনো ঔষধি গাছ রয়েছে৷
ছবি: Marina Lohrbach - Fotolia.com
হজম ক্ষমতা বাড়ায় মৌরি
মৌরি যে হজম শক্তি বাড়ায় সে কথা বোধ হয় আর কারো অজানা নেই৷ জার্মানিতে মৌরির চা খুবই জনপ্রিয়৷ খাবারের পরে অনেকেই এই চা পান করেন৷ শুধু বড়রা নয়, ভালো হজমের জন্য ছোট্ট শিশুদেরও মৌরি চা পান করানো হয়, যা শিশুদের জন্য আলাদাভাবে প্রক্রিয়াজাত করা থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মাথাব্যথায় পুদিনা পাতা
প্রাকৃতিক ওষুধে বিশেষজ্ঞ ডা. জেসিকা ম্যান্টেল বলেন, ভয়, উত্তেজনা কিংবা মানসিক চাপের কারণে মানুষের মাথাব্যথা হয়ে থাকে৷ তখন বেশিরভাগ মানুষই চট করে ট্যাবলেটের দিকে হাত বাড়ায়৷ তবে এসব ক্ষেত্রে পুদিনা পাতার চা বা কপালে তেল মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায় বলে জানান তিনি৷
ছবি: Fotolia/gaai
মাইগ্রেনে ল্যাভেন্ডার
মিষ্টি রং-এর ল্যাভেন্ডার ফুলও কিন্তু মাথাব্যথায় বেশ উপকারি৷ বিশেষ করে মাইগ্রেনের মতো জটিল মাথাব্যথায়৷ মাইগ্রেনের সময় ল্যাভেন্ডার ফুল নাকের সামনে কিছুক্ষণ ধরে রাখলে ফুলের উগ্র গন্ধ ব্যথা কমিয়ে বেশ আরাম দেয়৷
ছবি: DW / Nelioubin
কোমর ও হাড়ের ব্যথায় গোলমরিচ
অনেক সময় দেখা যায় ঘুম থেকে ওঠেই শরীরে কেমন যেন ব্যথা ভাব অনুভূত হয়৷ হতে পারে বিছানার তোশক বা অন্য কোনো কারণ৷ আবার কখনো কোনো কারণ ছাড়াই কোমর বা শরীর ব্যথা হতে পারে৷ এই অবস্থায় গোলমরিচের সাহায্য নিতে পারেন৷ কারণ গোলমরিচের ঝাঁঝ ব্যথা কমাতে সাহায্য করে৷
ছবি: Fotolia/macroart
রসুনের গুণ
পাশ্চাত্যের দেশগুলো থেকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে রসুনের ব্যবহার অনেক বেশি৷ রসুন যেমন কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে, তেমনি শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়৷ এছাড়া রসুন উচ্চরক্তচাপ কমায় এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া হিসেবে কাজ করে৷ জার্মানদের রান্নাঘরে আজকাল রসুনের ব্যবহার বাড়ছে৷ রসুনের ট্যাবলেট ছাড়াও পাওয়া যাচ্ছে রসুনের জুস৷
ছবি: Fotolia/Floydine
দারুচিনি
কোলেস্টেরেল কমাতে সাহায্য করে৷ এছাড়া এতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা শরীরের কোষগুলোকে সজীব রাখতে সাহায্য করে৷ হৃদরোগ প্রতিরোধেও দারুচিনি ভূমিকা পালন করে৷
ছবি: Fotolia/Floydine
লবঙ্গ
ফুলের মতো ছোট্ট সুন্দর লবঙ্গ রুচি ও খিদে বাড়ায় এবং কাশি দূর করে৷ লবঙ্গ শরীরে উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে এং দাঁতের ব্যথা সারাতে কার্যকর৷ লবঙ্গ তেলের রয়েছে জীবাণু ধ্বংসের ক্ষমতা যা অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের কাজ করে৷
ছবি: Fotolia/Theißen
8 ছবি1 | 8
গবেষকরা প্রায়ই অতীতের এমন সব তথ্যের খোঁজ পান, যা তাদের চমকে দেয়৷ বুনো হপ নামের একটি জড়িবুটি মধ্যযুগে ব্যবহার করা হত ব্যথা সারানোর কাজে – আজ তা সকলে ভুলে গেছে৷ মায়ারের ভাষ্যে, ‘‘আমরা দেখতে চাই, অতীতের এই জ্ঞানভাণ্ডার আজও কাজে লাগে কিনা৷ আমাদের আশা, আমরা সুপরিচিত জড়িবুটির সম্পূর্ণ নতুন ধরনের প্রয়োগের সন্ধান পাব, কেননা অতীতে এই সব জড়িবুটি অন্যান্য রোগ সারানোর কাজে ব্যবহার করা হত৷''
বিশ্বাস করা শক্ত, কিন্তু ল্যাভেন্ডারের মতো জড়িবুটি ভাইরাস, ফাংগাস বা ব্যাক্টেরিয়া রুখতে পারে৷ ইওহান্নেস মায়ার ও তাঁর সতীর্থরা দেখতে চান, অন্যান্য পুরনো ভেষজের কোনো অ্যান্টিবায়োটিক প্রভাব আছে কিনা৷
উদ্ভিদদের রোগ সারানোর ক্ষমতা হল তাদের আত্মরক্ষার কৌশলের অঙ্গ৷ মায়ার ব্যাখ্যা করলেন: ‘‘গাছেরা দৌড়ে পালাতে পারে না, কিন্তু মানুষের মতো তাদের একই শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়, অর্থাৎ জীবজন্তু, জীবাণু, ভাইরাস বা ফাংগাসের সঙ্গে৷ সেই কারণে উদ্ভিদরা এমন সব প্রতিষেধক উদ্ভাবন করেছে, যার কল্যাণে তারা আগ্রাসনের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারে৷ আমরা ঠিক সেই পদার্থগুলোকেই রোগ সারানোর কাজে ব্যবহার করতে পারি৷''
নানা অসুখে জার্মানদের প্রিয় ৫টি ঔষধি গাছ
নানা অসুখে ঔষধি গাছ বা লতা-পাতার ব্যবহার হয়ে আসছে সেই প্রস্তরযুগ থেকে৷ যা এই আধুনিক যুগেও অনেক অসুখ সারিয়ে তুলতে সক্ষম৷ জার্মানদের পছন্দের শীর্ষে থাকা ৫টি ঔষধি গাছের কথা পাবেন ছবিঘরে৷
ছবি: CC-BY-SA- Adampauli
ক্যামেলিয়া
আপনার প্রিয় ঔষধি গাছ কোনটি? ঠিক এই প্রশ্নটিই করা হয়েছিলো প্রায় দেড়হাজার জার্মানকে৷ ঔষধি গাছের মধ্যে জার্মানদের পছন্দের এক নম্বরে ছিলো ক্যামেলিয়া৷ ফুলকে ঔষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয় পেট ব্যথা বা বায়ু হলে৷ ত্বকের ইনফেকশন, ফুলে যাওয়া, স্বাসকষ্টেও উপকার হয়৷ তাছাড়া মুখের ভেতরে সংক্রমণ বা ব্যথায় ক্যামেলিয়া ফুলের চা পান, গার্গেল বা গড়গড় করলে উপকার পাওয়া যায়৷জার্মানদের প্রায় বাড়িতে ক্যামেলিয়া চা থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Pleul
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মৌরি
জার্মানদের পছন্দের তালিকায় মৌরির স্থান দ্বিতীয়৷ মৌরি পাকস্থলীর সমস্যা বা হজমে সাহায্য করে থাকে৷ মৌরির বীজ খাবারের রুচি বাড়ায়৷ যারা মৌরির বীজ চিবিয়ে খাওয়া পছন্দ করেন না তারা খাওয়ার পর এক কাপ মৌরির চা পান করতে পারেন৷ বলা বাহুল্য, জার্মানদের বাড়িতে বেশ কয়েক রকমের চা থাকে, অনেকেই মৌরি চা পান করেন৷
ছবি: Fotolia/Jiri Hera
তৃতীয় স্থান পেয়েছে অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী
ঘৃতকুমারীর রস শরীরকে ভেতর থেকে পরিষ্কার করে দেয়৷ এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বিরাট ভূমিকা পালন করে৷ তাছাড়াও এই গাছের রস রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, রক্তের চর্বি কমায় এবং ত্বকের সংক্রমণে ব্যবহার হয়ে থাকে৷ ত্বক বা চুলের জন্য ঘৃতকুমারীর ক্রিম, লোশন, শ্যাম্পু ইত্যাদি বেশ জনপ্রিয়৷
ছবি: Imago
গাঁদাফুল
ছোটবেলায় খেলার সময় হাত,পা কেটে গেলে রক্ত বন্ধ করতে গাঁদাফুল ব্যবহার করেছি জানি৷ জার্মানরাও ত্বকের ইনফেকশন বা ক্ষত সারাতে গাঁদাফুলের ঔষুধ ব্যবহার করে থাকে৷ গলা ব্যথা হলে গাঁদাফুলের ওপর ফুটন্ত পানি ঢেলে দিন আর এই পানি দিয়ে গার্গেল বা গড়গড় করুন আর ভেজাফুলগুলো কাপড়ে পেঁচিয়ে কিছুক্ষণ গলায় ধরে রাখুন, ব্যথা কমে যাবে৷ ডাইপার ব্যবহারের কারণে শিশুদের ত্বকের সমস্যায়ও গাঁদাফুলের ক্রিম ব্যবহার করা হয়৷
ছবি: imago/blickwinkel
বিছুটি
বিছুটি পাতার ঔষুধ ব্যবহার করা হয় হয় মূত্রনালীর সংক্রমণে, পাশাপাশি বিছুটি পাতার চা পান করলে তাড়াতাড়ি মূত্রনালীর পথ পরিষ্কার হয়ে যায়৷ তাছাড়া বিছুটি পাতা বাতের ব্যথায়ও বেশ উপকারী৷ পুরুষদের প্রস্টেট বড় হয়ে যাওয়ার অস্বস্তি কমায় বিছুটি গাছের শিকড়ের রস৷
ছবি: CC-BY-SA- Adampauli
5 ছবি1 | 5
মধ্যযুগের ‘চা'
হার্বাল টিবা ইনফিউজন প্রস্তুতকারক মার্টিন বাউয়ার কোম্পানির পরীক্ষাগারে রসায়নবিদরা মধ্যযুগের প্রেস্ক্রিপশান থেকে যতদূর নিখুঁতভাবে সম্ভব তাদের জড়িবুটির চা তৈরি করেন৷ এই চায়ের উপাদান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে, শত শত বছর আগেও মানুষজন উদ্ভিদের অ্যান্টিবায়োটিক ক্ষমতার কথা জানতেন৷
জার্মানির হার্বাল টি বিশেষজ্ঞদের কদর দুনিয়া জুড়ে৷ সদ্য তাঁদের উপদেষ্টা হিসেবে ইস্তানবুল থেকে ডাক এসেছে৷ আরব পণ্ডিত ইবনেসিনা জড়িবুটি চিনতেন; তাঁর সম্মানে ইস্তানবুলে যে ভেষজ জড়িবুটির বাগান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, তা গড়ে তোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জার্মান বিশেষজ্ঞদের৷ ইবনেসিনা হাজার বছরের বেশি আগে যে সব জড়িবুটি ব্যবহার করতেন, তা আজ সুলতানের প্রাসাদের পাশেই দেখতে পাওয়া যায়৷ মায়ার বললেন, ‘‘আরব ও ইউরোপীয় ভেষজশাস্ত্রের মধ্যে অনেক মিল আছে৷ উভয় ঐতিহ্যের ভিত্তি হল গ্রিক চিকিৎসাবিদ্যা৷ উভয় প্রথার পণ্ডিতদের মধ্যে বহুকাল ধরে আদানপ্রদান চলেছে৷ আমাদের নিজেদের ঐতিহ্য বোঝার জন্য ইবনেসিনা ও অন্যান্য আরব পণ্ডিতেরা অতীব গুরুত্বপূর্ণ৷''
ইওহানেস মায়ার ও তাঁর সতীর্থরা অতীতের জ্ঞানভাণ্ডারকে বর্তমানে কাজে লাগানোর নতুন নতুন পন্থার সন্ধানে আছেন৷ নানা ধরনের নতুন হার্বাল টি তৈরি করেছেন তাঁরা৷ প্রকৃতির রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা বোঝার জন্য সুদূর অতীতে নজর দেওয়াটা দৃশ্যত তাদের কাজে লেগেছে৷
মেয়েদের গোপন সমস্যায় ঔষধি গাছ
প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মেই মেয়েদের কিছু সমস্যা ঘুরে ঘুরে আসে প্রতিমাসেই৷ তখন শরীর যত না খারাপ থাকে, তার চেয়েও মেজাজ থাকে বেশি খারাপ৷ সে সময়ে সাহায্য করতে পারে এমন কিছু ঔষধি গাছের কথা জানিয়েছেন এক জার্মান বিশেষজ্ঞ৷
ছবি: Colourbox/L. Dolgachov
নানা সমস্যা
পিরিয়ড বা মাসিক হওয়ার আগে, পরে, চলাকালীন অবস্থায় এবং পিরিয়ড বন্ধ হওয়ার পরও অনেকের মাথা ব্যথা, মাইগ্রেন, কোমর ব্যথা, পা ব্যথা, বমিভাব, ওজন বাড়া, খিঁচুনি, মেজাজ খারাপ, ঘুমের ব্যঘাত, বার বার টয়লেটে যাওয়া, ত্বকের সমস্যা, নার্ভাসনেস – এ ধরণের নানা সমস্যা হয়ে থাকে, মূলত শরীরের হরমোনজনিত কারণে৷
ছবি: Fotolia/Picture-Factory
হরতকি বা ‘সেন্ট জন্স ওয়ার্ট’
পিরিয়ডের সময় অনেকেই বিষন্নতায় ভোগেন, যা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় প্রমাণিত৷ তাই এক চামচ হরতকি বা হরিতকি, জার্মানে যা কিনা ‘ইয়োহানেস ক্রাউট’, ১৫০ মিলি লিটার ফুটন্ত পানিতে ঢেলে পাঁচ থেকে দশ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন৷ এই চা সকালে ও রাতে এক-দুই কাপ পান করুন, দেখবেন শরীরকে কেমন ঝরঝরে হয়ে গেছে! এই ঔষধি পাতার তৈরি ট্যাবলেট, ক্যাপস্যুল এবং রস বাজারে পাওয়া যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Hummel
পা ব্যথা, খিঁচুনিতে ক্যামেলিয়া
মাসিকের সময় পা দুটোয় কেমন যেন ব্যথার ভাব বা খিঁচুনির মতো লাগে, প্রায় সকলেরই৷ পরিপাক নালিতেও অনেক সময় সমস্যা দেখা দেয়৷ এক্ষেত্রে ১৫০ মিলি লিটার ফুটন্ত পানিতে তিন চামচ ক্যামেলিয়া ফুল ছেড়ে দিয়ে পাঁচ থেকে দশ মিনিট ঢেকে রাখুন৷ এমন ক্যামেলিয়া চা প্রতিদিন তিন-চার কাপ পান করলে খুব আরাম হয়৷ ক্যামেলিয়ার গুণের কথা অবশ্য অনেকেরই জানা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Pleul
নিসিন্দা গাছ বা ‘চেইস্ট ট্রি’
অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সময় কেমন যেন এক অস্থিরতা কাজ করে শরীর, স্তনে ও মনে৷ এ থেকে মুক্তি পেতে সেবন করুন নিসিন্দা গাছের নির্যাস থেকে তৈরি ট্যাবলেট, ক্যাপস্যুল বা ড্রপ৷ জার্মান ভাষায় একে বলে ‘ম্যোন্শফেফার’৷ তবে এটি কমপক্ষে তিন মাস নিয়মিত খেতে হবে৷ তবে যাঁদের সবসময়ই অনিয়মিত পিরিয়ড হয়, তাঁদের স্ত্রী বিশেষজ্ঞকে দেখানোই শ্রেয়৷
ছবি: imago/blickwinkel
মেনোপজে সালবাই বা ‘সেইজ’
যাঁদের বয়স ৩৫ বা তার বেশি, তাঁদের মেয়েলি সমস্যা বা মেনোপজ-এর সময় সালবাই পাতা বেশ উপকারী৷ সালবাই বা সেইজ পাতা, বাংলাদেশে যা বাবুই তুলসী বলে পরিচিত, অন্যান্য চায়ের মতোই ফুটন্ত পানিতে একটু বেশিক্ষণ, অর্থাৎ দশ থেকে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন এবং প্রতিদিন তিন থেকে চার কাপ পান করুন৷ এমনটা করলে উপকার হবেই, জানান ডা. ইয়োর্গ গ্রুনভাল্ড৷
ছবি: Fotolia/steheap
সয়াবিন বা সয়ার বিচি
মাসিক বা মেনোপজ-এর সমস্যায় সয়াবিন, সয়ার বিচি, বিভিন্ন ধরণের ডাল খুবই উপকারী৷ এশিয়ার দেশগুলোতে মুগের ডাল বা অন্যান্য ডালের বিচি নিয়মিত খাওয়া হয় বলে এশীয় নারীদের এ ধরণের সমস্যা ইউরোপীয় বা অ্যামেরিকানদের তুলনায় অনেক কম হয়ে থাকে৷ তাছাড়া ডালে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন৷ তাই ডাল সকলের জন্যই উপকারী৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আয়ত্বে রাখুন
মাসিকের আগে, পরে বা চলাকালীন মেয়েরা কিছুটা সচেতন থাকলে শরীর ও মন দুটোই ভালো রাখা সম্ভব৷ এর মধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা একটা বড় শর্ত৷ এছাড়া পিরিয়ড প্রতিমাসে হবেই৷ তাই মাসিকের কথা ভুলে গিয়ে মনকে নিজের আয়ত্বে রাখার চেষ্টা করতে হবে৷ এ কথা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার বিশেষজ্ঞ ও গবেষক ডা. ইয়োর্গ গ্রুনভাল্ড৷