জার্মানিতে গত মাসে দু'টি হামলার সঙ্গে আশ্রয়প্রার্থীরা জড়িত ছিলেন৷ তবে এর জন্য চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের শরণার্থী নীতি দায়ী বলে মনে করেন না অধিকাংশ জার্মান নাগরিক৷
বিজ্ঞাপন
বার্লিনভিত্তিক গবেষণা পরিচালনাকারী সংস্থা ‘ফোর্সা' ২৮ ও ২৯ জুলাই এক হাজারেরও বেশি জার্মান নাগরিকের উপর একটি জরিপ করেছে৷ এর মধ্যে ৬৯ শতাংশ ঐ হামলাগুলোর জন্য ম্যার্কেলের শরণার্থী নীতি দায়ী নয়৷
এই দুই হামলার মধ্যে একটি ছিল গত ২৪ জুলাইয়ের৷ সেদিন এক সিরীয় শরণার্থী আন্সবাখ শহরে একটি ফেস্টিভ্যালের বাইরে নিজের শরীরে থাকা বোমার বিস্ফোরণ ঘটান৷ এই ঘটনার কদিন আগে সিরীয় ঐ শরণার্থীর আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল এবং তাকে বুলগেরিয়ায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল৷
এর ছয়দিন আগে আফগানিস্তান বা পাকিস্তান থেকে আসা ১৭ বছরের এক সঙ্গিহীন শরণার্থী ভ্যুয়র্ত্সবুর্গে একটি ট্রেনে কুড়াল দিয়ে হামলা চালিয়ে পাঁচজনকে আহত করে৷ পরে পুলিশের গুলিতে ঐ ব্যক্তি নিহত হয়৷
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ জার্মানির মিউনিখের অলিম্পিয়া শপিং সেন্টারে হামলা চালায় সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীরা৷ শুরু করে গুলিবর্ষণ৷ ছবিঘরে থাকছে হামলার বিশেষ কিছু ছবি৷
ছবি: Reuters/dedinac/M. Müller
ঘটনার শুরু
বিপণিবিতানের ম্যাকডোনাল্ড’স-এ ৬টার দিকে প্রথম গুলিবর্ষণ হয় বলে জানা গেছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/S. Widmann
হেলিকপ্টার টহল
অলিম্পিয়া শপিং সেন্টারে সম্ভবত এখনো অনেক কর্মী আটকা পড়ে আছে৷ তবে পুলিশ জানিয়েছে, যে মিউনিখের আকাশে একটি মহড়ার আওতায় অনেক হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেছে।
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Balk
সবাইকে ঘরে থাকার ডাক
ঘটনার পরপরই মিউনিখ কর্তৃপক্ষ শহরবাসীকে ঘর থেকে বের না হওয়ার ডাক দিয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
আহত ও নিহত
স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে জার্মানির অনেক গণমাধ্যম জানিয়েছে, অনেকে নিহত ও আহত হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Hoppe
ঘটনাস্থলের আশপাশের রাস্তা বন্ধ
অলিম্পিয়া শপিং সেন্টারের আশপাশ ঘিরে রেখেছে পুলিশ৷ আশপাশের সব সড়ক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ এই এলাকায় যাতে জনসাধারণ না আসে সেজন্য বার বার অনুরোধ করা হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Gebert
বন্ধ রেল ও বাস সার্ভিস
ঘটনার পর মিউনিখে ট্রেন, ট্রাম ও বাসের একাধিক লাইন বন্ধ করে দিয়েছে পরিবহন কর্তৃপক্ষ৷ এতে ট্রেন স্টেশনে আটকা পড়েছে অনেক মানুষ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Balk
লাইভ ফুটেজ না দেখানোর অনুরোধ
পুলিশের অভিযানের কোন লাইভ ভিডিও ফুটেজ না দেখাতে গণমাধ্যমে অনুরোধ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Balk
আততায়ী তিন জন
পুলিশ জানিয়েছে, অস্ত্রধারী তিনজনকে গুলি চালাতে দেখা গেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Gebert
নিখোঁজদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা
মিউনিখ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি নোটিস জারি করা হয়েছে৷ কারো স্বজনের খোঁজ পাওয়া না গেলে +৪৯৮০০৭৭৬৬৩৫০ এই নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Gebert
ব্রিটেনের সতর্কতা
হামলার পর যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জার্মানিতে অবস্থানরত নাগরিকদের মিউনিখের ওই এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে৷
ছবি: Reuters/dedinac/M. Müller
10 ছবি1 | 10
গত বছর শুরু হওয়া শরণার্থী সংকটের পর থেকে জার্মানি প্রায় দশ লক্ষেরও বেশি শরণার্থী নিয়েছে৷ বিশ্লেষকদের ধারণা, এই শরণার্থীদের সঙ্গে আইএস সমর্থনকারী অনেকে ইউরোপে প্রবেশ করে থাকতে পারে৷
ফোরসার জরিপে দেখা যাচ্ছে, ২৮ শতাংশ জার্মান হামলার জন্য ম্যার্কেলের শরণার্থী নীতিকে দায়ী করেছেন৷ এর মধ্যে ৭৮ শতাংশই অভিবাসনবিরোধী দল এএফডি-র সমর্থক৷ শরণার্থী সংকটের পর এই দলটির জনপ্রিয়তা বেড়েছে প্রায় ১২ শতাংশ৷
হামলাকারীদের দাফন নিয়ে প্রশ্ন
আন্সবাখ ও ভ্যুয়র্ত্সবুর্গে হামলাকারী দু'জনই মুসলিম৷ তাদের মরদেহ কোথায় এবং কীভাবে দাফন করা হবে তা নিয়ে সমস্যায় পড়েছে কর্তৃপক্ষ৷ ‘সেন্ট্রাল কমিটি অফ মুসলিমস ইন জার্মানি'-র নেতা মোহাম্মদ আবু আল কোমসান জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএকে বলেছেন, হামলাকারীদের জন্য ইসলামি রীতিতে দাফন নয়, কবরস্থানেও তাঁদের স্থান দেয়া হবে না৷
ইউরোপ জুড়ে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা
ব্রাসেলসে একাধিক সন্ত্রাসী হামলার পর ইউরোপ জুড়ে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা৷ বিশেষ করে বিমানবন্দর, ট্রেন স্টেশন, সীমান্ত এবং বিভিন্ন শহরের রাস্তায় পুলিশের বাড়তি উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/P. Golovkin
‘যুদ্ধে ইউরোপ’
ফরাসি প্রধানমন্ত্রী তো বলেই দিলেন, ইউরোপ এখন ‘যুদ্ধে আছে’৷ ব্রাসেলসের ঘটনার পর ইউরোপীয় নেতারা জরুরি নিরাপত্তা বৈঠক করেছেন এবং সর্বত্র নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি বাড়িয়েছেন৷ তাদের সঙ্গে রয়েছেন বোমা বিশেষজ্ঞ, প্রশিক্ষিত কুকুর এবং সাদা পোশাকের গোয়েন্দারা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Roessler
সব বড় বিমানবন্দরে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে
লন্ডন, প্রাগ, অ্যামস্টারডাম, ভিয়েনাসহ ইউরোপের সব বিমানবন্দরে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে৷ লন্ডনের প্রধান বিমানবন্দর, হিথ্রোতে, পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে৷ পাশাপাশি, লন্ডনসহ বিভিন্ন শহরেও বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/epa/A. Rain
ডাচ পুলিশের সতর্ক অবস্থান
নেদারল্যান্ডসের অ্যামস্টারডাম বিমানবন্দরে নিরাপত্তা দিচ্ছে ডাচ মিলিটারি পুলিশ৷ ব্রাসেলস বিমানবন্দরে হামলার পরপরই সেখানকার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়৷ ব্রাসেলসে মঙ্গলবার একাধিক বিস্ফোরণে বেশ কয়েকজন নিহত এবং প্রায় দুই শত মানুষ আহত হয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/epa/E. Elzinga
ব্রিটেনে সতর্কতা
লন্ডনের বিমানবন্দরে পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Getty Images/J. Mansfield
ফ্রাংকফুর্ট বিমানবন্দরে বাড়তি পুলিশ
জার্মান কর্তৃপক্ষও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা বাড়িয়েছে৷ বিশেষ করে বিমানবন্দর, ট্রেন স্টেশন আর বেলজিয়াম, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, লুক্সেমবুর্গ সীমান্তে পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে৷ তবে পুলিশের সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি চোখে পড়েছে জার্মানির সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর ফ্রাংকফুর্ট বিমানবন্দরে৷ শহরটির ট্রেন স্টেশনেও পুলিশ অবস্থান নিয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/C. Stache
রেল যোগাযোগ সাময়িক বন্ধ
বেলজিয়ামে হামলার পর জার্মানির জাতীয় ট্রেন ব্যবস্থা, ডয়চে বান, ব্রাসেলসের সঙ্গে তাদের উচ্চগতির ট্রেন সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়৷ ব্রাসেলসের বদলে জার্মানির সীমান্তের শহর আখেনে ট্রেনগুলো থামানো হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. A. Gekiere
প্যারিসে আবারো উচ্চ সতর্কর্তা
প্যারিসে গত নভেম্বর সন্ত্রাসী হামলায় অনেকে প্রাণ হারান৷ মঙ্গলবার ব্রাসেলসে হামলার পরপরই তাই সেখানকার নিরাপত্তা আরো বাড়ানো হয়৷ প্যারিসের মূল বিমানবন্দর এবং সংশ্লিষ্ট ট্রেন স্টেশন দু’টিতে নিরাপত্তা বাহিনীর পুরো দল নিয়োগ করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/epa/E. Laurent
রাশিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুর্নমূল্যায়ন
রাশিয়ার যোগাযোগমন্ত্রী মাক্সিম সকোলভ জানিয়েছেন, ব্রাসেলসের ঘটনার পর সেদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও পুর্নমূল্যায়ন করা হবে৷ যদিও রাশিয়া আগে থেকেই বেশ সতর্ক৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/P. Golovkin
8 ছবি1 | 8
ক'দিন আগে ফ্রান্সে এক যাজককে হত্যা করা দুই মুসলিম হামলাকারীকে দাফন করতে অস্বীকৃতি জানান সেখানকার মুসলিম নেতারা৷