নিজের অধিকারের লড়াইয়ে গানকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার নতুন কিছু নয়৷ সে ধারাতে নতুন মাত্রা যোগ করলো সৌদি নারীদের এই ভিডিও৷
বিজ্ঞাপন
পুরুষ অভিভাবকের অধীনে নারীদের পথ চলার ইঙ্গিত দিয়ে শুরু হয় মিউজিক ভিডিওটি৷ তবে এর পরই নেকাবে মুখ ঢাকা থাকলেও, রঙীন পোষাক পরা নারীদের দেখা যায় স্কেটিং করছে, বাস্কেটবল খেলছে, পার্টিতে মজা করছে৷
আরবি ভাষায় এ গানের মূল ভাষ্য, ছেলেরা নিশ্চিহ্ন হোক, তারা আমাদের মন ভাঙে/তারা কেউই স্বাভাবিক নয়, তারা অসুস্থ৷ মিউজিক ভিডিওটি পরিচালনা করেছেন মাজেদ আল-ইসা৷ এ বছরের শুরুর দিকে মিউজিক ভিডিও আপলোড করা হয়৷ দারুণ উপভোগ্যভাবে পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় সৌদি নারীদের হতাশার বিষয়টি তুলে আনা এ গানটি সাথে সাথেই পায় বিপুল জনপ্রিয়তা৷ লক্ষ লক্ষ ‘লাইক' আর ‘কমেন্ট' নিয়ে বছর শেষেও মিউজিক ভিডিওটি সমানভাবে আলোচিত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে৷ সম্প্রতি নারীরা গাড়ি চালানোর অধিকার পেলেও রক্ষণশীল মুসলিম সমাজে এখনো তা দেখা হয় নিন্দার চোখে৷
আরএন/ডিজি
সৌদি আরবে বক্সিং শিখছেন নারীরা
সৌদি আরবের নারীরা অন্যান্য দেশের নারীদের মতো অনেক কিছু করতে পারেন না৷ তবে সম্প্রতি এক সৌদি নারী অন্য মেয়েদের বক্সিং প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু করেছেন৷
জেদ্দায় জন্ম নেয়া হালা আল-হামরানি তাঁর শহরে ‘এফএলএজিবক্সিং’ নামে একটি ব্যক্তিগত জিম (শরীরচর্চা কেন্দ্র) চালু করেছেন৷ এফএলএজি মানে হচ্ছে ‘ফাইট লাইক এ গার্ল’৷ সেখানে মেয়েদের বক্সিং শেখান তিনি৷
স্কুলে পড়ার সময় ১২ বছর বয়সে প্রথম মার্শাল আর্টের প্রতি আকৃষ্ট হন আল-হামরানি৷ এরপর যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে গিয়ে বক্সিংয়ের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন৷ সেখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রশিক্ষক হিসেবে স্বীকৃতি পান তিনি৷ ফলে সৌদি আরবের প্রথম নারী বক্সিং প্রশিক্ষক হচ্ছেন আল-হামরানি৷
ন্যাশনাল জিওগ্রাফি চ্যানেলে আল-হামরানির কাজ নিয়ে প্রতিবেদন প্রচারিত হয়েছে৷ তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যেও তাঁর কর্মকাণ্ডের খবর বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে৷ ফলে অন্য অনেক মেয়েও এখন বক্সিংয়ের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে৷
এখন নিজের ব্যক্তিগত জিমে মেয়েদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন আল-হামরানি৷ তবে ভবিষ্যতে সৌদি সরকার মেয়েদের জন্য জিম প্রতিষ্ঠার লাইসেন্স বা অনুমতি দিলে দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও জিম খোলার ইচ্ছা আছে তাঁর৷
জেদ্দা শহরের যেখানে জিমটি অবস্থিত তার আশেপাশের বেশিরভাগ মানুষ তাঁর কাজ সমর্থন করেন বলে মনে করেন আল-হামরানি৷ অবশ্য রক্ষণশীল মানুষরাও আছেন, যাঁরা এর বিরোধিতা করেন৷ তবে এসব বিরোধিতা তাঁকে দমাতে পারেনি৷
২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিকে সৌদি নারীরা প্রথমবারের মতো অংশ নেয়৷ ভবিষ্যতে সৌদি নারী বক্সারদের আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে সহায়তা করতে চান আল-হামরানি৷
আল-হামরানি বলেন, একটা সময় ছিল যখন সৌদি আরবে মেয়েদের বেড়ে ওঠার সময় খেলাধুলা করাটাকে ততটা গুরুত্ব দেয়া হত না৷ তবে দিন বদলাচ্ছে৷ এখনকার মেয়েরা মনে করছে, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য নিয়মিত খেলাধুলা প্রয়োজন৷ তাই তারা বক্সিংসহ অন্যান্য খেলার প্রতি আগ্রহী হচ্ছে৷