1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অধিকার নিয়েই ফিরতে চান রোহিঙ্গারা

৩০ আগস্ট ২০১৮

এক বছর আগে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা৷ বাংলাদেশে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছেন তাঁরা৷ নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার আগে মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি চান তাঁরা৷

Bangladesch Umweltschäden durch Rohingya Flüchtlingslager
ছবি: DW/Jibon Ahmed

গত বছরের ২৫ আগস্ট নিরাপত্তা চৌকিতে ‘দ্য আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’ বা আরসা’র হামলাকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা বিরোধী অভিযান চালায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী৷ সেনাবাহিনীর ভয়াবহ এ নির্যাতনকে মানবাধিকার লংঘন বলে তদন্তে জানিয়েছে জাতিসংঘ৷ এটিকে জাতিগত নিধন বলেও আখ্যা দিয়েছে সংস্থাটি৷ 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মিয়ানমার সরকার মূলত রাখাইন অঞ্চল থেকে রোহিঙ্গাদের উৎখাত করতেই এ নারকীয় হামলা চালিয়েছে৷কয়েক শতাব্দী ধরে এ অঞ্চলে বসবাস করে আসা রোহিঙ্গারা নিজেদের মাতৃভূমিতে নাগরিকত্বের মর্যাদা পায়নি৷ তাঁদের নেই কোনো সামাজিক ও রাজনৈতিক সুবিধাও৷ আর এসকল সুবিধা নিশ্চিত না হলে দেশটিতে ফিরে যেতে চান না তাঁরা৷ মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে এখন তাঁদের দাবি একটাই - দেশটির অন্যসব জাতিগোষ্ঠীর মতো সমান অধিকার না পেলে, নির্যাতিত হওয়ার আশংঙ্কা থেকেই যাবে তাঁদের৷ সে ক্ষেত্রে প্রথমে তাঁরা চান পূর্ণ অধিকার, তারপর দেশে ফিরে যাওয়া৷

সমান অধিকার চাই - মো. সেলিম

02:12

This browser does not support the video element.

কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া একজন শরণার্থী মো. সেলিম৷ এখানে আসার আগে মিয়ানমারে একটি আর্ন্তজাতিক দাতা সংস্থায় চাকরি করতেন তিনি৷ দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা সেলিম ডয়চে ভেলেকে জানান, মিয়ানমার সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকায় তিনি আর পড়াশুনা করতে পারেননি৷ রাখাইন রাজ্যে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সেলিম বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিকভাবে আমরা রোহিঙ্গা নামে স্বীকৃত৷ আমাদের পূর্বপুরুষরাও বলেছে যে, আমরা রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর৷’’ 

নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে সেলিম বলেন, বাংলাদেশে তাঁরা থাকতে চাননা৷ এখানকার জাতীয় পরিচয়পত্র নেয়ার কোনো ইচ্ছাও তাঁদের নেই৷ ‘‘মিয়ানমারে অন্যসব জাতিগোষ্ঠী যে অধিকার ভোগ করছে, আমরা সেই অধিকার চাই৷ আমাদের অধিকার নিশ্চিত না করে মিয়ানমারে পাঠানোর চেয়ে আমাদের এখানে গুলি করে মেরে ফেলা হোক, ’’ বলেন তিনি৷মিয়ানমারে ফেরত যাবার আগে নিজেদের অধিকার ফিরে পাওয়া বিষয়ে একই কথা বললেন মসি উল্লাহ৷ নিজ এলাকার সাবেক এ চেয়ারম্যান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের প্রথম দাবি হলো, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব দেয়া৷ এটা যদি তারা না করে তাহলে আমাদের পক্ষে ওখানে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়৷’’ নিজেদের উপর সেনাবাহিনীর করা অত্যাচারের বর্ণনা দিতে গিয়ে মসি উল্লাহ বলেন, ‘‘আমরা নির্দোষ, কিন্তু তারা আমাদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে, আমাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে ফেলেছে৷ আর কোনো ক্ষতিপূরণ না দিক, তারা আমাদের বাড়িঘর যদি তৈরি না করে দেয় আমরা কোথায় গিয়ে থাকব,’ বলেন তিনি৷ 

প্রথম দাবি হলো রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব দেয়া: মসিউল্লাহ

01:35

This browser does not support the video element.

রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের ইতিহাস অনেক পুরনো৷ ২০১২ সালে রাখাইন রাজ্যে স্থানীয় বৌদ্ধ এবং রোহিঙ্গাদের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন প্রাণ হারান৷ তখন কয়েক হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং ইন্দোনেশিয়ায় চলে যান৷ ২০১৬ সালের অক্টোবরে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা মিয়ানমারের বেশ কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা চালিয়ে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে৷ নিরাপত্তা বাহিনী তখন এ অঞ্চলটিতে ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ অভিযান চালালে কমপক্ষে ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়৷ সেই সময় মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গাদের বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করেছিল বলে জানিয়েছে একাধিক মানবাধিকার সংস্থা৷

ন্যায্য অধিকার দিলে আমরা মিয়ানমারে ফেরত যেতে পারব - রফিক

01:12

This browser does not support the video element.

জাতিসংঘ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের বিশ্বের অন্যতম নিপীড়িত গোষ্ঠী হিসেবে আখ্যা দিয়েছে৷ মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে আসা অভিবাসী বলে মনে করে৷ এ অজুহাতে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব না দেয়া সহ সামাজিক ও অর্থনৈতিক সুবিধা প্রাপ্তি থেকেও বঞ্চিত করে আসছে মিয়ানমার সরকার৷ যে কারণে নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার আগে নাগরিকত্ব সহ সব ধরণের সুবিধা পাওয়ার নিশ্চয়তা চায় তাঁরা৷

কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা রফিক জানায়, ‘‘রোহিঙ্গা বলে আমাদের যে অধিকার আছে, তা দেয়া হলেই ফেরত যাব আমরা৷ এর আগেও মিয়ানমার সরকার আমাদের সব ধরণের অধিকার প্রদান করবে বলে আশ্বস্ত করেছিল, কিন্তু তারা তা দেয়নি, ছলচাতুরী করেছে৷’’ 

বাংলাদেশে থাকা অবস্থাতেই এই ন্যায্য অধিকারের দাবি জানিয়েছেন তিনি৷

জীবন আহমেদ/আরআর
 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ