ঢাকার বাড্ডা এলাকায় তুবা গ্রুপের পোশাক শ্রমিকরা বেতন, ভাতার দাবিতে অনশন অব্যাহত রেখেছেন৷ তিনদিনের অনশনে ১৫ জন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন৷ তবে তাঁদের দাবি পরিশোধে বিজিএমইএ বা সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি৷
বিজ্ঞাপন
তুবা গ্রুপের ১,৬০০ শ্রমিক ঈদের আগে প্রতিশ্রুত বকেয়া বেতন-ভাতা না পেয়ে সোমবার থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন৷
ঈদের দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুইজন শ্রমিক অসুস্থ হওয়ার পর বুধবার আরো ১৩ জন অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ তাঁদের মধ্যে চারজনকে মগবাজার কমিউনিটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে৷ আর বাকিদের কারখানার সামনে এবং ভিতরে রেখেই স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে৷
সংহতি প্রকাশ
এদিকে আন্দোলনরত শ্রমিকদের দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে অনশনে যোগ দিয়েছে বামধারার বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা৷ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির উপদেষ্টা মঞ্জুরুল আহসান খান, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী, ইউনাইটেড কমিউনিষ্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের কেন্দ্রীয় সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু অনশনরত শ্রকিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন৷
পোশাক শ্রমিকদের অনিশ্চিত ভবিষ্যত
বাংলাদেশে পোশাক শ্রমিকদের কর্ম পরিবেশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আমাদের ঢাকা প্রতিনিধি হারুন উর রশীদ স্বপন সম্প্রতি গিয়েছিলেন একটি পোশাক কারখানায়৷ তাঁর অভিজ্ঞতা ছবিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই ছবিঘরে৷
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan
অনিশ্চিত ভবিষ্যত
ঢাকার পূর্ব রামপুরার টিএম গার্মেন্টস-এর এই কর্মীরা জানেন না তাঁদের ভবিষ্যত৷ কারণ তাঁদের এখানে শ্রম আইন এবং মজুরি বোর্ড পুরোপুরি কার্যকর নেই৷ তাঁদের অগ্নিনিরাপত্তাও পর্যাপ্ত নয়৷ এমনকি ভবনটিও পুরনো৷
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan
সংসার চালানো কষ্টকর
টিএম গার্মেন্টস-এর পোশাক কর্মী সুফিয়া বেগম যে বেতন পান তা দিয়ে সংসার চালান কষ্টকর৷ তবুও তার এরচেয়ে বেশি কিছু করার সুযোগ নেই৷
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan
সর্বনিম্ন বেতনও পান না
সর্বনিম্ন বেতন ৩০০০ টাকা দেয়ার কথা থাকলেও রাহেলা আক্তার তা পান না৷ তাঁকে বেতন দেয়া হয় ২৫০০ টাকা৷ সে নতুন বলেই তাঁকে নাকি কম বেতন দেয়া হয়৷
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan
নতুন, তাই বেতন কম
সুমি বেগমেরও বেতন অনেক কম৷ কারণ তিনিও নতুন৷ খরচে পোষায় না বলে তাঁরা পাঁচজন মিলে একটি রুম ভাড়া নিয়ে থাকেন৷
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan
গেটে তল্লাশি
এই পোশাক কর্মীদের গার্মেন্টস-এ প্রবেশ এবং বের হওয়ার আগে গেটে তল্লাশী চালানো হয়৷ আর ‘ফ্রেশ’ হতে গেলেও বলে যেতে হয়৷ আর ফিরতে যদি একটু দেরি হয়, তাহলে মেলে গালমন্দ৷
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan
ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ
ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করেন এঁরা৷ তাপ ওপর মেশিনপত্রও পুরনো৷ কাজ করতে গিয়ে পুরনো মেশিনপত্রের কোনো ক্ষতি হলে কখনো কখনো জরিমানাও করা হয় তাঁদের৷
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan
রঙিন স্বপ্ন
রঙিন পোশাক আর রঙিন স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় আসেন কুড়িগ্রামের মৌসুমী৷ পোশাক কারখানায় কাজ নেয়ার পর ধীরে ধীরে তাঁর স্বপ্ন ফিকে হয়ে আসছে৷
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan
শ্রমিকরা অপুষ্টির শিকার
আছিয়া বেগমকে দেখেই বোঝা যায় তিনি অপুষ্টির শিকার৷ সকাল-সন্ধ্যা গার্মেন্টস-এ কাজ করেও তিনি জোটাতে পারেন তাঁর প্রয়োজনীয় খাবার৷
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan
8 ছবি1 | 8
তাঁরা সরকার ও তুবা গ্রুপের মালিকের কড়া সমালোচনা করে বলেন, সরকার আর মালিকরাতো হাসি আনন্দে ঈদ উদযাপন করলেন৷ কিন্তু এই যে শ্রমিকরা ঈদ না করতে পেরে কারখানায় অনশন করছেন তাঁদের দিকে তাঁরা একটুও খেয়াল করলেন না৷ শুধু তুবা নয়, সারাদেশেই ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে একত্রিত হয়ে গার্মেন্টস মালিকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান বাম নেতারা৷ একই সঙ্গে অবিলম্বে অনশনরত শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ও বোনাস পরিশোধের দাবি জানান তাঁরা৷
অনশন চলবে
অনশনরত শ্রমিকরা মালিকপক্ষ ও সরকারের দিক থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে আরো হতাশ হয়ে পড়ছেন৷ তবে তাঁরা তাঁদের অনশন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন৷ শ্রমিকদের একজন আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে৷ তিনি অভিযোগ করেন, তাঁরা মঙ্গলবার ঈদের দিন কারখানার সামনের রাস্তায় ঈদের নামাজ আদায় করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু এতে পুলিশ বাধা দেয়৷''
রওশন আরা নামে এক শ্রমিক বলেন, ‘‘আমাদের বলার কিছু নাই৷ আমরা এখন প্রধানমন্ত্রীর দিকে চেয়ে আছি৷ একমাত্র তিনিই আমাদের বাঁচাতে পারেন৷ আমরা টাকা না পেলে এখান থেকে নড়বো না৷''
পোশাক শ্রমিক হানিফ বলেন, ‘‘শ্রমিকদের পাশে আসলে কেউ নেই৷ না সরকার, না মালিক৷ যদি তারা আমাদের সঙ্গে থাকতো, তাহলে আজ আমাদের এই করুণ পরিস্থিতি হতো না৷''
জাতির জন্য অপমানজনক
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) সহকারী নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘‘শ্রমিকদের অনশনের এ ঘটনা জাতির জন্য অপমানজনক৷ সবাই ঈদ উদযাপন করছে৷ আর একদল শ্রমিক না খেয়ে অনশন করছেন নিজেদের পাওনার দাবিতে৷ এতে বিজিএমইএ ও সরকারের উদাসীনতা প্রমাণিত হয়৷''
পোশাক শিল্পে শ্রমশোষণ: ব্রিটেন থেকে বাংলাদেশ
দু মুঠো অন্নের সংস্থান করতে রানা প্লাজায় গিয়ে লাশ হয়ে ফিরেছিলেন এগোরো শ-রও বেশি মানুষ৷ যাঁরা বেঁচে আছেন, তাঁদের অনেকেরই বাকি জীবন কাটবে দুর্বিষহ কষ্টে৷ পোশাক শ্রমিকদের জীবনের এই নির্মমতার ইতিহাস কিন্তু অনেক দীর্ঘ৷
ছবি: DW/M. Mohseni
বৈশ্বিক শিল্প
প্রতিটি পোশাকে মিশে থাকে শ্রমিকের শ্রম-রক্ত-ঘাম৷ ১৯৭০-এর দশক থেকে ইউরোপ আর যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ব্র্যান্ডগুলো এশিয়া আর ল্যাটিন অ্যামেরিকার কিছু দেশ থেকে পোশাক কিনতে শুরু করে৷ খুব কম মজুরিতে শ্রমিক পাওয়া যায় বলে দাম পড়ে কম, লাভ হয় বেশি৷ এমন সুযোগ ছাড়ে তারা! কম টাকায় পণ্য কিনবেন, ছবির মতো পোশক তৈরি হবে মিষ্টির দোকানে – তারপর আবার শ্রমিকের অধিকাররক্ষা, পরিবেশ দূষণ রোধ করবেন – তাও কি হয়!
ছবি: picture-alliance/dpa
সবার জন্য পোশাক
বড় আঙ্গিকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পোশাক তৈরি প্রথম শুরু হয়েছিল ব্রিটেনে, অষ্টাদশ শতাব্দীর সেই শিল্পবিপ্লবের সময়টাতে৷ এখন বিশ্বাস করতে অনেকের হয়ত কষ্ট হবে, তবে ইতিহাস বলছে, শিল্পবিপ্লবের ওই প্রহরে ব্রিটেনের লন্ডন আর ম্যানচেস্টারও শ্রমিকদের জন্য ছিল আজকের ঢাকার মতো৷ শতাধিক কারখানা ছিল দুটি শহরে৷ শিশুশ্রম, অনির্ধারিত কর্মঘণ্টার সুবিধাভোগ, অল্প মজুরি, কারখানার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ – সবই ছিল সেখানে৷
ছবি: gemeinfrei
সেই যুক্তরাষ্ট্র এখন কর্তৃত্বে
যুক্তরাষ্ট্রেও পোশাকশ্রমিকরা স্বর্গসুখে ছিলেন না সব সময়৷ সেখানেও এক সময় কারখানায় আগুন লাগলে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ভেতরে রেখেই সদর দরজায় তালা লাগাতো৷ ১৯১১ সালে তাই নিউ ইয়র্কের ট্রায়াঙ্গেল শার্টওয়েস্ট ফ্যাক্টরিতে পুড়ে মরেছিল ১৪৬ জন শ্রমিক৷ মৃতদের অধিকাংশই ছিলেন নারী৷ মজুরি, কর্মঘণ্টা, কর্মপরিবেশ, নিরাপত্তা – কোনো কিছুই এশিয়ার এখনকার কারখানাগুলোর চেয়ে ভালো ছিল না৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পোশাক শিল্পে চীন বিপ্লব
পোশাক রপ্তানিকারী দেশগুলোর মধ্যে চলছে সবচেয়ে কম খরচে পোশাক তৈরির প্রতিযোগিতা৷ রপ্তানিকারী দেশগুলোর মধ্যে চীনের অবস্থা সবচেয়ে ভালো৷ রপ্তানি সবচেয়ে বেশি, শ্রমিকদের মজুরিও খুব ভালো৷ চীনে একজন পোশাক শ্রমিক এখন মাস শেষে ৩৭০ ইউরো, অর্থাৎ, বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৭ হাজার টাকার মতো পেয়ে থাকেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শ্রমশোষণ কাকে বলে...
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর সুমাংগলি৷ তামিল শব্দ ‘সুমাংগলি’-র অর্থ, ‘যে নববধু সম্পদ বয়ে আনে’৷ এলাকায় পোশাক এবং সুতা তৈরির প্রশিক্ষণের নামে খাটানো হয় প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার মেয়েকে৷ দিনে ১২ ঘণ্টা কাজ করে তাঁরা হাতে পান ৬০ ইউরো সেন্ট, অর্থাৎ বাংলাদেশের মুদ্রায় ৬০ টাকা৷ সে হিসেবে মাস শেষে পান ১৮০০ টাকা৷ টাকাটা তাঁদের খুব দরকার৷ বিয়ের সময় বাবাকে তো যৌতুক দিতে হবে!
ছবি: picture-alliance/Godong
অধিকার আদায়ের করুণ সংগ্রাম
কম্বোডিয়াতেও অবস্থা খুব খারাপ৷ ৩ লক্ষের মতো পোশাক শ্রমিক আছে সে দেশে৷ কাজের পরিবেশ আর অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কেমন? মাসিক বেতন মাত্র ৫০ ইউরো, অর্থাৎ বাংলাদেশের মুদ্রায় বড় জোর ৫ হাজার টাকা৷ মালিকের কাছে শ্রমিকদের মানুষের মর্যাদা প্রাপ্তি সৌভাগ্যের ব্যাপার৷ মজুরি বাড়ানোর দাবিতে মিছিলে নেমে শ্রমিকরা মালিকপক্ষের গুলিতে মরেছেন – এমন দৃষ্টান্তও আছে সেখানে৷
ছবি: Reuters
ট্র্যাজেডি
গত ২৪শে এপ্রিল বাংলাদেশের রানা প্লাজা ধসে পড়ায় মারা যান ১১শ-রও বেশি তৈরি পোশাককর্মী৷ দেয়ালে ফাটল ধরার পরও সেখানে কাজ চালিয়ে যাওয়ায় এতগুলো জীবন শেষ হওয়াকে বিশ্বের কোনো দেশই ভালো চোখে দেখেনি৷ ঘটনার পর জার্মানির এইচঅ্যান্ডএম, কেআইকে এবং মেট্রোসহ বিশ্বের ৮০টির মতো পোশাক কোম্পানি শ্রমিকের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য পোশাক রপ্তানিকারী কারখানাগুলোর সঙ্গে নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে৷
ছবি: Reuters
আলোয় ঢাকা আঁধার
অভিজাত বিপণিবিতান কিংবা দোকানের পরিপাটি পরিবেশে ঝলমলে আলোয় ঝিকমিক করে থরে থরে সাজানো বাহারি সব পোশাক৷ দেখে চোখ ধাঁধিয়ে যায়৷ ক্রেতাদের ক’জনের মনে পড়ে রানা প্লাজা কিংবা অতীতের ব্রিটেন বা যুক্তরাষ্ট্রের ভাগ্যাহতদের কথা?
ছবি: DW/M. Mohseni
8 ছবি1 | 8
প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ
পোশাক কারাখানার মালিকরা ঈদের আগেই ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ কিন্তু সেই কথা রাখেননি ঢাকার বাড্ডার তুবা গ্রুপের মালিক দেলোয়ার হোসেন৷ এই দেলোয়ার হোসেন হলেন বহুল আলোচিত তাজরিন ফ্যাশানের মালিক৷ ২০১২ সালের নভেম্বরে এই তাজরীন ফ্যাশানেই দেলোয়ার হোসেনের অবহেলায় আগুন লেগে ১২৪ জন শ্রমিক নিহত হন৷ যাদের ক্ষতিপূরণও দেননি তিনি৷
বাড্ডায় দেলোয়ার হোসেনের তুবা গ্রুপের অধীনে মোট পাঁচটি পোশাক কারখানা রয়েছে৷ এগুলো হলো তুবা ফ্যাশান, তুবা টেক্সটাইল, তুবা বুকশান, মিতা ডিজাইন ও টাইপ ডিজাইন৷ এই পাঁচ কারাখানায় মোট ১,৬০০ শ্রমিক কাজ করেন৷
গত তিন মাস ধরে পাঁচটি কারখানার কোনো শ্রমিককে বেতন দেয়া হচ্ছে না৷ শ্রমিকরা ঈদের আগে শুক্রবার বেতন, ভাতার দাবিতে মালিক পক্ষের লোকজনকে ঘোরাও করে৷ পরে বিজিএমইএ-র মধ্যস্থতায় তাঁরা ঈদের আগে রবিবার একমাসের বেতন এবং ঈদ বোনাস দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অবরোধমুক্ত হলেও শেষ পর্যন্ত বেতন-ভাতা আর দেননি৷