1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অনাবৃষ্টির কারণে ভারত থেকে চাল রপ্তানি বন্ধ

১০ জানুয়ারি ২০২৪

উচ্চ তাপমাত্রা, অনাবৃষ্টির মতো কারণে কৃষিকাজের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে৷ ভারত সরকার জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে সাদা চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে৷ চাষিরা বিকল্প পদ্ধতির মাধ্যমে পানি সাশ্রয়ের চেষ্টা করছেন৷

জমিতে ধানের চারা রোপন করছেন দুই ভারতীয় কৃষক
মাত্র এক কিলোগ্রাম চাল উৎপাদনে ৬০ হাজার লিটার পানির প্রয়োজন হয়৷ছবি: Raminder Pal Singh/AA/picture alliance

ভারতের উত্তরে পাঞ্জাব রাজ্যে বিস্তীর্ণ ধানখেত দেখা যায়৷ কয়েক সপ্তাহ জুড়ে এমন খেতের অংশবিশেষ পানির নীচে থাকে৷ ওয়েট রাইস কাল্টিভেশন নামের ঐতিহ্যবাহী চাষের পদ্ধতির জন্য বিশাল পরিমাণ পানির প্রয়োজন হয়৷ ধান কিন্তু পানির উদ্ভিদ নয়৷ সেটি শুধু পানি সহ্য করতে পারে৷

সমস্যা হলো, বৃষ্টিপাত কমেই চলেছে৷ এমনকি জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বর্ষাকালেও যথেষ্ট বৃষ্টি হচ্ছে না৷ শুকনা মরসুমের সময় বেড়ে চলেছে৷ বৃষ্টি হলেও প্রবল বেগে পানি নামছে৷ স্থিতিশীলতা থাকছে না৷ ভারতীয় পানি ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের দিলিপ কুমার পাণ্ডা বলেন, ‘‘কঠিন বিষয় হলো, যথেষ্ট বৃষ্টি হচ্ছে না৷ ধান চাষের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ বৃষ্টি দেখা যাচ্ছে না৷ তাই চাষিরা ভূগর্ভস্থ পানি দিয়ে সেচের উপর নির্ভর করছেন৷''

একদিকে বেড়ে চলা রপ্তানি, অন্যদিকে পানির অভাব৷ দুইয়ের মধ্যে ফারাক বেড়েই চলেছে৷ সে কারণে ভারত সরকার জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিয়ে সাদা চালের রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে৷ এস অ্যান্ড পি গ্লোবালের সাম্যক পাণ্ডে বলেন, ‘‘প্রথমেই জানতে হবে, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংগঠনের জুলাই মাসের তথ্য অনুযায়ী চালের দাম গত ১২ বছরে সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়েছে৷ এল নিনিয়োর কারণে শুকনো আবহাওয়ার পূর্বাভাসের প্রেক্ষিতে সরকার আগে থেকেই রপ্তানি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ ভারত থেকে যে ধরনের চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেটি এশিয়া, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের অন্যতম প্রধান খাদ্যপণ্য৷''

ভারতের চাল সাধারণত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, ইরান ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে রপ্তানি করা হয়৷ এল নিনিয়ো আবহাওয়ার কারণে বাতাস ও মহাসাগরে অস্বাভাবিক স্রোত এবং উচ্চ তাপমাত্রা ভারতের পানি সরবরাহ আরো কমিয়ে দিচ্ছে৷ সেখানে কৃষিক্ষেত্র বর্তমানে মিঠা পানির প্রায় ৮০ শতাংশ ব্যবহার করে৷

এক কেজি চালের জন্য ৬০ হাজার লিটার পানি!

04:16

This browser does not support the video element.

কোনো নির্দিষ্ট খাদ্য উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় পানিকে ‘ভার্চুয়াল' বা ‘হিডেন ওয়াটার' বলা হয়৷ কার্বন-ডাই-অক্সাইড ফুটপ্রিন্টের আদলে এ ক্ষেত্রেও ‘ওয়াটার ফুটপ্রিন্ট' হিসেব করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷ বিশেষ করে ধানচাষের ফুটপ্রিন্ট অত্যন্ত বেশি৷

প্রশ্ন হলো, খাদ্যের কতটা ভার্চুয়াল পানির প্রয়োজন? মাত্র এক কিলোগ্রাম চালের জন্য ৬০,০০০ লিটার পানির প্রয়োজন হয়৷ এক লিটার কমলালেবুর রসের জন্য ৪০,০০০ লিটার পানি লাগে৷ এক কিলো গরুর মাংসের জন্য চাই ২০,০০০ লিটার পানি৷ তাহলে আরো টেকসইভাবে ধানচাষের উপায় কী? চাষিরা নতুন সমাধানসূত্রের খোঁজ করছেন৷

ধান চাষি গুরপ্রীত সিং বলেন, ‘‘আমাদের দেশে প্রতি বছর পানির স্তর তিন মিটার করে কমে গেছে৷ কম পানি লাগে বলে আমরা সরাসরি ধানের বীজ বপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷''

ডায়রেক্ট সোয়িং পদ্ধতির আওতায় ধানের বীজ সরাসরি পানিতে বপন করা হয় না৷ শুকনা খেতেই সেটা করা হয়৷ কার্যকর এই বিকল্পের মাধ্যমে সম্পদের সাশ্রয় হয়৷ গুরপ্রীত সিং বলেন, ‘‘সরাসরি ধান বপন করে আমি প্রায় ২০ শতাংশ পানি সাশ্রয় করেছি৷ অথচ আমার ধানের মানের ক্ষেত্রে কোনো আপোশ করা হয়নি৷''

নতুন পদ্ধতি গ্রহণ করলে পাঞ্জাবের রাজ্য সরকার চাষিদের দেড় হাজার ভারতীয় টাকা দেবার ব্যবস্থা করেছে৷

চাষি ও মুদির দোকানের মালিকরা ভবিষ্যতে ভারতে প্রচলিত ধান, আদা, পিঁয়াজ ও টমোটোর মতো পানি-নির্ভর খাদ্যের উপর নির্ভর না করে ফলাতে কম পানি লাগে, এমন ধরনের শস্য ও শাকসবজির আশা করছেন৷ এভাবে কৃষিকাজ আরো দায়িত্বশীল ও টেকসই হয়ে উঠতে পারে৷

ফ্রানৎসিস্কা বিল/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ