1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘অনার কিলিং’ নিয়ে কঠোর আইন

৭ অক্টোবর ২০১৬

এতদিন নিহতের পরিবার ক্ষমা করে দিলে অপরাধীর কোনো সাজা হতো না৷ আইনের এই ফাঁকটি এবার বন্ধ করেছেন পাকিস্তানের সাংসদরা৷ সে দেশের প্রভাবশালী মাওলানারা বিলটিকে ‘‘ইসলাম-বিরোধী'' বলে ঘোষণা করেছিলেন৷

Symbolbild Ehrenmorde Gewalt gegen Frauen
ছবি: picture-alliance/dpa

পরিবারের সম্মান রক্ষার নামে মহিলাদের হত্যা করে থাকে প্রায় ক্ষেত্রেই মেয়েটির নিজের পরিবারের সদস্যরা৷ পাকিস্তানে নতুন ‘অনার কিলিং' বিরোধী আইন অনুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে অপরাধীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে৷ গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তান সংসদে বিল পাস হওয়ার আগ পর্যন্ত নিহতের পরিবার হত্যাকারীকে ক্ষমা করলে হত্যাকারী ক্ষমা পেয়ে যেতো৷

বিলের বয়ানে বলা হয়েছে, ‘‘প্রতি বছর শত শত (মহিলা) পারিবারিক সম্মানের নামে হত্যার শিকার হন৷এই আইন এ ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধ করার জন্য আবশ্যক৷'' এর আগে ২০০৫ সালেও ‘অনার কিলিং' আইনে একটি সংশোধন আনা হয়েছিল৷ হত্যাকারীরা যাতে নিজেদের নিহতের সম্পত্তির ‘উত্তরাধিকারী' হিসেবে পেশ না করতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য সেই সংশোধনী আনা হয়েছিল৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও বিচারকের অপরাধীকে ক্ষমা করার চূড়ান্ত ক্ষমতা ছিল, যদি নিহতের পরিবারের অপরাপর সদস্যরা হত্যাকারীকে ক্ষমা করে৷ বৃহস্পতিবার নতুন বিল পাস হওয়ার ফলে এখন বিচারকরা নিহতের পরিবার ক্ষমা করলেও অপরাধীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিতে পারবেন৷

পাকিস্তানের নারী অধিকার সংস্থা ‘অওরত ফাউন্ডেশন'-এর পরিচালক মুমতাজ মুঘল ডয়চে ভেলেকে জানান, পাকিস্তানে গত বছর ১৭৮ জন মহিলাকে পরিবারের সম্মানের নামে হত্যা করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘সাধারণত পরিবারের সদস্যরাই অপরাধে সংশ্লিষ্ট থাকে৷ অনেক ক্ষেত্রে পরিবারপ্রধান অপরাধীদের ক্ষমা করে দেন৷'' প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ গত ফেব্রুয়ারি মাসে মহিলাদের সুরক্ষার জন্য এক পর্যায় আইন প্রণয়নের প্রতিশ্রুতি দেন৷ বর্তমান বিলটি বিভিন্ন মানবাধিকার ও নারী অধিকার সংগঠন এবং সমাজের উদারপন্থি অংশের প্রশংসা পেলেও, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলি বিলের বিরোধিতা করে বলেছে, এই বিল কোরান শরিফ ও মহানবীর নির্দেশাবলীর বিরোধী৷

মাওলানাদের সংগঠন ‘কাউন্সিল অফ ইসলামিক আইডিওলজি'ও নতুন আইনের সমালোচনা করেছে৷ পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ খান শেরানি ইসলামাবাদে রিপোর্টারদের বলেন, ‘‘এই আইনের মর্ম আমরা যা বুঝেছি, তা এই যে, মুসলমান পরিবারগুলোকে বৈবাহিক সম্পর্কের পবিত্রতা ভঙ্গ করতে বলা হচ্ছে৷ এই আইন মহিলাদের ঘর ছেড়ে যাওয়া ও বাইরে কাজ করার পথ প্রশস্ত করে দিচ্ছে৷''

গত জুলাই মাসে মডেল ও অভিনেত্রী কান্দিল বেলোচ তাঁর ভাইয়ের হাতে নিহত হন৷ পরিবারের সম্মান বাঁচানোর উদ্যেশ্যেই হত্যা করা হয়েছিল তাঁকে৷ পাকিস্তানের প্রথম সারির ইংরেজি দৈনিক ‘ডন' কান্দিলের হত্যাকে পাকিস্তানে মহিলারা যে যৌনবাদ ও নারীবিদ্বেষের সম্মুখীন, তার পরিচায়ক বলে বর্ণনা করে৷ অপরদিকে লাহোরের জামায়াতে-ইসলামি দল কান্দিলকেই তাঁর মৃত্যুর জন্য দায়ী করে৷ তবে পাকিস্তানের মানবাধিকারকর্মীরা বলেছিলেন, কান্দিলের মৃত্যুর ফলে পাকিস্তানে মহিলাদের সমানাধিকার পাবার সংগ্রাম আরো জোরদার হবে৷

সেই ভবিষ্যদ্বাণী দৃশ্যত মিথ্যা হয়নি৷

প্রতিবেদক: শামিল শামস/এসি

সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী

প্রিয় পাঠক, আইন কঠোর করার কারণে কি পাকিস্তানে ‘অনার কিলিং’ কমতে পারে? জানান নীচে মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ