1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অনার কিলিং

বাসাক ও্যাজো, হ্যুলিয়া কোয়ল্যু /আরবি২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩

তুরস্কে অনার কিলিং বা পরিবারের সম্মান রক্ষার জন্য নারী হত্যা কোনো বিরল ঘটনা নয়৷ এই ধরনের নিষ্ঠুরতার হাত থেকে রক্ষা পায়নি জার্মানিতে বসবাসরত তুর্কি বংশোদ্ভূত অনেক মেয়েও৷

Symbolbild Gewalt gegen Frauen Vergewaltigung; © detailblick #26718227
ছবি: Fotolia/detailblick

তুরস্কে অনার কিলিং-এর মত কুপ্রথার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন নারী অধিকারবাদীরা৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অল্পবয়সী মেয়েরা এই ধরনের নির্মমতার শিকার হন৷ যে সব মেয়ে নিজস্ব সত্তাকে বিলিয়ে দিতে চান না, তাদেরকেই বরণ করতে হয় অনেক সময় এই করুণ পরিণতি৷ সাধারণত আপনজনের হাতেই খুন হন এই সব মেয়ে৷ ঘাতক: স্বামী, বাবা, ভাই৷ কোনো আচরণ পরিবারের সম্মান হানিকর মনে করলে নিজের মেয়ে, বোন বা স্ত্রীকেও খুন করতে দ্বিধা বোধ করেন না কেউ কেউ৷ বিধর্মী কারো প্রেমে পড়া, পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়া বা পরিবারের পছন্দমত বিয়েতে রাজি না হওয়া, এইসব তাদের চোখে মারাত্মক অপরাধ৷ হত্যাকারী বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুরুষ৷ তবে নারীরাও মাঝে মাঝে সহায়তা করেন এই নিষ্ঠুরতায়৷

নির্যাতনে দায়ী মেয়েরাও

ত্যার দে ফাম-এর মোনিকা মিশেল এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘পরিবারের সম্মান রক্ষার নামে নৃশংসতা শুধু পুরুষদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, মেয়েরাও এগিয়ে আসেন অনেক সময়৷ অদ্ভুত শোনালেও সত্যি, পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বর্বরোচিত প্রথাকে টিকিয়ে রাখতে চান মেয়েরাও৷ পছন্দ না হলেও মেয়েকে কারো সাথে বিয়ে দেন মা৷ কিংবা পরিবারের মানহানির নামে অনার কিলিং-এ সায় দেন৷''

তুরস্কে অনার কিলিং-এর মত কুপ্রথার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন নারী অধিকারবাদীরাছবি: AP

তুরস্কে ২০০৫ সাল থেকে অনার কিলিং গুরুতর অপরাধ বলে গণ্য৷ তুরস্কর আইনে অনার কিলিং কথাটা থাকলেও অপরাধীর শাস্তি লঘু করার কোনো সুযোগ নেই৷ এক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক বা পারিবারিক কারণ দেখিয়ে পার পাওয়া যায় না৷ অন্তত কাগজে কলমে৷

তুরস্কের নারী অধিকারবাদীরা এই সব অনার কিলিংকে নারী হত্যা বলে আখ্যায়িত করেছেন৷ এক্ষেত্রে আইনকানুন ঠিকমতো প্রয়োগ করা হয় কিনা, সে ব্যাপারে সন্দিহান তারা৷ স্ত্রী বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করলে তাকে হত্যা করাটা যেন গুরুতর কোনো অপরাধ নয়৷ অনেক সময় এই রকম একটা মনোভাব দেখা যায় তুরস্কের বিচার বিভাগের৷

শুধু গত বছরেই ২১৭টি নারী হত্যার ঘটনা ঘটেছে৷ তিন ভাগের এ ভাগই স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন৷ বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করাটাই ছিল তাদের অপরাধ৷

এক প্ল্যাটফর্মে মিলিত

সম্প্রতি ‘আমরা নারী হত্যা রুখবো' এই নামে একটি প্ল্যাটফর্মে তুরস্কের বহু নারী সংগঠন একত্রিত হয়েছে৷ তাদের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি নারী হত্যা রোধ করতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে৷ ‘‘সংসদের অধিকাংশ সদস্যই পুরুষ৷ আর তারাই আইন প্রণয়ন করে থাকেন৷ এটা এমন এক বিষয়, যা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের প্রতিনিধিদের মনঃপূত হওয়ার কথা নয়৷'' বলেন তুরস্কের নারী অধিকারবাদী ও আইনজীবী সিগদেম হাচিসফটাওলু৷

মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ'-এর এক সমীক্ষার জানা গেছে, তুরস্কে তিন ভাগের এক ভাগ মেয়ে স্বামীর হাতে নির্যাতিত হন৷ এদের খুব সংখ্যকই কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করে থাকেন৷

সঠিক আইন

বছর খানেক আগে তুরস্কে একটি আইন পাশ হয়েছে, যার মাধ্যমে বিপদে পড়া মেয়েরা নতুন নাম ও পরিচিতি পেতে পারেন৷ নির্যাতক পুরুষদের ক্ষেত্রেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে আইনে৷ যেমন অত্যাচারী স্বামী যাতে স্ত্রীর কাছে যেতে না পারে, সে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে আইনে৷ তুরস্কের পরিবার মন্ত্রী ফাতমা শাহিন নারী নিগ্রহের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে চান৷ এই রাজনীতিবিদের মতে, নারী বৈষম্য বর্ণ বৈষম্যের চেয়েও খারাপ৷

বছর খানেক আগে তুরস্কে একটি আইন পাশ হয়েছে, যার মাধ্যমে বিপদে পড়া মেয়েরা নতুন নাম ও পরিচিতি পেতে পারেন (ফাইল ফটো)ছবি: picture-alliance/dpa

তুরস্কের নারী অধিকারবাদী ও চিত্র পরিচালক মেলেক ওসমান মনে করেন, ‘‘রাজনীতিতে সদিচ্ছা, সঠিক পরিকল্পনা ও পর্যাপ্ত অর্থের বাজেট না থাকলে নারীদের সমানাধিকারের আইনটি তেমন কার্যকরী হবে না৷''

ত্যার দে ফাম-এর মোনিকা মিশেল বলেন, এছাড়া মেয়েদের তাদের অধিকার সম্পর্কে আরো সচেতন করতে হবে৷ নির্যাতিত মেয়েদের জন্য আরো আশ্রয় ও পরামর্শ কেন্দ্রও খোলা প্রয়োজন৷ বর্তমানে তুরস্কে মাত্র ৭৭ টি নারী আশ্রম রয়েছে৷

নারী অধিকার সংগঠনগুলির মতে দেশটিতে কমপক্ষে এই ধরনের ৪০০০ আশ্রয় কেন্দ্র প্রয়োজন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ