নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে হলে আদালতের অনুমতি ছাড়াই যে-কোনো আশ্রয়প্রার্থীকে আটক করতে পারবে অষ্ট্রিয়ার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী৷ দেশটির সরকার সোমবার এ সংক্রান্ত একটি আইন প্রণয়নের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন৷
বিজ্ঞাপন
নতুন এই আইন প্রণীত হলে কর্তৃপক্ষ সন্দেহভাজন যে কাউকে আদালতের অনুমতি ছাড়াই আটক করার ক্ষমতা পাবে এবং আটক ব্যক্তিকে নিরাপত্তা শিবিরে রাখা হবে৷
অষ্ট্রিয়াতে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণে আশ্রয় নিতে আসা ব্যক্তিদের ‘অভ্যর্থনা কেন্দ্রে' রাখা হয়৷ প্রস্তাবিত এই আইনের অংশ হিসেবে দেশটির অভ্যর্থনা কেন্দ্রের নাম পরিবর্তন করে ‘প্রস্থান কেন্দ্র' করা হচ্ছে৷
অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর সেবাস্টিয়ান কুর্ৎস সাংবাদিকদের বলেন, আইন অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ কাউকে আটক করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাধ করা বা এর পরিকল্পনা করা, ইত্যাদি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকতে হবে৷ তবে আটককৃত ব্যক্তির বিষয়টি আদালতের বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই পরিচালিত হবে বলে জানান তিনি৷
তবে প্রস্তাবিত এই আইন পাস হতে হলে দুই-তৃতীয়াংশ সাংসদের ভোটের প্রয়োজন হবে, যা অনেকটা অনিশ্চিত৷ কেননা দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পেতে হলে ক্ষমতাসীনদের বিরোধী দলের ভোটের উপর নির্ভর করতে হবে৷
শরণার্থীদের সহায়তায় আরেক শরণার্থী
ইমাদ আল-আরনাব নামে সিরীয় এক শরণার্থী লন্ডন শহরে গড়ে তুলেছেন রেস্তোরাঁ৷ সেই রেস্তোরাঁর আয়ের টাকা পাঠাচ্ছেন নিজ দেশের এক হাসপাতালে৷
ছবি: DW/M. Karakoulaki
লন্ডন থেকে দামেস্ক
একটি দাতব্য সংস্থার সহযোগিতায় ইমাদ লন্ডন শহরে গড়ে তোলেন ১৩টি রেস্তোরাঁ৷ রেস্তোরাঁগুলোয় তিনি দেশীয় খাবারের স্বাদ দিচ্ছেন সিরীয়দের আর আয়ের টাকার একটি অংশ দান করছেন আলেপ্পোর এক হাসপাতালে৷
ছবি: DW/M. Karakoulaki
আসল ফালাফেল
‘‘ফলাফেল তৈরি করা খুব সহজ, এতে মাত্র পাঁচ রকমের উপকরণ লাগে৷ আমি এখানকার লোকেদের আসল ফালাফেল খাওয়াতে চাই,’’ বললেন ইমাদ৷
ছবি: DW/M. Karakoulaki
শরণার্থীদের জন্য দেশী খাবার
লন্ডনের গ্রেট মার্লবোরো স্ট্রিটে ইমাদের রেস্তোরাঁর একটি ছোট্ট শাখা রয়েছে৷ সেখানে মধপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শরণার্থীরা জড়ো হন দেশীয় খাবারের স্বাদ পেতে৷
ছবি: DW/M. Karakoulaki
সবার জন্য খাবার
‘‘এ রেস্তোরাঁর মাধ্যমে আমরা সবার জন্য খাবার নিশ্চিত করতে চাই,’’ বলেন ইমাদ৷ জানালেন, রেস্তোরাঁর প্রতি প্যাকেট খাবারের মূল্যের একটি অংশ দিয়ে জর্ডান ও লেবাননে থাকা শরণার্থীদের জন্য খাবার কেনা হয়৷
ছবি: DW/M. Karakoulaki
বড় দিনে বিশেষ খাবার
বড় দিন উপলক্ষে ইমাদ সিরিয়ার ঐতিহ্যবাহী খাবারের এক বিশেষ রেসিপি তৈরি করেছে নলন্ডনবাসীর জন্য৷ লন্ডনবাসীদের অনেকেই সুস্বাদু এ খাবার খেতে ভিড় জমিয়েছেন ইমাদের রেস্তোরাঁয়৷ নতুন এ রেসিপি বিক্রি হয়েছে পুরোটাই৷
ছবি: DW/M. Karakoulaki
বিখ্যাত ইমাদ
ইমাদের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে৷ শরণার্থীদের নিয়ে করা বৃটিশ অ্যাকাডেমি অফ ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন আর্টস ২০১৭ পুরস্কারপ্রাপ্ত টিভি সিরিজ ‘এক্সোডাস’-এ অভিনয় করেছেন তিনি৷ সেখানে তাঁর সিরিয়া থেকে লন্ডনে আসার গল্প তুলে ধরা হয়েছে৷
ছবি: DW/M. Karakoulaki
সিরিয়া মানেই কি যুদ্ধ?
‘‘সিরিয়ার কথা বললেই মানুষ প্রথমে ভাবে যুদ্ধ আর বোমাবাজির কথা৷ কিন্তু সিরিয়ার ঐতিহ্যবাহী খাবার ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে আমি মানুষের এ ধারণা পাল্টে দিতে চাই,’’ বলেন ইমাদ৷
ছবি: DW/M. Karakoulaki
ফালাফেলের সুগন্ধে থেমে যায় পথচারী
রেস্তোরাঁ থেকে ছড়িয়ে পড়া ফালাফেলের সুগন্ধে থমকে দাঁড়ান অনেক পথচারী, বোঝার চেষ্টা করেন, রেস্তোরাঁটির সামনে কেন এত লম্বা লাইন৷
ছবি: DW/M. Karakoulaki
8 ছবি1 | 8
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হ্যার্বার্ট কিকেল বলেন, শরণার্থীদের আটক করার বিষয়ে এ ধরণের আইন শুধু অষ্ট্রিয়াই করছে না৷ ইউরোপের অন্যান্য দেশ বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড ও হাঙ্গেরিও এই ধরণের আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে বলে জানান তিনি৷
গত ফেব্রুয়ারিতে দেশটির একজন সরকারি কর্মকর্তাকে তুরস্কের বংশোদ্ভূত এক আশ্রয়প্রার্থী ছুরিকাঘাত করে৷ আশ্রয়প্রার্থী এ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে ২০০৯ সালে তাঁকে বের করে দেয়া হয়৷ পরে তিনি আবার অষ্ট্রিয়াতে এসে আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে আবেদন করেন৷ এ ধরনের ঘটনার প্রেক্ষাপটেই শরণার্থী বিষয়ে নতুন করে ভাবছে অষ্ট্রিয়া সরকার৷
এদিকে, নতুন এই আইনের বিষয়ে তুরস্কের এই আশ্রয়প্রার্থীর বিষয়টি উল্লেখ করলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হ্যার্বার্ট কিকেল বলেন, তাঁরা মূলত অষ্ট্রিয়াতে অভিবাসীদের আশ্রয়ের আবেদনের ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করতে আইনটি করতে যাচ্ছেন৷