আশুলিয়ায় এক জুতা কারখানায় আগুনে তিনজন প্রাণ হারিয়েছেন৷ কারখানাটি অনুমোদনহীন৷ এমনকি কারখানাটির নামে কোনো ট্রেড লাইসেন্সও নেই৷
বিজ্ঞাপন
বুধবার রাতে কারখানাটি পরিদর্শনে এসে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা – ইউএনও মাজহারুল ইসলাম ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এসব কথা জানান৷
বিকালে আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ি বঙ্গবন্ধু রোডে আগুনে পুড়ে যাওয়া ‘ইউনি ওয়ার্ল্ড ফুটওয়্যার লিমিটেড-২' নামের জুতার কারখানায় তিন শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন৷ দগ্ধ হয়েছেন অন্তত ১২ জন৷ মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘‘কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে তিন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক৷ কারখানাটির কোনো ধরনের অনুমোদন ছিল না৷ সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে কারখানাটির নামে কোনো ট্রেড লাইসেন্সও নেই৷’’
ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা জোন-৪ এর উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল আলিম বলেন, ‘‘আমরা তিনটি মরদেহ উদ্ধার করেছি৷ মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে দুইজন নারী ও একজন পুরুষ৷ তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পরিচয় আমরা পাইনি৷ এদের মধ্যে দুইজন শ্বাসকষ্টে, আর একজন আগুনে পুড়ে মারা গেছেন৷’’ তবে আগুনের সূত্রপাতের কারণ এখনও অনিশ্চিত৷ ইউএনও বলেন, কারখানাটির মালিক কর্মকর্তা কাউকেই পাওয়া যায়নি৷ তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷
নিহতদের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন আশুলিয়া থানার এসআই সুদীপ কুমার গোপ৷
তারা হলেন, টাঙ্গাইল জেলার সদর থানার মালতী পাড়া গ্রামের ইমরাত হোসেনের মেয়ে ১৫ বছর বয়সি সুমাইয়া আক্তার এবং খুলনা জেলার পাইকগাছা থানার খড়িয়া গ্রামের হামিদ মিয়ার স্ত্রী শাহানারা বেগম (৪৫) ৷ সুমাইয়া পরিবারসহ কারখানার পাশে রুপায়ন মাঠে সোহরাব উদ্দিনের বাসায় বসবাস করতেন ৷ চার মাস আগে এই জুতার কারখানায় কাজ শুরু করেন সুমাইয়া৷ আর শাহানারা দুই মাস আগে কারখানায় কাজে যোগ দেন৷ তিনি স্বামী নিয়ে কারখানার পাশে রুপায়ন মাঠের জুয়েল হোসেনের বাড়িতে থাকতেন৷
লাশ শনাক্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে৷ এবং লাশ দাফনের জন্য নিহতদের স্বজনদের জেলা প্রশাসকের তরফ থেকে ২৫ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে বলে জানান ইউএনও ৷
বুধবার বিকেলে আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ি বঙ্গবন্ধু রোড এলাকায় জুতার কারখানা ‘ইউনি ওয়ার্ল্ড ফুটওয়্যার লিমিটেড-২'-এ এই অগ্নিকান্ডটি ঘটে৷ ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়৷
এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
২০২১ সালে ভবন ধস ও অগ্নিকাণ্ডের যত ঘটনা
২০২১ সালের জুন পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ড ও ভবন ধসের উল্লেখযোগ্য ঘটনা নিয়ে এই ছবিঘর৷
ছবি: Giorgio Viera/AFP/Getty Images
মগবাজার বিস্ফোরণ
২৭শে জুন ঢাকার মগবাজারে একটি ভবনে বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ জনে৷ ওই ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে এবং গুরুতর আহত ৬৬ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন৷ ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, ভবনের কোথাও গ্যাস জমে এই ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে৷
ছবি: bdnews24.com
মায়ামি ভবন ধস
২৫শে জুন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মায়ামিতে একটি ১২ তলা অ্যাপার্টমেন্ট ভবন ধসে ১১ জন নিহত হয়েছে৷ এখনও নিখোঁজ অন্তত ১৫০ জন৷ ভবনটি ধসে পড়ায় ওই কমপ্লেক্সের ১৩০টি ইউনিটের অর্ধেক তছনছ হয়ে গেছে৷ তবে ভবন ধসের কারণ এখনও জানা যায়নি৷
ছবি: mpi04/MediaPunch/picture alliance
চীনে মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ড, নিহত ১৮
২৫শে জুন চীনের হেনান প্রদেশে মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আগুন লেগে মারা গেলেন ১৮ জন৷ নিহতদের সকলেই ছিলেন শিক্ষার্থী৷
ছবি: Andy Wong/AP Photo/picture alliance
দক্ষিণ কোরিয়ায় ভবন ধস, নিহত ৯
৯ জুন দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়াংজুতে বহুতল ভবন ভাঙার সময় এক অংশ ধসে অন্তত নয় জন নিহত হয়েছেন৷ আহত হয়েছেন আরও আটজন৷ ভবনটি ভাঙার কাজ চলছিলো৷ হঠাৎ এর একটি অংশ ব্যস্ত রাস্তার মধ্যে ধসে পড়লে চাপা পড়ে একটি বাস৷ নিহতদের সবাই ওই বাসের যাত্রী৷ (ফাইল ছবি)
ছবি: Reuters
ভারতে স্যানিটাইজার কারখানায় অগ্নিকাণ্ড, নিহত ১৪
৭ই জুন ভারতের মহারাষ্ট্রের পুনের এসভিএস অ্যাকুয়া টেকনোলজিসের একটি প্ল্যান্টের স্যানিটাইজার প্রস্তুতকরণ ইউনিটে আগুন লেগে অন্তত ১৪ জন মারা যান৷
ছবি: Imago-Images/Pacific Press Agency
গুজরাটে হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে ১৮ করোনা রোগীর মৃত্যু
পহেলা মে ভারতের গুজরাটে এক হাসপাতালে আগুন লেগে করোনায় সংক্রমিত অন্তত ১৮ জন রোগীর মৃত্যু হয়৷ গুজরাটের ভরুচ এলাকার ওয়েলফেয়ার হাসপাতালে ৫০ জনের মতো রোগী ভর্তি ছিলো৷
ছবি: Naveen Sharma/Zuma/picture alliance
ইরাকে হাসপাতালে আগুন, মৃত ৮২ করোনা রোগী
২৬শে এপ্রিল অক্সিজেন কনটেনার ফেটে বাগদাদের হাসপাতালে আইসিইউ-তে আগুন লেগে মারা যায় অন্তত ৮২ জন করোনা রোগী৷ বাগদাদের হাসপাতাল ইবন আল-খাতিব-এ এই ভয়াবহ ঘটনায় ১১০ জন আহত হন৷
ছবি: Thaier Al-Sudani/REUTERS
মহারাষ্ট্রে হাসপাতালে আগুন, ১৩ করোনা রোগীর মৃত্যু
২৩শে এপ্রিল মহারাষ্ট্রের বিরারে বিজয় বল্লভ হাসপাতালে আগুন লেগে আইসিইউতে থাকা ১৩ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়৷ শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুন লাগে বলে জানা গেছে৷আগুন প্রথমে লাগে আইসিইউ-তে৷
২১শে এপ্রিল মহারাষ্ট্রের নাসিকে হাসপাতালে ট্যাঙ্কার লিক হলে আধাঘন্টা অক্সিজেন বন্ধ থাকায় মৃত্যু হয় ২২ জন করোনা রোগীর৷ ১০ জন ভেন্টিলেটারে ছিলেন৷ তারা সকলেই মারা যান। অনেক রোগীকে সেসময় অক্সিজেন দেয়া হচ্ছিলো৷ তাদের মধ্যে ১২ জন মারা যান৷
ছবি: ANI/REUTERS
বহুতল ভবন ধসে মিশরে নিহত ১৮
২৭শে মার্চ মিশরের রাজধানী কায়রোতে বহুতল ভবন ধসে নিহত হয়েছে ১৮ জন৷ আহত হয়েছে অন্ততপক্ষে ২৪ জন৷ রাত ৩টার দিকে ১০ তলা ভবনটি ধসে পড়ে৷ এছাড়া ২৭ জুন আবাসিক ভবন ধসে মিসরের আলেকজান্দ্রিয়াতে চার নারীর মৃত্যু হয়েছে৷
ছবি: Mohamed Asad/Xinhua/picture alliance
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন
২২শে মার্চ উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে৷ সরকারি হিসেবে সেই অগ্নিকাণ্ডে ১১ জনের মৃত্যু হয় এবং নয় হাজার ৩০০ পরিবারের আনুমানিক ৪৫ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে৷ ২রা এপ্রিল উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প সংলগ্ন কুতুপালং বাজারে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের, আহত কয়েকজন৷
ছবি: ROHINGYA RIGHT TEAM/Md Arakani/REUTERS
কলকাতায় রেলভবনে আগুনে মৃত ৯
৯ মার্চ কলকাতায় রেলের একটি ভবনে আগুনের ঘটনা ঘটে৷ স্ট্র্যান্ডরোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত নয় জনের মৃত্যুর হয়েছে৷ এদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে লিফটে৷
ছবি: DW/S. Bandyopadhyay
ঢামেকের আইসিইউতে আগুন, তিনজনের মৃত্যু
১৭ই মার্চ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনার আইসিইউ ইউনিটে আগুনের ঘটনায় রোগী সরানোর সময় তিন জন মারা গেছেন৷ এ সময় করোনা ইউনিটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে জানান হাসপাতাল পরিচালক৷
ছবি: DW/H. Ur Radhid
সেরাম ইনস্টিটিউটে আগুন, নিহত ৫
পুনায় একশ একর জমির উপর সেরামের কারখানা৷ ২২শে জানুয়ারি ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক এই ইনস্টিটিউটের নির্মীয়মান ভবনে আগুন লেগে মারা যায় পাঁচ জন৷