1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অনেক নেতার গ্রেপ্তারে এখনো অস্বস্তিতে হেফাজত

১ অক্টোবর ২০২১

হেফাজতে ইসলামের কিছু নেতা-কর্মী জামিন পেলেও অনেকেই জেলে৷ মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীর মৃত্যুর পর সংগঠনটি যেন আরো দুর্বল হয়ে পড়েছে৷ তবে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মনে করেন, স্বরাষ্টমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সুফল পাওয়া যাচ্ছে৷

Bangladesch | Führende Mitglieder von Hefazat-e-Islam
ছবি: bdnews24

কিছু নেতা-কর্মী জামিন পাওয়ার পর তাদের জামিনের আদেশ আবার স্থগিতও হয়েছে৷ যারা জামিন পেয়েছেন তাদের মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের একজন হলেন হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটিরসাবেক সহাকারি মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি৷ পল্টন ও মতিঝিল থানায় দায়ের করা ৭ মামলায় তিনি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন৷ গত ১৫ এপ্রিল তাকে আটক করা হয়৷ তার বিরুদ্ধের মামলাগুলো ২০১৩ সালে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা৷

গত ৩ আগস্ট হাইকোর্ট থেকে জামিন পান হেফাজতের তিন কর্মী মুফতি আরিফুল ইসলাম, ইমতিয়াজ হোসেন ও বেলাল উদ্দিন৷ একই দিনে হাইকোর্ট থেকে জামিন পান মনির সরদার নামে হেফাজতের আরেকজন কর্মী৷

এদিকে ২৬ মার্চ পটিয়া থানায় হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিদের মধ্যে চার হেফাজত কর্মী হাইকোর্ট থেকে জামিন পান৷ তারা হলেন: মো. ফোরকান উদ্দিন, মো. জসিম উদ্দিন, মো. মকবুল ইসলাম  চৌধুরী ফারুক ও মো. সোহেল৷

২৮ মার্চ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে গাড়ি ভাঙচুরের মামলায় অভিযুক্ত চার হেফাজত কর্মী উচ্চ আদালত থেকে ৯ মে জামিন পেলেও পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে তা স্থগিত হয়৷ তারা হলেন ইকবাল হোসেন, মোয়াজ্জেম হোসেন, কাওসার আহমেদ ও ফারুক হোসেন৷ হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদী বলেন, ‘‘এ পর্যন্ত আমাদের ৬০ জন নেতা-কর্মী জামিনে মুক্তি পেয়েছে৷ তবে কতজন গ্রেপ্তার হয়েছেন সেই হিসাব নেই৷''

‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার অনেক সুফল পাচ্ছি’

This browser does not support the audio element.

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরকে কেন্দ্র করে ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হাটহাজারী, নারায়ণগঞ্জ, কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তান্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা৷ ওইসব সহিংস ঘটনায় সারা দেশে ১৫৪টি মামলা হয়৷ সেসব মামলায় এ পর্যন্ত হেফাজতের ৫০৭ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ ওইসব মামলায় মোট এজাহারভুক্ত আসামি তিন হাজার  ২৭০ জন৷ এজাহারের বাইরেও অজ্ঞাত ৮৩ হাজারের বেশি আসামি আছে৷

এর বাইরে ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরের নাশকতা এবং পরবর্তী সময়ে হেফাজতের বিরুদ্ধে আরো ৮৩টি মামলা আছে৷

মার্চে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং হাটহাজারীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় দায়ের করা মামলার মধ্যে ২৩টি মামলার তদন্ত করছে পিবিআই৷ মামলাগুলোর তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে বলে জানান পিবিআই'র প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার৷ তিনি বলেন, ‘‘এইসব মামলায় বেশ কয়েকজন আসামি ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে৷ আমরা মামলা প্রমাণে প্রয়োজনীয় তথ্য এবং আলামত সংগ্রহ করছি৷ তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে৷ তবে চার্জশিট দিতে আমরা আরো কিছু সময় নিচ্ছি ইচ্ছে করেই৷ এখনই চার্জশিট দেয়া হচ্ছে না৷'' এদিকে পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে অন্য মামলাগুলোও এখন চলছে৷

মার্চের ঘটনায় হেফাজতের কমপক্ষে ৩০ জন শীর্ষ নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন৷ তাদের মধ্যে রয়েছেন মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মুফতি মুহিবুল্লাহ কাসেমি, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা জুবায়ের আহমেদ, ড. আহমেদ আব্দুল কাদের, মুফতি বশির উল্লাহ, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ৷

এই অবস্থায় হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করে মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীর নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের কমিটি করা হয়৷ পরে গত জুন মাসে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয়৷ বাবুনগরীর মৃত্যুর পর মাওলানা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী এখন হেফাজতের ভারপ্রাপ্ত আমির এবং নুরুল ইসলাম জিহাদী মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন৷ তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখা করে ২৭জন নেতার একটি তালিকা দিয়ে তাদের মুক্তি দাবি করেছেন৷ তাদের দাবি-  ওই  ২৭ জন কোনো ভাঙচুর বা নাশকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না৷

অন্যদিকে মাওলানা আহমদ শফীপন্থিরাও তৎপর আছেন৷ তারা চাইছেন হেফাজতের পাল্টা কমিটি করতে৷ হেফাজতের উদ্যোগে শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে মাওলানা আহমদ শফী ও মাওলানা বাবুনগরীর জীবন নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান হয়৷ সেখানে ছিলেন না হেফাজতের আমীর মাওলানা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী৷

‘তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে, তবে চার্জশিট দিতে আমরা আরো কিছু সময় নিচ্ছি ইচ্ছে করেই’

This browser does not support the audio element.

হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদী বলেন, ‘‘আমাদের সাথে সরকারের যোগাযোগ আছে৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার অনেক সুফল পাচ্ছি৷ ধীরে ধীরে সবাই জামিনে মুক্তি পাবেন বলে আশা করি৷ আর ২৭ জন নয়, আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আটক সব আলেম ওলামার মুক্তি দাবি করেছি৷''

তিনি বলেন, ‘‘এর সঙ্গে নেতা-কর্মীদের মুক্ত করতে আইনি লড়াইও অব্যাহত আছে৷ এই যে আমরা আদালতে দৌড়াচ্ছি এটা কি আইনি লড়াই নয়?''

তিনি জানান, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পর শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সেই কমিটির মাধ্যমেই প্রথম প্রোগ্রাম হলো৷ ধীরে ধীরে তারা আরো কর্মসূচি দেবেন বলেও জানান তিনি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ