1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গর্ভাবস্থায় ঝুঁকি বাড়ায় চিকুনগুনিয়া

৩১ জুলাই ২০১৭

কখনও ম্যালেরিয়া, কখনও ডেঙ্গু, কখনও চিকুনগুনিয়া৷ মশাবাহিত রোগ থেকে নিস্তার নেই বাংলাদেশের৷ সাধারণত মৃত্যুঝুঁকি না থাকলেও কিছুক্ষেত্রে এই ঝুঁকি থেকেই যায়, ডয়চে ভেলেকে জানালেন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ৷

Symbolbild Model Schwanger
ছবি: imago/CHROMORANGE

ডয়চে ভেলে: বাংলাদেশে মশাবাহিত রোগ এত ব্যাপক আকারে বারবার ছড়িয়ে যাওয়ার কারণ কী বলে মনে করছেন?

ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ

This browser does not support the audio element.

ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ: মশার যে বিস্তার, বা প্রজননক্ষেত্র যেগুলো আছে, এটাকে রোধ করার জন্য বিশেষ করে এইবার কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি৷ মশাকে ধ্বংস করার জন্যে এবার যে ব্যবস্থাগুলো নেয়া হয়েছে তা অপ্রতুল৷ সেই কারণেই মশা বেশি বেড়ে গেছে৷ এর ফলে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ এবার বেশি, বিশেষ করে চিকুনগুনিয়া, এবার ডেঙ্গু কম৷ তাছাড়া এবার মাঝে মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হয়েছে৷ তাতে বিভিন্ন জায়গায় জমা পানিতে এডিস ইজিপ্টি মশা ডিম পাড়ার সুযোগ বেশি পেয়েছে৷

সাধারণ মানুষ কীভাবে সচেতন থাকতে পারেন?

ব্যক্তিগত প্রটেকশন নিতে হবে, যাতে মশা না কামড়াতে পারে৷ হাফপ্যান্ট, হাফশার্ট না পরে ফুলপ্যান্ট ফুলশার্ট পরতে হবে৷ ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখতে হবে৷ যেমন অনেকে ঘরে বা বারান্দায় ফুলের যে টবগুলো আছে, সেগুলো পরিষ্কার করে না৷ ফ্রিজ বা এয়ার কন্ডিশনের জমা পানিতেও মশা ডিম পাড়ে৷ নিজের আশেপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখলে কিছুটা হলেও রক্ষা পাওয়া যাবে৷

একজনের কাছ থেকে আরেকজনে কীভাবে ছড়ায় চিকুনগুনিয়া?

চিকুনগুনিয়া কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়, এটা মশার কামড়েই হয়৷ সুতরাং মশার কামড় থেকে বাঁচতে হবে৷ আক্রান্ত হলে ৫-৭ দিনের বেশি শরীরে এই ভাইরাস থাকে না, এর মধ্যে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়৷ দিনে ঘুমালে মশারি টানিয়ে ঘুমানো উচিত৷ আক্রান্ত কাউকে মশা কামড়ানোর পর এই মশা অন্য কাউকে কামড়ালে ভাইরাস ছড়াতে পারে৷ তবে মশার কামড় ছাড়া অন্য কোনোভাবে এই ভাইরাস ছড়াতে পারবে না৷

কিছু কিছু ক্ষেত্রে কয়েক সপ্তাহ ধরে রোগিদের ভুগতে হয়...

চিকুনগুনিয়ার মূল লক্ষণ তো জ্বর আসবে৷ আমরা ১০৪, ১০৫, ১০৬ ডিগ্রি, এমন রোগি পাচ্ছি৷ প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথা, মাংসপেশিতে ব্যথা৷ এছাড়া বমিভাগ, পাতলা পায়খানা, অরুচি, দুর্বলতা – এগুলো হতেই পারে৷ তিন-চার দিন পর গায়ে কিছু র‍্যাশ হয়, সেগুলোও দু-তিন দিন থাকে৷ মেজরিটির এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে এইসব লক্ষণ ভালো হয়ে যায়৷ এদের মধ্যে ১০ শতাংশ রোগির হাড়ের জোড়ায় প্রচণ্ড ব্যথা থেকে যায়৷ এটাকে পোস্ট-চিকুনগুনিয়া আর্থ্রাইটিস বলে, স্থানীয় ভাষায় এটাকে বলে ল্যাংড়া জ্বর৷ কারো কারো ক্ষেত্রে এটা মাসের পর মাস থাকতে পারে৷

এর চিকিৎসা, বা প্রতিকার কী?

এটা যেহেতু একটা ভাইরাস, এর কোনো ‘স্পেসিফিক' চিকিৎসা নেই৷ এর চিকিৎসা হয় লক্ষণভিত্তিক৷ আমরা সাধারণত সাধারণ ব্যথানাশক ওষুধ, যেমন প্যারাসিটামল খেতে বলি৷ সেই সাথে প্রচুর পানি, শরবত এবং তরল খাবার খেতে হবে৷ স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া কিন্তু চালিয়ে যেতে হবে৷ মাছ-মাংস, শাক-সবজি, ফলমূল এগুলোতে কোনো বাধা নাই৷ অনেকের ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য পেইনকিলার লাগতে পারে৷ কখনও কখনও ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়ার একই রকম লক্ষণ থাকে৷ ডেঙ্গুতে সাধারণত অন্য পেইনকিলার দেয়া হয় না, তাতে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি থাকে৷ সুতরাং অন্য পেইনকিলার ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া যাবে না৷ ব্যথা থাকলে বরফ কুঁচি দিয়ে ঠান্ডা সেঁক দেয়া যেতে পারে, কোনক্রমেই গরম সেঁক দেয়া যাবে না৷

বয়স্ক বা শিশুদের বিশেষ কোনো সতর্কতা কি অবলম্বন করতে হবে?

সাধারণত চিকুনগুনিয়ার চিকিৎসা বাসায় বসেই নেয়া যায়৷ তবে যাঁরা অন্যান্য রোগে ভোগেন, যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি-লিভার-হার্টের রোগ, তাঁদের ঘরে বসে চিকিৎসা নেয়া ঝুঁকিপূর্ণ৷ এইসব রোগীর ক্ষেত্রে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া, প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া জরুরি৷ তাদের ক্ষেত্রে এই রোগে মৃত্যুর ঝুঁকিও থেকে যায়৷ এছাড়া গর্ভবতী নারীদের চিকুনগুনিয়া হলে সেটা মা এবং শিশুর জন্যও ক্ষতিকর৷ গর্ভবতীদেরও দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হওয়া উচিত৷

আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ