1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অপরাধে জড়াচ্ছে পুলিশ

সমীর কুমার দে ঢাকা
২৪ ডিসেম্বর ২০১৭

বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে পুলিশ৷ বিশেষ করে মাদকের সঙ্গে পুলিশের সম্পৃক্তটা আগের তুলনায় বেড়ে গেছে৷ এ কারণে শাস্তিও বেড়েছে৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু শাস্তি দিয়ে অপরাধ কমানো সম্ভব নয়৷

বাংলাদেশ পুলিশ
ছবি: picture alliance/AP Photo/A.M.Ahad

বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলো গত ১৭ ডিসেম্বর এক প্রতিবেদনে বলেছে, পুলিশের বিরুদ্ধে মাদক সেবন ও বিক্রিতে সহযোগিতা করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে হরহামেশা৷ বাহিনীর অভ্যন্তরীণ তদন্তেও অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে৷ বছরের প্রথম ছয় মাসে ৬৭ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর৷ মাদক নির্মূলের লক্ষ্যে গত ৩১ জানুয়ারি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সারা দেশের পুলিশের জন্য ১০ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়৷ প্রথম দফায় বলা হয়, যেসব পুলিশ সদস্য মাদক বিক্রেতার কাছ থেকে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেন, তাঁদের চিহ্নিত করে বিধি অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা, প্রয়োজনে ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে হবে৷ এরই পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬৭ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷ এরপর জুলাই থেকে এ পর্যন্ত কতজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সে হিসাব পাওয়া যায়নি৷ পুলিশ সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এ মাসের শেষে বাকি ছয় মাসের মোট হিসাব পাওয়া যাবে৷

‘আমরা শাস্তির মাধ্যমে তাদের বোঝাতে চাই, অপরাধ করলে পার পাওয়া যাবে না’

This browser does not support the audio element.

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান বলেন, ‘‘পুলিশের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে এটা বলবো না৷ বলা উচিত এই প্রবণতা আগেও ছিল, এখনো আছে৷ আগে সেভাবে গণমাধ্যমে আসত না, এখন আসছে৷ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও আগে সেভাবে খেয়াল রাখত না, এখন রাখছে৷ ফলে বিষয়টি সামনে চলে এসেছে৷ আমি মনে করি, পুলিশের মধ্যে কোন পরিবর্তন হয়নি৷ তাদের কিছু বিভাগ বেড়েছে সত্যি, কিন্তু সেই বৃটিশ নিয়মেই তারা চলে৷ আর এই সংস্কারটা হচ্ছে না- এর কারণ পুলিশকে অনেক বেশি রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করা হয়৷ পুলিশের মধ্যে এমন কোন ক্যারিশমেটিক নেতা আসেনি যে তারা নিজের উদ্যোগেই সংস্কার করবে৷ আর আমাদের অর্থনীতি যেভাবে বেড়েছে তাতে পুলিশের মধ্যে এই দিকে ধাবিত হওয়ার প্রবণতা রয়েছে৷ অনেকেই অল্প দিনে ধনী হতে চান ফলে তারা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন৷''

‘শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলেই অপরাধ প্রবণতা কমবে’

This browser does not support the audio element.

হিসাবে দেখা গেছে, মাদকে জড়িত থাকার অভিযোগ যে ৬৭ জন পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ঢাকা মহানগরের গুলশান, ওয়ারী, মতিঝিল ও তেজগাঁও অঞ্চল, পুলিশের কল্যাণ ট্রাস্ট, পরিবহন শাখা ও দাঙ্গা দমন বিভাগের (পিওএম) ২৩ জন, যশোরের ১০ জন, টাঙ্গাইলের ৭ জন, বগুড়ার ৪ জন, নোয়াখালীর ৩ জন, মানিকগঞ্জ, চট্টগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও হাইওয়ে পুলিশের ২ জন করে, খাগড়াছড়ি, সিলেট, হবিগঞ্জ, ঝালকাঠি, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ, বরিশাল, সিলেট পুলিশের ১ জন করে এবং র‌্যাবের ৩ জন সদস্য আছেন৷

পুলিশের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র উপমহাপরিদর্শক (গণমাধ্যম) আবদুল আলিম মাহমুদ বলেন, ‘‘বাহিনীর কোন সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসা মাত্রই আমরা কিন্তু তাদের শাস্তি নিশ্চিত করছি৷ কারো কারো ক্ষেত্রে বিভাগীয় মামলা হচ্ছে, আবার কারো ক্ষেত্রে ফৌজদারি মামলাও দেয়া হচ্ছে৷ আমরা শাস্তির মাধ্যমে তাদের বোঝাতে চাই, অপরাধ করলে পার পাওয়া যাবে না৷''

‘পুলিশকে অনেক বেশি রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করা হয়’

This browser does not support the audio element.

মোটিভেশনাল কাজটা হচ্ছে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ সদস্যদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে, বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, তারা অপরাধ করলে কোন ভাবেই মুক্তি মিলবে না৷''

এক হিসেবে দেখা গেছে, প্রতিমাসে সাড়ে ৩শ' থেকে ৪শ' অভিযোগ জমা হচ্ছে পুলিশ সদর দপ্তরে৷ রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে অনেকেই নানাভাবে দ্রুত আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করছে, আবার অনেকেই রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে বেপরোয়া হয়ে নানা অপরাধ করছে৷ রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ, পোস্টিং ও পদোন্নতির কারণেই এমনটা হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে৷ বিশেষ করে জেলা শহরগুলোতে এই প্রবণতা বেশি৷

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নুরুল হুদা বলেন, ‘‘অপরাধ যে অপরাধই এটা সব পুলিশ সদস্যই জানে৷ ফলে তাদের মোটিভেশনের এখানে কোন প্রয়োজন নেই৷ তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলেই অপরাধ প্রবণতা কমবে৷ আর মাদকসহ এই ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে৷ কারণ পুলিশ এখানে রক্ষক৷ এই রক্ষকই যদি মাদক সেবন বা উদ্ধার করা মাদক বিক্রি করে দেয় তাহলে তাকে কঠোর শাস্তি দিতে হবে৷''

এ বিষয়ে আপনার কিছু বলার থাকলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ