1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অপারেশন সার্চ লাইট

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৩ মার্চ ২০১৭

২৬শে মার্চ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস৷ ১৯৭১ সালে ২৫শে মার্চের মধ্যরাতে ঢাকায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে৷ সেই রাতেই গড়ে ওঠে প্রতিরোধ, শুরু হয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ৷

Bildnummer: 52946703 Datum: 25.03.2009 Copyright: imago/Xinhua Gedenken an die Opfer des Unabhängigkeitskrieges von 1971 in Dhaka - Bangladesch - PUBLICATIONxNOTxINxCHN, Personen , Restlichtaufnahme; premiumd, 2009, Dhaka, Bangladesch, Politik, Kerze, Kerzen; , quer, Kbdig, Totale, , Gesellschaft, Asien Bildnummer 52946703 Date 25 03 2009 Copyright Imago XINHUA Remembrance to the Victims the Independence war from 1971 in Dhaka Bangladesh PUBLICATIONxNOTxINxCHN People Residual light recording premiumd 2009 Dhaka Bangladesh politics Candle Candles horizontal Kbdig long shot Society Asia
ছবি: imago stock&people

দীর্ঘ ৯ মাসের মুক্তি সংগ্রামে ৩০ লাখ শহিদ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয় ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর৷

মুক্তিযুদ্ধ আর ইতিহাসের গবেষক অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান ডয়চে ভেলেকে জানান, বাঙালির ওপর ‘অপারেশন সার্চ লাইট' নামের ঐ নিধনযজ্ঞের পরিকল্পনা হয়েছিল একাত্তরের মার্চের শুরুতেই, জুলফিকার আলী ভুট্টোর বাড়ি পাকিস্তানের লারকানায়৷ শিকারের নামে এই গণহত্যার ষড়যন্ত্রে যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদের মধ্যে জুলফিকার আলী ভুট্টো, জেনারেল ইয়াহিয়া এবং জেনারেল হামিদ অন্যতম৷ তাঁরা মনে করেছিলেন, ২০ হাজার মানুষ হত্যা করলেই ভয় পাবে বাঙালিরা, স্বাধীনতা এবং স্বাধিকারের কথা আর বলবে না৷

২৫শে মার্চ রাতে ইয়াহিয়া ঢাকা ত্যাগের পর পাকিস্তান পৌঁছানোর আগেই ঢাকায় গণহত্যা শরু হয়৷ আর সেই রাতেই গ্রেপ্তার করা হয় বাঙালির নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, নিয়ে যাওয়া হয় পশ্চিম পাকিস্তানে৷ কিন্তু তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ২৬শে মার্চ রাতের শুরুতেই ওয়্যারলেস বার্তার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দিয়ে যান তিনি৷ আর আগে ৭ই মার্চের ভাষণেই তিনি বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন বলেছিলেন, যার যা আছে তা নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে৷

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানছবি: AP

২৫শে মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সার্চ লাইট'-এর নামে একযোগে ভারী অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় ঢাকায় তখনকার পুলিশ (ইপিআর) সদর দপ্তর, রাজারবাগ পুলিশ লাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবাসে৷ তারা গোলা নিক্ষেপ করে মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রাবাসে, হামলা চালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বস্তি এলাকায়৷ ইতিহাসের এই নির্মম নিধনযজ্ঞ আর তা রাতেই ছড়িয়ে পরে পুরো শহরে৷ ঘুমন্ত মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে হায়নারা৷ সেই রাতেই রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে প্রতিরোধ শুরু হয়৷ ইপিআর সদস্যরাও প্রতিরোধের চেষ্টা করে জীবন দেন৷ তারপর নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ৷ মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি নিধনে সামনের সারিতে ছিলেন পাকিস্তানি জেনারেল টিক্কা খান৷ আর ছিল তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস ও শান্তি কমিটি৷

সলিমুল্লাহ খান বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তানি সামরিক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল খাদিম রাজা, গুল হাসান খান তাদের আত্মজীবনীমূলক বইয়ে ‘অপারেশন সার্চ লাইট'-এর কথা বলেছেন৷ কারা এই গণহত্যার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের নামও লিখেছেন৷ খাদিম রাজার ‘স্ট্রেঞ্জার ইন ওন কান্ট্রি' বইটি এক্ষেত্রে খুবই তথ্যবহুল৷ আর পাকিস্তান সরকার নিজেই মুক্তিযুদ্ধ চলার সময় ১৯৭১ সালের ৫ই আগস্ট একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ‘ক্রাইসিস ইন পাকিস্তান' শিরোনামে৷ তাতে একপেশে তথ্য পরিবেশন করা হলেও গণহত্যার ভয়াবহতা বোঝা যায়৷

সলিমুল্লাহ খান জানান, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে পাকিস্তান সরকার একটি কমিশনও গঠন করেছিল৷ হামিদুর রহমান কমিশনের ওই রিপোর্ট সরকারিভাবে কখনো আলোর মুখ দেখেনি৷ কিন্তু রিপোর্টের অনেক তথ্যই এখন জানা যায়৷ তাতেও ‘অপারেশন সার্চ লাইট' নামের গণহত্যার ষড়যন্ত্রের জন্য প্রধানত জুলফিকার আলী ভুট্টো, জেনারেল ইয়াহিয়া, জেনারেল হামিদ ও টিক্কা খানকে দায়ী করা হয়৷ আর তদন্ত রিপোর্টে নয় মাসের গণহত্যার কথা উল্লেখ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মধ্যে যারা যুদ্ধাপরাধে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছিল৷

একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় মুক্তিসেনারাছবি: AP

বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আজ উত্তাল বাংলাদেশের তরুণ সমাজ৷ শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ এই দাবিতে জতিকে জাগিয়ে তুলেছে৷ স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে বাংলাদেশ এবার সম্মাননা জানিয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ৬৮ জন বিদেশি বন্ধুকে৷ তাঁদের মধ্যে ১৩ জন পাকিস্তানি, যাঁরা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশে গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন, অবস্থান নিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে৷ তাঁদেরই একজন পাকিস্তানের মানবাধিকার নেত্রী আসমা জাহাঙ্গির মনে করেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে বাংলাদেশ ঠিক কাজই করছে৷ আর পাকিস্তানের যুদ্ধাপরাধীদেরও সেদেশে বিচারের আওতায় আনা উচিত বলে মনে করেন তিনি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ