প্রথম ম্যাচে ১৩১ রান করে জয়। পরেরটিতে ১২১ রান তাড়ায়। এরপর এই তৃতীয় ম্যাচে ১২৭ রান ডিফেন্ড করে। ম্যাচগুলো টি-টোয়েন্টিসুলভ না বলে অভিযোগ করতে পারেন কেউ কেউ। তাতে বয়েই গেছে বাংলাদেশের! যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সব ফরম্যাট মিলিয়ে সাকুল্যে যেখানে ছিল মোটে দুটি জয়, সেখানে চার দিনের মধ্যেই কিনা তিন জয়!
ইতিহাস এভাবেই লেখা হয়। রূপকথা রচিত হয় এভাবেই।
সে রূপকথার নায়ক কে, তা নিয়ে ধন্দে পড়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক। ৫৩ বলে ৫২ রান করা মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদের হাতে উঠেছে ম্যাচসেরার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি। কিন্তু সেটি তো খুব সহজেই মুস্তাফিজের হতে পারত। এবং তা কোনো উইকেট না নিয়েই!
৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ৯ রান। এর মধ্যে ইনিংসের ১৯তম ওভারে, যখন অস্ট্রেলিয়ার ৬ উইকেট হাতে নিয়ে প্রয়োজন ২৩ রান, তখন কিনা মুস্তাফিজের ওভার থেকে এলো মোটে এক রান! এরপর আর শেষ ওভারে ২২ রানের সমীকরণ মেলায় কিভাবে অস্ট্রেলিয়া!
অথচ অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং ইনিংসের বড় অংশ সময় জুড়ে বোঝা যায়নি যে, এমন কিছু হতে যাচ্ছে। ১২ ওভারে এক উইকেটে ৬৮ রানে পৌঁছে যায় তারা। শেষ ৮ ওভারে প্রয়োজন ৬০ রান। হাতে ৯ উইকেট। এমন ম্যাচ পাকিস্তান হারতে পারে। কখনো-সখনো ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবা বাংলাদেশও। তাই বলে অস্ট্রেলিয়া! যতোই নিয়মিত ক্রিকেটারদের অনেকে অনুপস্থিত থাকেন, দলটি তো সোনালী জার্সির উত্তরাধিকার।
কিন্তু সবুজ-লালের সামনে এদিন ফিকে হয়ে যায় বাকি সব রং। বেন ম্যাকডারমটের ক্যাচ পড়ে। তাতেও হতোদ্যম হয় না বাংলাদেশ। পরের ওভারে সাকিবের ঘূর্ণিতে পেয়ে যায় প্রার্থিত ব্রেক থ্রু। ক্যাচ ফেলেন যে শরিফুল, তিনিও মুষড়ে পড়েন না। বরং তা পুষিয়ে দেন আবার বোলিংয়ে এসে প্রথম বলে মোসেজ হেনরিক্সের উইকেটে।
কিন্তু বাংলাদেশের ‘গলার কাঁটা' হয়ে তখনো তো ক্রিজে মিচেল মার্শ। আগের দুটো ম্যাচেই যিনি করেছিলেন ৪৫ রান করে। এদিন ফিফটিও পেরিয়ে যান। এরপর পরিণত শরিফুলের শিকারে। ব্যস, জয়ের নেশায় আরো চনমনে হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার সাধ্যি কী রোখে তাদের!
এর আগে সিরিজে প্রথমবারের মতো টসজয়ী বাংলাদেশের ব্যাটিংটা হয়নি মনমতো। বাংলাদেশের দুই ওপেনার নিয়ে তো কথাবার্তা হচ্ছিল অনেক। সেই চাপেই কিনা চিড়েচ্যাপ্টা সৌম্য-নাঈম। প্রথম দুই ম্যাচে ২ ও ০ রানে আউট হওয়া সৌম্য এদিন আউট মাত্র ২ রানে। নাঈম প্রথম ম্যাচে ৩০ করলেও পরের দুই ম্যাচে স্কোর ৯ ও ১।
শুরুতে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর ইনিংস পুননির্মাণের দায়িত্ব পড়ে দুই সিনিয়র ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও মাহমুদ উল্লাহর উপর। কাজটা ভালোই করছিলেন তারা। কিন্তু ভালো খেলতে খেলতে উইকেট বিলিয়ে আসেন সাকিব (১৭ বলে ২৬)।
অধিনায়ক ছিলেন তবু। খুব সচ্ছন্দ্যে নয় অবশ্যই, কিন্তু এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন। অন্য প্রান্তের ফর্মে থাকা আফিফ হোসেন ধ্রুব, নুরুল হাসান সোহানের কাছে প্রত্যাশা ছিল বাংলাদেশের রান রেট বাড়ানোর। সে পথে এগুচ্ছিলেনও তারা। আফিফ ১৩ বলে ১৯ ও নুরুল ৫ বলে ১১ রান করেন। কিন্তু দুজনই কাটা পড়েন রানআউটে। প্রথম দুই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার ফিল্ডিং ছিল গড়পড়তা। সেটি মাথায় রেখেই কিনা সরাসরি ফিল্ডারের কাছে বল যাওয়া সত্ত্বেও রানের জন্য ছোটেন তারা। কিন্তু দু-দুটো ডিরেক্ট থ্রোতে রান আউট দুজনই।
অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ছিলেন শেষ ওভার পর্যন্ত। ৫৩ বলে ৫২ রানের ইনিংসও খেলেন। শেষ পর্যন্ত যা ম্যাচসেরার পুরস্কার এনে দেয় তাকে। অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা সাধ্যের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করেছেন। বাংলাদেশের ইনিংসের একেবারে শেষ তিন বলে হ্যাটট্রিক তুলে নিজের অভিষেকটা স্মরণীয়ও করে রাখেন অস্ট্রেলিয়ার নাথান এলিস। কিন্তু ওই যে ৯ উইকেটে ১২৭ রানে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ, সেটি আর টপকাতে পারেনি অসিরা।
ম্যাচ যখন শেষ হয়, ঢাকার আকাশে তখনো মেঘের আনাগোনা। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটাকাশে উথাল-পাথাল জোছনা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জয় বলে কথা!
বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে পক্ষপাতিত্বের মহামারি
আম্পায়ারিং নিয়ে প্রশ্ন যুগে যুগে সব দেশেই উঠেছে৷ এ থেকে যেসব দেশ ঘরোয়া ক্রিকেটকে বেশি মুক্ত করেছে, ক্রিকেটে তারা তত এগিয়েছে৷ ছবিঘরে ক্রিকেট পরাশক্তিদের অতীত এবং বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের ‘কলুষিত’ বর্তমানের তুলনা...
ছবি: picture-alliance/imageBROKER/S. Belcher
ডেনিস লিলির ভারত ‘বর্জন’ এবং পাকিস্তান থেকে ‘শিক্ষা’
এক সময় ভারতের বোলিং মানেই ছিল স্পিন, স্পিন আর স্পিন৷ সেই ভারতে পেস বোলার তৈরিতে অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তী ডেনিস লিলির অ্যাকাডেমির ভূমিকার কথা কে না জানে! সেই লিলি কিন্তু একবারও ভারত সফরে আসেননি৷ পাকিস্তানে টেস্ট খেলেছেন মাত্র একবার৷ তার উপমহাদেশে খেলতে না আসার দুটো কারণ ছিল, এক, মরা উইকেট, দুই, অতিথি ফাস্টবোলারদের আরো ‘মেরে ফেলার’ উপযোগী আম্পায়ারিং!
ছবি: Colorsport/imago images
নিউজিল্যান্ডে মাইকেল হোল্ডিংয়ের লাথি
সাকিব আল হাসান ঘরোয়া ক্রিকেটে ‘লাথিকাণ্ড’ ঘটিয়ে সদ্য আলোচনায় এলেও এমন ঘটনা টেস্ট ক্রিকেটে ঘটেছে ৪১ বছর আগে৷ ১৯৮০ সালে নিউজিল্যান্ডে আম্পায়াররা এত পক্ষপাতদুষ্ট ছিলেন যে উইন্ডিজ ফাস্ট বোলার মাইকেল হোল্ডিং শেষ পর্যন্ত মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি৷ ডানেডিন টেস্টে জন পার্কারকে আম্পায়ার জন হ্যাস্টি এলবিডাব্লিউ না দেয়ায় রেগেমেগে স্ট্রাইকিং এন্ডের স্টাম্প এক লাথিতে ছত্রখান করেছিলেন হোল্ডিং৷
ছবি: Mike Egerton/empics/picture alliance
অস্ট্রেলিয়ায় সুনিল গাভাস্কারের ‘ওয়াক আউট’
১৯৮১ সাল৷ মেলবোর্ন টেস্টে ডেনিস লিলির ইনকাটার গাভাস্কারের ব্যাট ছুঁয়ে লাগলো প্যাডে৷ ব্যাক ফুটে চলে যাওয়ায় গাভাস্কার তখন স্টাম্পের সামনেই দাঁড়িয়ে৷ তা দেখে আঙুল তুলে দিলেন রেক্স হোয়াইটহেড৷ গাভাস্কার সেদিন ওপেনিং পার্টনার চেতন চৌহানকে নিয়ে কিছুক্ষণের জন্য মাঠ ছেড়েছিলেন৷ সম্প্রতি গাভাস্কার অবশ্য জানিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়ানরা তাকে ‘ভাগো’ না বললে সেদিন হয়ত আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে একাই মাঠ ছাড়তেন৷
ছবি: AP
দু’বার হিট উইকেট, তবু নট আউট!
১৯৮৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ব্রিসবেন টেস্টে জেফ লসনকে আম্পায়ার আরএ ফ্রেঞ্চ এবং এমডাব্লিউ জনসন অপরাজিত রাখার পণ করেছিলেন কিনা কে জানে! লেগ গ্ল্যান্স করতে গিয়ে লসন গোড়ালি লাগিয়ে স্টাম্প থেকে বেলস ফেলে দিলেন৷ পরের ওভারে মাইকেল হোল্ডিংয়ের ঝড়ো গতির বল সামলাতে গিয়ে আবার একই কাণ্ড৷ অথচ দুবারের একবারও নাকি আম্পায়াররা তা চোখেই দেখেননি৷ সেবার অবশ্য বেশি রাগেননি, স্টাম্পে লাথিও মারেননি হোল্ডিং!
ছবি: Getty Images
নিরপেক্ষ আম্পায়ার: ইমরান খানের ‘উপহার’
আজ যে সব আন্তর্জাতিক ম্যাচে ‘নিরপেক্ষ আম্পায়ার’-এর চল তার শুরু হয়েছিল পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের হাত ধরে, ১৯৮৬ সালে৷ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটি টেস্ট পরিচালনার দায়িত্ব সেবার ভারতের ভিকে রামস্বামী আর পিলু রিপোর্টারকে দিয়েছিলেন ইমরান৷ ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ পরিচালনার দায়িত্বও ইংল্যান্ডের জন হ্যাম্পশায়ার আর জন হোল্ডারকে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক৷
ছবি: AP
তবুও মুরালিধরনের ‘চাকিং বিতর্ক’
১৯৯৯ সালে চার্লটন অ্যান্ড ইউনাইটেড ত্রিদেশীয় সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার আম্পায়ার রস এমারসনের এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত যে ক্রিকেট ইতিহাসে বার বার আলোচনায় ফিরবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই৷ টেস্ট ক্রিকেটে ৮০০ উইকেট পাওয়া একমাত্র বোলার মুত্তিয়া মুরালিধরনের ওভারের চতুর্থ বলটা স্কয়ার লেগ থেকে এমারসন কেন যে বল ‘ছোঁড়ার’ অভিযোগে নো ডেকেছিলেন তা আজও অজানা৷ আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারদেরও অবাক করেছিল৷
ছবি: AP
ইনজামামের প্রতিবাদ
২০০৬ সালে ইংল্যান্ড-পাকিস্তানের ওই টেস্ট ম্যাচ আম্পায়ারদের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণেই চিরস্মরণীয়৷ চতুর্থ দিন চা বিরতির আগে বল বিকৃত করার অভিযোগ তুলে আম্পায়ার ড্যারেল হেয়ার পাকিস্তানকে নতুন বল নিতে বলায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন ইনজি৷ দল নিয়ে পাকিস্তানের অধিনায়ক মাঠ ছাড়ায় ইংল্যান্ডকে জয়ী ঘোষণা করে দেন আম্পায়াররা৷ পরে আইসিসি অবশ্য ম্যাচটাকে ড্র ঘোষণা করে৷
ছবি: Picture-Alliance / Photoshot
এলবিডাব্লিউ না, এসবিডাব্লিউ!
১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়া-ভারত অ্যাডিলেড টেস্ট৷ গ্লেন ম্যাকগ্রার শর্ট পিচ ডেলিভারি কী করে এত নীচু হলো, ‘ডাক’ করতে গিয়ে একেবারে বসে পড়া টেন্ডুলকারের কাঁধে লাগলো তা এতদিনেও বলা মুশকিল৷ আম্পায়ার ড্যারিল হার্পারের দেয়া সেই এলবিডাব্লিউ ইতিহাসে স্থান পেয়েছে ‘শোল্ডার বিফোর উইকেট’ নামে৷ টিভি রিপ্লে দেখে আজও অনেকেই বলেন, বল কখনোই স্টাম্পে লাগতো না৷
ছবি: AP
বেন স্টোকসকে আম্পায়ারের ‘উপহার’
২০১৯ সালের অ্যাশেজ সিরিজের সেই ম্যাচটা সবাই বেন স্টোকসের হার না মানা ১৩৫ রানের ইনিংস আর সেই সুবাদে ৩৫৯ রান তাড়া করে ইংল্যান্ডের জিতে যাওয়ার জন্যই মনে রাখবে৷ অথচ জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের যখন দুই রান দরকার, ঠিক তখন নাথান লায়নের বলে ‘নিশ্চিত’ এলবিডাব্লি্উ থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন ইংলিশ অলরাউন্ডার৷ অস্ট্রেলীয়দের জোরালো আবেদন প্রত্যাখ্যান করে দেন আম্পায়ার জোয়েল উইলসন, ইংল্যান্ডও পেয়ে যায় ঐতিহাসিক জয়৷
ছবি: Getty Images/S. Forster
ইতিহাসের নিকৃষ্টতম আম্পায়ারিংয়ের সিরিজ
২০০৫-এর অ্যাশেজেও ছিল বিতর্কিত সিদ্ধান্তের ছড়াছড়ি৷ ২০২০ সালে ক্রিকেট পাকিস্তান ডটকম-এর এক প্রতিবেদনে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ব্যাটসম্যান ড্যামিয়েন মার্টিনের রিটুইট করা ভিডিও এমবেড করা হয়েছে৷ ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার সাইমন ক্যাটিচকে লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে এলবিডাব্লিউ দিচ্ছেন পাকিস্তানের আম্পায়ার আলিম দার৷ ড্যামিয়েন মার্টিনের মতে, সেই সিরিজ ইতিহাসের নিকৃষ্টতম আম্পায়ারিংয়ের জন্য কুখ্যাত৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Khan
রোহিত শর্মাকে আম্পায়ারের ‘দান’
২০১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-ভারত কোয়ার্টার ফাইনালে রোহিত শর্মা ডিপ মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ দিয়েছিলেন রুবেল হোসেনের বলে৷ ইমরুল কায়েস ধরেওছিলেন ক্যাচটা৷ কিন্তু আম্পায়ার ইয়ান গোল্ড ‘নো’ ডাকায় বেঁচে যান রোহিত৷ সিদ্ধান্তটা ধারাভাষ্যকার শেন ওয়ার্নের কাছেও অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল৷ ওয়ার্ন বলেই ফেলেছিলেন, ‘‘এটা নো বল ছিল না, খুবই বাজে সিদ্ধান্ত৷’’
ছবি: Getty Images/D. Sarkar
ইংলিশ আর অস্ট্রেলীয়দের এক করে দেয়া সিদ্ধান্ত
২০১৩ সালের অ্যাশেজ সিরিজের ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার উসমান খাজাকে এমন এক কট বিহাইন্ড দেয়া হলো যে প্রতিবাদে ফেটে পড়লেন সবাই৷ রিভিউয়েও ভুল সিদ্ধান্ত খারিজ না হওয়ায় অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী কেভিন রুড বলেছিলেন, ‘‘এটি ক্রিকেটে আমার দেখা সবচেয়ে জঘন্য সিদ্ধান্ত৷’’ ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন আরো ক্ষেপে গিয়ে বলেছিলেন, ‘‘এমন আউট দিলে (প্যাভিলিয়নে) ফিরে আসা অন্যায়৷’’
ছবি: picture-alliance/AP Photo/R. Griffith
বাংলাদেশে দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেটে ৪ বলে ৯২ রান
২০১৭ সালে দ্বিতীয় বিভাগ ক্রিকেটে এক্সিওম ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে ৪ বলে ৯২ রান দিয়ে খবরের শিরোনামে আসেন বোলার সুজন মাহমুদ৷ জয়ের জন্য এক্সিওমের দরকার ছিল ৮৯ রান৷ কিন্তু ওয়াইড আর নো বল দিয়ে দিয়ে মাত্র চার বলেই ৯২ রান দিয়ে দেন সুজন। লালমাটিয়া ক্লাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিংয়ের প্রতিবাদে সুজন এমন করেছেন।পরে সুজনকে ১০ বছরের জন্য এবং লালমাটিয়া ক্লাবকে আজীবন নিষিদ্ধ করেছিল বিসিবি৷
ছবি: Sikander Ali
বল করার আগেই নো বল!
২০১৭ সালের আরেক ম্যাচে ১.১ ওভারে ৬৯ রান দিয়েছিলেন তাসনিম হাসান। তাকেও ১০ বছরের জন্য আর তার ক্লাব ফিয়ার ফাইটার্সকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়। তাসনিমও নাকি পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিংয়ের প্রতিবাদেই এমন বোলিং করেছিলেন৷ ক্লাবটির আরো দাবি ছিল, বোলার বল করার আগেই আম্পায়ার নো বল দিয়েছেন এমন ঘটনাও সেবার ঘটেছে৷ লালমাটিয়া এবং ফিয়ার ফাইটার্স ক্লাব দুটির ম্যাচের আম্পায়ারদের মাত্র ছয় মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল৷
ছবি: Getty Images/I. Hitchcock
বিসিবির ‘অন্ধ’ চোখ খুলবে কবে?
২০২০ সালে উইসডেনের এক পডকাস্টে নিল ডায়ার নামের একজন ইংল্যান্ডের কোনো এক স্থানীয় লিগে কাভারে ক্যাচ আউট হয়েও এক ব্যাটসম্যানের বেঁচে যাওয়ার গল্প শুনিয়েছিলেন৷ আম্পায়ারের নাকি মনে হয়েছিল বল প্যাডে লেগে কাভারে গিয়েছে৷ ইংল্যান্ডে এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে সেই চেষ্টাতেই প্রাণাতিপাত করে বোর্ড৷ অথচ সাকিবের সাকিবসুলভ লাথিকাণ্ডের পরে বিসিবি সভাপতি জানিয়ে দিলেন, ‘‘আম্পায়ারদের কোনো ত্রুটি খুঁজে পাওয়া যায়নি৷’’