বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষ্যে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে ইউনিসেফ বলেছে যে, কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে এইচআইভি-র সংক্রমণ ২০৩০ সালের মধ্যে ৬০ শতাংশ বাড়তে পারে, যদি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়৷
বিজ্ঞাপন
২০১৫ সালে সারা বিশ্বে ১০ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে ৪১,০০০ কিশোর-কিশোরী এইডস রোগে প্রাণ হারায়৷ ঐ বয়সের এইডস সংক্রমিত মানুষদের সংখ্যা প্রায় বিশ লাখ, বলে ইউনিসেফের রিপোর্টে প্রকাশ৷
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ থেকে প্রকাশিত রিপোর্টটিতে বিশেষ করে সাহারা মরুভূমির দক্ষিণে অবস্থিত আফ্রিকান দেশগুলির প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করা হয়েছে, কেননা সেখানেই এইচআইভি-র প্রকোপ সবচেয়ে বেশি৷ ঐ এলাকায় ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সিদের মধ্যে নতুন এইচআইভি সংক্রমণের ক্ষেত্রে তিন-চতুর্থাংশই কিশোরী বা মহিলা, বলে দেখা যায়৷
‘‘এইডস-এর অন্ত ঘটানোর সার্বিক প্রচেষ্টায় বিশ্ব বিপুল প্রগতি অর্জন করেছে, কিন্তু সংগ্রাম শেষ হতে এখনও অনেক বাকি – বিশেষ করে শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য'', বলেছেন ইউনিসেফের কার্যনির্বাহী পরিচালক অ্যান্টনি লেক৷ ‘‘প্রতি দু'মিনিটে আরো একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক – খুব সম্ভবত একজন মেয়ে – এইচআইভি-তে সংক্রমিত হবে৷ আমরা যদি এইডস-এর অবসান ঘটাতে চাই, তাহলে বিষয়টিকে আবার গুরুত্ব দিতে হবে'', বলেন লেক৷ আফ্রিকায় কমবয়সি মেয়েরা প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের দ্বারা সংক্রমিত হয়; সেক্ষেত্রে পুরুষরা অনেক বেশি বয়সে এইচআইভি-র সংস্পর্শে আসেন৷
গত পাঁচ বছরে সারা বিশ্বে এইডস রোগীদের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে এক কোটি নব্বই লক্ষে দাঁড়িয়েছে৷ ২০১৫ সালে কিশোর কিশোরী বা অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে নতুন এইচআইভি সংক্রমণের ঘটনা ঘটে প্রায় আড়াই লাখ বার৷ ২০৩০ সালের মধ্যে এই বয়সের মানুষদের মধ্যে নতুন সংক্রমণের হার বছরে চার লাখে গিয়ে দাঁড়াতে পারে – শুধুমাত্র ফিলিপিন্সের দিকে নজর ফেরালেই যা স্পষ্ট হয়ে যায়৷
এসি/ডিজি (ডিপিএ, রয়টার্স, এএফপি)
বাংলাদেশের এইডস পরিস্থিতি
একটা সময় ছিল যখন এইডস রোগের নাম শুনলেই মানুষ ভয় পেত৷ এখন সেই পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে৷ বাংলাদেশে এইডস প্রতিরোধে সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থাগুলো কাজ করছে৷
ছবি: AP
প্রথম রোগী
১৯৮৯ সালে বাংলাদেশে প্রথম এইডস রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়৷ এইচআইভি-র কারণে সৃষ্ট এই রোগটি শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়৷ ফলে একজন এইডস রোগী খুব সহজেই যে-কোনো সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হতে পারেন – যা শেষ পর্যন্ত তাঁর মৃত্যু ঘটাতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
হাজার পেরিয়ে গেছে
বর্তমানে বাংলাদেশে এইডস রোগীর সংখ্যা ১,২৯৯৷ পরিসংখ্যানটা অবশ্য ২০১৩ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সংগৃহীত৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম নিজেই চলতি বছরের জুনে সংসদকে এই তথ্য জানিয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা
এইডস রোগীর সংখ্যা ১,২৯৯৷ কিন্তু এইচআইভি বা ‘হিউম্যান ইমিউনোডেফিশিয়েন্সি ভাইরাস’-এ আক্রান্তের সংখ্যা ৩,২৪১৷ ২০১৩ সালের ১লা ডিসেম্বর বিশ্ব এইডস দিবসের এক অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানানো হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
নিহতের সংখ্যা
ঐ একই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসচিব জানান এইডসে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত ৪৭২ জন মারা গেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
চিকিৎসা সেবা
আশার আলো সোসাইটি, মুক্ত আকাশ বাংলাদেশ কনফিডেনশিয়াল অ্যাপ্রোচ টু এইডস প্রিভেনশন (ক্যাপ) নামের তিনটি প্রতিষ্ঠান এইডস আক্রান্তদের ‘অ্যান্টি-রেট্রোভাইরাল’ বা এআরভি ওষুধ সহ অন্যান্য সেবা দিচ্ছে৷ সরকার ও ‘দ্য গ্লোবাল ফান্ড’-এর কাছ থেকে ওষুধ কেনার অর্থ পায় এই তিন সংস্থা৷
ছবি: AP
সরকারি সেবা
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জুন মাসে জানান আটটি সরকারি হাসপাতালে ‘সিডি-৪’ সেন্টারের মাধ্যমে এইডস রোগীদের শারীরিক অবস্থা নির্ণয় করাসহ এ সব প্রতিষ্ঠানসমূহে রোগীদের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও ‘কাউন্সেলিং’ সেবা দেয়া হচ্ছে৷ অবশ্য সেটা ঠিক নয় বলে ডয়চে ভেলের কাছে দাবি করেন ‘মুক্ত আকাশ বাংলাদেশ’-এর নির্বাহী পরিচালক এম এস মুক্তি৷