জার্মানিকে অনুমতি দিলো তুরস্ক
২৯ মে ২০১৭জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মার্টিন শ্যেফার সোমবার এই তথ্য জানান৷ ‘‘আমরা টেলিফোনে তাঁর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পেয়েছি৷ তবে এখনও লিখিত অনুমতির অপেক্ষায় আছি,’’ বলেন তিনি৷ শুক্রবার আটক ঐ সাংবাদিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হতে পারে বলেও জানিয়েছেন শ্যেফার৷
জার্মান গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর বলছে, ৩৩ বছর বয়সি টোলুকে ৩০ এপ্রিল রাতে তাঁর ইস্তাম্বুলের বাসা থেকে আটক করা হয়৷ এরপর ৬ মে তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ৷
জার্মানির দৈনিক সংবাদপত্র ‘টাৎস’ তাদের তুরস্কে থাকা সূত্রের বরাত দিয়ে সপ্তাহ দুয়েক আগে জানিয়েছিল, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের বিরুদ্ধে অভিযানে অংশ হিসেবে টোলুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
টোলুর বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসী এক সংস্থার হয়ে প্রোপাগান্ডা’ চালানো ও ‘একটি সন্ত্রাসী সংস্থার সদস্য’ হওয়ার অভিযোগ আনা হতে পারে বলে সেই সময় প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছিল৷
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানি ও তুরস্কের মধ্যে যে শীতল সম্পর্ক বিরাজ করছে তার অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি টোলুর গ্রেপ্তার৷
এর আগে জার্মান-তুর্কি সাংবাদিক ডেনিস ইউচেলকে গত ফেব্রুয়ারিতে গ্রেপ্তার করেছিল তুর্কি কর্তৃপক্ষ৷ তিনি এখনও গ্রেপ্তার আছেন৷ তাঁকে কনস্যুলার সেবা দেয়ার অনুমতি আগেই দিয়েছে তুরস্ক৷
গত বছর তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটির বিভিন্ন পেশার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে৷ এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গণমাধ্যমের উপরও নিপীড়ন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ৷
টোলুর কাজ
গ্রেপ্তারের আগে টোলুর কাজ প্রধানত সমাজতান্ত্রিক ভাবধারা ও কুর্দিপন্থি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে৷ যেমন বেসরকারি ইটিএইচএ নিউজ এজেন্সি ও নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক এএনএফ৷ তুর্কি সরকারের মতে, এএনএফ নিষিদ্ধ ঘোষিত কুর্দিস্থান ওয়ার্কার্স পার্টি বা পিকেকে-র সঙ্গে জড়িত৷ ইটিএইচএ জানিয়েছে, টোলু তাদের হয়ে অনুবাদকের কাজ করতেন৷ এছাড়া ‘ফ্রি রেডিও’-তেও টোলুর কাজ প্রচারিত হয়েছে৷ তুর্কি সরকার সম্প্রতি এটি বন্ধ করে দিয়েছে৷ উল্লেখ্য, গত বছরের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর তুর্কি সরকার দেশটির গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে৷ এর আওতায় দেড়শ’র বেশি সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়৷
জার্মানির দক্ষিণাঞ্চলে জন্মগ্রহণ ও বেড়ে ওঠা টোলু বছর দশেক আগে জার্মানির নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন৷ সেজন্য তাঁকে তুর্কি নাগরিকত্ব বাতিল করতে হয়েছে৷ বছর দুয়েক থেকে তিনি তাঁর স্বামী ও দুই বছরের সন্তান নিয়ে ইস্তাম্বুলে বাস করছিলেন৷ টোলুর স্বামী সুয়াত চরলুকেও একই অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ ফলে তাঁদের সন্তান এখন আত্মীয়স্বজনের কাছে আছে৷ টোলুর স্বামী তুর্কি নাগরিক৷
তুরস্ক নিরাপদ!
তুরস্কের ইউরোপীয় বিষয়ক মন্ত্রী ওমর চেলিক বলেছেন, ‘‘তুরস্ক বিদেশি সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ দেশ, যদি তাঁরা সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত না হন৷’’
জেডএইচ/এসিবি (এপি, রয়টার্স)