মৃত্যু নিয়ে গুঞ্জন উড়িয়ে জনসমক্ষে আসলেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন৷ দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কেসিএনএ এমন তথ্য জানিয়েছে৷ পিয়ংইয়ংয়ের কাছে একটি সার কারখানার নির্মাণ সমাপ্তি অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছেন তিনি ৷
বিজ্ঞাপন
কেসিএনএ এর খবরে বলা হয় শুক্রবার কিম নিজে ফিতা কেটে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন৷ এ সময় হাজারো মানুষ তাকে অভিনন্দন জানান৷ কিমের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা এবং তার বোন কিম ইয়ো জং৷
সবশেষ তিন সপ্তাহ আগে ওয়ার্কার্স পার্টির একটি বৈঠকে হাজির হয়েছিলেন উন৷ তারপর থেকে তাকে আর জনসমক্ষে দেখা যায়নি৷ এই সময়ে তার মৃত্যু নিয়ে গুঞ্জন ওঠে৷ ১৫ এপ্রিল দেশটির প্রতিষ্ঠাতা এবং কিমের দাদা কিম ইল সুং এর জন্মদিন পালনেও তাকে দেখা যায়নি৷ এত বড় রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে উনের হাজির না থাকা একটি নজিরবিহীন ঘটনা৷
গত বেশ কিছুদিন ধরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রকাশিত কিছু গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছিলো হার্ট সার্জারির পর সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় রয়েছেন উন৷
তবে গত সপ্তাহে এসব তথ্য উড়িয়ে দেয় দক্ষিণ কোরিয়া সরকার৷ দেশটির রাষ্ট্রপতি দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে উত্তর কোরিয়ার নেতা সুস্থ আছেন৷ অবশেষে উনের জনসমক্ষে হাজির হওয়া সেই তথ্যকেই সঠিক প্রমাণ করলো৷
উল্লেখ্য, ২০১১ বাবা বাবা কিম জং-ইলের মৃত্যুর পর ক্ষমতায় আসেন তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র কিম জং-উন৷
এফএস/এডিকে (রয়টার্স, ডিপিএ)
কিম জং-উন স্টাইল
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন৷ বিশ্বের অন্যতম বিচ্ছিন্ন এই দেশের ছবি খুব বেশি দেখা যায় না৷ তবে দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি, কেসিএনএ প্রায়ই উন-এর ছবি প্রকাশ করে থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/KCNA
ছোট্ট উন?
উত্তর কোরিয়ার সরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত একটি ভিডিও থেকে নেয়া এই ছবিতে ছোট্ট কিম জং-উনকে দেখা যাচ্ছে৷ তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে পাওয়া এই ছবিটি রয়টার্সের৷ তবে ছবিতে আসলেই উনকে দেখা যাচ্ছে কিনা, তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি সংবাদ সংস্থাটি৷ যেমনটা নিশ্চিত নয় উনের জন্মসালও৷ তবে ১৯৮৩ বা ১৯৮৪ সালে যে তাঁর জন্ম সেটি অবশ্য নিশ্চিত!
ছবি: Reuters
২০১১ সাল থেকে ক্ষমতায়
সে বছরের ১৭ ডিসেম্বর বাবা কিম জং-ইল মারা যাওয়ার কয়েকদিন পরই উত্তর কোরিয়ার সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হন উন৷ ছবিতে সামরিক বাহিনীর এক মহড়ায় তাঁকে দেখা যাচ্ছে৷ সম্প্রতি ছবিটি প্রকাশ করে কেসিএনএ৷
ছবি: Reuters/KCNA
পুরুষালি নন!
এই ‘অভিযোগ’-এর কারণেই উনের তিন বছরের বড় ভাই কিম জং-চল উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতায় যেতে পারেননি বলে মনে করা হয়৷ তো ছবি দেখে আপনিই বলুন উনকে কেমন লাগছে৷ নতুন নির্মিত একটি নার্সারি ও এতিমখানা দেখতে গিয়ে ক্যামেরায় এভাবেই ধরা পড়েন তিনি৷ শাসক দল ওয়ার্কার্স পার্টির সংবাদপত্র ‘রোডোং সিনমুন’ ২০১৫ সালের ২ জুন ছবিটি প্রকাশ করে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/KCNA
স্কুলের পড়াশোনা সুইজারল্যান্ডে
বড় ভাই কিম জং-চলের মতো কিম জং-উনও স্কুল পর্যায়ের পড়াশোনা করেছেন সুইজারল্যান্ডে৷ এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকান দেশে গিয়ে৷ সেখানকার একটি সামরিক বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি পড়েছেন বলে জানা যায়৷ ছবিতে উনকে একটি মেডিক্যাল অক্সিজেন ফ্যাক্টরি পরিদর্শন করতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Reuters/KCNA
উনের স্ত্রী
শাসক দল ওয়ার্কার্স পার্টি প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে একটি ‘অল-ফিমেল’ ব্যান্ডের পারফর্মেন্স উপভোগ করছেন উন৷ তাঁর ডানপাশে বসে আছেন স্ত্রী রি সল-জু৷ তিনি একজন সংগীত শিল্পী ছিলেন বলে ধারণা করা হয়, এবং একটি অনুষ্ঠানে তাঁর পারফর্মেন্স দেখেই উন মুগ্ধ হয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়৷
ছবি: picture alliance/Yonhap
কেমন লাগছে?
কোরীয় উপত্যাকার সর্বোচ্চ পর্বত মাউন্ট পেকদুতে ছবির জন্য পোজ দিচ্ছেন উন৷ ২০১৫ সালের ১৯ এপ্রিল ছবিটি প্রকাশ করে কেসিএনএ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/KCNA
‘ফিল্ড গাইডেন্স’
কেসিএনএ-র প্রকাশ করা ছবিগুলোর ক্যাপশনে প্রায়ই এই শব্দ দু’টি থাকে৷ বিশ্লেষকরা বলেন, উত্তর কোরিয়ার মতো দেশে উনের প্রতি আনুগত্য দেখানোর এটি একটি উপায়৷ ফলে তিনি যেখানেই যান না কেন – হোক সেটি আপেল খেত পরিদর্শন (ছবিতে যেমনটা দেখছেন) কিংবা অন্যকিছু (পরের ছবিটি দেখুন), উন পরামর্শ দিতেই সেখানে গিয়েছেন বলে প্রচার করা হয়৷
ছবি: Reuters/KCNA
আমদানি কমাতে পরামর্শ
শিশুদের জন্য খাবার তৈরি করে এমন একটি কারখানায় গিয়ে উন স্থানীয়ভাবে উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমে আমদানি কমাতে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেন৷ ২০১৫ সালের ১৪ নভেম্বর ছবিটি প্রকাশ করে কেসিএনএ৷