1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অবশেষে বনধ শেষ হলো পাহাড়ে

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

১০৪ দিনের টানা বনধের পর অবশেষে আবার স্বাভাবিকতায় ফিরল দার্জিলিং৷ কিন্তু পর্যটন শিল্পের বিরাট ক্ষতি হলো পুজোর ছুটির মরশুমে৷

ছবি: Imago

গরমের ছুটি বাদ দিলে দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং ও অন্যান্য পাহাড়ি শহরের উপার্জনের একটা বড় অংশ আসে দুর্গাপুজোর ছুটির পর্যটন মরশুম থেকে৷ টানা ১০৪ দিন পাহাড়ের স্বাভাবিক জীবযাত্রা স্তব্ধ থাকার পর, অবশেষে গত মঙ্গলবার, পুজোর ছুটির ঠিক আগে বনধ উঠল৷ কিন্তু তাতে সুবিধে কিছু হলো না৷ এবারের মতো মরশুমি পর্যটন থেকে রোজগারের সম্ভাবনা শেষ৷ দার্জিলিংয়ের পাহাড় থেকে দূরেই থাকলেন পর্যটকরা৷ মূলত ভয়েই৷ বনধের জেরে দার্জিলিংয়ের সঙ্গে টেলিফোন এবং ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল৷ ফলে হোটেল বুকিং থেকে শুরু করে, কোনও কাজই করা যায়নি৷ যে পর্যটকরা অনেক আগে থেকে বুকিং সেরে রেখেছিলেন, তাঁদেরকে সাহস দিতে পারেননি হোটেল মালিকরা৷ কলকাতার রাহুল সেনগুপ্ত যেমন দার্জিলিংয়ের এক হোটেলে ঘর বুক করেছিলেন এক বছর আগে৷ কিন্তু তাঁকে কোনও ভরসা দিতে পারেনি তাঁর হোটেল৷ অগত্যা রাহুল গেছেন পাশের রাজ্য সিকিমে৷ সেখানে বসেও আশায় ছিলেন, দার্জিলিংয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অন্তত দু'‌দিনের জন্যে চলে যাবেন৷ কিন্তু এত দেরিতে বনধ উঠল যে, বিজয়া দশমী একেবারে কাছে এসে গেল৷ এই দশমী, অর্থাৎ দশেরায় পাহাড়ের সব লোক নিজেদের বাড়িতে যান বয়োজ্যেষ্ঠদের হাত থেকে কপালে টিকা অর্থাৎ তিলক লাগাতে৷ এটা পাহাড়ের মানুষদের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচলিত এক প্রথা৷ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই তাই দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন হোটেলে কর্মরত লোকজন বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন৷ ফলে রাহুল যে হোটেলে বুকিং করেছিলেন, তার ম্যানেজার অনুরোধ করেছেন আর না আসতে৷ কারণ, খাবার রেঁধে দেওয়ারও কোনও লোক নেই, ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন রাহুল৷

‘ম্যানেজার অনুরোধ করেছেন আর না আসতে’

This browser does not support the audio element.

এই বনধের কারণে পাহাড়ের ব্যবসার কতটা ক্ষতি হলো, তা ধরা পড়েছে দার্জিলিংয়ের বিধায়ক, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা অমর রাইয়ের কথায়৷ তিনি এখন কলকাতায়৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তাঁর নিস্তেজ কণ্ঠই বলে দিচ্ছে পরিস্থিতি কতটা খারাপ৷ রাই বললেন, এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক৷ পর্যটকরা চাইলে যেতেই পারেন৷ কিন্তু কেউ যাবেন কিনা, তা তাঁরা জানেন না৷ অমর রাই মুখে যা-ই বলুন, তিনি ভালোমতোই জানেন, এবারের পর্যটক মরশুম নষ্ট হওয়ায় পাহাড়ের অর্থনীতির কতটা ক্ষতি হলো৷

‘এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক’

This browser does not support the audio element.

গত মঙ্গলবার কোনও অজ্ঞাত আস্তানা থেকে, সম্ভবত সিকিমের কোনও ডেরা থেকে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা বিমল গুরুং বনধ তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন৷ অবশ্য গুরুং ভাঙেন, তবু মচকান না৷ তিনি ঘোষণায় বলেছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের অনুরোধে তাঁরা বনধ তুলে নিলেন৷ অর্থাৎ, দার্জিলিং নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভূমিকাকে তাঁরা যে গুরুত্বই দেন না, সেটাই হাবেভাবে বোঝাতে চাইলেন গুরুং৷ অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কুশলী রাজনৈতিক চালে গুরুং এখন বেশ বেকায়দায়৷ বিনয় তামাংকে পাহাড়ের বিকল্প নেতা হিসেবে তুলে ধরে তিনি গোর্খা জনমুক্তি মোর্চায় একটা ভাঙন ধরাতে সফল হয়েছেন৷ যদিও তাতেও পাহাড়কে স্বাভাবিক করা যায়নি৷ চোরাগোপ্তা নাশকতা চালিয়ে গুরুং সমর্থকরা একটা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেই রেখেছিল৷ আর পাহাড়ের মূল রাজনীতি যেহেতু জাতিসত্তার দাবিতে, রাজনৈতিক বিভাজন দিয়ে মমতা ব্যানার্জি কতদূর সেটা রুখতে পারবেন, সেটাও এখন দেখার৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ