1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অবহেলা, অপমান, নির্যাতন

১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫

অর্পিত সম্পত্তি প্রকৃত মালিকদের ফিরিয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ পদক্ষেপ কামনা করা হয়েছে৷ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পুরোনো প্রশ্ন, ‘‘অবহেলা, অপমান, নির্যাতন আর কত? বাংলাদেশের হিন্দুরা কি এই দেশের নাগরিক নয়?''

Bangladesch Hindus Überfall Jessore
ছবি: DW

সংবাদ এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অনেকদিন ধরেই চলছে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, সম্পত্তি দখল, দেশত্যাগ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে লেখালেখি৷ তবে সেসব লেখায় আগের মতো এখনো কোনো আশা সঞ্চারের উপকরণ নেই৷

সম্প্রতি অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন পুরোপুরি বাস্তবায়ন করার জন্য সরকারের প্রতি জোরালো দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ৷ বেদখল হয়ে যাওয়া সম্পত্তি প্রকৃত মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে ঘুস, দুর্নীতি ও হয়রানির বিষয়গুলোও তুলে এনেছেন তারা৷

আইনটির যথাযথ বাস্তবায়নের বিষয়টি পর্যবেক্ষণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ মনযোগ এবং উদ্যোগও কামনা করা হয়েছে৷

অর্পিত বা সম্পত্তি আইন চালু হয়েছিল ১৯৬৫ সালে, অর্থাৎ পাকিস্তান আমলে৷ তখন অবশ্য নাম ছিল, ‘শত্রু সম্পত্তি আইন'৷ একসময় নাম হয়ে যায় ‘অর্পিত সম্পত্তি আইন'৷ আইনের নাম বদলালেও সংখ্যালঘুদের দুর্দশা কমেনি৷ অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন প্রণয়ন করেও অবস্থার সামান্যতম উন্নতিসাধন এখনো পর্যন্ত সম্ভব হয়নি৷ গত ৯ সেপ্টেম্বর অর্পিত সম্পত্তি আইনের ৫০ বছর পূর্তিতেও তাই সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকেই তৎপর হওয়ার অনুরোধও জানানো হলো৷

‘কুখ্যাত শত্রু (অর্পিত) সম্পত্তি আইনের ৫০ বছর: জনগণের দুর্দশা' – শীর্ষক এক আলোচনা সভায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ই উঠে এসেছে৷ স্বাধীনতার পরও বাংলাদেশে ৩১ ভাগ ধর্মীয় সংখ্যালঘু ছিল, এখন আছে মাত্র নয় ভাগ – এই বাস্তবতা মনে করিয়ে দিয়ে সেখানে বক্তারা বলেছেন, সংখ্যালঘু নিঃসরণের এ প্রক্রিয়া চলতে থাকলে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পরিণতি ভয়াবহ হবে৷ তাই এখনই একটি নতুন অবস্থার সৃষ্টি করা জরুরি৷

সেখানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অভিজ্ঞ, বিতর্কিত এবং গুরুত্বপূর্ণ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘‘আমি খুব ভয়াবহ অবস্থা দেখছি৷ যে নয় ভাগ সংখ্যালঘু আছে, তাদেরও ধরে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছি৷ গণতন্ত্রও এক রকম ব্যর্থ হচ্ছে৷ এটা অব্যাহত থাকলে এ দেশের গণতন্ত্র আফগানিস্তানের মতো হবে৷''

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অবশ্য এমন কথা অনেক আগে থেকেই লিখছেন অনেকে৷ লেখালেখিতে তেমন কাজ হয় না বলে হতাশাও প্রকাশ করেছেন অনেকে৷ টুইটারে মেহেদি হাসান নামের একজন তেমন হতাশা থেকেই সংখ্যালঘু নির্যাতনের একটি খবর শেয়ার করে লিখেছেন, ‘‘সংখ্যালঘু হামলা, হত্যা, ধর্ষণ, ঘর-বাড়ি, জমি দখল, দেশ ছাড়া করা বাংলাদেশের রোজকার ঘটনা৷ ৯০ শতাংশ ঘটনা গণমাধ্যমে আসে না৷''

আরেকজন হতাশ সমাজের তৃণমূল পর্যায়ে হিন্দুদের অধিকার নিশ্চিত করার কোনো কার্যক্রম না দেখে৷

সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তোলায় হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতারাই যে উল্টো সংকটে পড়ছেন সে খবরও জানিয়েছেন একজন৷

আওয়ামী লীগের এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এক হিন্দু পরিবারের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ ওঠায় ডয়চে ভেলের কয়েকজন পাঠক কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ‘‘সংখালঘুদের সম্পত্তি দখলের দায়িত্ব পেয়েছে মন্ত্রীরা৷'' টুইটারে তা-ও শেয়ার করেছেন একজন৷

বাংলাদেশে রাজধানী ঢাকা এবং হাতে গোনা অন্য কয়েকটি বড় শহরের বাইরে সংখ্যালঘুদের সম্মান, নিরাপত্তা এবং সম্পত্তি প্রতিনিয়ত নানাভাবে হুমকির মুখে পড়ে৷ সংবাদমাধ্যমে এমন খবর নিয়মিতই আসে৷

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা এবং হামলার মাধ্যমে আতঙ্ক ছড়িয়ে একসময় কৌশলে সম্পত্তি দখল করে নেয়া নতুন কিছু নয়৷ তবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় ঘোষণা শুরুর পরপর এমন হামলা অনেক বেড়েছিল৷ স্রেফ মিছিলে যাওয়ার কারণে সাতক্ষীরার কাঁচামাল ব্যবসায়ী অমিয় দাশের পরিবারের ওপর নির্মম হামলার খবর অনেক পাঠক ডয়চে ভেলের খবরেই জেনেছেন৷ অমিয় দাশের পরিবারের ওপর নেমে আসা সেই বিভীষিকার হৃদয়বিদারক বর্ণনা অনেকেরই হয়ত মনে আছে৷ বৃদ্ধা মা-কে পেটানো, কোলের শিশুকে আগুনে ফেলতে যাওয়া, শিশুর মা-কে প্রহার, লূটপাট এবং এসবের পর স্কুল পড়ুয়া আরেক শিশুর কাছে স্কুলের পথই আতঙ্ক হয়ে যাওয়া – অমিয় দাশের বর্ণনার প্রতি পরতে ছিল বর্বরতার বিপরীতে সংখ্যালঘুর অসহায়ত্বের সকরুণ চিত্র৷

অমিয় দাশ সাক্ষাৎকার ২

This browser does not support the audio element.

অমিয় দাশ সাক্ষাৎকার ১

This browser does not support the audio element.

আক্রান্ত এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি যে ছাই হয়ে যাওয়া ঘর-বাড়ির ক্ষতিপূরণ হিসেবে মাত্র আড়াই হাজার টাকা পেয়েছে সে খবরও ডয়চে ভেলে পাঠকদের জানিয়েছে৷

এমন অত্যাচার নির্যাতন এবং বিচারহীনতার ধারাবাহিকতায় অতিষ্ঠ একজনের প্রশ্ন, ‘‘অবহেলা, অপমান, নির্যাতন আর কত? বাংলাদেশের হিন্দুরা কি এই দেশের নাগরিক না?''

সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ