1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অভিজিৎ হত্যার একবছর

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যার একবছর হয়ে গেলেও কারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তা সুনির্দষ্ট করে বলতে পারছে না তদন্তকারী সংস্থা৷ এ পর্যন্ত আটজনকে আটক করা হলেও, তারাই সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত কিনা – তা নিশ্চিত নয়৷

Symbolbild Bangladesch Verhaftung nach Ermordung von US-Blogger
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman

গত বছরের ২৬শে ফেব্রুয়ারি অভিজিৎ রায় ও তাঁর স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা বাংলা একাডেমির বইমেলা থেকে বের হন রাত ন'টার সময়৷ তাঁরা পায়ে হেঁটে শাহবাগের দিকে যাচ্ছিলেন৷ কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি-র উল্টো পাশে সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের মূল গেটের উত্তর দিকে পৌঁছালে দুর্বত্তরা তাঁদের ওপর হামলা চালায়৷ দুবৃত্তদের ধারল অস্ত্রের আঘাতে অভিজিৎ নিহত হন আর তাঁর স্ত্রী বন্যা গুরুতর আহত হন৷ এরপর কিছুটা সুস্থ হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান বন্যা৷

প্রথমে এই মামলাটির তদন্ত শুরু করে শাহবাগ থানা পুলিশ৷ তবে কয়েকদির পরই মামলার তদন্তভার এসে পড়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) ওপর৷ মামলাটির তদন্তের সার্বিক তত্ত্বাবধান করছেন ডিএমপি-র কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম৷

তিনি ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘এখনও পর্যন্ত এই মামলায় আটজনকে আটক করা হয়েছে৷ আর আলামত রয়েছে ১১ ধরনের৷ কিন্তু মামলায় নির্ভর করার মতো কোনো প্রত্যক্ষদর্শী বা সাক্ষী পাওয়া যায়নি৷ এছাড়া এ মুহূর্তে মামলাটির তদন্ত প্রক্রিয়া বলতে গেলে থেমেই আছে৷ কারণ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আলামতের ফরেনসিক রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি৷ ফরেনসিক রিপোর্ট পাওয়ার পর আটক আটজনের ডিএনএ প্রোফাইলের সঙ্গে তা মিলিয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে যে, আসলেই তারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত কিনা৷''

মনিরুল ইসলাম

This browser does not support the audio element.

কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে আরো জানান, ‘‘আমরা যে আটজনকে আটক করেছি, তাদের নানা তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতেই আটক করা হয়েছে৷ তাছাড়া আমরা মোটামুটি নিশ্চিত যে, অভিজিৎ হত্যার সঙ্গে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম জড়িত৷ আটক ব্যক্তিরা সেই টিমেরই সদস্য৷ আটককৃতরা এখনো হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেনি, এটা ঠিক৷ তবে তাদের আগের রেকর্ড থেকে আমরা ধারণা করেছি যে, তারা কোনো না কোনোভাবে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত৷ অবশ্য সরাসরি জড়িত কিনা, তা নিশ্চিত হতেই ফরেনসিক রিপোর্ট লাগবে৷''

তিনি জানান, ‘‘আমরা মোট ১১ ধরনের আলামত পেয়েছি৷ আর সমস্ত আলামতই যুক্তরাষ্ট্রে এফবিআই-এর ফরেনসিক ল্যাবে পাঠিয়েছি আদালতের অনুমতি নিয়ে৷ এ সব আলামতের বেশ কিছু অবিকল অবস্থায় নেই, অন্যান্য জিনিসের সঙ্গে মিশে গেছে৷ তবে আমরা একটা ‘ব্যাকপ্যাক' পেয়েছি, যেটা অবিকল আছে৷ আশা করছি ফরেনসিক পরীক্ষায় তা থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে৷''

তদন্তকারী সংস্থার এই কর্মকর্তা আরো জানান, ‘‘অভিজিৎ হত্যায় সাক্ষী হিসেবে কাজে লাগানোর মতো কোনো প্রত্যক্ষদর্শী পাওয়া যায়নি৷ যে দু-একজনকে পাওয়া গেছে তারা অপরাধীদের চেহারার বর্ণনা দিতে পারেননি৷ খুব অল্প সময়ের মধ্যে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে দুবৃত্তরা পালিয়ে যাওয়াতেই এ রকম হয়েছে৷''

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা দেশে থাকা অবস্থায় অভিজিতের আহত স্ত্রী বন্যার জবানবন্দি নিয়েছি৷ তবে তিনি ঐ ভয়াবহ পরিস্থিতিতে কারুর চেহারা মনে রাখার মতো অস্থায় ছিলেন না বলেই আমাদের জানিয়েছেন৷ তাছাড়া অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায়ের সঙ্গে কথা বলে আমরা জেনেছি যে, তিনি মনে করেন লেখালেখির কারণেই অভিজিৎকে হত্যা করা হয়েছে৷ কিন্তু সুনির্দষ্টভাবে তিনিও কাউকে সন্দেহ করছেন না৷''

এই হত্যা মামলার তদন্তে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই সহযোগিতা দিচ্ছে শুরু থেকেই৷ তাদের সহযোগিতা মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলবে৷ তবে তাদের সহযোগিতা শুধুমাত্র মামলার আলামত পর্যবেক্ষণ, ফরেনসিক টেস্ট এবং ডিএনএ প্রোফাইলিং-এর ক্ষেত্রে কাজে দিচ্ছে৷ এর ভিত্তিতে অপরাধীদের সুনির্দিষ্টভাবে চিন্তিত করতে হবে বাংলাদেশের তদন্তকারীদেরই৷

মামলা তদন্তে ধীর গতি বা ব্যর্থতার প্রশ্নে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা ব্লগার রাজিব হত্যার সঙ্গে জড়িদের চিহ্নিত করেছি৷ এরইমধ্যে আদালত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের মৃত্যুদণ্ডসহ নানা মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে৷ ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবু ছাড়া বাকি সব ব্লগার হত্যা মামলারও তদন্ত শেষে চার্জশিট দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি৷ আশা করছি অভিজিৎ হত্যা মামলাও আমরা ‘ডিটেক্ট' করতে পারব৷ কারণ আমরা নিশ্চিত যে, এটা ঐ একই উগ্রপন্থি গ্রুপ আনসারুল্লাহ বাংলা টিমেরই কাজ৷ এমনকি এফবিআই-ও মনে করে উগ্রপন্থিরাই অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত৷''

অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের কোনো সুরাহা হচ্ছে না কেন? জানান আপনার মতামত, নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ