1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অপরাধীদের এখনো চিহ্নিত করা যায়নি

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১১ মার্চ ২০১৫

লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যার দু'সপ্তাহ পরও হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করতে পারেনি তদন্তকারীরা৷ তবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান, যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা তদন্তে কোনো ত্রুটি রাখছি না৷''

Bangladesch Protest gegen Ermordung von US-Blogger (Bildergalerie)
ছবি: DW

গত ২৬শে ফেব্রুয়ারি রাতে বইমেলা থেকে বের হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির উল্টো দিকে সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের গেটের সামনে অভিজিত্‍ রায় এবং তাঁর স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যার ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা৷ হাসপাতালে নেয়ার পর অভিজিত্‍ মারা যান৷ গুরুতর আহত বন্যাকে ঢাকায় প্রাথমিক চিকিত্‍সার পর যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে হত ৩রা মার্চ৷

হত্যাকাণ্ডের তিনদিন পর আটক করা হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র উগ্রপন্থি ফারাবীকে৷ তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ বা ডিবি৷ ফারাবী ফেসবুকে অভিজিত্‍কে হত্যার হুমকি দিয়েছিল৷ ডিবি-র যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘ফারাবী অভিজিৎকে হত্যার হুমকি দেয়ার কথা স্বীকার করলেও হত্যায় জড়িত থাকার কথা এখনো স্বীকার করেনি৷ তার কাছ থেকে এই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে এখনো কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি৷''

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা ফারাবীর ফেসবুক ধরে আরো অন্তত ১০ জনকে চিহ্নিত করেছি, যারা অভিজিৎকে বিভিন্ন সময় হত্যার প্ররোচণা দিয়েছে৷ তারাও উগ্রপন্থি এবং ফারাবীর অনুসারী৷ তাদের মধ্যে অন্তত ছয়জন ছাত্র৷ তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে৷''

ব্লগার অভিজিৎ রায়ছবি: Privat

এদিকে রানা নামে নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক ছাত্রও রয়েছে সন্দেহের তালিকায়৷ রানা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য৷ ব্লগার রাজীব হত্যার সময়ই তার নাম প্রথম জানা যায়৷ ডিবি জানায়, রানাকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণার চিন্তা করছেন তারা৷

মনিরুল ইসলাম দাবি করেন, ‘‘অপরাধী গ্রেপ্তারে এখনো সাফল্য না থাকলেও, মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া সন্তোষজনকভাবেই এগোচ্ছে৷ মামলার আলামত সংগ্রহ, তথ্য সংগ্রহ এবং অন্যান্য দিক এগিয়ে যাচ্ছে৷ এর মাধ্যমেই তদন্ত কাজ এগোচ্ছে৷ এখনো কোনো প্রত্যক্ষদর্শীকে খুঁজে পাওয়া না গেলেও, চেষ্টা করা হচ্ছে৷ তবে এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, হত্যাকাণ্ডে দু'জন অংশ নেয়৷''

অভিজিত্‍ ও বন্যা আক্রান্ত হওয়ার পর শাহবাগ থানার সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) সোহেল রানা থানা থেকে প্রথম ঘটনাস্থলে যান৷ অবশ্য তিনি গিয়ে পৌঁছানোর আগেই তাঁদের হাসপাতালে নেয়া হয়৷ সোহেল রানা ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আমি ঘটনাস্থলে প্রত্যক্ষদর্শী এক নারীকে (৫০) পেয়েছিলাম৷ তিনিই জানান যে, অভিজিত্‍ ও বন্যাকে দু'জন আক্রমণ করে৷ তিনি তাঁদের রক্ষায় এগিয়ে গেলে তাঁকেও ভয় দেখায় দুর্বৃত্তরা৷ এরপর আমি ভয়ে রাস্তায় পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারাই৷''

সোহেল রানা দুঃখ করে জানান যে, সে সময় তিনি ঐ নারীর নাম ও ঠিকানা রাখেননি৷ ফলে এখন আর তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না৷

সোহেল রানা ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে আবার থানায় ফিরে যান৷ আলমতের মধ্যে রয়েছে: কাগজ দিয়ে মোড়ানো দু'টি রক্তমাখা চাপাতি, একটি ব্যাগ, ব্যাগের মধ্যে দু'টি পুরনো প্যান্ট, কিছু ওষুধ (ট্যাবলেট), খবরের কাগজ, একাটি চশমা এবং কাটা একটি আঙুল৷ পরে তিনি নিশ্চিত হন যে আঙুলটি অভিজিত্‍ রায়ের স্ত্রী বন্যার৷

যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানান, ‘‘এ সব আলামতের একটি অংশ যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই ল্যাবে পরীক্ষা করা হবে৷ এ জন্য আদালতের অনুমতি চওয়া হয়েছে৷ এছাড়া ডিএনএ পরীক্ষার অনুমতিও পাওয়া গেছে৷''

অন্যদিকে অভিজিত্‍ হত্যার পর এফবিআই-র চার সদস্য ঢাকায় এসেছেন তদন্ত কাজে সহায়তার জন্য৷ তাঁরা এরই মধ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং অভিজিতের বাবা অধ্যাপক ড. অজয় রায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন৷ তাঁরা গোয়েন্দা বিভাগের তদন্তকারীদের সঙ্গেও মামলার তদন্ত নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন৷ মামলার আলামত দেখে দিয়েছেন মতামত৷

মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘এফবিআই সদস্যরাও মনে করেন যে, অভিজিৎকে উগ্রপন্থি বা জঙ্গিরাই হত্যা করেছে৷ আমাদের তদন্তও একই সন্দেহকে কেন্দ্র করে এগোচ্ছে৷ এই তদন্ত এফবিআই পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দুটোই দিচ্ছে৷''

তিনি জানান, ‘‘অভিজিত্‍ ও বন্যা দু'জনই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক৷ তাই সে'দেশেও একটি মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে বলে ঢাকায় এফবিআই সদস্যরা জানিয়েছেন৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ