1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মান নাটকের জগত

৭ অক্টোবর ২০১২

বার্লিনের একটি ছোট্ট নাট্যশালা ঠিক করে, তারা তথাকথিত ‘‘নতুন’’ জার্মানদের কণ্ঠ দেবে, তাদের সুখ-দুঃখ, সমস্যাকে পাদপ্রদীপের আলোয় নিয়ে আসবে৷ বার্লিনের অভিবাসী-অধ্যুষিত ক্রয়েৎসব্যার্গ এলাকায় এই থিয়েটার৷

Titel: Theater Bildbeschreibung: Aufführung vom Gilgamesch in Teheran. Stichwörter: Iran, Land und Leute, KW40, Theater, Gilgamesch Quelle: MEHR Lizenz: Frei
ছবি: MEHR

বালহাউস নাউনিনস্ট্রাসে, এই হলো থিয়েটারটির নাম৷ দেয়ালে একদিকে যেমন থিয়েটারের পোস্টার সাঁটা, অন্যদিকে তেমন গ্র্যাফিটি, অর্থাৎ স্প্রে করে দেয়াল লিখন৷ নয়তো ডাইনে বাঁয়ে বসতবাড়ি৷ পতাকা আর নিওন সাইন না থাকলে বোঝাই মুশকিল হতো যে, এখানে একটা নাট্যশালা আছে৷ ক্রয়েৎসব্যার্গে আবার বহু তুর্কি এবং অন্যান্য বহিরাগতদের বাস৷ সে হিসেবে অভিবাসন বিষয়টিকে জার্মান নাট্যজগতে নিয়ে আসার পক্ষে এটা একটা আদর্শ স্থান৷ ১৮৬৩ সালে তৈরি একটি স্টাকো অলঙ্করণের বলরুমকে ৯৯টি আসন যোগ করে থিয়েটারে পরিণত করা হয়েছে৷

অপরদিকে এ'ও বলা দরকার, যে জার্মান নাট্যজগতে আজকাল অভিবাসন বিষয়টি প্রায়শই কোনো না কোনো রূপে স্থান পায়৷ অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নাম দেখলেও সেটা বোঝা যায়৷ কিন্তু কিছুদিন আগে পর্যন্ত এ রকম ছিল না৷ জার্মান থিয়েটার ছিল যেন এই অভিবাসী তথা অভিবাসন বিষয়টির বিরুদ্ধে শেষ দুর্গ৷ আজও সেই প্রতিরোধের অন্ত ঘটেনি, কিন্তু বালহাউস নাউনিনস্ট্রাসে থেকে অন্য একটা ধারার শুরু হয়েছে৷ পরিচালক শেরমিন লাংহফ বললেন:

‘‘বালহাউস নাউনিনস্ট্রাসের সাফল্যের একটা কারণ নিশ্চয় এই যে, আমরা সমাজের বৈচিত্র্য নিয়ে বারংবার প্রশ্ন তুলি, অনুসন্ধান করি৷ এবং আমরা কোনো সহজ কি সস্তার উত্তর খুঁজি না৷''

বালহাউস নাউনিনস্ট্রাসে নাট্যশালাটির কর্মসূচির কথা বলতে গেলে, বলতে হয় যে, ২০০৮ সাল থেকে এখানে যে সব নাট্যকার, নাট্য পরিচালক এবং অভিনেতা-অভিনেত্রীরা কাজ করছেন, তাদের সকলেরই – লাংহফের ভাষায় – ‘পোস্ট-মাইগ্রান্ট' বা উত্তর-অভিবাসন পটভূমি আছে৷ অর্থাৎ তারা দ্বিতীয় কি তৃতীয় প্রজন্মের অভিবাসী৷ শেরমিন লাংহফ নিজেও তার ব্যতিক্রম নন:

বার্লিনের নাট্য উৎসবের একটি দৃশ্যছবি: DW

‘‘এই বাস্তব নিয়েই তো আমাদের বেঁচে থাকতে হয়৷ আমি নিজে তুর্কি বংশোদ্ভূত এবং আমি বার্লিনে নিজেকে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক বলে মনে করি৷ আমার মায়ের জীবনও ফেডারাল জার্মান প্রজাতন্ত্রের ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত৷ আমার জীবন কিংবা আমার মায়ের জীবন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক বলে আমি মনে করি৷ কিন্তু থিয়েটারে আমি এই স্বাভাবিকতা খুঁজে পাই না৷ কাজেই আমি বালহাউসের মতো একটি সাংস্কৃতিক উদ্যোগকে ‘পোস্ট-মাইগ্রান্ট' বা ‘উত্তর-অভিবাসন' তকমা দিয়েছি৷... অর্থাৎ যেটা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক, তাকে একটা বিশেষ নাম এবং তকমা দিতে হয়েছে, কেননা ঠিক সেটাই এখানে ছিল না: এই নতুন জার্মানদের কাহিনিকার, নায়ক, দর্শক, সব পর্যায়ে দেখা এবং দেখানো৷''

শেরমিন লাংহফ তুরস্কে জন্মগ্রহণ করেন এবং ন'বছর বয়সে প্রথম জার্মানিতে আসেন৷ ২০০৮ সাল যাবৎ তিনি বালহাউস নাউনিনস্ট্রাসের দায়িত্বে, কিন্তু আগামী বছর আরো বড় দায়িত্ব নিতে চলেছেন বার্লিনের গর্কি থিয়েটারের ইন্টেন্ডান্ট বা পরিচালক হিসেবে৷ বিগত পাঁচ বছরে বালহাউসের সাফল্যের একটা খতিয়ান দেওয়া যেতে পারে: বালহাউসের নাটকগুলি কিংবা নুরকান এরপুলাত'এর মতো নাট্যপরিচালক আজ বার্লিনের বাইরেও যথেষ্ট পরিচিত৷ অন্যদিকে বালহাউস অভিবাসী-অধ্যুষিত ক্রয়েৎসব্যার্গে হওয়া সত্ত্বেও, আজ সেখানে বার্লিনের অন্যান্য অংশ থেকে নাট্যমোদীরা দর্শক হিসেবে সেখানে আসছেন৷

অন্যদিকে জার্মানিতে কোনো আন্তঃ-সাংস্কৃতিক নাট্যগোষ্ঠী আজও সফল হতে পারেনি, যদিও কোলোনে সে ধরণের একটা প্রচেষ্টা করা হয়েছিল৷ অ-জার্মান আকৃতি কিংবা অবয়বের হবু অভিনেতা-অভিনেত্রীদের প্রায়ই শুনতে হয়: ‘এখানে কি করবে? বালহাউসে যাও৷' শেরমিন লাংহফ সেই বালহাউস ছেড়ে যাচ্ছেন বটে, তবে ২০১৩ সাল থেকে বালহাউস এবং গর্কি থিয়েটারের মধ্যে একটি নতুন সহযোগিতা সৃষ্টি হচ্ছে৷ অর্থাৎ লাংহফ অভিবাসনের ‘থিম'-টিকে পরিত্যাগ করছেন না:

‘‘ও বিষয়বস্তুটির কোনো অন্ত নেই – অভিবাসনের যেমন কোনো অন্ত নেই, বালহাউসকে আমরা যতই উত্তর-অভিবাসন বলি না কেন৷ আমাদের কর্মসূচি হলো সেদিকে চোখ ফেরানো, আজকের জার্মানি এবং আজকের বার্লিনের দিকে মানুষের চোখ ফেরানো৷ আমার ধারণা, অভিবাসন হলো মানবজাতির একটি আদি বিষয়বস্তু, যে বিষয়বস্তুর মধ্যে বাকি সমস্ত বিষয় লুকিয়ে আছে৷''

প্রতিবেদন: ক্লাউডিয়া প্রেভেজানোস/এসি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ