অভিবাসী ভোটারদের ওপর নির্ভরশীল এন আর ডাব্লিউ
১৩ মে ২০১২অন্তর্বর্তী নির্বাচন
জার্মানির সবচেয়ে ঘনবসতির রাজ্য নর্ড রাইন ওয়েস্টফালিয়া৷ সংক্ষেপে এন আর ডাব্লিউ৷ এই রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণের ওপরে নানারকমের সমীক্ষা আর হিসেবনিকেশ কষে থাকেন পরিসংখ্যানবিদেরা৷ আজ রোববার, ১৩ মে যে ভোটগ্রহণ চলছে, তা অবশ্যই অন্তর্বর্তী নির্বাচনের ভোটগ্রহণ৷ কারণ, এই এন আর ডাব্লিউ রাজ্যের সর্বশেষ সংখ্যালঘু এসপিডি-গ্রিন জোট সরকার ২০১২ সালের বাজেট বিতর্কে রাজ্য মন্ত্রিসভায় মুখ থুবড়ে পড়েছে৷ গত মার্চে প্রাদেশিক সংসদ ভেঙে যাওয়ার পর সে কারণেই অন্তর্বর্তী নির্বাচন প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে৷ পরিশেষে এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে রবিবার সারাদিন ধরে৷ বোঝাই যাচ্ছে, এই নির্বাচনে অভিবাসী ভোটারদের ভোটই পরবর্তী রাজ্য বিধানসভা নির্ধারণ করে দেবে৷
অভিবাসী ভোটারদের ওপর নির্ভরতা
সংগত প্রশ্ন সেটা৷ জার্মানির নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া বলে এই যে প্রদেশটি, যাকিনা গোটা দেশে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের বসবাসের প্রদেশ বলে পরিচিত, সেখানে কিন্তু খাঁটি জার্মান আর অভিবাসী জার্মান বা বিদেশ থেকে এদেশে এসে থেকে যাওয়া এবং নাগরিকত্ব নিয়ে ‘জার্মান' হওয়া মানুষরা সংখ্যায় প্রায় সমান সমান৷ এন আর ডাব্লিউ রাজ্যের পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, এই রাজ্যে মোট চার মিলিয়ন মানুষের বসবাস৷ যাদের মধ্যে প্রায় দুই মিলিয়ন হল অভিবাসী বা বিদেশ থেকে আগত৷ আর মোট বৈধ ভোটারদের ১৫ শতাংশ অভিবাসী৷ সুতরাং, এই অভিবাসী ভোটারদের সমর্থনের দিকেই আশা নিয়ে তাকিয়ে রয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা৷
এসপিডি-র রাজ্য এন আর ডাব্লিউ
এসপিডি বা জার্মানির সামাজিক গণতন্ত্রী দলের বেশ বড়মাপের সমর্থন রয়েছে এই প্রদেশের প্রধান অভিবাসী ভোটারদের ওপর৷ যারা আদতে তুর্কি৷ সমীক্ষা বলছে, অভিবাসীদের মধ্যে ৩৭ শতাংশ, যারা তুর্কি শিকড় নিয়ে এদেশে বসবাস করছেন, তাঁরা সকলেই এসপিডি-র সমর্থক৷ ২০ শতাংশ সমর্থন করে এসপিডি-র জোটসঙ্গি সবুজ দল বা গ্রিনদের৷ আর জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের রক্ষণশীল খৃষ্টীয় গণতন্ত্রী দল বা সিডিইউ-কে সমর্থন করে সাকুল্যে চার শতাংশ ভোটার৷ ওদিকে বাম দলগুলি বড়জোর আট শতাংশ বিদেশি ভোটার বা অভিবাসী ভোটারের সমর্থন পেয়ে থাকে৷ সুতরাং সব মিলিয়ে যেরকম ছবি, তাতে এসপিডি-র এবারেও এন আর ডাব্লিউতে বেশ সুসময় বললে ভুল হবে না৷
ভোটের ছবি
ভোট মানেই সকাল থেকে হৈচৈ, মাইকের হুংকার, দু'চারটে বুথ দখল, মারপিট, পুলিশের গাড়ি বা বিক্ষোভ এবং সর্বোপরি মস্ত লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেওয়া কিংবা প্রার্থীদের টাকায় গাড়ি চড়ে গিয়ে ভোট দেওয়া বা ছাপ্পা ভোট, জাল ভোট ইত্যাদির চেনা ছবি জার্মানিতে কখনোই দেখা যায় না৷ ভোট সচরাচর হয়ে থাকে স্থানীয় গির্জায় বা কম্যুনিটি সেন্টারে এবং শান্তিপূর্ণভাবে৷ তাই ভোট মানে কোন অতিরিক্ত কোলাহল বা হৈচৈ এর দর্শন মেলে না৷ সেভাবেই চলছে রবিবারের ভোটগ্রহণ৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়, এএফপি, ডিপিএ
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম