নাম ‘পোলিশ মুক্তা'৷ তবে আসলে তাঁদের অনেকেই জীবন থেকে মুক্তি চান৷ কে দেবে মুক্তি? একাকী জীবন থেকে অর্থকষ্ট দূর করতে এসেছেন জার্মানিতে৷ অন্যের সেবায় নিয়োজিত করেছেন প্রাণ৷ তারপরও সঙ্গী একাকিত্ব আর বঞ্চনার বেদনা!
ছবি: DW/V.Kern
বিজ্ঞাপন
জার্মানিতে নতুন এক শ্রেণির পেশাজীবীদের এখন খুব চাহিদা৷ বৃদ্ধ-বৃদ্ধা বা শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তির তো অভাব নেই৷ বৃদ্ধাশ্রমে পাঠালে একাকিত্ব, পরিবার থেকে দূরে থাকার যন্ত্রণা কুঁড়ে কুঁড়ে খায় তাঁদের৷ তাই আপনজনেরা নিজেদের ব্যস্ত জীবনের সীমাবদ্ধতা মেনে খোঁজেন এমন কাউকে, যিনি কিনা সামান্য কিছু অর্থের বিনিময়ে অসহায় স্বজনের সার্বক্ষণিক সঙ্গী হতে পারবেন৷ এই সঙ্গীদেরই নাম দেয়া হয়েছে ‘পোলিশ মুক্তা', ‘২৪ ঘণ্টার পোলিশ সেবিকা' কিংবা ‘অভিবাসী সেবিকা'৷ সেবিকারা আসেন পূর্ব ইউরোপের দেশ পোল্যান্ড, রোমানিয়া, ক্রোয়েশিয়া বা ইউক্রেন থেকে৷ বেশিরভাগই পোল্যান্ডের, তাই নামকরণেও কোথাও কোথাও তাঁদের ‘পোলিশ' পরিচয়টা গুরুত্ব পায়৷
গুরুত্ব তাঁদের আসলেই অনেক৷ অনেকটা ‘কাজের বেলায় কাজি, কাজ ফুরোলেই পাজি'-র মতো৷ বড় নিষ্ঠুর এক সত্যকে তুলে ধরে বাংলায় প্রচলিত এই প্রবাদ৷ বার্লিনে অভিবাসী সেবিকাদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে এক বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানে আগনিয়েস্কা সাটোলা এমন কিছু তথ্য দিয়েছেন যেসব শোনার পর মনে হবে, জার্মানিতে এই সেবিকাদেরও এখন একই অবস্থা৷ নিজেদের প্রয়োজনে অর্থের বিনিময়ে তাঁদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য কিনে নিলেও সেবা করতে গিয়ে তাঁদেরও যে সংকট হয়, তা নিয়ে কেউ ভাবে না৷ নিজের কাজ হলেই হলো, সেবিকার ভালোমন্দের কথা কে ভাববে!
সাধারণ ধারণা অনুযায়ী, জার্মানিতে এ মুহূর্তে এক থেকে দেড় লক্ষ অভিবাসী নারী প্রবীণ এবং শারীরিকভাবে অক্ষমদের সার্বক্ষণিক সেবা দানের কাজে নিয়োজিত আছেন৷ ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আগনিয়েস্কা সাটোলা অবশ্য জানালেন, বার্লিনে শেষ হওয়া সম্মেলনে কোনো কোনো বক্তা সংখ্যাটা ৫ লক্ষ বলেও উল্লেখ করেছেন৷ অভিবাসী সেবিকাদের বিষয়ে আগনিয়েস্কাও কম জানেন না৷ তাঁদের নিয়েই তাঁর লেখাপড়া৷ এ বিষয়ে পিএইচডি করেছেন তিনি ফ্রাংকফুর্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে৷ নিজের পড়াশোনা, ‘পোলিশ মুক্তা' খুব কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা এবং এ দুয়ের সমন্বয়ে আরো তীব্র হওয়া মানবিক মূল্যবোধ থেকে তিনি ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন এমন কিছু কথা যা জানার পর মানতেই হবে যে, অভিবাসী এই সেবিকাদেরই এখন বিশেষ সেবা প্রয়োজন৷
জার্মানির কোলন শহরে প্রবীণদের জীবনযাত্রা
জার্মানিতে অন্যান্য দেশের মতো বাড়ছে প্রবীণদের সংখ্যা৷তাঁরা কেন দীর্ঘজীবী হন, তাদের জীবনযাত্রা, তাঁদের জীবনের সফলতা আসার নানা গল্প জানিয়েছেন কোলনে একটি অভিজাত এলাকায় বসবাসকারী ইতিবাচক চিন্তার কয়েকজন প্রবীণ৷
ছবি: Nurunnahar Sattar
স্বাস্থ্য সচেতন ও ইতিবাচক চিন্তার মানুষ
প্রতিদিনের নাস্তায় অবশ্যই থাকে তাজা ফলের রস, রুটি, কফি ইত্যাদি৷ জো প্রতিদিন বাজারে যায়, লক্ষ্য তাজা ফল, সালাদ কেনা ছাড়াও বাড়ির বাইরে বের হওয়া এবং আশেপাশের লোকজনের খোঁজখবর রাখা৷
ছবি: Nurunnahar Sattar
রিটা এবং জো
আসল নাম মার্গারিটা৷ তবে আদর করে সবাই তাঁকে ডাকে রিটা নামে৷ আর তাঁর স্বামী ইউসেফকে ডাকে জো৷ এই দম্পতি অবসর জীবনেও থাকেন হাসিখুশি আর নানা কাজ নিয়ে ব্যস্ত৷ তরুণ বয়সে ইংল্যান্ড, অ্যামেরিকা, অস্ট্রেলিয়াতে বেশ কয়েক বছর কাটিয়েছেন৷ কোলন শহরের নামি দামি এলাকায় বহু বছর ছিল তাঁদের গহনার দোকান৷ আজকের এই অবস্থানে আসতে দু’জনে মিলে প্রচুর খেটেছেন৷
ছবি: Nurunnahar Sattar
হ্যাপি আওয়ার
জো এর বয়স ৮০৷ নিজ হাতে তৈরি করা বাড়ির সামনের সাজানো বাগানে গরমকালে প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত বসেন৷ আর অপেক্ষায় থাকেন তাদেরই মতো আরো কয়েকজনের জন্য৷ এঁরা মনে করেন, শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য শুধু ভালো খাবার আর নিয়মিত চেকআপই যথেষ্ট নয়, চাই ভালো বন্ধুবান্ধব আর হাসিতামাশা৷
ছবি: Nurunnahar Sattar
মিলে মিশে থাকা
এই এলাকার প্রায় ৫০টি বাংলো বাড়ির কয়েকটি ছাড়া বাকিগুলোর মালিক কর্মজীবন থেকে অবসর নিয়েছেন৷ অর্থাৎ তাদের বয়স ৬৫’র ওপর৷ এঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নিয়মিত এই আড্ডায় যোগ দেন, করেন খানিকটা মদ্যপান৷ এই অবসরপ্রাপ্ত ব্যবসায়ী, শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকোশলী ও চাকরিজীবীদের আলোচনার বিষয় পারিবারিক সুখ-দুঃখ থেকে বিশ্বের চলমান রাজনীতি পর্যন্ত৷
ছবি: Nurunnahar Sattar
রিটার দিন শুরু
দেখে বোঝার কোনো উপায়ই নেই যে তাঁর বয়স ৭৫৷ সকালে ঘুম থেকে উঠেই ব্যায়ামের মধ্য দিয়ে তাঁর দিনের শুরু৷ সবসময়ই ফিটফাট থাকেন৷ কি করে সম্ভব জানতে চাইলে বলেন, পুরনো অভ্যাস৷ একসময় তিনি নিজেদের ব্যবসা, দুটো সন্তান মানুষ করা এবং সংসারের সমস্ত কাজসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানেও অংশ নিতেন৷ এই দম্পতির মতে জীবনে ‘ডিসিপ্লিন’ খুব বড় ব্যাপার৷
ছবি: Nurunnahar Sattar
সকালের নাস্তা
প্রতিদিনের নাস্তায় অবশ্যই থাকে তাজা ফলের রস, রুটি, কফি ইত্যাদি৷ জো প্রতিদিন বাজারে যায়, লক্ষ্য তাজা ফল, সালাদ কেনা ছাড়াও বাড়ির বাইরে বের হওয়া এবং আশেপাশের লোকজনের খোঁজখবর রাখা৷ কোন প্রতিবেশীর কি দরকার, কে ছুটিতে গেছে বা কোনো নতুন প্রতিবেশী এসেছে কিনা সব খবরই থাকে জো’র কাছে – যার দিনের অনেকটা সময় কাটে বাগান করে৷ আর হ্যাঁ, সপ্তাহে দু’দিন নিয়ম করে স্ত্রীর জন্য ফুল কিনতে ভুল হয়না তাঁর৷
ছবি: Fotolia/kab-vision
হাসিখুশি মারিয়ানা
পেশায় ছিলেন স্কুল শিক্ষক৷ স্বামী মারা গেছেন বেশ কয়েক বছর আগে৷ নিজের গাছের যত্ন ছাড়াও প্রতিবেশীদেরও প্রয়োজনে নানা পরামর্শ দিয়ে থাকেন৷ শীতকালে এই প্রবীণ গ্রুপের ‘হ্যাপি আওয়ার’ আড্ডা বন্ধ থাকে বলে তখন বাইরে কোনো রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়া, কোনো থিয়েটার বা কনসার্টে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন মারিয়ানা৷ উদ্দেশ্য একসাথে আনন্দ করা৷ তাঁর মতে সুস্থ থাকতে চাইলে ভাবের আদান-প্রদান খুবই জরুরি৷
ছবি: Nurunnahar Sattar
চাই মুক্ত বাতাস আর হাঁটাহাঁটি
শরীর ঠিক রাখতে হাঁটাহাঁটি আর ফুসফুস ঠিক রাখতে মুক্ত বাতাস সেবন করেন প্রবীণরা৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানদের আজকের এই অবস্থানে আসতে কত কষ্ট করতে হয়েছে তাঁরা তা খুব ভালোভাবেই জানেন৷ তাঁদের অনেকেরই তখন ঠিকমতো খাবার বা থাকার জায়গা ছিল না৷ অথচ এসব কথা এই প্রজন্মের জার্মানরা বুঝতে বা জানতে চায়না – একথা মাঝেমধ্যেই দুঃখ করে বলেন প্রবীণরা৷
ছবি: Fotolia/Fotowerk
বয়স কোনো বাধা নয়
এঁদের বয়স ৬৫ থেকে ৮৩ পর্যন্ত৷ সবাই নিজে গাড়ি চালান এবং পছন্দ করেন চালাতে৷ প্রায় সবাই কম্পিউটার চালাতে অভ্যস্ত৷ ছেলে-মেয়ে বা নাতি-নাতনির সাথে ইমেল বা ফেসবুকেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন৷ তাঁরা বলেন, ‘সময়ের সাথে কিছুটা তাল মিলিয়ে চলা মানেই ব্রেনের সেলগুলোকে সজাগ রাখা৷’
ছবি: Fotolia/Rido
অসুখকে গুরুত্ব দিলেও মন খারাপ করেন না
বয়সের সাথে অসুখের সম্পর্ক নিবিড়, যা খুবই স্বাভাবিক৷ তাই বলে মন খারাপ নয়৷ অসুখের সময়ও এই প্রবীণ দল একে অন্যের দেখাশোনা করেন৷ ৭৮ বয়সি হান্সের ডায়াবেটিস খুব বেশি৷ কদিন আগে তিনি বাড়ির কাছেই তাঁর অত্যাধুনিক মডেলের ‘আউডি’ গাড়িটি অন্য একটি গাড়ির সঙ্গে লাগিয়ে দিয়েছিলেন৷ তাই এখন মেয়ে বলে দিয়েছে যে, তাঁর ‘গাড়ি চালানো বন্ধ’ – এ কথাই সেদিন হান্স ছলছল চোখে প্রবীণ বন্ধুদের বলছিলেন৷
ছবি: DW / N.Baeva
গান বাজনা
হস্ট অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার৷ শখ অ্যাকোর্ডিয়ান বাজানো আর ছবি আঁকা৷ প্রতিবেশীদের জন্মদিন বা কোনো উপলক্ষ্য হলেই হাতে তুলে নেন অ্যাকোর্ডিয়ান আর তালে তালে নেচে ওঠেন অন্যরাও৷ মজার ব্যাপার হলো, জন্মদিনের দাওয়াত দেবার সময় এঁরা বলে দেন, ‘‘কোনো উপহার নয়, আনন্দ ফুর্তি করার জন্য ‘মন’ নিয়ে এসো৷’’
ছবি: Nurunnahar Sattar
আনন্দ আর ধরেনা
এরকম হালকা আনন্দই বেচে থাকার প্রেরণা যোগায়
ছবি: Nurunnahar Sattar
পোশাককর্মীদের নিয়ে চিন্তা
বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সব খবরই তাঁরা রাখেন৷ সম্প্রতি বাংলাদেশের পোশাক কারখানা রানা প্লাজা ধসে যাওয়ার খবরে তারা খুবই বিচলিত৷ পোশাক কর্মীদের বেতন অবশ্যই বাড়ানো উচিত বলে তাঁরা মনে করেন৷ তাঁদের মতে পোশাক প্রতি ১ ইউরো বেশি দেওয়া জার্মানদের পক্ষে মোটেই কঠিন নয়৷ তাই তাঁরা এর আশু সমাধান কামনা করছেন৷
ছবি: JEWEL SAMAD/AFP/Getty Images
তরুণদের প্রতি পরামর্শ
তরুণ বয়সই কাজ করার উপযুক্ত সময়, তাই নিজের বুদ্ধি আর শক্তিকে কাজে লাগাও৷ নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলো এবং ইতিবাচক চিন্তা করো৷ ছোট বড় সবার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রাখো, প্রয়োজনে সাহায্য করো৷ জীবনে সমস্যা আসবেই, মোকাবেলা করো৷ সময়কে ভালোভাবে কাজে লাগাও, সাফল্য আসবেই আসবে৷ তরুণ বয়সে খাটলেই কেবল প্রবীণ বয়সে ভালো থাকা সম্ভব৷
ছবি: Nurunnahar Sattar
14 ছবি1 | 14
বৃদ্ধাশ্রম বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশে তো বটেই, এমনকি অর্থনৈতিকভাবে আরো পিছিয়ে থাকা বিশ্বের অনেক দেশেই আছে৷ উন্নত দেশের সেবাব্যবস্থাও উন্নত৷ জার্মানিতে প্রবীণদের জন্য বিশেষ এক সেবাব্যবস্থার নাম ‘হোমকেয়ার' বা ‘গৃহসেবা'৷ এ সেবার মূল কথা হলো, ভুক্তভোগীকে বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হবেনা, তাঁদের গৃহেই আসবেন সেবিকা, এসে সেবা দেবেন নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত৷
নিয়ম অনুযায়ী সেবিকারা মাসে সব মিলিয়ে বড় জোর ৩০০ ঘণ্টা কাজ করতে পারবেন৷ ফলে প্রতিদিন দশ ঘণ্টার বেশি কাজ করা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়৷ এ নিয়ম মানলে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা বা শারীরিকভাবে অক্ষমদের বাকি সময়টা নিঃসঙ্গ এবং সেবাবঞ্চিত থাকতে হবে৷ আবার গৃহসেবা কার্যক্রমের অধীনে থেকে যদি কেউ তাঁর প্রিয়জনকে এই সেবা দিতে চান তাহলে মাসে ৪ হাজার ৮০০ থেকে ১০ হাজার ইউরো পর্যন্ত খরচ হবে৷ এত টাকা অনেকের পক্ষেই খরচ করা সম্ভব নয়৷ তাই জার্মানির অনেকে ধরছেন সরকার এবং আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর পথ৷
তাঁদের সহায়তায় এগিয়ে আসছে এমন কিছু বেসরকারি সংস্থা যাদের কাজই হলো পোল্যান্ড, রোমানিয়া, ক্রোয়েশিয়া বা ইউক্রেনের মতো পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে সেবিকা নিয়ে আসা৷ প্রতিমাসে ৯০০ থেকে ১,৫০০ ইউরো হাতে তুলে দিলেই সেবিকা হাজির৷ জার্মান ভাষা এবং সেবায় দক্ষতা থাকলে যে কোনো নারী যোগ দিতে পারেন এই কাজে৷ সাধারণত মুখে মুখেই হয় চুক্তি৷ কাগুজে সনদ বা চুক্তিপত্রের বালাই নেই৷ ফলে ৪ হাজার ৮০০ থেকে ১০ হাজার ইউরো নয়, সর্বোচ্চ দেড় হাজার ইউরো খরচ করলেই পাওয়া যায় বার্ধক্য কিংবা শারীরিক অক্ষমতার কারণে গুরুত্ব হারানো আপনজনের একজন সার্বক্ষণিক সঙ্গী এবং সেবিকা৷
অনেক সেবিকাকে ২৪ ঘণ্টাই থাকতে হয় শারীরিকভাবে অক্ষমদের বাড়িতেছবি: picture-alliance/dpa
আগনিয়েস্কা সাটোলা জানালেন, আইনকে ফাঁকি দিয়ে প্রিয়জনদের ভালো রাখতে গিয়ে অনেকে সেবিকাদের প্রতি একই অন্যায় করছেন যা নিজের প্রিয়জনের সঙ্গে তাঁরা করতে চান না৷ এই বিশেষ সেবিকাদের অনেকের বয়সই নাকি ৫০ থেকে ৬০ বছর৷ আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকলে তাঁরাও নিশ্চয়ই অন্য কারো সাহচর্য এবং সেবায় বাকি জীবন আরাম-আয়েশেই কাটাতেন৷ আগনিয়েস্কা সাটোলা জানালেন, বাধ্য হয়ে সেবা করতে এসে অভিবাসী সেবিকারাই পড়ছেন চরম সংকটে৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘অনেক সেবিকাকে ২৪ ঘণ্টাই থাকতে হয় শারীরিকভাবে অক্ষমদের বাড়িতে৷ কখনো কখনো তাঁদের কয়েক সপ্তাহ, এমনকি কয়েক মাসও একা থাকতে হয় এমন কারো সঙ্গে, ভাষার তারতম্যের কারণে কিংবা সেই ব্যক্তি চলৎশক্তিহীন বলে যাঁর সঙ্গে মনের কোনো যোগাযোগ গড়ে ওঠে না৷ এ বিষয়টি তাঁদের (সেবিকা) মনের ওপরও খুব বিরূপ প্রভাব ফেলে৷''
প্রশ্ন হলো, দেশ এবং পরিবার-পরিজন ছেড়ে আসা এই সেবিকাদের সেবা দেবে কে?