অভিযোগকারীদের যেন লাইন লেগেছে৷ সবারই এক কথা– যৌন নিপীড়ন করেছেন কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং বিশিষ্ট সাংবাদিক এম জে আকবর৷ অভিযোগ অস্বীকার কর মানহানির মামলা করেছেন তিনি৷ কিন্তু আলোচনা-সমালোচনা তাতে থামছে না৷
বিজ্ঞাপন
ইতিমধ্যে উঠেছে পদত্যাগের দাবি৷ কিন্তু সে দাবি অগ্রাহ্য করে এম জে আকবর দাবি করছেন, এসবই সাজানো এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ৷ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত৷ ইতিমধ্যে মানহানির ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছেন মি-টু আন্দোলনের পুরোভাগে থাকা মহিলা সাংবাদিক প্রিয়া রামানির বিরুদ্ধে৷ আকবর ইস্তফা না দেওয়ায় ক্ষূব্ধ মহিলা সাংবাদিক মহল৷ বিরূপ প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ছে সর্বস্তরে৷ প্রধানমন্ত্রী মোদীর উপর চাপ বাড়ছে আকবরকে মন্ত্রীসভা থেকে সরাবার৷ কিন্তু সরকার এবং বিজেপির তরফে এ বিষয়ে কোনো উচ্চবাচ্য নেই৷ দলের তরফে শুধু বলা হয়েছে, আকবর তাঁর নিজের বক্তব্য সাফ জানিয়েছেন, অভিযোগকারী মহিলারা সেটা মানুন বা না মানুন৷ কেন্দ্রীয় সমাজ কল্যাণ এবং স্বশক্তিকরণ মন্ত্রী আটওয়াল সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘দোষী প্রমাণিত হলেই মন্ত্রীর ইস্তফার প্রশ্ন আসবে৷ তার আগে নয়৷ দেখতে হবে সোশ্যাল মিডিয়া মি-টু আন্দোলন মহিলাদের যৌন নিগ্রহের অভিযোগ জানাবার একটা মঞ্চে যেন পরিণত না হয়৷ কারোর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন যৌন নিগ্রহের অভিযোগ এনে ব্যক্তিগত রোষ যেন মেটানো না হয়৷ অভিযোগের বেশিরভাগই অশালীন স্পর্শ বা অভব্যতার৷ তাই আগে দরকার সত্যতা প্রমাণ করার৷ সরকার এ বিষয়ে নির্বিকার নয়৷ এইসব অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখতে অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারকের নেতৃত্বে এক তদন্ত কমিটি গঠন করবেন৷ ১০-১৫ বছর পরে আনা এইসব অভিযোগের সত্যতা আগে প্রমাণ হোক, তারপর ব্যবস্থা৷''
‘সোশ্যাল মিডিয়া মহিলাদের প্রতিবাদের দরজা খুলে দিয়েছে, খুবই গুরুত্বপূর্ণ ’
মহিলা ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী মানেকা গান্ধী মনে করেন, কর্মস্থলে অশালীন আচরণের অভিযোগের তদন্তে কোনো সময়সীমা থাকবে না৷ চারজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এবং একজন বিশিষ্ট আইনজীবী নিয়ে এই একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে৷ নির্ভয়া গণধর্ষণকাণ্ডের পর যেমন বার্মা কমিশন গঠিত হয়েছিল, এটা হবে তারই অনুরূপ৷ তদন্তের পর রিপোর্ট পেশ করবেন সরকারের কাছে৷ অফিসে বা কর্মস্থলে মহিলাদের নিরাপত্তা সম্পর্কে সুপারিশ থাকবে তাতে৷
বিশিষ্ট মহিলা সাংবাদিক ইন্দ্রানী বাগচী ডয়চে ভেলেকে বিলম্বে অভিযোগ আনার প্রসঙ্গে বললেন,‘‘মহিলাদের প্রতি যখন অন্যায় আচরণ করা হয়েছিল, তখন তাঁরা মুখ বুঁজে সহ্য করেছিলেন৷ এখন তাঁরা সরব হয়েছেন৷ সোশ্যাল মিডিয়া তাঁদের প্রতিবাদের দরজা খুলে দিয়েছে৷ আমি মনে করি, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ হতে পারে দু-একটি ক্ষেত্রে হয়ত ব্যতিক্রম আছে৷ কিন্তু সামগ্রিকভাবে দেখতে গেলে এটা সত্যি৷ এর বিহিত করা জরুরি৷ কারণ, ২০১৮ সালে এসেও এই ধরনের অভিযোগের সঙ্গে একটা কলঙ্কের দাগ লেগে যায় মহিলা চরিত্রে৷ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কর্মস্থলে সুস্থ পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য একটালিঙ্গ সংবেদনশীলতা গড়ে তোলা একান্ত দরকার৷ এটা শুধু ভারতেই নয়, গোটা বিশ্বেই লিঙ্গ সংবেদনশীলতার অভাব আছে৷ শুধু অফিসেই নয়, লিঙ্গ সংবেদনশীলতা গড়ে তুলতে হবে গোড়া থেকে৷ হ্যাঁ, স্কুল স্তর থেকে, পারিবারিক স্তর থেকে৷ ভারতীয় পরিবারে সাধারণত কী হয়? ছেলের সাত খুন মাপ৷ কিন্তু মেয়েকে নিয়মের বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে৷''
বলিউডে যৌন হয়রানির অভিযোগ, ভারত জুড়ে তোলপাড়
সাবেক মিস ইন্ডিয়া থেকে বলিউড নায়িকা হলেও বহুদিন শিরোনামে ছিলেন না তনুশ্রী দত্ত৷ তবে দশ বছর আগে নানা পাটেকরের বিরুদ্ধে করা যৌন হয়রানির অভিযোগ ঘিরে এখন তোলপাড় চলছে ভারতে৷তনুশ্রীও ফিরেছেন শিরোনামে৷ বিস্তারিত এই ছবিঘরে৷
ছবি: imago/Hindustan Times/S. Bate
দশ বছর আগে...
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তনুশ্রী তুলে আনেন ২০০৮ সালের সেই ঘটনা৷ জানান, সে বছর ‘হর্ণ ওকে প্লিজ’ ছবির সেটে অভিনেতা নানা পাটেকার তাঁকে যৌন হেনস্থা করেছিলেন৷পরে সেই ছবি থেকে তিনি সরে দাঁড়ান৷ তাঁর বদলে নেওয়া হয় রাখি সাওয়ান্তকে৷ হেনস্থার বিষয়ে চলচ্চিত্র ও টিভি প্রোগ্রাম প্রযোজক সংস্থা, ‘সিন্টা’-র কাছে অভিযোগ করেও কোনো বিচার পাননি৷ এর আগে ২০১৩ সালেও এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে কথা বলেছিলেন তিনি৷
ছবি: Youtube/ABP News
কে এই তনুশ্রী দত্ত?
২০০৪ সালের মিস ইন্ডিয়া তনুশ্রী দত্ত একজন ভারতীয় মডেল এবং অভিনেত্রী৷ ‘চকলেট’ ও ‘আশিক বানায়া আপনে’-র মতো ছবিতে অভিনয় করে নজর কেড়েছিলেন তিনি৷ ২০০৪ সালের মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় দশজন ফাইনালিস্টের মধ্যেও ছিলেন তিনি৷ ২০০৮ সালের ঘটনার পর তনুশ্রী হতাশাগ্রস্ত হয়ে বলিউড থেকে বিদায় নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান৷
ছবি: Getty Images/AFP
দশ বছর পর...
যৌন হেনস্থাবিরোধী ‘মি টু’ আন্দোলনের ঢেউ অবশেষে ভারতেও লেগেছে৷ সম্প্রতি তনুশ্রী ভারতে ফিরে এসে জনসমক্ষে নানা পাটেকারকে অভিযুক্ত করেন, যার ফলে শুরু হয় তোলপাড়৷ দশ বছর আগে যে ঘটনায় কেউ কান দেয়নি, তা নিয়েই শুরু হয় তুমুল আলোচনা৷ দশ বছর আগে তনুশ্রীর বাবা যে নানা পাটেকার, পরিচালক রাকেশ সারং, কোরিওগ্রাফার গণেশ আচার্য ও প্রযোজক সামি সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে এফআইআর করেছিলেন – সেই সত্যও বেরিয়ে আসে৷
ছবি: Getty Images/AFP
মন্তব্যহীন ‘বিগ বি’
এক অনুষ্ঠানে বলিউড তারকা অমিতাভ বচ্চনের কাছে নানা পাটেকারের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে মন্তব্য করতে বলে প্রসঙ্গটি তিনি বেমালুম এড়িয়ে যান৷ তিনি বলেন, ‘‘ আমার নাম তনুশ্রী দত্ত বা নানা পাটেকার কোনটিই নয়, এ বিষয়ে আমি কেন মন্তব্য করব?’’
ছবি: picture alliance/ZUMA Press/India Today
সলমানও এড়িয়ে গেলেন
বলিউড সুপারস্টার সলমান খানও এই ঘটনা সম্পর্কে মন্তব্য করতে রাজি হননি৷ তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘‘আমার এ বিষয়ে ভালো জানা নেই৷ গোটা বিষয়টি এখনও বুঝে না উঠলেও আমি নিশ্চিত যে আইনি পথেই বিষয়টি চলবে৷’’
ছবি: DW/S. Zain
আমির সন্দিহান!
জনপ্রিয় অভিনেতা আমির খানও ঘটনাটি সম্পর্কে সরাসরি মন্তব্য না করে সমালোচিত৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি মনে করি না যে, আমার এখানে কিছু বলা ঠিক হবে৷ আপাতত তদন্ত করে দেখা উচিত সত্যিই এই ধরনের ঘটনা আদৌ ঘটেছে কি না৷’’
ছবি: picture-alliance/AP Photo/R. Kakade
ভিডিও কী বলে?
ইতিমধ্যে ২০০৮ সালে অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্তের গাড়ি ভাঙচুরের দৃশ্যসম্বলিত একটি ভিডিও বিভিন্ন মাধ্যমে ঘোরাফেরা করছে৷ ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কিছু লোক তনুশ্রীর গাড়ির উপর হামলা করছে৷ তনুশ্রী মনে করেন, নানা পাটেকারের হয়ে একটি রাজনৈতিক দলের গুন্ডারা এ হামলা চালিয়েছিল৷ তাঁর মতে, অভব্য আচরণের প্রতিবাদে তিনি শুটিং স্পট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর নানা পাটেকারই মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার ওই সদস্যদের খবর দিয়েছিলেন৷
ছবি: Youtube/ABP News
নানার পাল্টা জবাব
তনুশ্রী দত্তের নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে নানা পাটেকার বলেন, ‘‘১০ বছর আগে যা সত্য ছিল আজও তাই আছে ও আগামীতেও তাই থাকবে৷’’ তিনি আরো বলেন, ‘‘আমার আইনজীবী আমাকে বিষয়টি সম্পর্কে কথা না বলার পরামর্শ দিয়েছেন বলেই আমি নীরব৷ নইলে, প্রেসে কথা বলার কোনো সমস্যা আমার নেই৷’’ নানা পাটেকরের আইনজীবী ইতিমধ্যে তনুশ্রীকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন৷
ছবি: Gety Images/AFP
তনুশ্রীর পাশে সোহা আলি খান
অভিনেত্রী সোহা আলি খান তনুশ্রীর পাশে দাঁড়াতে গিয়ে বলেন,‘‘ভারতের মতো দেশে নারীর সঙ্গে প্রতিদিনই কিছু-না-কিছু ঘটতে থাকে৷’’ তিনি আরো বলেন, ‘‘এমন ঘটনার বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়াতে অনেক সাহস লাগে, তাই আমি মনে করি নারীদের এই বিষয়ে সমর্থন জানাতে হবে, উৎসাহিত করতে হবে।’’ সোহা জানান, তিনি তনুশ্রী বা যৌন হয়রানির শিকার এমন যে কোনো মহিলার পাশে আছেন৷
ছবি: UNI
ফারহানও তনুশ্রীর পাশে
তনুশ্রীর সাহসের প্রশংসা করে চিত্র পরিচালক ও অভিনেতা ফারহান আখতার বলেছেন, ‘‘যদি কোনো নারী নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলতে চায়, তবে আমাদের তা শোনা অন্তত উচিত৷ আমরা তার কথা শোনার আগেই ঘোষণা করছি যে, অভিনেত্রী হিসেবে তাঁর কেরিয়ার শেষ হওয়ার কারণে তিনি মিডিয়ার আলোচনায় আসতে চান!’’ অভিযোগ তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন তিনি৷ নেহা ধুপিয়া, অর্জুন কাপুরের মতো তারকারাও তনুশ্রীকে সমর্থন জানিয়েছেন৷
ছবি: AP
দায় এড়ানোর কৌশল?
২০০৮ সালে চলচ্চিত্র ও টিভি অনুষ্ঠান প্রযোজক অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে থাকা সাবেক সেন্সর বোর্ডপ্রধান পহলাজ নিহলানি পুরো বিষয়টিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে দাবি করেছেন, তিনি শুধু শুটিং সেটে মনোমালিন্য সম্পর্কে জানতেন৷ তনুশ্রী আগে কখনো হয়রানি সম্পর্কে কিছু বলেননি বা না পাটেকারের নাম কোথাও উল্লেখ করেননি বলেও দাবি তাঁর। অথচ দশ বছর আগেই এফআইআর করেছিলেন তনুশ্রী৷
ছবি: Getty Images/AFP/STR
তনুশ্রীর জবাব
মহারাষ্ট্র রাজ্য মহিলা কমিশনে ইতিমধ্যে নানা পাটেকার, রাকেশ সারং, গণেশ আচার্য ও সামি সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন তনুশ্রী৷ ১০ বছর আগে রাজনৈতিক হুমকি ও সহিংস হামলার জন্য মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার কর্মীদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন তিনি৷
ছবি: Getty Images/AFP/STR
আরো কেচ্ছা বেরোলো
এই ঘটনাবলীর আলোকে, 'মি টু' আন্দোলন ভারতে যেন নতুন প্রাণ পেয়েছে। রজত কাপুর ও বিকাশ বেহলের মতো তারকাদের বিরুদ্ধেও নতুন ও পুরোনো অভিযোগ খবরে উঠে আসছে। এখন দেখার এটাই যে, আন্দোলনটি আদৌ সমাজে কোনো ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করতে সক্ষম হয় কিনা।
ছবি: imago/Hindustan Times/S. Bate
13 ছবি1 | 13
অভিযোগকারী মহিলা সাংবাদিক রামানি এর জবাবে বলেছেন, আইনের ভয় দেখিয়ে তাঁকে বা তাঁদেরকে চুপ করানো যাবে না৷ সত্য একদিন উঠে আসবেই৷ সেজন্য তিনি লড়াই চালিয়ে যাবেন৷ তিনি মনে করেন, আকবর এবং অন্যান্য পেশাদার মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের বিরুদ্ধে মহিলাদের যৌন হয়রানি নিয়ে প্রতিবাদ এবং আন্দোলন ক্রমশইবাড়ছে এবং সেটা ঝড়ের আকার নিচ্ছে৷ এক বিস্তারিত বিবৃতিতে মহিলা সাংবাদিক রামানি বলেন, প্রশ্ন উঠেছে এত বছর পর কেন এই অভিযোগ ? সব মহিলাই জানেন, এরমধ্যে জড়িয়ে আছে কলঙ্ক ও লজ্জা৷ কাজেই বিলম্বের কারণ নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে সমাজের উচিত হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কিভাবে অফিসে কাজের পরিবেশকে সুরক্ষিত রাখা যায়৷ এম জে আকবরের মতো রাজনৈতিক চক্রান্ত তকমা দিয়ে অভিযোগ নাকচ করা যায় না৷ মিডিয়া সংগঠন প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে. প্রশ্নটা মানা বা না মানার নয়৷ একজন মন্ত্রী হিসেবে তিনি দায়িত্ববোধের পরিচয় দিতে পারেননি৷
এম জে আকবর প্রথম রাজনৈতিক ম্যাগাজিন সানডে এবং দুটি সংবাদপত্র টেলিগ্রাফ এবং এশিয়ান এজ-এর সম্পাদক ছিলেন৷ ইন্ডিয়া টুডে'র সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মোদী মন্ত্রীসভার অন্তর্ভূক্ত হন ২০১৬ সালে৷ মধ্যপ্রদেশ থেকে রাজ্যসভার সাংসদ তিনি৷ তাঁর জন্ম পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলায়৷