1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অভিষেকের কনভয়ে ‘হামলা': অভিযোগের তীর কুড়মিদের দিকে

পায়েল সামন্ত২৭ মে ২০২৩

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলার দায়ে অভিযুক্ত করা হচ্ছে কুড়মি আন্দোলনকারীদের৷ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করছেন তারা৷

জনজাতি স্বীকৃতি দেয়াসহ একগুচ্ছ দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছে কুড়মি জনগোষ্ঠী৷ ছবি: পায়েল সামন্ত/ডিডাব্লিউছবি: Payel Samanta/DW

রেল থেকে সড়কপথ অবরোধ এবং রাজনৈতিক নেতাদের ঘেরাওয়ের কর্মসূচি নিয়েছে তারা৷ সব দলের নেতাদেরই পথ আটকানো হচ্ছে ‘ঘাগরা ঘেরা' কর্মসূচিতে৷

মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, তৃণমূল বিধায়ক জুন মালিয়া, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, প্রবীণ সিপিএম নেতা বিমান বসুকেও পড়তে হয়েছে ঘেরাওয়ের মুখে৷

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও  ঘেরাওয়ের মুখে পড়েছেন৷ শুক্রবার সন্ধ্যায় ‘নবজোয়ার' কর্মসূচিতে তিনি ঝাড়গ্রামের শালবনী যাওয়ার পথে একই কর্মসূচি নেয় কুড়মিরা৷ কিন্তু গড়শালবনী এলাকায় এই অবরোধ সহিংসতায় রূপ নেয়৷ অভিযোগ, লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায় আন্দোলনকারীরা৷ ছোঁড়া হয় ইট-পাটকেল৷ এসময় ভেঙে যায় কনভয়ে থাকা মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গাড়ির কাচ৷

এই ঘটনার পর সরাসরি কুড়মি নেতৃত্বকে হুঁশিয়ারি দেন অভিষেক৷ তিনি বলেন, ‘‘এই ঘটনার পিছনে বিজেপি রয়েছে, আর কারা রয়েছে আমরা জানি৷ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কুড়মি নেতৃত্বকে জানাতে হবে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে৷ কারা জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়েছে৷''

কুড়মিরা ‘জয় গরাম' স্লোগান দিয়ে থাকে৷ গন্ডগোলের সময় অবরোধকারীদের হলুদ পতাকা নিয়ে ঘটনাস্থলে দেখা গিয়েছে সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত খবরে৷

ঘটনার পর সংবাদ সম্মেলন করেছেন কুড়মির নেতারা৷ শনিবার ঘাগরা ঘেরাও কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের কর্মীরা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন৷ যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের শাস্তি দেওয়া হোক৷ প্রয়োজনে বিচারবিভাগীয় বা সিবিআই তদন্ত হতে পারে৷ তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন৷

ঘটনার রাত থেকেই জঙ্গলমহলে ধরপাকড় শুরু করেছে পুলিশ৷ তিন কুড়মি নেতাসহ সাত জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ তাদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ৷ যদিও পরিবারের দাবি, ধৃতরা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন৷ তারা পুলিশি জুলুমেরও অভিযোগ তুলেছেন৷

অভিষেকের অভিযোগের জেরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক উত্তেজনা৷ বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘ভাগাভাগির রাজনীতি করতে গিয়ে তৃণমূল বিপাকে পড়েছে৷ কুড়মি, মতুয়া, গোর্খা, রাজবংশী, আদিবাসী সবাই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কেন? এর ফল ওরা বুঝতে পারবে ভোটে৷''

রাজ্য কুড়মিদের দাবি মেনে প্রস্তাব কেন্দ্রকে পাঠায়নি, তাই এই আন্দোলন: অমল মুখোপাধ্যায়

This browser does not support the audio element.

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘একটা হামলার জেরে কুড়মিদের দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে৷ ঘটনাস্থলে দুই হাজার পুলিশ ছিল৷ তারা এই ঘটনা আটকাতে পারেনি কেন?''

কনভয় হামলার পরের দিনই জঙ্গলমহলে পৌঁছে গিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তার মন্তব্য, ‘‘বিজেপি চাইছে এখানে জাতিগুলির মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে৷ এটা জঙ্গলমহল অশান্ত করার চক্রান্ত৷ এরপর এখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করবে৷''

যদিও পর্যবেক্ষক অমল মুখোপাধ্যায় শুক্রবারের ঘটনাকে ‘চক্রান্ত' বলতে চাইছেন না৷ তার বক্তব্য, ‘‘ঘটনাস্থলে কোনো বিজেপি নেতা বা সদস্য ছিলেন না৷ তাই এটাকে স্বতঃস্ফূর্ত বলতে হচ্ছে৷ রাজ্য কুড়মিদের দাবি মেনে প্রস্তাব কেন্দ্রকে পাঠায়নি৷ তাই এই আন্দোলন৷''

জঙ্গলমহলের বৃহৎ জনগোষ্ঠী হিসেবে কুড়মিদের পরিচয়৷ এই এলাকায় ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়েছিল বিজেপি৷ ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কিছুটা জমি ফিরে পেয়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে কুড়মিদের আন্দোলন পঞ্চায়েত ভোটের আগে চিন্তায় রেখেছে শাসক দলকে৷

কুড়মি নেতৃত্বের একাংশের অভিযোগ, রাজ্য সরকার জনজাতি বিষয়ক প্রস্তাব কেন্দ্রের কাছে পাঠাচ্ছে না৷ এর ফলে তাদের স্বীকৃতি লাভের পথে বাধা তৈরি হচ্ছে৷ আবার অন্যান্য আদিবাসী জনগোষ্ঠী কুড়মিদের জনজাতি স্বীকৃতি দেয়ার বিরোধী৷ সাঁওতাল সংগঠনের সদস্যরা ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে গিয়ে এর বিরোধিতায় দরবার করে এসেছেন৷

রাজনৈতিক বিশ্লেষক রাজাগোপাল ধর চক্রবর্তী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কুড়মিরা শুধু সংখ্যায় বেশি নন, তাদের মধ্যে শিক্ষার হার বেশি৷ তাদের জনজাতি স্বীকৃতি দিলে অন্যান্য আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কাছে প্রতিযোগিতা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে৷ উভয় চাপে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন৷ কুড়মিরা জঙ্গি আন্দোলন করে সিদ্ধান্তকে ত্বরান্বিত করতে চাইছেন৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ