1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দ্বন্দ্ব-সংঘাত বাড়ছে আওয়ামী লীগে

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংঘাত এখন সবচেয়ে বেশি হচ্ছে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগের৷ আর এইসব অভ্যন্তরীণ সংঘাত-সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যায়ও শীর্ষে রয়েছেন ক্ষমতাসীন দলটির নেতা-কর্মীরা৷

Bangladesch Wahlen Wahlkampf 2018 Awami Muslim League
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman

রক্তক্ষয়ী অভ্যন্তরীণ সংঘাত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে৷ আর এতে জড়িয়ে পড়ছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপগুলো৷ গ্রুপের রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার ও পদ-পদবীর জন্য যেমন সংঘাত হচ্ছে তেমিন স্থানীয় পর্যায়ে টেন্ডার, দখল ও জমিজমা নিয়ে সংঘাত হচ্ছে৷

 মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসেবে ২০১৮ সালে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ সংঘাত-সংঘর্ষের ৮৬টি ঘটনায় ২৩ জন নিহত এবং এক হাজার ৪৫৩ জন আহত হয়েছেন৷ সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে তারা এই হিসেব তৈরি করেছে৷ একই সময়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ১৬টি৷ তাতে একজন নিহত এবং ১৫১ জন আহত হয়েছেন৷ বিএনপির সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষ হয়েছে তিনটি৷ এতে আহত হয়েছেন ৬৩ জন৷ নিহত একজন৷

আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার ভাতৃপ্রতীম সংগঠনের বা ওই সংগঠনগুলোর নিজেদের মধ্যে এই সংঘাত-সংঘর্ষের হিসাব ধরলে সেটা আরো অনেক বেশি ৷ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ, যুবলীগ ও যুবলীগ, ছাত্রলীগ  ও ছাত্রলীগ এভাবে ধরলে ওই এক বছরে আরো অতিরিক্ত ৪৯টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে৷ আর এতে আহত হয়েছেন ৪২৫ জন, নিহত হয়েছেন পাঁচ জন৷ তাদের মধ্যে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষই বেশি হয়েছে, ২৪টি এবং তাতে আহত হয়েছেন দুইশ এবং নিহত হয়েছেন একজন৷

খালেদ মাহমুদ চৌধুরী

This browser does not support the audio element.

আসকের চলতি বছরের প্রথম সাত মাসের (জানুয়ারি-জুলাই) হিসেবে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষ হয়েছে ৩৩টি৷ আর এতে আহত হয়েছেন ৪৭১ জন এবং নিহত ছয় জন৷ এই সময়ে বিএনপির সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষ হয়েছে তিনটি৷ এতে আহত হয়েছেন ২৭ জন৷ কেউ নিহত হননি৷

এই সাত মাসে দেশে রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ১৩৮টি৷ তাতে আহত হয়েছেন এক হাজার ৫৬৮ জন৷ নিহত হয়েছেন ৩০ জন৷ এর মধ্যে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ১৮ জন৷ আহত হয়েছেন ৯২৮ জন৷ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ৮২টি৷

গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়৷ নির্বাচন পরবর্তী রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ছয়টি৷ এতে আহত হয়েছেন ৪৭ জন৷ কেউ নিহত হননি৷ ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৪২৩টি সংঘাতের ঘটনা ঘটে৷ তাতে আহত হন তিন হাজার ৪৪১জন৷ নিহত ১৪ হন জন৷ আর সংসদ নির্বাচনে ৪০টি সংঘর্ষের ঘটনায় ৬২১ জন আহত এবং ১৯ জন নিহত হয়েছেন৷
সংবাদমাধ্যমে প্রায় প্রতিদিনই আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপগুলোর সংঘাতের খবর ছাপা হচ্ছে৷ এই মাসে চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরাসহ আরো কয়েকটি এলাকায় সংঘর্ষ হয়েছে৷ আগস্টে একাধিক সংঘর্ষ হয়েছে৷ এরমধ্যে জয়পুরহাটে একজন নিহত হয়েছে৷ ‘আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ-২০১৯' লিখে গুগলে সার্চ দিলে দেশের প্রায় সব এলাকায়ই সংঘর্ষের প্রকাশিত খবরের লিংক পাওয়া যায়৷

শামছুজ্জামান দুদু

This browser does not support the audio element.

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগের ভেতরে যে কোন্দল ও সংঘাতের কথা বলা হচ্ছে এর কোনোটিই রাজনৈতিক কারণে হয়নি৷ ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের কারণে এসব সংঘাত বা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে৷ বিএনপি সংঘাত করছে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে৷ তারা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ লালন করে৷ তার তাপতো চারদিকে ছড়াবেই৷ আমরা আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ, আওয়ামী লীগের ভেতরে কোনো বিভক্তি নেই৷''

তিনি বলেন, ‘‘বিএনপি সন্ত্রাস থেকে সরে যায়নি তার প্রমাণ রংপুর-৩ উপ নির্বাচনে তারা বঙ্গবন্ধুর খুনির সহধর্মিনীকে মনোনয়ন দিয়েছে৷ বিএনপিরই লোকজন হয়তো বিভিন্ন ব্যক্তির হাত ধরে আওয়ামী লীগের মধ্যে ঢুকে এইসব সংঘাতের ঘটনা ঘটাচ্ছে৷ কিন্তু আমরা তাদের প্রশ্রয় দেব না৷ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর আছে৷''

এসব অভিযোগের জবাবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগে কোনো ভালো লোক যাবে না৷ তারা কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে৷ বিএনপি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য কাজ করছে৷ তাই বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগের গিয়ে সংঘাত- সংঘর্ষের ঘটনা ঘটাচ্ছে এই দাবী অসাড়, এর কোনো ভিত্তি নেই৷‘‘

দুদু বলেন, ‘‘দেশে আইনের শাসন নেই, শেয়ার বাজারের অবস্থা খারাপ, ব্যাংকের টাকা লুট হচ্ছে৷ আর আওয়ামী লীগ এখন নিজেরাই নিজের মধ্যে সংঘাত সংঘর্ষ, হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে৷ এটা কর্তৃত্ববাদী শাসনের ফল৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ