অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর
১৫ মে ২০২৩![মণিপুর](https://static.dw.com/image/65568746_800.webp)
মণিপুর-কাণ্ডের দশ দিন পর দিল্লি এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করলেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। তারসঙ্গে মণিপুরের কয়েকজন মন্ত্রী এবং জনপ্রতিনিধিও দিল্লি এসেছেন। বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে তা প্রকাশ্যে না জানালেও, সূত্র মারফত বেশ কিছু তথ্য সংবাদমাধ্যমের হাতে এসেছে।
মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছেন, রাজ্যের পরিস্থিতি এখন কিছুটা শান্ত হলেও ভবিষ্যতে ফের এমন ঘটনা ঘটার যথেষ্ট আশঙ্কা আছে। এবং সে কারণেই কেন্দ্রের সাহায্য প্রয়োজন। বৈঠকে জনজাতি কুকির দাবিপত্রও পেশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মণিপুরের চার মন্ত্রী এসেছেন। এছাড়াও মণিপুরের বিজেপি প্রধান সারদা দেবী বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। কুকি জনগোষ্ঠীর দুই প্রতিনিধিও মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে এসেছেন।
কুকিদের দাবি, মণিপুরে তাদের পৃথক প্রশাসনিক ব্যবস্থা দেয়া হোক। তাদের দাবি, বিজেপির জনপ্রতিনিধিরাও এই দাবিতে সহমত পোষণ করেছেন। কিন্তু কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে মণিপুরে সেই ব্যবস্থা তৈরি হবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
অন্যদিকে মেইতেই গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরাও দিল্লি এসেছেন। যন্তরমন্তরে তারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। মণিপুরে মেইতেই গোষ্ঠীর পরিমাণ ৫৩ শতাংশ। জনজাতি গোষ্ঠীর পরিমাণ ৪০ শতাংশ। মেইতেইরা মূলত ইমফল উপত্যকায় থাকেন। সেখানেই তাদের কাজ এবং বসবাস করতে হয়। পাহাড়ে গিয়ে কাজ করার বা জমি কেনার অধিকার তাদের নেই। সে কারণেই দীর্ঘদিন ধরে তারা জনজাতির স্ট্যাটাস চাইছেন এবং পাহাড়ে কাজ এবং জমির অধিকার চাইছেন। কিন্তু পাহাড়ের জনজাতি উপত্যকায় এসে জমি কিনতে পারেন। মেইতেই গোষ্ঠীর দাবি বিরোধিতা করছে কুকি জনজাতি। তাদের দাবি, মেইতেই গোষ্ঠী যথেষ্ট বর্ধিষ্ণু। পাহাড়ে তারা কাজের এবং জমি কেনার অধিকার পেলে জনজাতি গোষ্ঠীর অধিকার ভঙ্গ হবে। তাই তারা চায় না, মেইতেইকে জনজাতির স্টেটাস দেওয়া হোক।
দীর্ঘদিন ধরেই এই বিতর্ক চলছে। দশদিন আগে এই নিয়েই দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ হয় এবং অন্তত ৬০ জনের মৃত্যু হয়। হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ঘরছাড়াদের রাজ্যে ফেরানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। কিন্তু অভিযোগ, কুকি অধ্যুষিত অঞ্চলে বসবাসকারী মেইতেইরা ঘরে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক থেকে নতুন কোনো পথ বেরিয়ে আসে কি না, সেদিকেই তাকিয়ে বিবদমান দুই গোষ্ঠী।
এসজি/জিএইচ (পিটিআই, এনডিটিভি)