মোলডাভিয়া ইউরোপের দরিদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে পড়ে৷ হয়তো সেই কারণেই এখানকার প্রকৃতি আজও সহজ, স্বাভাবিক, কিন্তু মাত্রাধিক কৃষিকাজ পরিবেশের বিপদ ঘটাচ্ছে৷ চেষ্টা চলেছে, চাষিদের অরগ্যানিক চাষবাস শিখিয়ে পরিস্থিতি বদলানোর৷
বিজ্ঞাপন
শীতের শুরুতে বাস উঠিয়ে আফ্রিকা যাওয়ার মুখে পেলিকানের দল৷ গ্রীষ্মে মোলডাভিয়া প্রজাতন্ত্রের দক্ষিণে দিন কাটিয়েছে তারা৷ বেলেউ হ্রদটি হল পাখিদের স্বর্গ৷ গ্রেট হোয়াইট ইগ্রেট বা সাদা সারসের মতো বিপন্ন প্রজাতিগুলিও এখানে নিরাপদ৷ কিন্তু হ্রদের কাছাকাছি যে সব জীবজন্তু পাওয়া যায়, তাদের সকলেই যে এই অঞ্চলের জন্য স্থানীয় ও স্বাভাবিক, এমন নয় – বলেন প্রাণীবৈচিত্র্য বিশেষজ্ঞ ওরেল লোজান৷ কিছু অভিবাসী প্রজাতি এই এলাকার উদ্ভিদপ্রকৃতির বিপদ ডেকে আনছে৷ প্রাণীবৈচিত্র্য বিশেষজ্ঞ ওরেল লোজান বলেন, ‘‘এটা সম্ভবত একটা পরিযায়ী পঙ্গপাল, মানে এক ধরনের কীট বা আপদ৷ আমরা যে এখানে এটাকে খুঁজে পাচ্ছি, তার অর্থ, এটা দক্ষিণের কোনো এলাকা থেকে এসেছে৷ যা কিনা পরিবেশ, সম্ভবত জলবায়ুর পরিবর্তন, বা বিশ্বের উষ্ণায়নের ফল৷''
বৈশ্বিক সমস্যাগুলির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মোলডাভিয়ার আঞ্চলিক সমস্যা৷ কৃষিকাজ ক্রমেই হ্রদের ধার ঘেঁষে আসছে৷ ওরেল লোজান, প্রাণীবৈচিত্র্য বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘‘বলতে কি, হ্রদের পানি কমতে শুরু করে, খুব তাড়াতাড়ি, গত দশ বছরেই৷ এটা পলি পড়ার কারণে৷ ঐ পলি চাষের খেত থেকে আসছে মানুষের কাটা খাল ধরে৷''
অন্যরকম এক ‘বীজ ব্যাংক’-এর কথা
কোনো সংকটের কারণে একটি নির্দিষ্ট জাতের বীজ যেন চিরতরে হারিয়ে না যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করে ‘স্ভালবার্ড গ্লোবাল সিড ভল্ট’৷
ছবি: Michael Marek
১২০ মিটার ভেতরে
দেখছেন ‘স্ভালবার্ড গ্লোবাল সিড ভল্ট’-এর প্রবেশমুখ৷ নরওয়ের মূল ভূখণ্ড থেকে জাহাজে করে প্রায় সাড়ে ন’শ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে যেতে হবে স্ভালবার্ডে৷ সেখানেই পাহাড়ের প্রায় ১২০ মিটার ভেতরে আছে এই ভল্ট৷
ছবি: Michael Marek
সংকটের সময় যেন কাজে লাগে
ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন ভল্টের ভেতরের অংশ৷ এই টানেলের শেষপ্রান্তে ভল্টের মূল অংশের দেখা পাওয়া যায়৷ স্থানীয় কিংবা বৈশ্বিক সংকটের কারণে বিশ্বের কোথাও কোনো বীজ হারিয়ে গেলে যেন একটা উপায় খুঁজে পাওয়া যায় সে লক্ষ্যে ২০০৬ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়৷
ছবি: Michael Marek
এই সেই দরজা
টানেলের শেষপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন আপনি৷ এটাই ভল্টের দরজা৷ মার্কিন কৃষিবিদ ক্যারি ফাওলার-এর উদ্যোগে ভল্টটি তৈরি হয়েছে৷ খাদ্যশস্যের বৈচিত্র্যতা হারিয়ে গেলে মানবজাতি অনেক বিপদে পড়তে পারে, সেই আশংকা থেকেই ভল্টটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে৷
ছবি: Michael Marek
নরওয়ে সরকারের অর্থায়ন
ভল্টটি তৈরিতে প্রায় ৯ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে৷ পুরোটাই দিয়ে নরওয়ে সরকার৷ তবে কার্যক্রম চালানোর খরচ জোগাতে নরওয়ে সরকারের সঙ্গে যোগ দিয়েছে ফাওলারের প্রতিষ্ঠান ‘গ্লোবাল ক্রপ ডাইভারসিটি ট্রাস্ট’৷ গেটস ফাউন্ডেশন সহ অন্যান্য সংগঠন এই ট্রাস্টে অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকে৷
ছবি: Michael Marek
এক প্রজাতির ৫০০ বীজ
এবার আপনি ভল্টের মধ্যে ঢুকে পড়েছেন৷ এখানেই বীজগুলো রাখা হয়৷ প্রায় ৪৫ লক্ষ জাতের বীজ রাখার ব্যবস্থা আছে সেখানে৷ একেক প্রজাতির প্রায় ৫০০টি করে বীজ রাখা হয়৷ বীজ রাখার জন্য বছরে তিনবার এই ভল্ট খোলা হয়৷ ভল্টের তাপমাত্রা সবসময় মাইনাস ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখা হয়৷
ছবি: Michael Marek
বিশেষ প্যাকেট
দেখছেন জার্মানি থেকে সেখানে পাঠানো বীজ৷ এমন বিশেষ প্যাকেটে বীজ রাখা হয়৷ বর্তমানে সারা বিশ্ব থেকে যাওয়া ৫,১০৩টি জাতের প্রায় সাড়ে আট লক্ষ বীজ সেখানে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে৷
ছবি: Michael Marek
প্রথম ঘটনা
এ ধরণের ভল্ট যে কেন প্রয়োজন তার প্রমাণ ইতিমধ্যে পাওয়া গেছে৷ ছবিতে সিরিয়ার যে সংগঠনটির নাম দেখছেন চলমান সিরিয়া সংকটের শিকার হয়ে আলেপ্পোতে থাকা সেই সংগঠনের সদর দপ্তর ধ্বংস হয়ে গেছে৷ ফলে হারিয়ে গেছে খাদ্যশস্যের বীজ৷ কিন্তু ভাগ্য ভালো তারা আগেই তাদের বীজগুলো স্ভালবার্ডের সিড ভল্টে রেখে দিয়েছিলেন৷ এখন তারা সেগুলো চেয়ে পাঠিয়েছেন৷
ছবি: Michael Marek
কেন স্ভালবার্ড?
কারণ নরওয়ে সাধারণত যুদ্ধ-বিগ্রহ থেকে দূরে থাকে৷ তাছাড়া স্ভালবার্ড এলাকাটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৩০ মিটার উঁচুতে৷ ফলে বন্যার সম্ভাবনা নেই৷ আশেপাশে নেই কোনো আগ্নেয়গিরি৷ এমনকি ভূমিকম্পের সম্ভাবনাও সেখানে সীমিত৷ এবার ভল্ট নিয়ে ভিডিও দেখতে চাইলে উপরে ‘+’ চিহ্নতে ক্লিক করুন৷
ছবি: Michael Marek
8 ছবি1 | 8
কৃষিকাজ ও পরিবেশ
কৃষিকাজের উৎপাদন পদ্ধতি বস্তুত মোলডাভিয়ায় পরিবেশ ও প্রাণীবৈচিত্র্যের মান নির্দিষ্ট করে৷ মোট জমির তিন-চতুর্থাংশতে চাষ করা হয়, এ পর্যন্ত প্রধানত কৃত্রিম সার ও কীটনাশক ব্যবহার করে৷ একটানা ভু্ট্টা বা সূর্যমুখী ফুলের চাষের ফলে জমি তার উর্বরতা হারায়, কাজেই আরো বেশি কৃত্রিম সারের প্রয়োজন পড়ে৷ ভিসিয়াস সার্কল বা দুষ্টচক্র৷
প্রো-রুরাল-ইনভেস্ট সংস্থার প্রধান ভিওরেল গেরচিউ এই পরিস্থিতি বদলাতে চান৷ তাঁর সংগঠন অরগ্যানিক পণ্য আর কৃষিকাজের প্রসার ঘটানোর চেষ্টা করছে৷ প্রো-রুরাল-ইনভেস্ট এনজিও-র ভিওরেল গেরচিউ বলেন: ‘‘দশ বছর পরে আমরা যদি বলতে পারি যে, মোলডাভিয়ার বিশ শতাংশ কৃষিজমিতে অরগ্যানিক চাষ চলেছে, তাহলে দারুণ হবে৷''
ইউরোপের দরিদ্রতম দেশগুলির একটিতে অরগ্যানিক কৃষিকাজ? মোলডাভিয়ার মানুষদের মাসিক রোজগার হল গড়ে ২২০ ইউরো৷ রাজধানী কিশিনাউ-তেও খুব বেশি মানুষ অরগ্যানিক খাবার কেনার সামর্থ্য রাখেন না৷ সেজন্য সরকার অরগ্যানিক কৃষিকাজে উৎসাহ দিচ্ছে৷ উদ্দেশ্য: ইউরোপীয় ইউনিয়নে রপ্তানি বাড়ানো৷
যেমন আরোনিয়া নামের ফলটি৷ এটি এক ধরনের কুল৷ খেতে খানিকটা কষ, কিন্তু নানা রোগ সারাতে পারে, জানালেন চাষিরা৷ একজন বললেন, ‘আমি নিজে ওর রস খেয়ে দেখেছি, যার ফলে আমাকে গত গ্রীষ্মে কোনোরকম ওষুধ খেতে হয়নি৷' অরগ্যানিক চাষি ভিটালি পিন্টেলাই বললেন: ‘ওটা এক ধরনের ওষুধ, খুবই কাজে লাগে৷ খুব ভালো বিক্রি হতে পারে বলে আমার ধারণা৷'
ধর্মীয় গ্রন্থে পরিবেশের কথা
ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সব ধর্মের পবিত্র গ্রন্থেই পরিবেশ রক্ষার জন্য অনুসারীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷ ছবিঘরে থাকছে সেসব কথাই৷
ছবি: Jody McIntryre / CC-BY-SA-2.0
ঈশ্বরের সৃষ্টিকে রক্ষা
বাইবেলের প্রথম বই ‘জেনেসিস’এ বলা আছে, ঈশ্বর আদম আর ঈভকে ‘গার্ডেন অফ ইডেন’ অর্থাৎ ‘ঈশ্বরের বাগান’ বলে যেটা পরিচিত, সেখানে পাঠিয়ে বাগানের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিয়েছিলেন৷
ছবি: Jonathan Linczak / CC BY-NC-SA 2.0
ধর্মীয় বেস্টসেলার
বিশ্বের সবচেয়ে বেশিবার পঠিত ও প্রকাশিত বই খ্রিস্টানদের বাইবেল৷ এই বইয়ে সৃষ্টিজগতের কথা বেশ গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে৷
ছবি: Axel Warnstedt
বাইবেল এর সবচেয়ে পরিচিত শ্লোক বা পঙক্তি
ঈশ্বর তাদের আশীর্বাদ করেন এবং বলেন: ‘‘ফলপ্রসু হও এবং সংখ্যায় বেড়ে ওঠ৷ পৃথিবীকে ভরিয়ে দাও ও তাকে নিয়ন্ত্রণে আনো৷ সাগরের মাছ, আকাশের পাখি আর ভূমিতে যত জীবন্ত প্রাণী আছে তাদের উপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা কর৷’’ (জেনেসিস ১:২৮)৷ এটা বাইবেলের সবচেয়ে পরিচিত পঙতির মধ্যে একটি৷
ছবি: Axel Warnstedt
আল্লাহর সৃষ্টি ব্যবহারে সতর্ক হও
ইসলাম ধর্মেও আল্লাহর সৃষ্টিকে রক্ষার জন্য অনুসারীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে৷ সূরা আর রহমান-এ বলা আছে, মানুষের ব্যবহারের জন্যই পৃথিবীর সবকিছু সৃষ্টি করা হয়েছে, তবে সেটা করতে হবে সতর্ক হয়ে৷
ছবি: AP
মানুষ ও প্রকৃতির সম্পর্ক
কোরানের অনেক আয়াতেই প্রকৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে৷ যেমন সূরা আল বাক্বারাহ’য় বলা আছে, ‘‘তোমরা পৃথিবীর অনিষ্ট করো না৷’’
ছবি: Axel Warnstedt
ভারসাম্য বজায় রাখা
হিন্দুদের ভগবত গীতার তৃতীয় অধ্যায়ের ১২ নম্বর শ্লোকে বলা হয়েছে, ‘‘...ভগবান তোমাকে তোমার প্রয়োজনীয় খাবার দেবেন৷ যারা এই উপহার গ্রহণ করবে কিন্তু বিনিময়ে কিছু দেবে না তারা চোর, এর কমও নয় বেশিও নয়৷’’
ছবি: Axel Warnstedt
নিজেকে সৃষ্টির অংশ মনে করা
বৌদ্ধ ধর্ম বলে, সত্যিকার অর্থে দীক্ষা লাভ করতে হলে একজন মানুষের নিজেকে অবশ্যই অন্যান্য সৃষ্টির মতোই একটি অংশ মনে করতে হবে এবং তাদের দুঃখ, কষ্ট ভাগ করে নিতে হবে৷
ছবি: Jody McIntryre / CC-BY-SA-2.0
7 ছবি1 | 7
অরগ্যানিক
ভিওরেল গেরচিউ চাষিদের একটি অরগ্যানিক সিল দিয়েছেন, যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়নে তা এখনও স্বীকৃত নয়৷ তা সত্ত্বেও ইতিমধ্যেই চেক প্রজাতন্ত্রে থেকে কেনার আগ্রহ দেখা যাচ্ছে – চেক-দের সাথে ব্যবসা করতে পারলে চাষিদের পক্ষে তা ভালোই হবে৷ সেক্ষেত্রে এই সার্টিফিকেট কাজে লাগতে পারে৷ প্রো-বিও সংস্থার সিইও মার্টিন হুটার বললেন: ‘‘আমরা এখানে এসেছি কারণ আমরা আমাদের পণ্যের বৈচিত্র্য বাড়াতে চাই; ইউরোপীয় ইউনিয়ন আর চেক প্রজাতন্ত্রের বাজারে আরো বেশি প্রাক-উৎপাদনের প্রয়োজন পড়বে, আমরা সেটাও চাই৷''
ভিওরেল গেরচিউ আবার পথে নেমেছেন: রুরাল-ইনভেস্ট এ পর্যন্ত ২৮ জন অরগ্যানিক চাষির দেখাশোনা করে থাকে, পরামর্শ দেয়, সার্টিফিকেট দেয়, খদ্দেরের খোঁজ দেয়৷ মোনিকল কোম্পানিটিকে গেরচিউ সরকারি সাহায্য পাইয়ে দিয়েছেন, যাতে কোম্পানি থেকে জার্মানিতে একটি খাদ্যপণ্যের প্রদর্শনীতে প্রতিনিধি পাঠানো সম্ভব হয়৷ পণ্য বিক্রয়ের জন্য এ ধরনের যোগাযোগ অপরিহার্য৷ মোনিকল-এর দুমিত্রু ভিকল বলেন: ‘‘সেরা বাজারগুলো হল জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ও সুইজারল্যান্ড৷ যুক্তরাজ্যেও অরগ্যানিক পণ্যের বিক্রি বেড়েছে৷''
‘‘তবে সবচেয়ে বড় মার্কেট হল জার্মানি'', বলেন আরেকজন৷
১৬০ জনের বেশি মানুষ এখানে কাজ করেন৷ ফসল তোলার সময় আরো শ'দেড়েক কর্মীর প্রয়োজন পড়ে৷ মোনিকল-এর প্রধান কীটনাশক ও কৃত্রিম সারবিহীন ফলের চাষ আরো বাড়াতে চান৷ প্রবৃদ্ধির এটাই সময় এবং সুযোগ৷
শিক্ষিত তরুণরা কৃষিকাজের দিকে ঝুঁকছেন
দক্ষিণ এশিয়ায় পড়াশোনা বা চাকরির আশায় অসংখ্য তরুণ যখন শহরমুখী, তখন কেনিয়ার বহু শিক্ষিত তরুণই কিন্তু লেখাপড়া শেষে চাকরি পাবার আশায় বসে না থেকে কৃষিকাজ ও পশুপালনের মতো কাজ করছেন৷ তাঁদের মতে, কৃষিকাজ এখন একটা ব্যবসা৷
ছবি: Jeroen van Loon
ক্যারিয়ার পরিবর্তন
ভালো চাকরি বলতে যেসব পেশাকে বোঝায়, তেমন চাকরি খুঁজে পেতে সমস্যায় পড়ে কেনিয়ার অনেক শিক্ষিত তরুণ এখন কৃষিকাজ ও পশুপালনের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন৷ এই যেমন ছবির বাম দিকের তরুণটির নাম ফ্রান্সিস কিমানি৷ ৩০ বছরের এই তরুণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে পড়াশোনা শেষ করে কোনো চাকরি না পেয়ে এখন একটি খামার পরিচালনা করছেন৷ খামারে একশোর বেশি গরু ও প্রায় ২০০ ভেড়া ও ছাগল রয়েছে৷
ছবি: J. van Loon
কৃষক হয়ে বেশি আয়
খামার থেকে কিমানির আয় প্রতিমাসে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা৷ চাকরি করলে বেতন হিসেবে এই পরিমাণ অর্থ পাওয়া সম্ভব ছিল না৷
ছবি: J. van Loon
নারীরাও এগিয়ে আসছেন
৩০ বছরের মেরি গিতাউ পড়াশোনা শেষে চাকরি পাচ্ছিলেন না৷ শেষে তিনিও কৃষিকাজ শুরু করে দেন৷ ক্যাপসিকাম, স্ট্রবেরি, টমেটো চাষের পাশাপাশি গিতাউ মুরগি, শুকর ও খরগোশ লালন-পালন করেন৷
ছবি: J. van Loon
আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার
অ্যাকুয়াপোনিক্স ব্যবস্থার মাধ্যমে একসঙ্গে স্ট্রবেরি ও মাছ চাষ করছেন দানিয়েল কিমানি৷ তিনি মনে করেন, চাষের ক্ষেত্রে নতুন এই ব্যবস্থা আরও জনপ্রিয় হবে৷ কেননা এর ফলে পানি ও জায়গার অভাব দূর করা সম্ভব৷ অ্যাকুয়াপোনিক্স ব্যবস্থায় একটি ট্যাংকের পানিতে মাছ চাষের পাশাপাশি পানির ওপরে কোনো কিছু জন্মানো যায়৷
ছবি: Jeroen van Loon
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার
কৃষিকাজে শিক্ষিত তরুণরা আশায় পণ্য বিক্রি ও বাজারজাতকরণে এসেছে নতুনত্ব৷ ‘মুকুলিমা ইয়ং’ নামের ওয়েবসাইটে তরুণ কৃষকরা তাদের পণ্যের ছবি দেন৷ ক্রেতারাও সেখান থেকেই পণ্য কেনেন৷ এক্ষেত্রে উৎপাদিত পণ্যের দামও কম পড়ে৷
ছবি: Jeroen van Loon
‘‘কেউ কি পাখি বিক্রি করছেন?
এমন সব প্রশ্নের দেখা মেলে ‘মুকুলিমা ইয়ং’ সাইটে৷ ৩৫ বছর বয়সি জোসেফ মাচারিয়া মাত্র এক বছর আগে সাইটটি শুরু করেছিলেন৷ এখন তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা ২৫ হাজারেরও বেশি৷
ছবি: J. van Loon
‘আমরা সবাই কৃষক হতে পারি’
দানিয়েল কিমানির মতে, ‘‘আমরা সবাই আইনজীবী হতে পারবো না৷ তবে আমরা সবাই কৃষক হতে পারি৷’’ এই কথার মাধ্যমে কিমানি তাঁর আশার কথা শুনিয়েছেন৷ তিনি মনে করেন, কেনিয়াতে আরও বেশি সংখ্যক তরুণ কৃষিকাজের দিকে ঝুঁকবে৷ বর্তমানে কেনিয়ার প্রতি চারজনের মাত্র একজন কৃষিকাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট৷
ছবি: Jeroen van Loon
কৃষিকাজ এখন একটা ব্যবসা
‘মুকুলিমা ইয়ং’ সাইটের প্রতিষ্ঠাতা জোসেফ মাচারিয়া বলেন, ‘‘কৃষিখাত এখন শুধু পরিবারের চাহিদা মেটানোর একটা উপায় নয়, এটা একটা ব্যবসা৷’’ তাঁর মতে, তরুণরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে সহজেই কৃষি সংক্রান্ত তথ্য পেতে পারে৷