1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপের অর্থনীতি

১৬ মার্চ ২০১২

গ্রিসের সংকট মোটামুটি সামলানোর পর ইউরোপীয় নেতারা ঘর গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন৷ তবে আর্থিক লেনদেনের উপর কর ও বাজেট ঘাটতির মাত্রা নিয়ে মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে৷

Treffen der EU-Wirtschafts- und Finanzministerছবি: picture alliance/ZUMA Press

বাজেট ঘাটতি নিয়ে দোনামনা

গ্রিসের সংকট সবে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পর চলতি সপ্তাহে ইউরোপীয় নেতারা স্পেন'এর বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ কিন্তু সমালোচকদের মতে, তারা এক পা এগিয়ে দুই পা পিছচ্ছেন৷ অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়ে গত সপ্তাহেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৫টি দেশ কড়া হাতে নিজেদের বাজেট ঘাটতির সীমা বেঁধে দিতে রাজি হলো৷ অথচ এ সপ্তাহেই ইউরো মুদ্রা এলাকার ১৭টি দেশ বলছে, এবছর স্পেনের বাজেট ঘাটতির মাত্রা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ হলেও তারা আপত্তি করবে না৷ তার দেখাদেখি হাঙ্গেরির মতো সংকটে জর্জরিত দেশও একই রকমের ছাড় চাইছে৷

ফ্রান্স ও জার্মানির ইচ্ছার বিরুদ্ধে মুখ খুলছে বাকিরাছবি: Reuters

কিন্তু ইউরোপীয় অর্থনীতি বিষয়ক কমিশনর বলেছেন, স্পেন'কে এক বছরের জন্য এই সীমিত সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, কারণ গত বছর সেদেশের বাজেট ঘাটতি প্রায় সাড়ে আট শতাংশ ছুঁইয়েছিল৷ সেদেশের অর্থনীতি যাতে বিপন্ন না হয়ে পড়ে, সেবিষয়ে এখন খেয়াল রাখতে হবে৷ মনে রাখতে হবে, কড়া হাতে সংস্কার চালিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ইটালি মন্দার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে৷ বলাই বাহুল্য, পরস্পর বিরোধী এমন নীতির ফলে পুঁজিবাজারেও কিছুটা অনিশ্চয়তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ তবে অন্যদিকে ইউরোপীয় নেতারা যে অবশেষে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন, সেই বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখা হচ্ছে৷ বেশ কিছু কারণে মঙ্গলবার ইউরোপের পুঁজিবাজার বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠেছিল, তবে ইউরোর বিনিময় মূল্য কিছুটা পড়ে যায়৷

ঐক্যে ফাটল

এতকাল গ্রিস ও ইউরোজোন সংকট সামলাতে ঐক্যের তেমন অভাব হয় নি৷ কিন্তু পরিস্থিতি যেই কিছুটা শান্ত হয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে অপেক্ষাকৃত ছোট দেশগুলি জার্মানি ও ফ্রান্সের পছন্দের নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে৷ যেমন আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও নিকোলা সার্কোজি ইউরোপে আর্থিক লেনদেনের উপর যে কর বসাতে চান, তার বিরুদ্ধে এখন আর শুধু ব্রিটেন নয়, আরও কিছু দেশের কণ্ঠ শোনা যাচ্ছে৷ তারা যে এর পুরোপুরি বিরোধী তা নয়৷ কিন্তু অনেকের আপত্তির মূল কারণ হলো, একইসঙ্গে ইইউ'র ২৭টি দেশেই এই কর চালু করা না গেলে কোনো লাভ নেই৷ কারণ সেক্ষেত্রে ব্রিটেন ও সুইডেনের মতো দেশ লাভবান হবে, ক্ষতি হবে বাকিদের৷ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের কাজকর্ম লন্ডন বা স্টকহোমেই সেরে ফেলবে৷

জার্মানির অর্থমন্ত্রী ভল্ফগাং শয়েবলে এ প্রসঙ্গে বললেন, ‘‘পণ্য ও পরিষেবার ক্ষেত্রে যেমন ভ্যাট বা মূল্য অনুযায়ী কর চালু রয়েছে, ঠিক তেমনই আর্থিক লেনদেন ও আর্থিক পরিষেবার উপরে কর চাপানো যেতে পারে কি না, তা নিয়ে আলোচনা করার সময় এসেছে৷ এখনো পর্যন্ত এমন কোনো কর চালু নেই৷ সেটা ন্যায্য কিনা, তা ভাবতে হবে৷ আমার মনে হয়, এটা একেবারেই ন্যায্য নয়৷ অবশ্য এর পক্ষে-বিপক্ষে অনেক যুক্তি রয়েছে৷''

লেনদেনের উপর করের বিভিন্ন দিক

ব্রিটেন ও সুইডেনের মতো দেশ গোটা বিষয়টি সম্পর্কে সন্দিহান৷ লন্ডনে বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির বিশাল কর্মকাণ্ডের কারণে ব্রিটেনের সরকার আর্থিক ও অন্য অনেক রকমের সুবিধা ভোগ করে৷ ইউরো মুদ্রা এলাকায় না থাকার কারণে ইউরো'র ভবিষ্যৎ নিয়েও তারা বেশি চিন্তিত নয়৷ তাই ব্রিটেনের সরকার আর্থিক লেনদেনের উপর কর চাপানোর বিরোধী৷ সুইডেনের যুক্তিটা অন্যরকম৷ সেদেশ এর আগে এককভাবে এমন এক কর চালু করেছিল৷ তাদের অভিজ্ঞতা মোটেই ভালো হয় নি৷

সুইডেনের অর্থমন্ত্রী আন্ডার্স বর্গ তাই ইউরোপীয় স্তরে এমন কর চাপানোর বিপক্ষে৷ তিনি বললেন, ‘‘আমাদের মতে, আর্থিক লেনদেনের উপর কর মোটেই তেমন গ্রহণযোগ্য হবে না৷ এমন কর চালু হলে সাধারণ মানুষ, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রের ঋণ গ্রহণ করার ব্যয় বেড়ে যাবে৷ এমন এক প্রস্তাব ইউরোপের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পক্ষে ভালো হবে না৷''

ইউরো এলাকায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রয়োজন

ভবিষ্যৎ রূপরেখা

এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, ব্যয় সংকোচ না অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার চেষ্টা – আগামীতে কোন বিষয়টিকে ইউরোপ বেশি গুরুত্ব দেবে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্যের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে স্থিতিশীলতার চাবিকাঠি৷ কিন্তু বলা যতটা সহজ, কাজটা একেবারেই ততটা সহজ নয়৷ জার্মানি এক্ষেত্রে যে সাফল্য পেয়েছে, বাকিরা তার থেকে শিক্ষা নিতে পারে বটে, কিন্তু এই মডেল হুবহু নকল করার অবস্থায় তারা নেই৷ অতএব অবস্থা বুঝে ব্যবস্থাই একমাত্র পথ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন৷ অবশ্য সবাইকে খুশি করে তা করা সম্ভব হবে না৷

গ্রিস, স্পেন ও ইটালির পর এবার ব্রিটেনের রেটিং নিয়েও প্রশ্ন উঠছে৷ ইউরো এলাকার বাইরে থাকার কারণে বাজেট ঘাটতির মাত্রার ক্ষেত্রে তেমন কড়াকড়ির সম্মুখীন হতে হয় না সেদেশকে৷ এবার রেটিং এজেন্সি ‘ফিচ' হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, সরকারি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ‘ট্রিপল এ' রেটিং হারাতে পারে ব্রিটেন৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ