অর্থ আত্মসাৎ ও পাচার: ডেসটিনির রফিকুল ও হারুনের কারাদণ্ড
১২ মে ২০২২
ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনকে ১২ বছর এবং কোম্পানির প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত৷ অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের এক মামলায় তাদের এই সাজা দেয়া হয়৷
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানিয়েছে, ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম বৃহস্পতিবার মামলার রায় ঘোষণা করেন৷
ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো অপারেটিভ সোসাইটির প্রায় এক হাজার ৮৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের এ মামলায় আসামি ছিলেন মোট ৪৬ জন৷ বাকিদের রায় ঘোষণা চলছে৷
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১২ সালের ৩১ জুলাই ডেসিটিনির কর্তাব্যক্তিসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক৷ মামলায় ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি এবং ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন প্রজেক্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়৷
২০১৪ সালের ৫ মে দুদক আদালতে উভয় মামলার অভিযোগপত্র দেয়৷ ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মামলায় ৪৬ জন এবং ডেসটিনি ট্রি প্লানটেশন লিমিটেডে দুর্নীতির মামলার ১৯ জনকে আসামি করা হয়৷ হারুন-অর-রশিদ ও রফিকুল আমিন দুই মামলাতেই আসামি৷
দুদকের সাফল্য-ব্যর্থতার খতিয়ান
২০০৪ সালে দুদক যাত্রা শুরু করে৷ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের ড. ইফতেখারুজ্জামানের দাবি, দুদক চুনোপুঁটিদের ধরে, রাঘব বোয়ালদের ধরে না৷ তবে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলমের দাবি, বিএনপিপন্থিরা এসব কথা বলেন৷
ছবি: bdnews24.com
দুদকের মামলায় খালেদা জিয়া কারাগারে
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টের দুই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে করা দুদকের মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার জজ আদালত৷ এরপর তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়৷ ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তাকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেয়া হয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A.M. Ahad
সাংসদ বদিকে কারাগারে প্রেরণ
২০০৮ ও ২০১৩ সালে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা সম্পদের বিবরণে মিথ্যা তথ্য দেয়া ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কক্সবাজারের সাংসদ আবদুর রহমান বদির বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে মামলা করে দুদক৷ এই মামলায় আত্মসমর্পণের পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল৷ তিন সপ্তাহ জেলে থাকার পর জামিন পান বদি৷ এরপর বিচার শেষে ২০১৬ সালে তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও দশ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়৷ সেবারও কদিন জেলে থেকে জামিন পান তিনি৷
ছবি: bdnews24
সচিবদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল
২০১৪ সালে দুদকের তদন্তে চার সচিব ও এক যুগ্ম-সচিবের ‘অবৈধ প্রক্রিয়ায়’ মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়৷ এরপর তাদের সনদ বাতিল করা হয়৷ তারা হলেন নিয়াজ উদ্দিন মিয়া (স্বাস্থ্য সচিব), এ কে এম আমির হোসেন (পিএসসির সচিব), মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান (বেসরকারিকরণ কমিশনের চেয়ারম্যান) এবং মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের দুই ওএসডি কর্মকর্তা মাসুদ সিদ্দিকী (সাবেক সচিব) ও আবুল কাসেম তালুকদার (সাবেক যুগ্ম সচিব)৷
ছবি: bdnews24.com
ফাঁদ মামলা
ঘুসখোর ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের হাতেনাতে ধরতে দুদক ফাঁদ পেতে থাকে৷ এভাবে ২০১৫ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ এরপর করোনার কারণে এমন অভিযান বন্ধ হয়ে যায়৷ ২০১৯ সালে নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ড. এস এম নাজমুল হককে (ছবি) ঘুস নেওয়ার সময় দুদক হাতেনাতে ধরে ফেলেছিল৷ এছাড়া সাব রেজিস্ট্রার, ভূমি কর্মকর্তা, সিটি কর্পোরেশনের উপ-কর কর্মকর্তা পর্যায়ের কর্মকর্তারাও এভাবে গ্রেপ্তার হন৷
ছবি: bdnews24
পুলিশ ও দুদকের সাবেক কর্মকর্তার জেল
এক নারীকে জোর করে বিয়ের পর নির্যাতন চালানোর অভিযোগে ২০১৯ সালে পুলিশের তৎকালীন ডিআইজি মিজানুর রহমানকে (ডানে) বরখাস্ত করা হয়৷ এর চার মাস পর তার সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক৷ সেই দায়িত্ব পেয়েছিলেন দুদকের তৎকালীন পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির৷ অনুসন্ধান চলার মধ্যেই মিজান দাবি করেন, তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুস নিয়েছেন বাছির৷ বুধবার মিজানের তিন বছরের কারাদণ্ড হয়৷ আর দুটি মামলার বাছিরের আট বছরের জেল হয়৷
কারাগারে ডেসটিনির এমডি
সম্পদের হিসাব জমা না দেওয়ার অভিযোগে দুদকের করা মামলায় ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনকে ২০২০ সালে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়৷ মাল্টিলেভেল মার্কেটিংয়ের নামে ২০ লাখের বেশি মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১২ সালে মামলা করেছিল দুদক৷ পরে ওই বছরের অক্টোবরে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন রফিকুল আমীনসহ কোম্পানির অধিকাংশ শীর্ষ কর্মকর্তা৷
ছবি: bdnews24.com
বেসিক ব্যাংকের বাচ্চুর দুর্নীতি পায়নি দুদক
জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ শেখ আবদুল হাই বাচ্চু বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকার সময় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছিল৷ পরে চাপের মুখে ২০১৪ সালে তিনি পদত্যাগ করেন৷ অনুসন্ধানের পর ২০১৫ সালে ব্যাংকের ১৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক৷ কিন্তু এর মধ্যে বাচ্চুর নাম ছিল না৷ অথচ ২০১৬ সালে অর্থমন্ত্রী আব্দুল মুহিত দুটি সংস্থার প্রতিবেদনে অভিযোগের সঙ্গে বাচ্চুর সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন৷
ছবি: bdnews24.com
হলমার্ক ঋণ কেলেঙ্কারি
২০১০ থেকে ২০১২ সালের মার্চ পর্যন্ত হলমার্ক গ্রুপ সোনালী ব্যাংক থেকে প্রায় ২,৬০০ কোটি টাকা সরায় বলে অভিযোগ ওঠে৷ গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তা আমলে নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক৷ তারা ৩৮টি মামলা করে৷ বিচার প্রক্রিয়া এখনো চলছে৷ হল -মার্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, এমডি তানভীর মাহমুদ এখন আটক আছেন৷ এর মধ্যে ২০১৮ সালে দুদকে সম্পদের হিসাব দাখিল না করায় জেসমিন ইসলামের তিন বছরের জেল হয়েছে৷
ছবি: DW
সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডির কারাদণ্ড
২০১১ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের হোটেল শেরাটন শাখা থেকে ডিএন স্পোর্টসের নামে ঋণ নিয়ে এক কোটি ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে৷ এই ঘটনার তদন্ত করে ২০১৪ সালে ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়৷ এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের তৎকালীন এমডি হুমায়ুন কবীরও ছিলেন৷ গত ডিসেম্বরে কবীরসহ ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয়৷ হল-মার্ক কেলেঙ্কারিতে দায়ের করা দুদকের বিভিন্ন মামলাতেও আসামি হুমায়ুন কবীর৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Nabil
ব্যাংক কর্মকর্তার যাবজ্জীবন
ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের দুই কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৩ সালে মামলা করে দুদক৷ বিচার শেষে ২০১৬ সালে ব্যাংকের এক কর্মকর্তাসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন আদালত৷ শাস্তিপ্রাপ্তরা হলেন সোনালী ব্যাংকের সাবেক সহকারী ব্যবস্থাপক সাইফুল হাসান, প্যারাগন নিট কম্পোজিট লিমিটেডের পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন ও পরিচালক সাইফুল ইসলাম৷ রায়ের সময় সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা পলাতক ছিলেন৷
ছবি: Felix Kästle/dpa/picture-alliance
বিনা দোষে জেল
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের এক মামলায় ২০১৬ সালে পাটকল শ্রমিক জাহালমকে (বামে) গ্রেপ্তার করা হয়েছিল৷ মামলায় অভিযুক্তের নামের সাথে মিল না থাকলেও তাকে সাজা দেয়া হয়েছিল৷ ঐ ঘটনা গণমাধ্যমে আসার পর তিন বছর জেল খাটার পর হাইকোর্টের নির্দেশে জাহালম মুক্তি পেয়েছিলেন৷ এছাড়া দুদকের ভুল তদন্তের কারণে ১৫ বছরের কারাদণ্ড পাওয়া নিরপরাধ মোহাম্মদ কামরুল ইসলামের সাজা গতবছর জানুয়ারিতে বাতিল করে দিয়েছিল হাইকোর্ট৷
ছবি: dnews24.com
বিসমিল্লাহ গ্রুপ
একাধিক ব্যাংক থেকে এক হাজার ২০০ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি, মুদ্রা পাচার ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৩ সালে বিসমিল্লাহ গ্রুপের চেয়ারম্যান নওরিন হাসিব, ব্যবস্থাপনা পরিচালক খাজা সোলায়মান চৌধুরীসহ ৫৪ জনের বিরুদ্ধে এক ডজন মামলা করেছিল দুদক৷ এর মধ্যে এক মামলায় ২০১৮ সালে খাজা সোলেমান চৌধুরী, নওরিন হাসিবসহ নয়জনকে দশ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত৷
ছবি: YAY Images/imago images
অর্থ পাচার বিষয়ে দুদকের ভূমিকায় আদালতের অসন্তোষ
২০২০ সালে অর্থ পাচার সংক্রান্ত দুদকের এক প্রতিবেদন দেখে হাইকোর্ট অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল৷ জ্যেষ্ঠ বিচারক নজরুল ইসলাম তালুকদার সেইসময় বলেছিলেন, ‘‘বিদেশে এত লোক টাকা নিয়ে চলে যাচ্ছে৷ ক্যানাডা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে কারা নিয়ে যাচ্ছে, তাদের একজনের নামও পাননি! উই ওয়ান্ট টু সি দুদক কয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে৷ আপনারা অন্ততপক্ষে এটা দেখান যে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে৷’’
ছবি: bdnews24.com
এ ব্যাপারে দুদক আইনজীবীর বক্তব্য
বাংলাদেশের কে কত টাকা পাচার করেছে- হাইকোর্ট জানতে চাওয়ার নয় মাস পর গত ডিসেম্বরে কর ফাঁকি সংক্রান্ত পানামা ও প্যারাডাইস কেলেঙ্কারিতে উঠে আসা বাংলাদেশের ৪৩ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা দিয়েছিল দুদক৷ সেই সময় দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছিলেন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন সংশোধন হওয়ায় কেবল ঘুস ও দুর্নীতি থেকে উদ্ভূত (সরকারি কর্মচারীসংশ্লিষ্ট) অর্থ পাচারের অভিযোগ দুদক কর্তৃক অনুসন্ধানযোগ্য৷
ছবি: DW
কোকোর টাকা ফিরিয়ে আনা?
২০১২ ও ২০১৩ সালে তিন দফায় খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর বিদেশে পাচার করা অর্থ থেকে প্রায় সাড়ে ২১ কোটি টাকা দেশে ফেরতে আনার কথা জানিয়েছিল দুদক৷ সেই সময় বিএনপির তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, কোকো ও বিএনপিকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই কথিত পাচার করা অর্থ ফেরত আনার কথা বলা হচ্ছে৷
ছবি: STRDEL/AFP/Getty Images
দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচক ২০০৪-এ বিশ্বের ১৪৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ও হাইতি যৌথভাবে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ বলে বিবেচিত হয়েছিল৷ আর ২০২২ সালের সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ আছে ১৪৭ নম্বরে৷ ২০২১ সালেও একই অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ৷
ছবি: DW
রাঘব বোয়ালদের ধরা হচ্ছে না?
সম্প্রতি রাঘব বোয়ালদের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে চাকরি হারিয়েছেন দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন (ছবি)৷ টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলছেন, ‘‘রাঘব বোয়ালদের ধরতে গেলে চাকরি হারাতে হয়, যা দুদক গঠনের উদ্দেশ্যের সম্পূর্ণ বিপরীত৷’’ তিনি বলেন, ‘‘দুদক যে উদ্দেশ্যে গঠন করা হয়েছিল তা সফল হয়নি৷’’ তবে দুদকের আইনজীবী আ্যাডভোকেট খুরশীদ আলমের দাবি, ‘‘এসব কথা বলছেন বিএনপিপন্থিরা৷’’
ছবি: Privat
সাজার হার কেমন?
দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ দাবি করেন, ‘‘আমাদের মামলায় শাস্তি পাওয়ার হার শতকরা ৬০ থেকে ৭০ ভাগ৷ ভবিষ্যতে এটা আরো বাড়বে৷ কারণ দুদকের তদন্তে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে৷ ফরেনসিক ল্যাব করা হচ্ছে৷ ফলে তদন্তে দক্ষতার যে ঘাটতি আছে, তা অনেকটা দূর হবে৷’’
ছবি: bdnews24.com
18 ছবি1 | 18
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, মাল্টি পারপাস কো-অপারেটিভ প্রোজেক্টের নামে ২০০৮ সাল থেকে ডেসটিনি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে এক হাজার ৯০১ কোটি টাকা সংগ্রহ করে৷ সেখান থেকে এক হাজার ৮৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ হয় বলে দুদকের অনুসন্ধানে ধরা পড়ে৷ ওই অর্থ আত্মসাতের ফলে সাড়ে আট লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হন৷
ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন প্রোজেক্টের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে দুই হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে৷ এর মধ্যে দুই হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা আত্মসাত৷ এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন সাড়ে ১৭ লাখ বিনিয়োগকারী৷
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ডেসটিনি গ্রুপের নামে ২৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশ কয়েকটি ছিল নামসর্বস্ব৷ আসামিরা প্রথমে প্রকল্পের টাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হিসাবে জমা করতেন৷ তারপর বিভিন্ন ব্যাংকের হিসাবে তা স্থানান্তর করা হতো৷
দুদক ৩৪টি ব্যাংকে এ রকম ৭২২টি হিসাবের সন্ধান পায়, যেগুলো পরে জব্দ করা হয়৷ আত্মসাৎ করা চার হাজার ১১৯ কোটি টাকার মধ্যে ৯৬ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগও আনা হয় দুই মামলায়৷
ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশন লিমিটেডের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা এখন সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে৷