এক-দুইটি নয়, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের জীবনবিমা ছিল ৩১টা। তার প্রিমিয়াম দিতেন সাবেক মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
বিজ্ঞাপন
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠতা প্রমাণ করতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট(ইডি)-র হাতিয়ার হলো জীবনবিমা প্রিমিয়ামের রশিদ। অর্পিতার নামে ৩১টি জীবনবিমা ছিল। তার সম্মিলিত প্রিমিয়ামের পরিমাণ হলো দেড় কোটি টাকা। সেই অর্থের পুরোটাই দিতেন সাবেক মন্ত্রী বর্তমানে সিবিআই হেফাজতে থাকা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সেলফোন বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি। তারপর তা ফরেনসিকে পাঠানো হয়। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা ডিলিট করা মেসেজ খুঁজে বের করেন। সেখান থেকেই দেখা য়ায়, পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় অর্পিতার ৩১টি বিমা পলিসির প্রিমিয়াম দিতেন। তারপর ব্যাঙ্কের গিয়ে সেই তথ্য যাচাই করেন ইডি অফিসাররা।
দেখা যায়, ২০১৫ সালে পলিসিগুলি করা হয়। সাত বছর ধরেই পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় প্রিমিয়াম দিয়েছেন। অধিকাংশ পলিসিতে পার্থকেই নমিনি করা হয়েছে। তবে এতগুলি বিমা পলিসি কেন, তার জবাব অবশ্য ইডির চার্জশিটে নেই। কিন্তু এই তথ্য দিয়ে ইডি প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে, পার্থর সঙ্গে অর্পিতার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। জেরার সময় পার্থ বলেছিলেন, অর্পিতার সঙ্গে তার সম্পর্ক আদৌ ঘনিষ্ঠ নয়।
মোট ১৭২ পাতার চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি। সেই সঙ্গে তারা ট্রাঙ্কে ভরে নথিপত্র নিয়ে গিয়েছিলেন। চার্জশিটে উল্লেখ আছে, অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে তল্লাশি চালিয়ে ৪৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং পাঁচ কোটি আট লাখ টাকার গয়না উদ্ধার করা হয়েছে।
এছাড়া বেশ কিছু ফ্ল্যাট, বাগানবাড়ি, জমি ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। সবমিলিয়ে পার্থ এবং অর্পিতার নামে থাকা১০৩ কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৪০ কোটি টাকার।
এসএসসি কেলেঙ্কারিতে মন্ত্রী গ্রেপ্তার, বান্ধবীর বাড়ি থেকে ২২ কোটি
দীর্ঘ জেরার পর গ্রেপ্তার করা হলো পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। এসএসএসি কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত অভিযোগে। পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতার বাড়ি থেকে ২২ কোটি উদ্ধার। তার দাবি, পার্থই টাকা রাখতে বলেছিলেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
শুক্রবার সকাল থেকে জেরা
শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র অফিসাররা পৌঁছে যান পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়িতে। পার্থ তখন ঘুমাচ্ছিলেন। তাকে ঘুম থেকে তুলে শুরু হয় জেরা ও তল্লাশি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
২৭ ঘণ্টা ধরে জেরা
গ্রেপ্তার করার আগে ২৭ ঘণ্টা ধরে জেরা করে ইডির অফিসাররা। শুধু পার্থের বাড়ি নয়, মোট ২০টি জায়গা তল্লাশি চালান ইডি-র কর্মকর্তারা। প্রায় ৯০ জন ইডি কর্মী পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাতে থাকেন। উপরের ছবিতে কলকাতার নাকতলায় পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের বাড়ি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বান্ধবীর বাড়ি থেকে ২২ কোটি উদ্ধার
তল্লাশির সময় অভিনেত্রী ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়ের ফ্ল্যাট থেকে ২২ কোটি টাকা উদ্ধার করে ইডি। টাকা অর্পিতার শোয়ার ঘরের আলমারিতে চটের বস্তায় রাখা ছিল। অর্পিতা ইডি-র অফিসারদের জানিয়েছেন, পার্থই তার কাছে টাকা রেখেছিলেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
রাতভর টাকার হিসাব
ইডি-র অফিসাররা ব্যাংক থেকে দশটি টাকা গোনার মেশিন ও কর্মীদের নিয়ে আসেন। সারারাত ধরে টাকা গোনা হয়। দেখা যায়, ২২ কোটি টাকা আছে। তাছাড়া ৫০ লাখ টাকার সোনার গয়না ও প্রচুর ডলার পাওয়া যায়। বেশ কিছু নথিপত্রও নিয়ে গেছে ইডি। অর্পিতাকেও গ্রেপ্তার করা হয়। উপরের ছবিতে অর্পিতার দক্ষিণ কলকাতার আবাসনের ফ্ল্যাটের সামনে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রহরা।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
কীসের টাকা
আদালতে ইডি জানিয়েছে, অর্পিতা এসএসসি-তে বেআইনি নিয়োগের সঙ্গে জড়িত। তিনি অন্যতম চক্রান্তকারী। তার বাড়িই ছিল নিয়োগের আখড়া। সেই নথিপত্র ইডি পেয়েছে। মন্ত্রীর নামের সরকারি খামও পাওয়া গেছে। অর্পিতা ইডিকে জানিয়েছে, টাকাটা পার্থ চট্টোপাধ্যায তাকে রাখতে দিয়েছিলেন। তিনি এনিয়ে কিছুই জানেন না। ইডি এখন অর্পিতার বাড়ি থেকে পাওয়া বিদেশি মুদ্রা নিয়েও আলাদা মামলা করতে পারে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
কে এই অর্পিতা?
অর্পিতা মুখোপাধ্যায় অভিনেত্রী। তিনি বাংলা ও ওড়িয়া ছবিতে অভিনয় করেছেন। তাছাড়া তিনি নেল আর্ট করতেন। পার্থর সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট ফোনে অর্পিতা সারাদিন কথা বলতেন বলে অভিযোগ। তিনি দক্ষিণ কলকাতার একটি নামী দুর্গাপুজোর সঙ্গেও জড়িত। এই পুজোর সঙ্গে পার্থও য়ুক্ত।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
কী বলছেন অর্পিতার মা
মেয়ের গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে তার মা মিনতি বলেন, ‘‘বাবা-মা যা চাইবে ছেলেমেয়ে কি সেটাই করবে? সেরকম হলে তো মেয়ের বিয়ে দিতে পারতাম। ওর কথা খবরে শুনেছি। তবে অর্পিতা এই কাজ করেছে কি না, সেই সত্যাসত্যও বিচার করা হবে।’’
ছবি: Satyajit Shaw/DW
পার্থ হাসপাতালে
গ্রেপ্তার করার পর পার্থকে নিজেদের হেফাজতে রাখে ইডি। তারপর আদালতে পার্থ জানান, তিনি অসুস্থ বোধ করছেন। তখন আদালত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে বলে। এসএসকেএম হাসাপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। ইডি অবশ্য আপত্তি জানিয়েছিল।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
ইডির দাবি মেনে
ইডি পরে কলকাতা হাইকোর্টে জানায়, পার্থকে কল্যাণীর এইমসের চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখুন। কিন্তু বিচারপতি বলেন, কল্যাণীর এইমসের উপর তার ভরসা নেই। পরে তিনি নির্দেশ দেন, ভুবনেশ্বরের এইমসে পার্থর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হবে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
শান্তিনিকেতনে পার্থর বাড়ি?
শান্তিনেকতনে ছয়টি বাড়ি পার্থর বলে অভিযোগ উঠেছে। তারমধ্যে একটি বাড়ির কেয়ারটেকার বলেছেন, একটি বাড়িতে পার্থর আসা-যাওয়া ছিল। একটি সাত বিঘের জমিও পার্থর বলে অভিযোগ। তবে সরকারি আধিকারিকরা বলেছেন, তারা খোঁজ না করে এই বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
পার্থর বিরুদ্ধে অভিযোগ
পার্থ চট্টোপাধ্যায় আগে শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। তখন এসএসসি কেলেঙ্কারি হয়। পরীক্ষা দিয়ে যারা উঁচু স্থান পেয়েছে, তাদের চাকরি না দিয়ে, পয়সা দিয়ে নিয়োগের অভিযোগ ওঠে। এই নিয়োগের বিরুদ্ধে কলকাতায় দীর্ঘদিন ধরে বিক্ষোভ চলছে। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই এই অভিযোগের তদন্ত করছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া
পার্থ চট্টোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অন্যতম বরিষ্ঠ মন্ত্রী। মমতার অত্যন্ত বিশ্বস্ত সৈনিক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হামেশাই অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দিয়ে রাজ্যের নেতাদের হেনস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু পার্থকে গ্রেপ্তার করার পর তৃণমূলের বক্তব্য, অভিযোগ প্রমাণ হলে দল ও সরকার ব্যবস্থা নেবে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
সিপিএমের প্রতিক্রিয়া
সিপিএম সাংসদ ও আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে এসএসসি চাকুরিপ্রার্থীদের হয়ে মামলা লড়ছেন। বিকাশরঞ্জনের প্রতিক্রিয়া হলো, ''পার্থ হচ্ছেন দাবার ঘুঁটি, ইডির উচিত হরিশ চ্যাটার্জি রোডে তল্লাশি করা। সেখানে হাজার হাজার কোটি টাকা পাওয়া যাবে।'' তার দাবি, ''ইডি যেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে ধরবে, সেদিন পুরো দুর্নীতি সামনে আসবে।'' সিপিএম কর্মীরা এখন বিভিন্ন জেলায় রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।
ছবি: Abp Photo/Sudipta Bhowmick
বিজেপি, কংগ্রেসের অভিযোগ
বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এসএসসি নিয়ে বিক্ষোভ-মঞ্চে যান। তিনি টুইট করে পার্থ ও অর্পিতা নিয়ে সোচ্চার হন। দিলীপ ঘোষও তাই। কংগ্রেসও এসএসসি কেলেঙ্কারি নিয়ে সোচ্চার হয়েছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
14 ছবি1 | 14
ইডির অভিযোগ এসএসসি দুর্নীতি এবং, চাকরি বিক্রির টাকায় এই সম্পত্তি কেনা হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। শতাধিক ভুয়া সংস্থার মাধ্যমেও লেনদেন হয়েছে বলে ইডির অভিযোগ। অনেকের নামে সংস্থা খোলা হয়েছে। তাদের সামান্য কয়েক হাজার টাকা দেয়া হত। তারা যে সংস্থার ডিরেক্টর সেটাই জানতেন না বলে ইডির কাছে জানিয়েছেন।
মোদী অপব্যবহার করছেন না: মমতা
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় জানিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদী সিবিআই সহ তদন্তকারী সংস্থার অপব্যবহার করছেন, তা তিনি বিশ্বাস করেন না। মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, ''এসব বিজেপি-র নেতারা করাচ্ছেন। সিবিআই আগে প্রধানমন্ত্রীর অধীনে ছিল। এখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অধীনে আছে।''
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কথাগুলি বলেছেন রাজ্য বিধানসভায়। সেখানে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অতিসক্রিয়তা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের আনা প্রস্তাব ১৮১-৬৪ ভোটে অনুমোদিত হয়েছে। সেখানেই মমতা ইডি নিয়ে বলেছেন, ''সকাল-বিকেল নোটিশ দিচ্ছে। মাঝরাতে বাড়ি চলে যাচ্ছে।''
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ''এরা ডিক্টেক্টর। হিটলার-স্ট্যালিন-মুসোলিনি। প্রধানমন্ত্রীকে আমি সম্মান করি। আপনি এদের সামলান।''
কলকাতায় ইডি হানা দিলেই মিলছে টাকার পাহাড়
পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে পাওয়া গিয়েছিল ৫২ কোটি। এবার কলকাতায় ব্যবয়াসীর বাড়ি থেকে ১৭ কোটি পেল ইডি। এর আগে হালিশহরের পুরপ্রধান রাজু সাহনির বাড়ি থেকে পাওয়া গেছিল ৮০ লাখ।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
ব্যবসায়ী আমির খানের বাড়ি
কলকাতার গার্ডেনরিচে ব্যবসায়ী নিসার আহমেদ খানের ছেলে আমির খানের বাড়ি থেকে উদ্ধার হলো ১৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা। আগে থেকে খবর পেয়ে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট(ইডি)-এর কর্মীরা আমির খানের বাড়ি, অফিস মিলিয়ে ছয় জায়গায় হানা দেয়।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
রাশি রাশি নোট
আমির খানের খাটের তলায় প্লাস্টিকের প্যাকেটে টাকা রাখা ছিল। সেই রাশি রাশি নোট উদ্ধার করে ইডি। বেশিরভাগ ৫০০ টাকার নোট। দুই হাজার ও দুইশ টাকার নোটও ছিল।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
টাকা গুনতে মেশিন
টাকা গোনার জন্য স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার কর্মকর্তাদের সাহায্য নেয় ইডি। সেখান থেকে আসে টাকা গোনার মেশিন। আসেন ব্যাংক কর্মীরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে টাকা গোনা হয়।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
কে এই আমির খান?
আমির খান ও তার সহযোগীরা মিলে একটি গেম অ্যাপ চালাত। 'ই নাগেটস' নামে এই মোবাইল গেমিং অ্যাপের সাহায্যে গ্রাহকদের টাকা হাতিয়ে নিত তারা। গ্রাহকরা গেম খেললে কমিশন পেতেন। অ্যাপের ওয়ালেট থেকে কমিশনের টাকা তুলতে পারতেন। তার জন্য ওয়ালেটে টাকা রাখতে হত। বেশি কমিশন পাওয়া যাবে ভেবে গ্রাহকরা প্রচুর টাকা সেখানে রাখতেন। তারপর সেই টাকা হাতিয়ে নেয়া হত বলে ইডি সূত্র জানাচ্ছে। অনেক ভুয়া অ্যাকাউন্টের খোঁজ মিলেছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
এর পিছনে কারা?
আমির খানের সঙ্গে এখনো কোনো রাজনৈতিক দলের যোগাযোগের কথা সামনে আসেনি। কিন্তু রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে, রাজনীতিক থেকে ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে কী করে এভাবে কোটি কোটি টাকা পাওয়া যাচ্ছে? এভাবে উদ্ধার করা টাকার পাহাড় কলকাতা আগে দেখেনি। তৃণমূল বলছে, বিজেপি কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে রাজ্যের ব্যবয়াসীদের টার্গেট করছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
মন্ত্রীর বক্তব্য
গার্ডেনরিচ হলো রাজ্যের প্রভাবশালী মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের এলাকা। প্রথমে ফিরহাদ বলেন, ''বন্দর এলাকা বলেই ব্যবসায়ীদের চেনা র দায় কি আমার নাকি? ইডি রাজ্যের ব্যবসায়ীদের টার্গেট করছে।'' একদিন পরেই তিনি সুর বদল করে বলেন, ''ইডি তার কাজ করবে, সেটাই তো স্বাভাবিক।''
ছবি: picture-alliance/ZumaPress
বাড়ির মানুষ
তল্লাশি চালানোর সময় বাড়ির মানুষ তা দেখার চেষ্টা করেন। এক নারী তো অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। তবে বাড়ির মানুষ এই টাকা নিয়ে মুখ খোলেননি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী
ইডি যখন তল্লাশি চালাচ্ছিল, তখন বাইরে মোতায়েন করা হয়েছিল সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী। স্থানীয় মানুষ সেখানে আসেন। কিন্তু কেউই কিছু বুঝতে পারছিলেন না। পরে এত টাকা উদ্ধার হয়েছে জেনে তারা অবাক।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
সংবাদমাধ্যমের ভিড়
বাড়ির সামনে ছিল সংবাদমাধ্যম বিশেষ করে টিভির সাংবাদিক ও চিত্রসাংবাদিকদের ভিড়। কেউ মুখ খুললেই তার দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ছিলেন তারা। তাদের প্রশ্ন ছিল, কী করে এত টাকা পাওয়া গেল? ইডি কীভাবে জানল এই টাকার কথা? এর সঙ্গে কি কোনো রাজনৈতিক যোগ আছে? এই সব প্রশ্নের জবাব এখনো পাওয়া যায়নি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
9 ছবি1 | 9
মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের এই মন্তব্য নিয়ে সিপিএমের মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ''মোদীদেশে গণতন্ত্রের টুঁটি টিপে ধরেছেন। তাকে তো মুখ্যমন্ত্রীর ভালো লাগবেই। পশ্চিমবঙ্গে তো উনি এভাবেই চলেন।'' রাজ্য়ের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ''মোদী জিরো টলারেন্সের নীতি নিয়ে চলেন। তাই মমতা ও তার ভাইপো বাঁচতে পারবেন না।''
বাম ও কংগ্রেসের নেতারা বলেছেন, চিরকালই মমতা ভালো বিজেপি ও খরাপ বিজেপি- এই নীতি নিয়ে চলেন। তাই অবাক হওয়ার কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে তিনি বাঁচতে চাইছেন।