‘‘জয় নয়, অংশগ্রহণই বড়''-অলিম্পিকের জনক পিয়েরে দ্য কুবার্তিঁর মূলমন্ত্র এটা। তাই বলে জনসংখ্যার হিসাবে বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম দেশ বাংলাদেশের অলিম্পিকে সাফল্য শূন্যই থাকবে?
বিজ্ঞাপন
জনসংখ্যা অবশ্য অলিম্পিক সাফল্যের মাপকাঠি নয়। তবে বাস্তবতাটা হচ্ছে এত বেশি জনসংখ্যা নিয়ে আর কোনো দেশ পদকহীন নেই। জনসংখ্যায় সবচেয়ে বড় ৪০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়া শুধু যুদ্ধবিধ্বস্ত কঙ্গো (জনসংখ্যার হিসেবে ১৮ তম) আর মিয়ানমারই (২৬তম) কোনো পদক পায়নি অলিম্পিকে।
১৯৮৪ সালের লস এঞ্জেলেস অলিম্পিক দিয়ে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ'-এ পথচলার শুরু বাংলাদেশের। সেবার একমাত্র অ্যাথলেট হিসেবে অংশ নেন সাইদুর রহমান ডন। ১০০ মিটার স্প্রিন্টে নিজের হিটে আটজনের মধ্যে অষ্টম হয়েছিলেন তিনি। টাইমিং ছিল ১১.২৫ সেকেন্ড। ২০০ মিটারে নিজের হিটে ২২.৫৯ সেকেন্ড টাইমিংয়ে আটজনের মধ্যে হন সপ্তম।
২০১৬ অলিম্পিকে সর্বশেষ ১০০ মিটার স্প্রিন্টে অংশ নেয় বাংলাদেশের কোনো পুরুষ অ্যাথলেট। সেবার মেসবাহ আহমেদ নিজের হিটে সাতজনের মধ্যে চতুর্থ হন ১১.৩৪ সেকেন্ড সময় নিয়ে। অর্থাৎ, ৩২ বছর পরও ১০০ মিটারে সাইদুর রহমানের টাইমিং পেরিয়ে যেতে পারেননি মেসবাহ! এর চেয়ে হতাশার আর কী হতে পারে?
‘ওয়াইল্ড কার্ড' নিয়েই বেশিরভাগ বাংলাদেশি অংশ নিয়েছেন অলিম্পিকে। এবারও ২০১৬ সালের পর প্রথমবার ১০০ মিটার স্প্রিন্টে কোনো বাংলাদেশি হিসেবে অংশ নিচ্ছেন ইমরানুর রহমান। ফলাফল কী হবে, আগে থেকেই অনুমেয়। সবশেষ জাতীয় অ্যাথলেটিক্সে ১০.৩৬ সেকেন্ড সময় নিয়ে বাংলাদেশের সেরা হয়েছেন লন্ডন প্রবাসী এই অ্যাথলেট। তার সেরা টাইমিং ১০.১১ সেকেন্ড, যা করেছিলেন লন্ডনে ঘরোয়া একটি প্রতিযোগিতায়।
অলিম্পিকে নিজের সেরা টাইমিং করলেও পদক পাওয়ার সম্ভাবনা নেই ইমরানুরের। কারণ, ছেলেদের ১০০ মিটারে ১০ সেকেন্ডের বেশি সময় নিয়ে পদক পাওয়ার স্বপ্ন দেখাটাই বোকামি। ইমরানুরসহ বাংলাদেশের মোট পাঁচজন ক্রীড়াবিদ অংশ নিচ্ছেন প্যারিস অলিম্পিকে।
১০ মিটার এয়ার রাইফেলে রবিউল ইসলাম (২৮ জুলাই), ১০০ মিটার ফ্রি স্টাইলে সামিউল ইসলাম রাফি (৩০ জুলাই), ৫০ মিটার ফ্রি স্টাইলে সোনিয়া খাতুন (৩ আগস্ট) আর আর্চারির রিকার্ভ এককে সাগর ইসলাম।
পাঁচ প্রতিযোগীর মধ্যে কেবল সাগর ইসলামই সরাসরি পেয়েছেন অলিম্পিকের সুযোগ, অন্যরা ওয়াইল্ড কার্ডে। সরাসরি সুযোগ পাওয়ায় সাগরকে নিয়ে চড়েছিল আশার পারদ। কিন্তু বৃহস্পতিবার র্যাঙ্কিং রাউন্ডে হতাশ করেছেন তিনি। হয়েছেন ৪৫তম।
সাগর পেয়েছেন সব মিলিয়ে ৬৫৩ পয়েন্ট। অথচ গত জুনে তুরস্কে অলিম্পিক বাছাইয়েও র্যাঙ্কিং রাউন্ডে সাগরের স্কোর ছিল ৬৬০ পয়েন্ট। প্যারিসের প্রচণ্ড বাতাস ও রোদের মধ্যে যে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারেননি সেটা সহজেই বোঝা গেছে।
৬৮৬ স্কোর করে র্যাঙ্কিং রাউন্ডে প্রথম হয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার কিম উজিন। তার সঙ্গে ৩৩ পয়েন্টের এই বিশাল ব্যবধানই বলছে অলিম্পিকের মতো সমুদ্রে এসে বাংলাদেশের সাগরদের মতো খেলোয়াড়দের হারিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা।
টোকিও অলিম্পিকে সাগরের মতো সরাসরি সুযোগ পেয়েছিলেন রোমান সানা। তিনি নিজের ইভেন্টে রিকার্ভ এককের র্যাঙ্কিংয়ে ১৭ আর চুড়ান্ত ফলে হয়েছিলেন ৩২তম। তার স্কোর ছিল ৬৬২। টানা দুই অলিম্পিকে দুই শিষ্যকে সরাসরি টিকিট পাইয়ে দেওয়ায় খুশি কোচ মার্টিন ফ্রেডেরিক। তবে বাংলাদেশ যে এখনই অলিম্পিক পদক পাওয়ার মতো অবস্থানে আসেনি সেটাই অলিম্পিকে যাওয়ার আগে সংবাদ সম্মেলনে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন এই জার্মান কোচ, ‘‘ বাংলাদেশের কারো পদক আনার সম্ভাবনা আপাতত নেই, এবা বাস্তবতা মানতে হবে। অলিম্পিক তো অনেক বড় টুর্নামেন্ট, এমনকি এশিয়ান গেমস থেকেও পদক আনতে হলে যে প্রস্তুতি আর বিনিয়োগ দরকার, সেটি করতে হবে।''
আসল দিকটাই তুলে ধরেছিলেন ফ্রেডেরিক। শুধু ক্রিকেটের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসাই অন্যান্য খেলাগুলোর পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ। স্পন্সররাও এই খেলার দিকে ঝুঁকেছে বেশি। সরকার এই খেলাতেই সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করছে। সুযোগ-সুবিধা ও খেলোয়াড়দের বেতন-ভাতা ক্রিকেটেই কিছুটা ‘সম্মানজনক'।
সাঁতার, ফুটবল, ভলিবল, অ্যাথলেটিক্সের মতো খেলাগুলো সরকার বা স্পন্সরদের কাছ থেকে খুব বেশি সাহায্য পায় না। এজন্য অ্যাথলেটরাও এই খেলাগুলোতে আসতে আগ্রহী নন। দরিদ্র এই দেশে নিজের পকেটের টাকা খরচ করে সন্তানকে খেলাধুলা শেখানোর আগ্রহও তেমন নেই অভিভাবকদের। কারণ, অলিম্পিকে যে খেলাগুলোতেবাংলাদেশ অংশ নেয়, সেগুলোর বেশির ভাগেই একজন অ্যাথলেটের জন্য শুধু খেলে জীবিকা চালানো একপ্রকার অসম্ভব। আর অলিম্পিকের আগে দায়সারা ২-৩ মাসের ক্যাম্প করে গেলে সাফল্য আসবেই বা কীভাবে?
তাহলে কি বছরের পর বছর এভাবেই চলতে থাকবে? একেকটা অলিম্পিক আসবে-যাবে আর ইমরানুর, সাগরদের মতো প্রতিভারা হারিয়ে যেতে থাকবেন অলিম্পিকের মতো মহাসমুদ্রে?
সবচেয়ে সফল গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিয়ান
অলিম্পিকে সোনা জেতা অনেক ক্রীড়াবিদের জন্য একটি স্বপ্ন। কেউ কেউ একাধিক স্বর্ণপদক পেয়েছেন। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে এটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে সবচেয়ে সফল পদক বিজয়ীদের নিয়ে এই ছবিঘর।
ছবি: Reuters/D. Ebenbichler
উসাইন বোল্ট: আট স্বর্ণপদক
জ্যামাইকান এই স্প্রিন্টার তার ক্যারিয়ারে আটটি অলিম্পিক পদক জিতেছেন এবং এর সবগুলোই স্বর্ণ। প্রথম জিতেছিলেন ২০০৮ বেইজিং অলিম্পিকে ১০০ মিটার এবং ২০০ মিটারে, ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকে ৪x১০০ মিটার রিলেসহ তিনটি পদক এবং ২০১৬ রিও ডি জেনিরো অলিম্পিকেও পেয়েছেন হ্যাটট্রিক পদক।
ছবি: picture-alliance/Zumapress/Li Ming
রে ইউরি: আট স্বর্ণপদক
ইউরির অলিম্পিক রেকর্ডও প্রমাণ করে যে তিনি দ্বিতীয় সেরা হওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। শৈশবে তিনি পোলিওতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মাঝে মাঝে তাকে চলাফেরার জন্য হুইলচেয়ার ব্যবহার করতে হতো। কিন্তু তারপরও অ্যামেরিকান এই অ্যাথলিট ১৯০০ থেকে ১৯০৮ সাল পর্যন্ত টানা তিনটি আসরে স্ট্যান্ডিং লং জাম্প এবং স্ট্যান্ডিং হাই জাম্প প্রতিযোগিতায় সোনা জেতেন। স্ট্যান্ডিং ট্রিপল জাম্পেও দুটি স্বর্ণ সংগ্রহ করেছিলেন তিনি।
ছবি: imago images//United Archives
ম্যাট বিওন্ডি: আট স্বর্ণ, দুই রৌপ্য, এক ব্রোঞ্জ
মার্কিন এই সাঁতারু কেবল ১৯৮৮ সিউল অলিম্পিকেই পাঁচটি সোনা জিতেছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে ৫০ মিটার ফ্রিস্টাইল, ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল এবং অ্যামেরিকান রিলে দলের সঙ্গে আরও তিনটি স্বর্ণ। ১৯৮৪ লস অ্যাঞ্জেলেস গেমসে রিলে রেসে আরেকটি স্বর্ণপদক, ১৯৯২ বার্সেলোনা গেমসে দুটি দলীয় স্বর্ণপদক পান বিওন্ডি।
ছবি: Imago Images/Sportfotodienst/S. Simon
জেনি থম্পসন: আট স্বর্ণ, তিন রৌপ্য, এক ব্রোঞ্জ
জেনি থম্পসনকে মনে করা হয় অলিম্পিকের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল অ্যাথলিটদের একজন। ১৯৯২ সাল থেকে ২০০০ সালের মধ্যে আটটি অলিম্পিক স্বর্ণপদক জিতেছিলেন তিনি। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, একক ক্যাটাগরিতে তিনি কখনও সোনা জিততে পারেননি, তার সব স্বর্ণই দলীয় ক্যাটাগরিতে। একক ক্যাটাগরিতে ১৯৯২ সালে ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইলে রূপা এবং ২০০২ সালে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন থম্পসন।
ছবি: Imago Images
সাওয়াও কাতো: আট স্বর্ণ, তিন রৌপ্য, এক ব্রোঞ্জ
জাপানি এই জিমন্যাস্ট অলিম্পিকের ইতিহাসে কেবল চারজন ক্রীড়াবিদদের মধ্যে একজন, যিনি পরপর দুই অলিম্পিকে নিজের ক্যাটাগরির সব ইভেন্টে স্বর্ণপদক জিততে সক্ষম হয়েছেন। ১৯৬৮ থেকে ১৯৭৬ সালের মধ্যে তিনটি অলিম্পিকে অংশ নিয়ে কাতো মোট ১২টি পদক জিতেছিলেন, যার মধ্যে আটটিই স্বর্ণ। জিমন্যাস্ট হিসাবে ক্যারিয়ার শেষ করার পর এখন তিনি সুকুবা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য এবং ক্রীড়া বিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত রয়েছেন।
ছবি: picture-alliance/S. Simon
বির্গিট ফিশার: আট স্বর্ণ, চার রৌপ্য
জার্মানির সবচেয়ে সফল ক্রীড়াবিদ ফিশার একজন ক্যানো চালক। ১৯৮০ থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে ছয়টি অলিম্পিক গেমসে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। তবে সোভিয়েত বলয়ে থাকা দেশগুলো ১৯৯৪ সালে লস অ্যাঞ্জেলেস গেমস বয়কট করায় সেটিতে তিনি অংশ নিতে পারেননি। ক্যানো চালনায় একই সঙ্গে সবচেয়ে বয়স্ক এবং সবচেয়ে কনিষ্ঠ স্বর্ণপদকজয়ী অলিম্পিয়ান ফিশার।
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Simon
কার্ল লুইস: নয় স্বর্ণ, এক রৌপ্য
১৯৮০ এবং ৯০ এর দশকে লং জাম্প এবং স্প্রিন্টে আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন এই অ্যামেরিকান অ্যাথলিট। ১৯৯৯ সালে তাকে শতাব্দীর সেরা ট্র্যাক-এন্ড-ফিল্ড অ্যাথলিট হিসাবে সম্মানিত করে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন। ২০০৩ সালে এসে তিনি স্বীকার করেছিলেন যে, ১৯৮৮ অলিম্পিকে বাছাইয়ের আগে তিনি মাদক গ্রহণ করেছিলেন।
ছবি: picture-alliance/dpa/Rauchensteiner
মার্ক স্পিৎস: নয় স্বর্ণ, এক রৌপ্য, এক ব্রোঞ্জ
শুধু ১৯৭২ অলিম্পিকের হিসাব করলেই এই তালিকায় মার্ক স্পিৎসের নাম চলে আসতে পারে। মিউনিখে রেকর্ড সাতটি স্বর্ণ জিতেছিলেন তিনি। এর চার বছর আগে মেক্সিকো সিটিতে দুটি রিলে স্বর্ণ পদক, একটি রৌপ্য এবং একটি ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। ১৯৭২ মিউনিখ গেমসের পর মাত্র ২২ বছর বয়সে অবসর নেন তিনি। ৪১ বছর বয়সে ১৯৯২ বার্সেলোনা অলিম্পিকে ফিরে আসার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন স্পিৎস।
ছবি: Getty Images/Allsport/T. Duffy
পাভো নুরমি: নয় স্বর্ণ, তিন রৌপ্য
এই ফিনিশ ট্র্যাক এবং ফিল্ড অ্যাথলিট ১৯২০ থেকে ১৯২৮ সালের মধ্যে ১২টি অলিম্পিক পদক জিতেছিলেন। নুরমি বিভিন্ন দূরত্বের ইভেন্টে ২৪টি বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিলেন। ১৯৩১ সালে রিজুভেন নামের একটি মাদকের ব্যবহারকে সমর্থন জানান তিনি। এখন এটি একটি অবৈধ স্টেরয়েড হিসাবে বিবেচিত হয়। এক বছর পরে অপেশাদার অ্যাথলিটের অবস্থান লঙ্ঘনের অভিযোগে তাকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়।
ছবি: picture-alliance/dpa/Austrian Archives
লারিসা লাটিনিনা: নয় স্বর্ণ, পাঁচ রৌপ্য, চার ব্রোঞ্জ
লাটিনিনা একজন ব্যালে নর্তকী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু যখন তার ব্যালে শিক্ষক অন্য শহরে চলে যান, তখন ১১ বছর বয়সে তিনি শৈল্পিক জিমন্যাস্টিকসে নাম লেখান। এই খেলায় দ্রুতই সবচেয়ে সফল ক্রীড়াবিদ হয়ে ওঠেন লাটিনিনা। ক্যারিয়ারে তিনি মোট ১৮টি অলিম্পিক পদক অর্জন করেছেন।
ছবি: picture-alliance/dpa
মাইকেল ফেলপস: ২৩ স্বর্ণ, তিন রৌপ্য, দুই ব্রোঞ্জ
প্রায় যেকোনো হিসাবেই সর্বকালের সবচেয়ে সফল অলিম্পিয়ান বলা চলে ফেলপসকে। সবচেয়ে বেশি স্বর্ণপদক ফেলপসের, সবচেয়ে বেশি একক ইভেন্টের স্বর্ণবিজয়ী তিনি (১৬টি), এবং এক অলিম্পিকে সবচেয়ে বেশি পদক (আটটি, যার মধ্যে ছয়টি ছিল সোনা, ২০০৮ বেইজিং অলিম্পিক)। ২০১২ লন্ডন গেমসের পর তিনি অবসর নিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর ফিরে এসে পরের রিও অলিম্পিকে আরও পাঁচটি স্বর্ণ এবং একটি রৌপ্য পদক অর্জন করেন।