1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সৌদি মেয়ে ক্রীড়াবিদ

২ আগস্ট ২০১২

অলিম্পিক আসরে সৌদি আরবের প্রথম নারী ক্রীড়াবিদদের নিয়ে শুরু হয়েছে উত্তপ্ত বিতর্ক৷ একইসঙ্গে মিলছে প্রশংসা ও সমালোচনার বাণ৷ এছাড়া মূল প্রতিযোগিতায় মাথা ঢেকে অর্থাৎ হিজাব পরে নামতে পারবেন কিনা তা নিয়েও বেধেছে বিপত্তি৷

FILE - Wodjan Ali Seraj Abdulrahim Shaherkani (centre rear) of Saudi Arabia enters the Olympic Stadium during the Opening Ceremony of the London 2012 Olympic Games, London, Britain, 27 July 2012. EPA/JONATHAN BRADY (zu dpa-Korr.: "Olympia-Premiere: Viele Hindernisse für Saudi-Frauen" vom 29.07.2012) +++(c) dpa - Bildfunk+++
ছবি: picture-alliance/dpa

এবারের অলিম্পিক আসরের আগে তিনটি দেশ কখনই প্রমীলা ক্রীড়াবিদদের এমন আসরে পাঠায়নি৷ দেশগুলো হলো সৌদি আরব, ব্রুনেই এবং কাতার৷ কিন্তু এ বছরের শুরুতেই ব্রুনেই এবং কাতার নিশ্চিত করে যে, লন্ডন অলিম্পিকে তাদের প্রতিনিধি দলে থাকবে প্রমীলা ক্রীড়াবিদরাও৷ আর অলিম্পিক আসর শুরুর মাত্র দুই সপ্তাহ আগে সৌদি আরব নিশ্চিত করে এবারের আসরে তাদের প্রমীলা ক্রীড়াবিদদের অংশগ্রহণের কথা৷ তবে সেজন্য আন্তর্জাতিক অলিম্পিক পরিষদ - আইওসি'কে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়৷ বেশ কিছুদিন ধরে চলে এ ব্যাপারে দেন-দরবার৷ এমনকি মানবাধিকার সংস্থাগুলো আইওসি'র প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল যে, সৌদি আরব প্রমীলা ক্রীড়াবিদদের না পাঠালে তাদের অংশগ্রহণ বাতিল করতে হবে৷

যাহোক, শেষ পর্যন্ত ওয়াজদান আলি সিরাজ আব্দুলরাহিম শাহেরকানি এবং সারাহ আত্তার'কে লন্ডন অলিম্পিক আসরে পাঠাতে সম্মত হন সৌদি কর্তৃপক্ষ৷ শাহেরকানি জুডো এবংআত্তার ৮০০ মিটার দৌড়ে নামার কথা রয়েছে৷ লন্ডন আসরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই দুই নারী ক্রীড়াবিদকে দেখা গেছে পুরুষ ক্রীড়াবিদদের পেছনে শোভাযাত্রায় অংশ নিতে৷ তবে এই অনুষ্ঠানের পর সৌদি নারী ক্রীড়াবিদদের নিয়ে শুরু হয়েছে অনলাইন বিতর্ক৷ সেখানে মাত্র কয়েক ঘণ্টায় যুক্ত হয়েছে হাজার হাজার মন্তব্য৷ অনেকে তাদের ‘বেহায়া' বলে সমালোচনা করলেও তাঁদের সাহসী এই পদক্ষেপের জন্য বাহ্বাও দিচ্ছেন অনেকে৷

সৌদি আরবের রক্ষণশীল মুসলিম ধর্মীয় বিশ্লেষকরা নারীদের খেলাধুলার বিরোধিতা করে আসছেন৷ তাদের যুক্তি, এটি নারীর জন্য অশোভনীয় এবং তাদের সহজাত বৈশিষ্ট্যের বিরুদ্ধে যায়৷ লন্ডনে জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর টুইটার-এ সেঁটে দেওয়া বার্তায় এমন মন্তব্য এসেছে৷ তবে সেগুলোর পাল্টা বক্তব্যও চোখে পড়ার মতো৷ টুইটারে আরবি ভাষায় দেওয়া একটি শিরোনামের ইংরেজি অনুবাদ দাঁড়ায় ‘অলিম্পিক হোরস'৷

সেখানে খালেদ আল জাবরি লিখেছেন, ‘‘তাদের অর্থাৎ শাহেরকানি এবং আত্তার'এর অলিম্পিক আসরে অংশগ্রহণকে লজ্জাজনক এবং পাপ বলতে দ্বিধা করার কোন কারণ নেই৷'' টুইটার-এ আল জাবরি'র পরিচয় থেকে জানা গেছে, তিনি একজন সৌদি নাগরিক এবং জিদ্দাহ থেকে টুইট করেছেন৷ এমলোভেন২১০০ নামের একটি টুইট'কারী লিখেছে, ‘‘তারা অলিম্পিকের হোরস তথা বেশ্যা .....তারা সেখানে দৌড়াতে চায় এজন্য যে, কখনও তারা ইচ্ছাকৃতভাবে পড়ে যাবে এবং তাদের শারীরিক সৌন্দর্য দেখা যাবে৷'' এই টুইট'কারীও নিজেকে একজন সৌদি নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিয়েছে৷

ওয়াজদান আলি সিরাজ আব্দুলরাহিম শাহেরকানিছবি: MARWAN NAAMANI/AFP/GettyImages

তবে সৌদি নারী ক্রীড়াবিদদের বিরুদ্ধে প্রচারণার উদ্দেশ্যে গড়ে তোলা এই টুইট শিরোনামের মধ্যেই আবার দেখা গেছে শাহেরকানি এবং আত্তার'কে সমর্থনকারী ভক্তদের মন্তব্যও৷ রিয়াদ থেকে সৌদি আরবের এক সম্ভ্রান্ত বংশের সদস্য ফাহাদ আল-ইনসি লিখেছেন, ‘‘অলিম্পিকে সৌদি নারীদের অংশগ্রহণে আমি গর্বিত৷'' এছাড়া সাফা নামের এক সৌদি নারী লিখেছেন, ‘‘সৌদি প্রতিনিধি দলের পেছনে হলেও অলিম্পিক আসরে তাদের পথচলা ঐতিহাসিক ঘটনা৷ পরবর্তীতে আমরাই পতাকা বহন করবো পুরুষদের পাশাপাশি এবং সমান তালে৷''

এবারের অলিম্পিকে নারী ক্রীড়াবিদ পাঠানোর সৌদি সিদ্ধান্ত অবশ্য হুট করেই আসেনি৷ বরং সংস্কারবাদী বাদশাহ আব্দুল্লাহ'র গত ১৮ মাস ধরে সেখানে নারীদের অধিকারের ক্ষেত্রে অধিকতর সুবিধা প্রদানের অংশ হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত এসেছে৷ গত বছর তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন নারীদের স্থানীয় পৌরসভার নির্বাচনে ভোট দান এবং পরামর্শ সভায় যোগদানের অধিকার প্রদানের পরিকল্পনা৷ এরপর অলিম্পিকে নারী ক্রীড়াবিদ পাঠানোর সিদ্ধান্ত দেন বাদশা আব্দুল্লাহ৷

সৌদি আরবের ভেতরেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছু বিতর্কের সৃষ্টি হলেও প্রখ্যাত ধর্ম বিশারদরা অবশ্য অলিম্পিক আসরে নারী ক্রীড়াবিদ পাঠানোর ব্যাপারে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেননি৷ কারণ এমন সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ খুলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হবে - সেটা তাঁরা জানেন৷ কারণ এর আগে নারীদের অধিকার প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনা করায় বাদশা আব্দুল্লাহ বেশ কিছু ধর্ম বিশারদকে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন৷

এদিকে, মাথায় হিজাব পরে জুডো'তে অংশ নেওয়ার অনুমতি এখনও পাননি শাহেরকানি৷ আন্তর্জাতিক জুডো ফেডারেশনের প্রধান মারিয়ুস ভিজার এখনও এই অবস্থানে অনড় যে, নিরাপত্তা এবং খেলার বিধানের কারণেই শাহেরকানি'কে হিজাব পরে খেলতে দেওয়া যাবে না৷ ফলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তের জন্য এখনও অপেক্ষায় রয়েছেন শাহেরকানি৷ অথচ আগামী শুক্রবারই রয়েছে তাঁর খেলা৷

এএইচ / আরআই (রয়টার্স, এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ