শনিবার জিম করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে জানানো হয়, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। সোমবার সকালের মেডিক্যাল বুলেটিনে অবশ্য জানানো হয়েছে, ভারতের সাবেক অধিনায়ক এবং বর্তমান বোর্ড প্রধান আগের চেয়ে অনেক ভালো আছেন।
শনিবার চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, সৌরভের হার্টে তিনটি ব্লক আছে। রোববার একটি স্টেন্টও বসানো হয়েছে। তবে বাকি ব্লক নিয়ে কী করা হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেননি চিকিৎসকরা। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবি শেঠিকে বেঙ্গালুরু থেকে চার্টার্ড বিমানে উড়িয়ে আনা হচ্ছে। মঙ্গলবার সকালে পুরো টিম নিয়ে তাঁর কলকাতায় পৌঁছানোর কথা। তারপরেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে কলকাতার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সৌরভ এখন বিপদ থেকে মুক্ত। খাওয়াদাওয়া করছেন, কথাও বলছেন।
ভারতে চলছে ২১ দিনের লকডাউন। কী ভাবে সময় কাটাচ্ছেন বাঙালি তারকারা? তাঁদের অন্দরমহলে ঢুঁ মারলো ডয়চে ভেলে।
ছবি: bdnews24.com
তিনি একাধারে অভিনেত্রী আবার পরিচালক। তবে লকডাউনের বাজারে আবৃত্তিকারের ভূমিকায় অপর্ণা সেন। অনলাইনে প্রায় প্রতিদিন কোনও না কোনও বাংলা কবিতা আবৃত্তি করছেন তিনি। একই সঙ্গে পড়ে শোনাচ্ছেন সেই কবিতার ইংরেজি অনুবাদ।
ছবি: bdnews24.comকলকাতার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি পরিচিত বুম্বা নামে। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় নিজেই নিজের বিজ্ঞাপন। লকডাউনের কয়েক দিন আগেই দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরেছেন তিনি। ফলে ১৫ দিন নিজেকে সকলের থেকে আলাদা করে রেখেছিলেন। চারতলার বাড়ির একটি তলায় সম্পূর্ণ নিঃসঙ্গ জীবন কাটিয়েছেন তিনি। এমনকী, নিজের কাপড়ও নিজেই কেচেছেন। কোয়ারান্টিন শেষ করেই অমিতাভের অনুরোধে ঘরে বসে শ্যুটিং করেছেন বুম্বা।
ছবি: by_saসৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পরিচয় দেওয়া নেহাতই অপ্রয়োজনীয়। লকডাউনে বই, লেখালিখি আর ছবি আঁকায় মগ্ন তিনি। সৌমিত্র শুধু অভিনেতা নন, বড় মাপের কবিও। লকডাউন নিয়ে কোনও কবিতা লিখেছেন কি? এখনই কিছু বলতে নারাজ সত্যজিতের ফেলুদা। তবে এরই ফাঁকে পরিযায়ী শ্রমিকদের সাহায্যের বার্তাও দিয়েছেন তিনি।
ছবি: APআর সব তারকার মতো নিজেকে সম্পূর্ণ গৃহবন্দি করে রাখেননি প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক এবং বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস পরে সৌরভ নেমে পড়েছেন সেবার কাজে। ২০ হাজার কিলোগ্রাম চাল তিনি দিয়ে এসেছেন বেলুড় মঠে। কলকাতার ইসকনে গিয়ে তিনি কয়েক হাজার গরিব মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করে দিয়ে এসেছেন। সৌরভ জানিয়েছেন, প্রয়োজনে ফের রাস্তায় নেমে কাজ করতে প্রস্তুত তিনি।
ছবি: Getty Images/AFP/P. Paranjpeঅভিনেতা এবং সাংসদ দেব ২২ মার্চ থেকে সম্পূর্ণ গৃহবন্দি। ছুটি দিয়ে দিয়েছেন কাজের লোকদের। আপাতত তিনি বাড়ি সাজাতে ব্যস্ত। একই সঙ্গে নিয়মিত খোঁজ রাখছেন সংসদীয় এলাকার। তবে আর সব তারকার মতো ত্রাণ তহবিলে দানের কথা তিনি জানাতে চান না। তাঁর বক্তব্য, দানের কথা বিজ্ঞাপন করে জানাতে নেই। এবং সে কারণেই লকডাউন পর্বে নিজেকে সোশ্যাল মিডিয়া থেকেও দূরে রেখেছেন দেব। কেবল খোঁজ রাখছেন মুম্বইয়ে আটকে পড়া মায়ের।
ছবি: Creative Commonsএই মুহূর্তে তিনি দেশে নেই। লকডাউনের আগেই সিঙ্গাপুরে গিয়েছেন। সেখানেই স্বামীর সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। তবে মন পড়ে আছে কলকাতায়। নরেন্দ্র মোদী আহ্বান জানিয়েছিলেন দেশ জুড়ে প্রদীপ জ্বালানোর জন্য। সকলকে সেই আহ্বানে সাড়া দিতে বলেছিলেন ঋতুপর্ণা। বলেছিলেন, বাড়িতে বসে সাহসী চিকিৎসকদের উৎসাহ দেওয়াই এখন একমাত্র কাজ। প্রদীপ জ্বালিয়ে সে ছবি পোস্টও করেছিলেন তিনি।
ছবি: UNIতিনি বাঙালি নন। তবে পশ্চিমবঙ্গের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। কলকাতা নাইট রাইডার্সের মালিক। ইদানীং শাহরুখ খান মজা করে নিজেকে 'বাঙালিবাবু' বলেন। করোনা আক্রান্তদের জন্য নিজের অফিস ছেড়ে দিতে চেয়েছেন শাহরুখ। জানিয়েছেন, সানন্দে সেখানে কোয়ারান্টিন সেন্টার তৈরি করতে পারে সরকার। সরকারের তৈরি ত্রাণ তহবিলেও বিপুল টাকা দান করেছেন শাহরুখ। প্রয়োজনে আরও সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রাজ্যগুলিকে।
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Balk শনিবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরেই রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী সৌরভের খোঁজ নিয়েছেন। রোববার তাঁর খোঁজ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সৌরভের স্ত্রী ডোনাকে ফোন করেছিলেন তিনি। রোববার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও সৌরভের খোঁজ নেন। সোমবার তাঁকে দেখতে আসতে পারেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পুত্র জয় শাহ। জয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অন্যতম পদাধিকারী। ডয়চে ভেলেকে বিজেপির এক সূত্র জানিয়েছে, জয়ের সঙ্গে সৌরভকে দেখতে আসতে পারেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরও। আগে অনুরাগ ছিলেন বোর্ডের প্রধান। সৌরভের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও ভালো।
দীর্ঘদিন ধরেই সৌরভের রাজনীতিতে যোগ দেওয়া নিয়ে জল্পনা চলছে। কোনো কোনো মহল মনে করছে, আগামী নির্বাচনে সৌরভ বিজেপির পক্ষে দাঁড়াতে পারেন। যদিও সৌরভ তা অস্বীকার করেছেন। তিনি অসুস্থ হওয়ার পরেও রাজনীতি পিছু ছাড়ছে না। বিজেপি এবং তৃণমূল দুইপক্ষই নিয়মিত তাঁর খোঁজ রাখছে।
এসজি/জিএইচ (পিটিআই)