রোববার ৯৬তম অ্যাকাডেমি পুরস্কারের আয়োজন হয়েছিল অ্যামেরিকায়। সেখানে সাতটি পুরস্কার জিতে নেয় ওপেনহাইমার।
সাতটি অস্কার জিতেছেন ওপেনহাইমারছবি: Mike Blake/REUTERS
বিজ্ঞাপন
এই প্রথম অস্কার পেলেন ক্রিস্টোফার নোলান। ৫৩ বছরের এই ব্রিটিশ চিত্রপরিচালক ওপেনহাইমার ছবির জন্য সেরা পরিচালকের পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়া সেরা ছবি, সেরা অভিনেতার পুরস্কারও জিতে নিয়েছে ওপেনহাইমার।
এদিন অস্কারের অনুষ্ঠান পাঁচ মিনিট দেরিতে শুরু হয়। অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগে প্রেক্ষাগৃহের সামনে ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলন করছিলেন একদল বিক্ষোভকারী। সে কারণেই অনুষ্ঠান শুরু হতে সময় লাগে।
ওপেনহাইমার ছবিতে বিজ্ঞানী ওপেনহাইমারের চরিত্রটি করেছেন কিলিয়ান মারফি। তিনিও এই প্রথম অস্কার পেলেন। রবার্ট ডাউনি জুনিয়র সেরা পার্শ্ব অভিনেতার পুরস্কার জিতে নিয়েছেন। এদিকে পুওর থিং ছবিতে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতে নিয়েছেন এমা স্টোন।
দ্য হলডোভার্স ছবিতে অভিনয় করে সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রীর সম্মান জিতে নিয়েছেন দাভিন জয় রানডলফ। জাপানি অ্যানিমেশন ফিল্ম দ্য অ্যান্ড দ্য হিরন বানিয়ে দ্বিতীয়বার অস্কার জিতে নিয়েছেন জাপানি ছবি নির্মাতা মিয়াজাকি।
আর সেরা আন্তর্জাতিক ছবির পুরস্কার পেয়েছে দ্য জোন অফ ইন্টারেস্ট। নাৎসি সময় ধরে তৈরি এই ছবিতে একটি পরিবারের গল্প বলা হয়েছে। নাৎসি ক্যাম্পের পাশেই যাদের বাড়ি।
আর বেস্ট তথ্যচিত্রের সম্মান পেয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তৈরি ছবি টুয়েন্টি ডেস ইন মারিউপল। এই প্রথম ইউক্রেনের কোনো ছবি অস্কার পেলো।
এসজি/জিএইচ (এপি, এএফপি, রয়টার্স)
অস্কারে জার্মানির যত সাফল্য
৯৬তম অস্কারে তিনজন জার্মান মনোনয়ন পেলেও শেষ পর্যন্ত তাদের ভাগ্যে জোটেনি পুরস্কার৷ তবে অস্কার নামে খ্যাত অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডসের সূচনালগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত ৫৬টি পুরস্কার জিতেছেন জার্মানরা৷
ছবি: Imago/AGD
অস্কারের প্রথম আসরে
বিখ্যাত জার্মান অভিনেতা এমিল ইয়ানিংস৷ হাইনরিশ মানের উপন্যাস ‘প্রফেসর উনরাট’ অবলম্বনে নির্মীত চলচ্চিত্র ‘দ্য ব্লু এঞ্জেল’-এ অভিনয়ের জন্য তিনি সর্বাধিক খ্যাত৷ তবে ১৯২৯ সালে নির্বাক চলচ্চিত্র ‘দ্য সেইলর হু ফেল ফ্রম গ্রিস উইথ দ্য সি’ এবং ‘দ্য লাস্ট কমান্ডের’ জন্য সেরা অভিনেতার অস্কার জিতেছিলেন তিনি৷ সেটি ছিল অস্কারের প্রথম আসর৷
ছবি: picture-alliance
সবচেয়ে সফল অভিনেত্রী
লুইসা রাইনার জন্ম ১৯১০ সালে জার্মানির ড্যুসেলডর্ফে৷ ১৯২৭ সালে বাবার আগ্রহে অভিনয়ে হাতখড়ি হয় তারা৷ ১৯৩৫ সালে হলিউডে চুক্তিবদ্ধ হয়ে নাৎসি নিধনযজ্ঞের হাত থেকে রক্ষা পান এই ইহুদি নারী৷ দুই-দুইবার তিনি সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছেন অস্কারে৷
ছবি: Horst Galuschka/picture alliance
তথ্যচিত্রে দুই
জার্মান প্রাণিবিজ্ঞানী বের্নহার্ড জিম্যাকের পূর্ব আফ্রিকায় গবেষণা এবং এক উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় সন্তানের মৃত্যুকে ঘিরে নির্মিত হয়েছিল তথ্যচিত্র ‘সেরেনগেটি শ্যাল নট ডাই’৷ ২০১৫ সালে অ্যামেরিকান হুইসেলব্লোয়ার স্নোডেনকে নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্রের আগ পর্যন্ত এটিই ছিল এই বিভাগে জার্মানির একমাত্র অস্কার৷
ছবি: Okapia KG
প্রথম সেরা চলচ্চিত্র
জার্মানির নোবেলজয়ী সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাসের ‘দ্য টিন ড্রাম’ (ডি ব্লেশট্রমেল) অবলম্বনে ১৯৭৯ সালে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন ফল্কার শ্ল্যুনডর্ফ, যা অস্কারে সেরা চলচ্চিত্রের খেতাব জেতে৷
ছবি: United Artists/dpa/picture-alliance
ক্যামেরার জন্য অস্কার
জার্মান চিত্রগ্রাহক মিশায়েল বালহাউস তিন-তিনবার অস্কারের নমিনেশন পেলেও একবারও পুরস্কার জোটেনি ভাগ্যে৷ তবে যেই ক্যামেরার সাথে তাকে এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে সেই অ্যারিফ্লেক্স থার্টি ফাইভের নির্মাতা জার্মান ডিজাইনার এরিশ ক্যাস্টনার তিনবার অস্কার জিতেছেন, যা অস্কারে এখন জার্মানদের রেকর্ড৷
ছবি: Bernd Settnik/dpa/picture alliance
দ্বিতীয় সেরা চলচ্চিত্র
বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্রে দ্বিতীয় অস্কারের জন্য ২৩ বছর অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে জার্মানিকে৷ ১৯৩৮ সালে নাৎসিদের হাত থেকে পালিয়ে কেনিয়া যাওয়া স্টেফানি সোয়াইগের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ অবলম্বনে নির্মীত চলচ্চিত্র ‘নো হোয়্যার ইন আফ্রিকা’ (নিরগেন্ডভো ইন আফ্রিকা) ২০০৩ সালে সেই অপেক্ষার অবসান ঘটায়৷ চলচ্চিত্রটির পরিচালক ক্যারোলিন লিংক (ছবিতে)৷
ছবি: Warner Bros
দ্য লাইভস অব আদার্স
জার্মানিতে তৃতীয় সেরা চলচ্চিত্রের অস্কারটি আসে চার বছরের মাথায়৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পূর্ব জার্মানির গোয়েন্দা বিভাগ স্টাসির অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড অবলম্বনে নির্মীত চলচ্চিত্র ‘দ্য লাইভস অব আদার্স’ (ডাস লেবেন ডেয়ার আন্ডেরেন) সেই সম্মান বয়ে আনে৷ ডেব্যুতেই বাজিমাত করেন ফ্লোরিয়ান হেনকেল ফন ড্যোনার্সমার্ক৷
ছবি: Paul Buck/dpa/picture alliance
দ্যা লায়ন কিং
ডিজনির চলচ্চিত্র দ্যা লায়ন কিং-এর থিম সংটি লিখেছিলেন জার্মান কম্পোজার হান্স সিমার৷ ১৯৯৫ সালে সেটি অস্কার জেতে৷ ২০২২ সালে সিমার দ্বিতীয়বারের মতো অস্কার পান বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি নির্ভর চলচ্চিত্র ‘ডুন’ এর জন্য৷
ছবি: Marcus Brandt/dpa/picture alliance
দুইবার করে পাঁচজন
দুইবার করে অস্কার জিতেছেন এমন পাঁচ জার্মান নাগরিকের মধ্যে একজন গের্ড নেফৎসা৷ তার মধ্যে একটি পেয়েছেন তিনি ‘ডুন’ এ সেরা ভিস্যুয়াল ইফেক্ট-এর জন্য৷ একই বিভাগে প্রথম পুরস্কারটি পেয়েছিলেন তিনি ব্লেড রানার-২০৪৯ এর জন্য৷
ছবি: Maximilian Koch/picture alliance
মোট ৫৬টি
জার্মানির জন্য সবশেষ অস্কার নিয়ে এসেছেন এর্নেস্টিনা হিপা, ক্রিস্টিয়ান এম গোল্ডবেক (প্রোডাকশন ডিজাইন) এবং ফল্কার বার্টেলমান (সংগীত)৷ তিনজনই পুরস্কার পেয়েছিলেন ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’-এর জন্য৷ এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে অস্কারের ৯৬টি আসরের মধ্যে ৫৬টি সম্মাননা পেয়েছে জার্মানি৷