ইন্টারনেটভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো খবর এবং বিজ্ঞাপন থেকে যে রাজস্ব আয় করে, তার একটা অংশ আদায়ের কথা ভাবছে অস্ট্রেলিয়া সরকার৷ তবে ফেসবুক জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার কেউ কোনো সংবাদ শেয়ার করলে তাকে ‘ব্লক' করা হবে৷
বিজ্ঞাপন
‘কোনো ব্যবসা এভাবে চলে না-’ শিরোনামের এক ব্লগ পোস্টে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের ফেসবুক শাখার ব্যবস্থাপনা পরিচালক উইল ইস্টন এ কথা জানান৷ তিনি বলেন, এর মাধ্যমে ‘‘খবরগুলো পুরোপুরি (ফেসবুক থেকে) সরিয়ে দেয়া অথবা পাবলিশার যতগুলো কন্টেন্ট শেয়ার করবে তার বিপরীতে মাত্রা নির্ধারিত নয় এমন এক প্রক্রিয়ায় আমাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করবে, এর যে কোনো একটি’’ নিশ্চিত করতে চায় ফেসবুক৷
ফেসবুকের এ ঘোষণা ভালো কি মন্দ সে বিষয়ে কিছু বলতে চাননি অস্ট্রেলিয়ার যোগাযোগ মন্ত্রী পল ফ্লেচার৷ শুধু বলেছেন, ‘‘বড় কোনো টেক কোম্পানির এভাবে হুমকি দেয়াকে শুধু অদৃষ্টপূর্ব বলাই যথেষ্ট নয়, এটা এর চেয়ে বেশি কিছু৷’’ তবে ফেসবুকের এ হুমকি যে তার সরকারের কাজে কোনো পরিবর্তন আনবে না তা নিশ্চিত করেছেন তিনি৷
গত এপ্রিলে গুগল, ফেসবুকসহ সব ইন্টারনেটভিত্তিক প্রতিষ্ঠান অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন উৎসের খবর এবং বিজ্ঞাপন থেকে যে রাজস্ব আয় করে, তার একটা অংশ আদায়ের পরিকল্পনার কথা জানায় সরকার৷ সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি আচরণবিধি প্রণয়নের ঘোষণাও দেয়া হয়৷
তারপর ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে বছরে ৪০০ মিলিয়ন, অর্থাৎ ৪০ কোটি মার্কিন ডলার দাবি করে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম সংবাদমাধ্যম নাইন এন্টারটেইনমেন্ট৷
অস্ট্রেলিয়া সরকারের তথ্য অনুযায়ী, গুগল, ফেসবুকের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো সে দেশ থেকে প্রতি বছর ৬০০ কোটি অস্ট্রেলীয় ডলার (৩৯০ কোটি মার্কিন ডলার) আয় করছে৷
এসিবি/ কেএম (এপি)
ভুয়া তথ্য বা খবর বুঝব কীভাবে?
গবেষণা বলছে, করোনা ভাইরাস নিয়ে ছড়ানো ভুয়া তথ্যের কারণে ২০২০ সালের প্রথম তিন মাসে বিশ্বে অন্তত ৮০০ জন বা তার চেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন৷ ফলে খবর, তথ্য শেয়ারের সময় সতর্ক থাকতে হবে৷ কিন্তু কীভাবে?
ছবি: Facebook
তিনটি প্রশ্ন জিজ্ঞেস করুন
ভুয়া তথ্য ও খবর দ্রুত খুঁজে পাবার উপায় জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের ফ্যাক্ট-চেকিং ওয়েবসাইট ‘ফুল ফ্যাক্ট’৷ ফেসবুকে কিছু শেয়ারের আগে নিজেকে তিনটি প্রশ্ন করার পরামর্শ দিয়েছে তারা৷
প্রথম প্রশ্ন
খবরটি কে দিয়েছে? প্রথমে নিজেকে এই প্রশ্নটিই করুন৷ সূত্র বিশ্বস্ত না হলে সেটা শেয়ার করবেন না৷ আর সূত্র নতুন হলে তার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন৷
ছবি: imago images / ZUMA Press
দ্বিতীয় প্রশ্ন
কি যেন নেই? লিংকে ঢুকে পুরো খবরটা পড়ুন৷ ছবি, ব্যবহার করা নম্বর, কারও মন্তব্য এসব খেয়াল করুন৷ অনেক সময় সূত্রের উল্লেখ না করে মন্তব্য ব্যবহার করা হয় কিংবা কনটেক্সট ছাড়াই মন্তব্য দেয়া হয়৷ খবরের সঙ্গে থাকা ছবি কিংবা ভিডিও ভুয়া হতে পারে৷ ভিডিওতে ব্যবহৃত কণ্ঠ পরিবর্তিত থাকতে পারে৷
ছবি: Facebook/G.M. Masud Rana
তৃতীয় প্রশ্ন
খবরটি পড়ার পর আপনি কেমন অনুভব করছেন? যারা ভুয়া খবর ছড়ায় তারা মানুষের অনুভূতি নিয়ে খেলতে চায়৷ তারা জানে আপনাকে রাগিয়ে তুলতে পারলে কিংবা চিন্তিত করতে পারলে আপনি খবরটিতে ক্লিক করবেন৷ তাই শেয়ারের আগে নিজের অনুভূতিটা জানার চেষ্টা করুন৷ ভাল অনুভব করলে শেয়ার করুন৷ আর খটকা লাগলে অন্যান্য সূত্র দেখে যাচাইয়ের চেষ্টা করুন৷ ছবিতে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের শেয়ার করা একটি ভুয়া খবর দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Facebook
ফ্যাক্ট-চেকিং ওয়েবসাইট
ভারতের ফ্যাক্ট-চেকিং ওয়েবসাইট ‘বুম লাইভ’কে বাংলাদেশের ফেসবুক কমিউনিটিতে বিদ্যমান ছবি ও ভিডিওর যথার্থতা পর্যালোচনার দায়িত্ব দিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ৷ ২০২০ সালের ১৯ এপ্রিল থেকে এই কাজ শুরু হয়েছে৷ www.boombd.com/ ওয়েবসাইটের পাশাপাশি ফেসবুকেও (https://www.facebook.com/Boombangladeshnews) তাদের কাজ দেখা যায়৷
বিডি ফ্যাক্ট চেক
২০১৭ সালে কাজ শুরু করে এই ওয়েবসাইট (https://bdfactcheck.com/)৷ ফেসবুকেও তাদের একটি পাতা (https://www.facebook.com/bdfactcheck/) আছে৷ আলোচনা সভা, সংবাদ সম্মেলন, জনসভা ও গণমাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্যের সত্যতা যাচাই করে বিডি ফ্যাক্ট চেক৷ এছাড়া সামাজিক মাধ্যমে যেসব ভুয়া সংবাদ, ছবি কিংবা ভিডিও ভাইরাল হয় সেগুলোরও ফ্যাক্টচেক করে তারা৷
Fact খুঁজি
এটি বাংলাদেশের আরেকটি ফ্যাক্ট-চেক করা ওয়েবসাইট৷ http://factkhuji.org/ ওয়েবসাইটের পাশাপাশি তাদের একটি ফেসবুক পাতাও (https://www.facebook.com/factkhuji/) আছে৷
সতর্ক হন
করোনা ভাইরাস নিয়ে ছড়ানো ভুয়া তথ্যের কারণে ২০২০ সালের প্রথম তিন মাসেই বিশ্বব্যাপী কমপক্ষে ৮০০ জন বা তার চেয়েও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বলে ‘অ্যামেরিকান জার্নাল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড হাইজিন’-এ প্রকাশিত এক গবেষণা বলছে৷ ফলে সামাজিক মাধ্যমে খবর বা তথ্য শেয়ারের আগে সবার একটু সতর্ক হওয়া প্রয়োজন৷
ছবি: picture-alliance/ZUMA Wire/SOPA Images/A. K. Sing