এর আগে অস্ট্রেলিয়ায় একসঙ্গে এত ‘পাইলট তিমি’ কখনো উপকূলে আটকা পড়েনি৷ তাসমানিয়া দ্বীপের কাছে বুধবার পর্যন্ত প্রায় ৫০০ তিমি চিহ্নিত করতে পেরেছে কর্তৃপক্ষ৷ এদের মধ্যে ৩৮০ টিই মারা গেছে৷

তিমি উদ্ধারে কাজ করছে ষাট জনের একটি দল৷ এর মধ্যে বিশেষজ্ঞ, দক্ষ স্বেচ্ছাসেবক ও স্থানীয় মৎসজীবীরাও আছেন৷

সোমবার উপকূলের কাছে এই তিমিগুলোকে দেখা যেতে শুরু করে৷ উদ্ধারকারীরা এখন পর্যন্ত আটকে পড়া ৫০ টির প্রাণ রক্ষা করতে পেরেছেন৷ আরো প্রায় ৩০ টি এখনও জীবিত আছে৷

দুইদিন ধরে সমুদ্রের ঠান্ডা জলে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মীরা৷ তারা জীবিত তিমিগুলোকে নৌকায় লাগানো বিশেষ বেল্ট দিয়ে টেনে মুক্ত সমুদ্রে পৌঁছে দিচ্ছেন৷ এখনো প্রায় ৩০ টি তিমিকে এই প্রক্রিয়ায় বাঁচানোর চেষ্টা করছেন তারা৷ তবে সাত মিটার লম্বা আর তিন টন ওজনের প্রাণীগুলোকে টেনে নেয়ার কাজটি মোটেও সহজ নয়৷

তাসমানিয়ার দক্ষিণ উপকূলের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে এই তিমিগুলো আটকা পড়েছে৷ কর্তৃপক্ষ খুঁজে দেখছে দুর্গম দ্বীপটির অন্য কোথাও এসব প্রাণী আর আটকা পড়েছে কিনা৷ সুখবর হলো, এখন পর্যন্ত যেগুলোকে উদ্ধার করা হয়েছে, সেগুলো সাঁতার কেটে গভীর সমুদ্রে কাছাকাছি যেতে পেরেছে৷

দক্ষিণ অস্ট্রিলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে তিমি বা ডলফিনের আটকে পড়ার চিত্র এবারই প্রথম নয়৷ তাদের উপকূলে আসার এই প্রবণতাটি এখনও বিজ্ঞানীদের অজানা৷ কোনো কোনো গবেষকের ধারণা খাবারের সন্ধানে আসে তারা৷ কারো মতে, এক দুইজন দলছুটের পেছনে এসে বাকিরাও বালুতে আটকা পড়ে৷ কেননা এই প্রাণীদের সামাজিক বন্ধন বেশ দৃঢ়, যা পুরো একটি দলকেই বিপদে ফেলে৷

মারা যাওয়া তিমিদের দেহগুলোর এখনো কোনো ব্যবস্থা করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ৷ বুধবার প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি আসলে সেগুলো সরিয়ে ফেলা হবে বলে জানানো হয়েছে৷ এই মুহূর্তে যে তিমিগুলো বেঁচে আছে তাদের উদ্ধারেই বেশি জোর দিচ্ছেন কর্মীরা৷

এর আগে ১৯৯৬ সালে ৩২০ টি পাইলট তিমি আটকা পড়েছিল পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার ডানসবোরোতে ৷ ২০০৯ সালে সবশেষ তাসমানিয়াতে ৫০ টির বেশি পাইলট তিমি আটকা পড়েছিল৷ সেদিক থেকে এবার প্রথম একসঙ্গে এত বেশি তিমি আটকা পড়া এবং মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে অস্ট্রেলিয়াতে৷