অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন থেকে পশ্চিমে ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বালুরাট এলাকাটি সোনার খনির জন্য বিখ্যাত। একাধিক সোনার খনি আছে এখানে। শহরে বসবাসকারী ব্যক্তিদেরও অধিকাংশই সোনার খনির কাজের সঙ্গে যুক্ত। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, বুধবার একটি সোনার খনিতে আচমকাই একটি পাথর ধসে পড়ে। সে সময় খনিতে বহু শ্রমিক কাজ করছিলেন। ২৯ জন শ্রমিক খনির ভিতর নিরাপদ খাঁজে আশ্রয় নেন। কিন্তু দুইজন শ্রমিক পাথরে আঘাতপ্রাপ্ত হন। একজনকে পরে উদ্ধার করে হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু অন্যজনকে মৃত অবস্থাতেই উদ্ধার করা হয়।
সোনার খনির জন্য বিখ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকা৷ সেখানকার সিবান্যে অঞ্চলের একটি খনিতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন হাজারেরও বেশি শ্রমিক৷ শেষপর্যন্ত তাঁদের সকলকেই উদ্ধার করা গেছে৷
ছবি: picture-alliance/Balance/Photoshot/P. B. Pickford বুধবার খনিতে কাজ করতে নেমে আটকে পড়েন হাজারেরও বেশি শ্রমিক৷ মূলত ধস নামার কারণেই বন্ধ হয়ে যায় সুরঙ্গ৷ প্রাথমিকভাবে বহু চেষ্টা চালিয়েও শ্রমিকদের উদ্ধার করা যায়নি৷ খনির সামনে চলে আসে অ্যাম্বুলেন্স ও উদ্ধারকারী দল৷
ছবি: Getty Images/AFP/G. Guerciaসার্চলাইট লাগানো হয় খনি অঞ্চলে৷ উদ্ধারকারীরা দিনরাত শ্রমিকদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাতে থাকেন৷ বাইরে থেকে খনির ভিতর অক্সিজেন পাঠানোর কাজও শুরু হয়৷ কিন্তু শেষপর্যন্ত শ্রমিকদের বাঁচানো যাবে কিনা,তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়৷
ছবি: Getty Images/G.Guerciaঅবশেষে শ্রমিকদের উদ্ধার করার প্রক্রিয়া শুরু হয়৷ একজন একজন করে শ্রমিক বদ্ধ খনি থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেন৷ অনেকের অবস্থাই তখন ভয়াবহ৷ দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Joeমোটামুটি সুস্থ শ্রমিকদের তোলা হয় একটি বাসে৷ সেখানে তাঁদের জল এবং খাবার দেওয়া হয়৷ সকলের চোখে-মুখে তখনো আতঙ্ক৷
ছবি: Getty Images/G.Guerciaপ্রায় এক হাজার জন শ্রমিককে উদ্ধার করা সহজ কথা নয়৷ প্রথমে কয়েকশ’ শ্রমিককে উদ্ধার করার পর উদ্ধারকারীরা নেমে পড়েন সুরঙ্গে৷ নিকশ অন্ধকারে শুরু হয় দ্বিতীয় দফার উদ্ধার কাজ৷
ছবি: Reuters/M. Hutchingsদীর্ঘ প্রচেষ্টার পর অবশেষে জানানো হয়, সমস্ত শ্রমিককে উদ্ধার করা গিয়েছে৷ কিন্তু কীভাবে এই বিপর্যয় ঘটল, তা নিয়ে কেউ মুখ খোলেননি৷ সাময়িক কাজ বন্ধ থাকলেও, উদ্ধার কাজ শেষ হলে খনি থেকে সোনা তোলার কাজ ফের শুরু হয়ে যায়৷
ছবি: picture-alliance/Balance/Photoshot/P. B. Pickford মৃতের বয়স ৩৭ বছর। তার পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। অন্য শ্রমিকের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, চাইলে এই পরিস্থিতি এড়ানো যেত। প্রথমত, ওই খনিটি অনেকদিন বন্ধ ছিল। ফলে সবরকম নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা ছিল না। দ্বিতীয়ত, যে পদ্ধতিতে শ্রমিকেরা খনিতে নেমে কয়লা খুঁজছিলেন, তা ঠিক পদ্ধতি নয়। এই পদ্ধতিতে ঝুঁকি অনেক বেশি। খনি কর্তৃপক্ষ দ্রুত কয়লা খোঁজার জন্য শ্রমিকদের ওই কাজে বাধ্য করেছিলেন বলে অভিযোগ। খনির কর্মকর্তারা অবশ্য এনিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
বস্তুত, ধস নামার পরেও খনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় প্রশাসন হস্তক্ষেপ করার পরেই খনি কর্তৃপক্ষ এবিষয়ে মন্তব্য করে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় মেয়র বলেছেন, ওই এলাকায় একাধিক খনি আছে। বাকিরাও এই ঘটনা থেকে যেন শিক্ষা নেয়।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)