কোভিডের কঠোর নিয়ম পেরিয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করতে গিয়ে নতুন সংকটে পড়েছে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন ব্যবসা খাত৷ গত এক বছরে অভিবাসীদের সংখ্যা ব্যাপক হারে কমে যাওয়ায় কর্মী পাচ্ছে না তারা৷
বিজ্ঞাপন
গ্রীষ্মের পার্টির জন্য প্রস্তুত অস্ট্রেলিয়া৷ খুলছে রেস্টুরেন্ট, স্টেডিয়ামসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলো৷ কিন্তু সেগুলো পুরোদস্তুর চালু করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন উদ্যোক্তা ও ব্যবস্থাপকরা৷ দেখা দিয়েছে প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাব৷
করোনার সময় বিপুল মৌসুমি কর্মী আর বিদেশি শিক্ষার্থীরা অস্ট্রেলিয়া ছেড়েছেন৷ সীমান্তে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের কারণে নতুন শিক্ষার্থী বা কর্মীরা এই সময়ের মধ্যে আসতে পারেননি৷ যারা গিয়েছেন তাদের অনেকেও ফিরে আসেননি৷ যে কারণে মৌসুমি কর্মী সংকটে পড়েছে বিভিন্ন ব্যবসা খাত৷ প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি চালু হলেও প্রয়োজনীয় কর্মী ছাড়াই তাই কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হচ্ছে অনেককে৷
আতিথেয়তানির্ভর খাতের জন্য কর্মী ভাড়া করে এমন একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক রোনডা এভারিংহাম৷ পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘লকডাউনের আগে একটি চাকরির বিজ্ঞপ্তি দিলে কয়েকশো আবেদন জমা পড়ত৷ এখন যদি পাঁচটি পাওয়া যায় তাহলেই আপনি সৌভাগ্যবান৷ এর মধ্যে তিনটি পাবেন উপযুক্ত৷ যেই সময় আপনি তাদের ডাকবেন ততক্ষণে দেখা যাবে তারা অন্য কোন চাকরি পেয়ে গেছেন৷’’
বিভিন্ন দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বিভিন্ন রকম৷ ছবিঘরে জেনে নিন কয়েকটি দেশের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Z. H. Chowdhury
বাংলাদেশ
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর৷ সম্প্রতি সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ করার দাবি জানিয়েছেন চাকরিপ্রত্যাশীদের একাংশ৷ অথচ সহকারী বিচারক এবং বিসিএস স্বাস্থ্য তথা সরকারি ডাক্তারদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩২৷ বিভিন্ন কোটার ক্ষেত্রেও এই বয়সসীমা ৩২ বছর৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Z. H. Chowdhury
ভারত
ভারতে রাজ্যভেদে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ থেকে ৪৫ বছর৷ পশ্চিমবঙ্গে চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪০ বছর৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Nath
শ্রীলংকা
দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়স ৪৫ বছর৷
ছবি: Eranga Jayawardena/AP/picture alliance
তাইওয়ান
তাইওয়ানে বয়স সর্বোচ্চ ৩৫ বছর হলেও সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়ার সুযোগ থাকে৷
ছবি: Tao-Chuan Yeh/AFP/Getty Images
ইন্দোনেশিয়া
ইন্দোনেশিয়ায় সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়ার সর্বোচ্চ বয়স ৪৫ বছর৷
ছবি: Reuters/F.Elkarim
কাতার
মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর৷
ছবি: Reuters/S. Karpukhin
সুইডেনে
সেখানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ ৪৭ বছর পর্যন্ত থাকে৷
ছবি: AFP/Ntb Scanpix/H.M. Larsen
ফ্রান্স
ফ্রান্সে ৪০ বছর বয়স হলেও কেউ সরকারি চাকরি পেতে পারেন৷
ছবি: Julie Sebadelha/abaca/picture alliance
ইটালি
ইটালিতে ৩৫ বছর পর্যন্ত কেউ সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করতে পারেন৷
ছবি: picture-alliance/ANSA/Press Office MSC
অ্যামেরিকা
যুক্তরাষ্ট্রে ৫৯ বছর বয়সেও একজন নাগরিক সরকারি চাকরিতে যোগ দিতে পারেন৷
ছবি: Wang Ying/Xinhua/picture alliance
ক্যানাডা
এই দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ ৪৭ বছর হলে শেষ হয়ে যায়৷
ছবি: picture alliance/dpa/All Canada Photos
11 ছবি1 | 11
সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনির দুইটি বড় শহর ও মেলবোর্নের সেবা নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো৷ গত ১১ অক্টোবর সিডনি ও গত সপ্তাহে মেলবোর্নে কোভিডের নিয়ম শিথিল করা হয়েছে৷
কর্মী সংকটের মাঠের এই চিত্র ধরা পড়েছে দেশটির সরকারি পরিসংখ্যানেও৷ ‘নন-রেসিডেন্ট' কাজের ভিসায় আগতদের সংখ্যা ২০২০ সালের শুরুর তুলনায় চলতি বছরের জুন প্রান্তিকে দুই তৃতীয়াংশ কম ছিল৷ সেই সঙ্গে দেশটিতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা করোনার আগের সময়ের চেয়ে তিন লাখ কমে গেছে৷
অস্ট্রেলিয়ার ২২ লাখ অনিয়মিত কর্মীর এক চতূর্থাংশই বাস করেন সিডনিতে৷ চার মাসের লকডাউন শেষে শহরটিতে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরুর অনুমতি মিলেছে৷ ২৫ অক্টোবর সাড়ে ২২ হাজার দর্শক নিয়ে ফুটবল ম্যাচ আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রথম বড় আয়োজনটি হতে যাচ্ছে৷ এজন্য ৭৩০জন রাঁধুনি, পরিচ্ছন্নতা বা নিরাপত্তাকর্মী প্রয়োজন৷ একই সময় অন্যকোন বড় আয়োজন না থাকায় এই লোকবল যোগাড় করতে পেরেছেন তারা৷ কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি জানান, আতিথেয়তা ব্যবসায় প্রত্যেকেই এখন কর্মী চ্যালেঞ্জে রয়েছেন৷
এমন অবস্থায় নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য সরকার এবার বড় সংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থী নেয়ার পরিকল্পনা করেছে৷ সেই সঙ্গে কর্মী চাহিদা মেটাতে এক বছরে চার লাখ অভিবাসীকে নিতে চান তারা, যা কোভিড পূর্ববর্তী সময়ের চেয়েও দ্বিগুণ৷ কিন্তু সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, এই মুহূর্তে দেশটির নাগরিক, বাসিন্দা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরাই শুধু অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছেন৷
এফএস/কেএম (রয়টার্স)
জ্ঞানের দৌড়ে কারা এগিয়ে, কারা পিছিয়ে
উচ্চশিক্ষা, গবেষণা, উদ্ভাবনসহ জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় কোন দেশ কতটা এগিয়ে সেটি বোঝা যায় বৈশ্বিক জ্ঞান সূচকের মাধ্যমে৷ প্রতিবছর ইউএনডিপি একটি তালিকা প্রকাশ করে৷ ছবিঘরে দেখুন চলতি বছরে সূচকে কার কী অবস্থান৷
ছবি: picture-alliance/PAP/M. Bielecki
পরিমাপ প্রক্রিয়া
২০১৭ সাল থেকে বৈশ্বিক জ্ঞান সূচক প্রকাশ করে আসছে জাতিসংঘের উুন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা ইউএনডিপি৷ প্রাক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, উচ্চ শিক্ষা, উন্নয়ন ও উদ্ভাবন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, অর্থনীতি আর পরিবেশ- এই সাতটি বিষয়কে সেখানে বিবেচনায় নেয়া হয়৷ ১৯৯টি সূচকের মাধ্যমে করা হয় ১৩৮ টি দেশের র্যাংকিং৷
ছবি: picture-alliance/PAP/M. Bielecki
শীর্ষে সুইজারল্যান্ড
বৈশ্বিক জ্ঞান সূচক ২০২০-এ শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে সুইজারল্যান্ড৷ প্রশিক্ষণ ও গবেষণার পর্যাপ্ত সুবিধা, মানসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান, অত্যাধুনিক উৎপাদন প্রক্রিয়া আর দক্ষ সরকার ব্যবস্থা দেশটিকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রেখেছে৷ তাদের মোট স্কোর ৭৩ দশমিক ছয়৷ ৭১ দশমিক এক স্কোর নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয়৷ প্রথম চারে আছে স্ক্যান্ডিনেভিয়ার আরো দুই দেশ; ফিনল্যান্ড ও সুইডেন৷ স্কোর যথাক্রমে, ৭০ দশমিক আট ও ৭০ দশমিক ছয়৷
ছবি: picture-alliance/robertharding
ইউরোপের সাত
ইউরোপের বাকি দেশগুলোর মধ্যে নেদারল্যান্ডসের অবস্থান পঞ্চম৷ এর পরপরই রয়েছে লুক্সেমবুর্গ৷ অষ্টম ডেনমার্ক, যুক্তরাজ্য নবম আর জার্মানি আছে ১১ তম অবস্থানে৷ সব মিলিয়ে প্রথম দশে ইউরোপেরই সাতটি দেশ৷
ছবি: Imago Images/Danita Delimont/D. R. Frazier
এশিয়ায় শীর্ষে সিঙ্গাপুর
জ্ঞান সূচকে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবার উপরে সিঙ্গাপুর৷ সাতটি খাতের মধ্যে অর্থনীতিতে তারা প্রথম আর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে আছে দ্বিতীয় অবস্থানে৷ সামগ্রিকভাবে তালিকায় তারা সপ্তম৷ ১০ম অবস্থানে হংকং আর ১২ তম অবস্থানে জাপান৷ এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া ১৯ তম, চীন আছে ৩১তম অবস্থানে৷
ছবি: picture-alliance/robertharding/B. Morandi
মধ্যপ্রাচ্যের আলো ইউএই
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর জন্য অনুপ্রেরণা সংযুক্ত আরব আমিরাত৷ বৈশ্বিক জ্ঞানে দেশটি ১৫ তম জায়গা করে নিয়েছে৷ অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়ারও আছে উপরে৷ মধ্যপ্রাচ্যের বাকি দেশগুলোর মধ্যে ইসরায়েল ২১তম, কাতার ৩৯তম, সৌদি আরব ৪২তম, বাহরাইন ৪৩ তম, ওমান ৫৮তম, ও কুয়েত আছে ৬৫তম অবস্থানে৷
ছবি: Sheikh Mohammed bin Rashid Al Maktoum/Twitter/AP/picture-alliance
দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের নেতৃত্ব
দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে ভারত৷ ৪৪ দশমিক চার স্কোর নিয়ে সব দেশের মধ্যে তাদের অবস্থান ৭৫তম৷ এছাড়া শ্রীলংকা ৮৭, ভূটান ৯৪, নেপাল ১১০, পাকিস্তান ১১১ আর এই অঞ্চলে সবার শেষে বাংলাদেশ৷ এগিয়ে থাকা ভারত গবেষণা ও উদ্ভাবনে সবচেয়ে ভালো করেছে; সব দেশ মিলিয়ে সেখানে তাদের অবস্থান ৪৪তম৷ তবে প্রাক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও পরিবেশের মানে বেশ পিছিয়ে৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. D´Souza
বাংলাদেশের দুর্বলতা
বৈশ্বিক জ্ঞান সূচকে সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ ১৩৮ টি দেশের মধ্যে ১১২তম অবস্থানে রয়েছে৷ বাংলাদেশ সবচেয়ে পিছিয়ে গবেষণা ও উদ্ভাবনে; স্কোর মাত্র ১৬ দশমিক চার৷ আর উচ্চ শিক্ষায় ২৪ দশমিক ১ স্কোর নিয়ে গোটা বিশ্বের মধ্যে অবস্থান ১২৯৷ অর্থাৎ, এক্ষেত্রে বাংলাদেশের নীচে আছে মাত্র নয়টি দেশ৷
ছবি: Sawpan Chandra Dash
তলানিতে যারা
তালিকায় শেষের দিকে থাকা দেশগুলো আফ্রিকার৷ সবার নীচে বা ১৩৮তম অবস্থানে আছে চাদ৷ শেষ পাঁচে থাকা বাকিরা অ্যাঙ্গোলা, মৌরিতানিয়া, নাইজার ও কঙ্গো৷