অ্যামেরিকায় বন্দুক নিয়ন্ত্রণ বিলের পক্ষে ভোট দিলেন অধিকাংশ সেনেটর। নতুন বন্দুক আইন আসতে পারে কিছুদিনের মধ্যেই।
বিজ্ঞাপন
রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটদের যৌথ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নতুন বন্দুক নিয়ন্ত্রণের আইন আসতে চলেছে অ্যামেরিকায়। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত এ নিয়ে সেনেটে বিতর্ক হয়েছে। ভোটাভুটিতে ৬৫-৩৩ ভোটে বন্দুক নিয়ন্ত্রণের পক্ষে রায় দিয়েছে সভা। এরপর আরো একটি ভোটাভুটি হওয়ার কথা হাউস অফ রিপ্রেসেনটেটিভে। তারপরেই বিলটি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের টেবিলে পৌঁছানোর কথা। প্রেসিডেন্ট সই করলে নতুন আইন চালু হবে।
বন্দুক বিক্রির উপরে অবশ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারেনি নতুন বিল। তবে বন্দুক বিক্রি নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, স্কুলগুলিতে যাতে হামলা না চলে তার জন্য আরো নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। ছাত্রছাত্রীদের মানসিক চিকিৎসার দিকে আরো গুরুত্ব দেওয়া হবে। আরো মনোবিদদের নিয়োগ করা হবে। নাবালকদের অপরাধের রেকর্ড আরো সতর্কভাবে নথিভুক্ত করা হবে। বিভিন্ন রাজ্যকে এবিষয়ে নির্দিষ্ট নির্দেশ দেওয়া হবে। বন্দুক বিক্রির সময় ক্রেতার সমস্ত নথি পরীক্ষা করা হবে। পরীক্ষা করা হবে নাবালক থাকাকালীন তিনি কোনো অপরাধ করেছিলেন কি না।
একের পর বন্দুক হামলায় বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র৷ অস্ত্র আইন কঠোর করার দাবিতে ‘মার্চ ফর লাইভস’-এ অংশ নিলেন হাজারো মার্কিন নাগরিক৷
ছবি: REUTERS
সন্তানকে আঁকড়ে
টেক্সাসের ইউভ্যালডিতে প্রাথমিক স্কুলে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালায় এক বন্দুকধারী৷ তাতে প্রাণ হারায় ১৮ শিশু-সহ ২১ জন৷ সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন অভিভাবকরা ৷ মিছিলেও দেখা গেল সেই ছবি৷ সন্তানের হাত আঁকড়ে অস্ত্র আইন কঠোর করার দাবি জানালেন মা-বাবারাও৷
ছবি: REUTERS
প্রতিবাদের স্বর
২০১৮ সালে ডগলাসে বন্দুক হামলা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন এক্স গঞ্জালেজ৷ ‘মার্চ ফর আওয়ার লাইভস’-এর সহ-উদ্যোক্তা তিনি৷ ওয়াশিংটন ডিসিসহ সারা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন তারা৷
ছবি: REUTERS
চোখে জল, লক্ষ্যে অবিচল
সমাবেশে পা মিলিয়েছেন গঞ্জালেজ৷ বক্তৃতাও দিয়েছেন৷ সেই সময় চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি তিনি৷ এতগুলো মানুষকে হারিয়ে ফেলার দুঃসহ স্মৃতি আজো তাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে ৷
ছবি: REUTERS
হাজারো মানুষের প্রতিবাদ
নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিন ব্রিজে হাজারো মানুষ হাঁটলেন অস্ত্র আইন কঠোর করার দাবিতে৷ ফ্লোরিডার পার্কল্যান্ডেও দেখা গেছে এমন সমাবেশ৷
ছবি: REUTERS
ন্যাশনাল মলে..
মানুষের মাথা ছাড়া আর কিছু দেখা যাচ্ছিল না ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল মলের সমাবেশে৷ ১১ জুনের বিপুল সমাবেশে অংশ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আপামর সাধারণ নাগরিকেরা৷
ছবি: REUTERS
স্মৃতির ভার
খোসে বাদিও নামে এক ব্যক্তি বন্দুক হামলায় নিহত শিশুদের ছবির সামনে প্রতিবাদের পতাকা জুড়ে দিচ্ছেন৷ ছবিটি টেক্সাসের অস্টিনের৷
ছবি: REUTERS
ঝরে যাওয়া প্রাণ
স্কুলে পড়াশোনা করতে এসে আর বাড়ি ফেরেনি ইভা মিরেলেস৷ তার মতো অনেক শিশুই আর বেঁচে নেই৷ ক্রুশ আর গোলাপে তাদের স্মরণ করা হয়েছে৷
ছবি: REUTERS
ফিরবে না বোন
তুতো বোন জ্যাকি কাজারেস আর ফেরেনি৷ টেক্সাসের ইউভ্যালডির স্কুলে নিহত পড়ুয়াদের মধ্যে সে-ও একজন৷ বড় বোন ক্রিস্টেলা মেনডোজা বোনের হাসিখুশি মুহূর্তের একটি ছবি হাতে নিয়ে কঠোর অস্ত্র আইনের দাবিতে অস্টিনের সমাবেশে অংশ নিয়েছেন৷
ছবি: REUTERS
বুলেট নয়, বই চাই
যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষকরাও অস্ত্র আইন কঠোর করার দাবিতে পথে নেমেছেন৷ ‘অ্যামেরিকান ফেডারেশন অফ টিচার্স’-এর প্রেসিডেন্ট রান্ডি ওয়েইনগার্টেন৷ ‘মার্চ ফর আওয়ার লাইভস’-এ বক্তব্য রেখেছেন তিনিও৷
ছবি: Joshua Roberts/REUTERS
পুলিশের সঙ্গে
সমাবেশে এক প্রতিবাদীর সঙ্গে কথা বলছেন এক পুলিশকর্মী৷ বিপুল সমাবেশে যাতে কোনোরকম গন্ডগোল না হয়, সে দিকে কড়া দৃষ্টি ছিল প্রশাসনের৷ অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজেও অস্ত্র আইন কঠোর করার পক্ষেই৷
ছবি: Ken Cedeno/REUTERS
আর কেউ যেন সন্তান না হারায়
পার্কল্যান্ডে বন্দুক হামলায় প্রাণ হারিয়েছিল জোয়াকিন অলিভার৷ তার বাবা ম্যানুয়েল অলিভার এবং মা প্যাট্রিসিয়াও প্রতিবাদ মঞ্চে ছিলেন৷ এছাড়াও ছিলেন ডগলাসে বন্দুক হামলায় বেঁচে যাওয়া ডেভিড হগ৷
ছবি: Jonathan Ernst/REUTERS
ফুলে স্মৃতিচারণ
অজস্র পড়ুয়া পা মেলান এই সমাবেশে৷ তেমনই নিহত পড়ুয়াদের স্মৃতিতে সারি সারি ফুলের মাধ্যমে পড়ুয়াদের স্মৃতিচারণ করা হয়েছে৷ তেমনভাবেই অজস্র নোটবুক, ভেঙে যাওয়া পেনসিলের টুকরো রেখেও স্মরণ করা হয়েছে পড়ুয়াদের৷
ছবি: Allison Bailey/NurPhoto/IMAGO
শিশু হত্যা ও বন্দুক
এক ব্যক্তির হাতে একটি পোস্টার ছিল৷ তাতে একটি বন্দুকের ছবি৷ বন্দুকের পাশে লেখা ‘বেবি কিলার’ অর্থাৎ শিশু হত্যাকারী৷
ছবি: Jonathan Ernst/REUTERS
13 ছবি1 | 13
ডেমোক্র্যাটরা বন্দুক বিক্রির উপর আরো কড়া নিষেধাজ্ঞা জারির কথা বলেছিলেন। মারণাস্ত্র বিক্রি বন্ধের কথা বলা হয়েছিল। ম্যাগাজিনে গুলির সংখ্যা নিয়েও তারা আলোচনা তুলেছিল। কিন্তু রিপাবলিকানরা তা মানতে চাননি। শেষপর্যন্ত দুই দলের যৌথ প্রয়াসে নতুন বিলটি তৈরি হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে সেনেটের ভোটাভুটিতে ১৫ জন রিপাবলিকান সদস্য বিলের পক্ষে ভোট দেন। ডেমোক্র্যাটদের ৫০ জন সদস্যই বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ভোটের পর বাইডেন জানিয়েছেন, নতুন আইন বন্দুকের ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে না পারলেও খানিকটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারল। অন্তত প্রথম পদক্ষেপটি করা গেল।
সুপ্রিম কোর্টের ভিন্ন সুর
বৃহস্পতিবারই নিউ ইয়র্কের একটি বন্দুক সংক্রান্ত আইনের মামলার রায় দিয়েছে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট। সেখানে বন্দুক নিয়ন্ত্রণের বিরোধিতা করেছে আদালত। বলা হয়েছে, নিউ ইয়র্কের ওই আইন দেশের সংবিধানের বিরোধী। ১৯১৩ সালের ওই আইন মার্কিন সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনীর পরিপন্থী বলে জানিয়েছে আদালত। নিউ ইয়র্কের ওই আইনে হ্যান্ডগান নিয়ে বাড়ির বাইরে বের হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। আদালত জানিয়ছে, রাস্তায় অস্ত্র রাখার অধিকার নাগরিকের আছে।
বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, নতুন বিলের সঙ্গে এই রায়ের দ্বন্দ্ব তৈরি হওয়ার আশঙ্কা কম।