তাদের অস্ত্র পরীক্ষার অধিকার আছে, জাতিসংঘে দাবি উত্তর কোরিয়ার। সেই সঙ্গে একটি অস্ত্রের পরীক্ষাও করলো তারা।
বিজ্ঞাপন
উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র পরীক্ষার উপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা আছে। কিন্তু তারা যে ওই নিষেধাজ্ঞাকে আমল দিচ্ছে না, তা আবার বুঝিয়ে দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধি কিম সং বলেছেন, ''উত্তর কোরিয়ার অস্ত্রপরীক্ষার অধিকার আছে। কেউ সেই অধিকার ছিনিয়ে নিতে পারবে না।''
দক্ষিণ কোরিয়ার দাবি, জাতিসংঘে উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধির ভাষণ যখন চলছে, সেই সময় একটি অস্ত্র পরীক্ষা করেছে উত্তর কোরিয়া।
কিম তার ভাষণে দাবি করেছেন, উত্তর কোরিয়ার প্রতি অ্যামেরিকা যে নীতি নিয়েছে তা বদল করতে হবে। তিনি অভিযোগ করেন, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে উত্তর কোরিয়ায় সামরিক অভিযান চালাতে চায় অ্যামেরিকা। আর সেটা যাতে না হয়, সেজন্য উত্তর কোরিয়া অস্ত্রপরীক্ষা করছে। তারা কাউকে আক্রমণ করতে চায় না।
উত্তর কোরিয়াকে কাবু করতে জাতিসংঘের কিছু ‘অস্ত্র’
পারমাণবিক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার কোনো তোয়াক্কাই করছে না উত্তর কোরিয়া৷ দেশটির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান রয়েছে তাই জাতিসংঘেরও৷ দেখা যাক, কত রকমের নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে আটকা পড়েছে উত্তর কোরিয়া৷
ছবি: Reuters/S. Sagolj
কয়লা এবং লোহার ওপর নিষেধাজ্ঞা
২০১৭ সালের আগস্ট মাসে উত্তর কোরিয়ার ওপর সব ধরনের কয়লা, লোহা এবং লোহার আকরিক আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতিসংঘ৷ওপরের ছবিতে উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত সংলগ্ন ড্যানডং শহরের লিয়াওনিং গ্রিনল্যান্ড এনার্জি কয়লাখনি৷ খনিটি অবশ্য চীনের৷
ছবি: Reuters/B. Goh
মুদ্রায় নিষেধাজ্ঞা
বিদেশে কোনো ব্যাংক খুলতে পারে না উত্তর কোরিয়া৷ এমনকি জাতিসংঘের কোনো সদস্য দেশ যাতে পিয়ংইয়ংয়ের জন্য লাভজনক কোনো আর্থিক লেনদেন বা চুক্তিতে না যায়, নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে সে বিষয়টিও নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছে জাতিসংঘ৷ জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, কোনো দেশের নাগরিক যদি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে এমন কোনো ব্যবসায়িক যোগাযোগ স্থাপন করে, তাহলে সংশ্লিষ্ট দেশটিকে অবশ্যই ওই নাগরিককে বহিষ্কার করতে হবে৷
ছবি: Mark Ralston/AFP/Getty Images
জাহাজ চলাচল
ছবির এই জাহাজটি উত্তর কোরিয়ার৷ ২০১৬ সালের মার্চে ফিলিপাইন্সে এটিকে থামানো হয়৷ উত্তর কোরিয়ার কোনো জাহাজে পণ্য পরিবহনও নিষিদ্ধ করেছে জাতিসংঘ৷ এমনকি পিয়ংইয়ংযে নিজেদের জাহাজে অন্য দেশের পতাকা লাগিয়ে কাজ চালাবে, সেই পথও বন্ধ৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/J. Dumaguing
আকাশেও নিষেধাজ্ঞা
উত্তর কোরিয়ার জাতীয় এয়ারলাইন্স ‘এয়ার কোরিও’ অবশ্য পুরোপুরি নিষিদ্ধ নয়৷ এখনো তাদের বিমান রাশিয়া আর চীনে যাওয়া-আসা করে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Yonhap
জ্বালানিতেও...
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার পর থেকে জ্বালানি আমদানিতেও কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় উত্তর কোরিয়া৷ ফলে জনজীবনেও এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে৷ নিষেধাজ্ঞার কারণে বছরে মাত্র ৪০ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে পারে উত্তর কোরিয়া৷ তাই সে দেশের নাগরিকদের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম ডিজেল এবং কেরোসিন পেয়েই খুশি থাকতে হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Ralston
বিদেশে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং স্থাবর সম্পত্তি
উত্তর কোরিয়ার কূটনীতিকদের ওপরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতিসংঘ৷ জার্মানিসহ এখনো হাতে গোনা যে কয়েকটি দেশে উত্তর কোরিয়ার দূতাবাস আছে, সেখানে উত্তর কোরীয় কূটনীতিকরা চাইলেও একটার বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন না৷ দেশের বাইরে দূতাবাস ছাড়া আর কোনো কাজে ঘর ভাড়াও করতে পারে না উত্তর কোরিয়া৷
ছবি: picture alliance/dpa/S.Schaubitzer
সামরিক প্রশিক্ষণ
কোনো দেশ উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনী, পুলিশ, বা আধা সামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিতে পারে না৷ এ বিষয়েও রয়েছে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা৷
ছবি: Reuters/S. Sagolj
কিম জং উনের মূর্তি
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের আবক্ষ মূর্তি দেখতে বা পছন্দের কোনো জায়গায় রাখতে চান? তা জাতিসংঘের একেবারেই কাম্য নয়৷ তাই উত্তর কোরিয়ার ওপর যে কোনো ধরনের মূর্তি বিক্রিতেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতিসংঘ৷
ছবি: picture alliance/dpa/robertharding
8 ছবি1 | 8
নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও অস্ত্র পরীক্ষা
দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়া মঙ্গলবার সকালে তাদের পূর্ব উপকূল থেকে সি অফ জাপানে একটি অস্ত্র পরীক্ষা করেছে। তবে সেটি কী অস্ত্র তা জানা যায়নি। তবে জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, উত্তর কোরিয়া ব্যালেস্টিক মিসাইলের পরীক্ষাই করেছে।
জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা ভেঙে সেপ্টেম্বরেই দুইটি ব্যালেস্টিক মিসাইল পরীক্ষা করেছিল উত্তর কোরিয়া। সেই মিসাইল দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের যে কোনো জায়গায় আঘাত হানা সম্ভব।