অ্যাপ-এ অর্ডার দিন, বাজারের ফিরিস্তি দিন, দেখবেন ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে কেনাকাটা বিল-সহ আপনার বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছে৷ আলাদিনের গল্প নয়, বার্লিনের এক আধুনিক স্টার্ট-আপ, যার নাম ‘শপ-উইংস'৷
বিজ্ঞাপন
মোহাম্মেদ শাহরুর বাজার করতে বেরিয়েছেন৷ তাঁকে এক ধরনের বাজার সরকার বলা চলে, বা পেশাদার ‘বাজারু'! বার্লিনের ‘শপ-উয়িংস' স্টার্ট-আপ কোম্পানির হয়ে বাজার করে থাকেন৷ শাহরুর বলেন, ‘‘আমি এই অ্যাপ-এর মাধ্যমে শপ-উয়িংস-এর কাছ থেকে বাজারের তালিকা পাই; তারপর ফিরিস্তি বরাবর বাজার করি, কাউন্টারে দাম চোকাই, গ্রাহকদের বাড়ি পৌঁছে দিই৷ সোজা পথ৷''
গড়ে আটজন গ্রাহকের হয়ে প্রতিদিন বাজার করেন শাহরুর৷ ঘণ্টায় রোজগার হয় বিশ ইউরো৷ গ্রাহকরা ইন্টারনেটে পাঁচটি সুপারমার্কেটের ওয়েবসাইট থেকে পণ্য বাছতে পারেন৷ সেই ফরমায়েশ পৌঁছয় শাহরুর-এর স্মার্টফোনে৷ কোনো জিনিস পাওয়া না গেলে, গ্রাহককে টেলিফোনে তা জানানো হয়৷
শপিং করাকে সহজ ও আনন্দময় করতে কিছু টিপস
কোনো উপলক্ষ্য মানেই শপিং, যদিও অনেকেই তা করতে ভালোবাসেন৷ তবুও মাঝে মাঝে উপহার কেনা বেশ কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়৷ এই ছবিঘরে পাবেন কিছু টিপস, যা শপিং করাকে আনন্দময় করে তুলবে৷
ছবি: Fotolia/G. Sanders
লিস্ট তৈরির পর কেনা শুরু
কোনো উপলক্ষ্যে প্রিয়জনদের জন্য উপহার কেনা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে৷ সত্যি কথা বলতে কি, তাড়া থাকলে প্রয়োজনের সময় সঠিক উপহারটি খুঁজে পাওয়া যায় না, অথবা অনেক বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়৷ তাই অবসর সময়ে কার জন্য কী কেনা হবে, প্রথমেই তার একটি লিস্ট তৈরি করে ফেলুন৷ তা না হলে, দোকানে হাজারো জিনিস দেখে চিন্তা এলোমেলো হয়ে যাতে পারে৷ এছাড়া জানা থাকলে যে দোকান থেকে যা কিনবেন, তার নামও লিস্টে লিখে রাখুন৷
ছবি: imago/CTK/CandyBox
কার জন্য কী কিনবেন?
কার জন্য কী কিনবেন – তার লিস্ট যদি তৈরি থাকে, অর্থাৎ বড়দের, ছোটদের, ছেলেদের, মেয়েদের – এ সব যদি ঠিক করা থাকে, তবে সেভাবেই দোকানে যাওয়া যায়৷ তখন এক দোকান থেকে আরেক দোকানে সেভাবে দৌড়াতে হয় না৷ এতে সময়ও কম লাগে৷ পছন্দের বা সঠিক সাইজের পোশাক বা জিনসটি সে মুহূর্তে দোকানে না থাকলে, অর্ডার দিয়ে দিন৷ পরে সময়মতো নিয়ে আসলেই হলো!
ছবি: Gustavo Caballero/Getty Images for Build-a-Bear
নোট করে নিন
বিভিন্ন পত্রিকা বা ম্যাগাজিনে থাকে আকর্ষণীয় উপহারের বিজ্ঞাপন বাড়িতে বসে ভালো করে দেখে ‘নোট’ করে রাখুন৷ আপনার পছন্দের জিনিস নয়, প্রথমে দূরের দোকানে যান এবং সেগুলোতে আগে কিনে ফেলুন৷ অনেক সময় কার জন্য কী কেনা হবে – সে বিষয়ে ঠিক ‘আইডিয়া’ মাথায় আসে না৷ এক্ষেত্রে ঐ বিজ্ঞাপনগুলো বেশ উপকারী৷ তাই শপিং-এ বের হওয়ার সময় বিজ্ঞাপনের কাগজগুলো অবশ্যই সঙ্গে রাখুন৷
ছবি: imago/CHROMORANGE
অনলাইন
বর্তমানে এই তথ্য-প্রযুক্তির যুগে অনেকেই অনলাইনে কেনাকাটা করেন৷ এতে বাইরে বের হওয়া বা রাস্তায় সময় নষ্ট হওয়ার ঝামেলা থাকে না৷ তবে আগেভাগেই পছন্দের জিনিসটি অর্ডার দিয়ে দিন, কারণ পছন্দ না হলে আবার ফেরত পাঠিয়ে নতুন জিনিস বাড়িতে আসতে খানিকটা সময় চলে যায়৷ আর একেবারেই পছন্দ না হলে, অনলাইনে কেনা জিনিসটি যে ফেরত পাঠিয়ে আবারো শপিং করতে যেতে হবে!
উইন্ডো শপিং
অনেকেই উইন্ডো শপিং করতে বেশ পছন্দ করেন৷ দোকানে যখন ভিড় থাকে না, তখন পরিবারের লোকজন বা একাই দোকানের শো-কেসে সাজিয়ে রাখা জিনিসগুলো ধীরে-সুস্থে দেখা যায়৷ সেখানে জিনিস পছন্দ হলে নোটবুকে টুকে নেবেন বা মোবাইলে ছবি তুলে নেবেন৷ জার্মানিতে এই প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা অনেক সময় দোকানে জামা, জুতোর পরে ছবি তোলে৷ নতুন পোশাকে কেমন লাগছে – পরে তা ভালোভাবে ভেবে কিনতে আসে৷
ছবি: Martin Roemers/laif
পরিচিতদের থেকে জেনে নিন
অনেক সময় দেখা যায় অনেকদিন থেকে আপনি একটি সুন্দর শাড়ি বা ড্রেস খুঁজেও পাননি৷ হঠাৎ একদিন আপনারই পরিচিত একজনের গায়ে আপনার পছন্দের পোশাকটি দেখলেন৷ কোনো দ্বিধা না করে তাঁর কাছ থেকেই জেনে নিন দোকানের নাম-ঠিকানা৷ এতে আপনি পছন্দের জিনসটি পাবেন এবং যাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, সেও কিন্তু অখুশি হবেন না!
ছবি: BilderBox
প্যাকিং
বাড়িতে ফিরে জিনিসগুলো দেখে নিন এবং যেগুলো কেনা হয়েছে সেগুলোর নাম লিস্ট থেকে কেটে দিন৷ একটু অবসর পেলে উপহারগুলো সুন্দর কাগজে মুড়ে নাম লিখে রেখে দিন৷ এই কাজটি করার পর নিজেকে অনেক হালকা মনে হবে এবং উপহার দেওয়ার কাজটাও অনেকটা এগিয়ে যাবে৷ আসলে শপিং-এর প্ল্যান যত আগে হবে, কাজটি ততই সহজ হবে৷
ছবি: Fotolia/julien tromeur
খাওয়া-দাওয়া
যে কোনো উপলক্ষ্যেকে সফল করতে চাই মজাদার খাবার আর এ নিয়ম সারা বিশ্বেই এক রকম৷ এর জন্য যে সব খাবার ঘরে বা ফ্রিজে কিনে রাখা যায়, তা আগে থেকেই বাড়িতে এনে রাখুন৷ অবশ্য তাজা জিনিস, যেমন শাক-সবজি, ফলমূল – এ সব কিন্তু কিনবেন একেবারে শেষে৷ তবে খাবারের লিস্টটাও যদি আগে থেকে তৈরি করে রাখা যায়, তাতে আপনারই চিন্তা দূর হবে৷ আর অতিথি আসার পর আপ্যায়ন করতে অনেক সুবিধা হবে৷
ছবি: Fotolia/G. Sanders
8 ছবি1 | 8
খাবার জিনিস অনলাইনে কেনাকাটা করাটা খুব নতুন নয়৷ সারা বিশ্বের নানান সুপারমার্কেট বাড়িতে বসে অনলাইনে কেনাকাটা করার সুযোগ দেয়৷ শপ-উয়িংস আর এক ধাপ এগিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে ব্যক্তিগত আদানপ্রদান আর বিভিন্ন দোকানে কেনাকাটার সুযোগ রেখেছে৷ এদের পথিকৃৎ হল মার্কিন মুলুকের একটি স্টার্ট-আপ – নাম, ‘ইনস্টাকার্ট'৷
অর্ডার পাবার বড়জোর দু'ঘণ্টার মধ্যে মোহাম্মেদ শাহরুর কেনাকাটা বাড়িতে পৌঁছে দেন৷ সে জন্য খদ্দেরকে পাঁচ ইউরো মতন মাশুল গুনতে হয়৷ শাহরুর বলেন, ‘‘আমি ছাত্র, তার ওপর আবার চাকরি করি৷ ফলে বাড়ি ফিরতে দেরি হয়ে যায়৷ কাজেই কেউ যদি সন্ধ্যায় বাজার করে সেগুলো সময়মতো বাড়ি পৌঁছে দেয়, তাহলে সেটা একটা দারুণ ব্যাপার৷''